মুসলিম বিশ্বে ভাস্কর্য

ভাস্কর্য হচ্ছে মানুষের চিন্তাশক্তির সৃষ্টিশীলতার প্রকাশ। এটি দেশের ঐতিহ্য আর সংস্কৃতির পরিচায়ক। যেখানে তুলে ধরা হয় হাজার বছরের ইতিহাস।

মুসলিম বিশ্বেও রয়েছে অসংখ্য ভাস্কর্য।
যেসব ভাস্কর্যে ফুটে উঠেছে ইতিহাসের বীরত্বগাথা, মনীষীদের প্রতি শ্রদ্ধা আর নিজ সংস্কৃতির নানা দিক। রয়েছে আলাদা কদর। সৌদি আরব, ইন্দোনেশিয়া, ইরাকের মতো দেশগুলোতেও দৃষ্টিনন্দন ভাস্কর্যের দেখা মিলে।

বিস্তারিত লিখেছেন— শামস্ বিশ্বাস

ইরাকজুড়ে এখনো নানা কীর্তি

বর্তমানে জনসংখ্যার হিসাবে মুসলিম দেশের মধ্যে অবস্থান ১২-তে হলেও ইসলামের ইতিহাসের স্বর্ণযুগের প্রতিভূ ইরাক। জনসংখ্যার ৯৭ শতাংশ মুসলিম। ইরাকের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম।

৭ হাজার বছরের পুরনো সংস্কৃতির সন্ধান পাওয়া গেছে এই দেশে। সংখ্যাগরিষ্ঠ শিয়া ধর্মাবলম্ব্বী। সুন্নি ধর্মাবলম্ব্বী প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন ১৯৭৯ সাল থেকে ২০০৩ সাল নাগাদ ২৪ বছর ইরাকের রাষ্ট্র-ক্ষমতায় ছিলেন।

তখন ইরাকের আনাচে-কানাছে ছিল সাদ্দাম হোসেনের নানান মূর্তি। ৯ এপ্রিল, ২০০৩ মার্কিন নেতৃত্বাধীন যৌথবাহিনীর হাতে সাদ্দাম সরকারের পতন ঘটে।

ক্ষমতার পালাবদলে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় সাদ্দাম হোসেনের সব মূর্তি। তাই বলে ভাস্কর্যহীন হয়নি ইরাক। প্রচুর ঐতিহাসিক ও দৃষ্টিনন্দন ভাস্কর্যের মালিক দেশটি।

রাজধানী বাগদাদে বেশকিছু বিখ্যাত মূর্তি রয়েছে। সেগুলো হলো : ইন্টারন্যাশনাল জোনে হাম্মুরাবির মূর্তি। অ্যাম্বুরাবিদের বিখ্যাত ষষ্ঠ রাজা হাম্মুরাবির খ্রিস্টপূর্ব ১৭৯২ অব্দে ব্যাবিলনের সিংহাসনে আরোহণ করেন এবং ১৭৫০ অব্দ পর্যন্ত রাজ্য শাসন করেন।

হাম্মুরাবি কোডের জন্য খ্যাতিমান এ রাজা। আরব্য উপন্যাসের রহস্যে এখনো রহস্যময় বাগদাদ শহরের আবু নুয়াস স্ট্রিটে শাহেরজাদি পার্কে রয়েছে আরব্য উপন্যাসের প্রধান চরিত্র শাহেরজাদি এবং রাজা শাহরিয়ারের মূর্তি।

বিশ্বজুড়ে আলীবাবার মর্জিনাকে চেনে না এমন মানুষ পাওয়া মুশকিল। এই বুদ্ধিমতী বাঁদী মর্জিনার বুদ্ধিতে কুপোকাৎ হয়েছিল ৪০ চোর। সেই মর্জিনার মূর্তির দেখা মিলবে বাগদাদে আলীবাবা স্কয়ারে আলীবাবা ফাউন্টেনে।

সুলতান সালাদিনের সিরিয়া

মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সিরিয়ার জনসংখ্যা প্রায় দুই কোটি। ৯০ শতাংশ মুসলিম।

সুন্নি প্রধান এ দেশেও রয়েছে শিয়া-সুন্নি-কুর্দি দ্বন্দ্ব। রাষ্ট্রপতি হিসেবে প্রায় তিন দশক সিরিয়া শাসন করেছেন সংখ্যালঘু আলওয়াইট সম্প্রদায়ের হাফিজ আসাদ (জন্ম : ১৯৩০-মৃত্যু : ২০০০)।

বর্তমানে রাষ্ট্রপতি তার ছেলে বাশার আল আসাদ। অন্যান্য স্বৈরতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের মতো সিরিয়াজুড়ে রয়েছে হাফিজ আসাদের মূর্তি। বর্তমানে সেখানে রাজনৈতিক সংস্কারের দাবিতে চলছে গৃহযুদ্ধ। তার রেশ আছড়ে পড়ে হাফিজ আসাদের ভাস্কর্যে।

বিদ্রোহীদের নাগালে এলে ভূপাতিত হতে হয় হাফিজ আসাদের মূর্তিকে। সিরিয়ার সবচেয়ে বিখ্যাত ভাস্কর্যটি হলো বীর মুসলিম সেনাপতি সালাদিন (জন্ম : ১১৩৭- মৃত্যু : ১১৯৩)-এর স্মরণে নির্মিত ‘স্ট্যাচু অব সালাদিন’। ব্রোঞ্জের তৈরি এই ভাস্কর্যটি সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের কেন্দ্রস্থল সিটিডাল অব দামেস্কে অবস্থিত।

৪ মার্চ, ১৯৯৩ সালে সিরিয়ার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট হাফিজ আসাদ কুর্দি বংশোদ্ভূত সুলতান সালাদিনের ৮০০তম মৃত্যুবার্ষিকীতে ভাস্কর্যটি উদ্বোধন করেন। ঐতিহাসিক ভাস্কর্যটির ভাস্কর আবদুল্লাহ-আল-সাঈদ।

সৌদি আরবে বর্ণিল উট


ইসলামের পূর্ণময় ভূমি সৌদি আরব। ইসলাম ধর্মের পবিত্র নগরী মক্কা ও মদিনা এই দেশে অবস্থিত।

এখান থেকে ইসলামের আলো বিশ্ব্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। শতভাগ মুসলিম দেশ সৌদি আরব মধ্যপ্রাচ্যের বৃহত্তম রাষ্ট্র।

জনসংখ্যা প্রায় ২ কোটি ৭০ লাখ। এ দেশের শাসনকারী রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা আবদুল আজিজ আল সউদের নামানুসারে এ দেশের নামকরণ করা হয়েছে।

সভ্যতার শুরু থেকেই শিল্পকর্মের প্রতি পৃথিবীর সব প্রান্তের মানুষের আলাদা একটা ঝোঁক লক্ষণীয়। প্রতিটি দেশ ভাস্কর্য কিংবা সৃষ্টিশীল স্থাপত্যকর্মের মধ্য দিয়ে নিজ নিজ অঞ্চলের ইতিহাস, ঐতিহ্য ইত্যাদি তুলে ধরে। এ ধারার ব্যতিক্রম নয় সৌদি আরব।

এ দেশে যেমন উট এবং ঘোড়ার একটা প্রচলন ছিল বা আছে তাই সেখানে দেখা যায় উট, ঘোড়া বা গাংচিলের ভাস্কর্য। রাজধানী জেদ্দার উল্লেখযোগ্য ভাস্কর্যের মধ্যে রয়েছে নগরীতে মুষ্টিবদ্ধ হাত, হাংরি হর্স, মানব চোখ, মরুর বুকে উটের ভাস্কর্য।

ইন্দোনেশিয়ায় নানা নিদর্শন

ইন্দোনেশিয়া মুসলিমের সংখ্যা অনুযায়ী বিশ্বে প্রথম। বিশ্বের মোট ইসলাম ধর্মাবলম্বীর শতকরা ১২.৯ ভাগ বাস করে ইন্দোনেশিয়ায়।

সংখ্যার বিচারে এর পরই রয়েছে যথাক্রমে পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশ। ইন্দোনেশিয়া দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি দ্বীপ রাষ্ট্র। প্রায় ৫০০০ দ্বীপের সমন্বয়ে গঠিত এ দেশটি পৃথিবীর বৃহত্তম মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্র। এর রাজধানী জাকার্তা।

দ্বাদশ শতকের দিকে ইন্দোনেশিয়ায় ইসলামের আগমন ঘটে এবং ১৬শ শতক নাগাদ জাভা ও সুমাত্রার লোকেরা ইসলামে ধর্মান্তরিত হয়ে যায়। ইন্দোনেশিয়ায় প্রায় সাড়ে সতেরো হাজার দ্বীপ রয়েছে।

এর মধ্যে মাত্র ৬ হাজার দ্বীপে মানুষ বসতি স্থাপন করেছে। সুমাত্রা, জাভা, সুলাওয়েসি, বোর্নিও ও নিউ গিনি পাঁচটি প্রধান দ্বীপ। চিত্রের ভাস্কর্যটি বালির ডেনপাসার এলাকার মূল সড়কে অবস্থিত। প্রচুর ভাস্কর্য রয়েছে গোটা দেশজুড়েই। এর মধ্যে বালিতে ভাস্কর্যের সংখ্যা বেশি।

ভাস্কর্য আছে পাকিস্তানেও

ইসলামী প্রজাতন্ত্র পাকিস্তানের জনসংখ্যা প্রায় ১৭ কোটি ২৮ লাখের বেশি। ইন্দোনেশিয়ার পর বেশি মুসলিম বাস করে এ দেশে।

মোট জনসংখ্যার ৯৭ শতাংশ মুসলিম জনগোষ্ঠী। দেশটিতে শিয়া-সুন্নি দ্বন্দ্ব প্রবল। এ ছাড়া রয়েছে বিভিন্ন কট্টরপন্থিদের শক্ত অবস্থান।

মুসলিম বিশ্বের মধ্যে একমাত্র পাকিস্তানের রয়েছে পারমাণবিক বোমা। আছে দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে প্রাচীন সভ্যতা। ১৯৪৭ সালে ধর্মের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত পাকিস্তানে নানা প্রতিকূলতার মধ্যে অব্যাহত রয়েছে ভাস্কর্য শিল্পের অগ্রযাত্রা।

বিভিন্ন সময় এখানে ভাঙা হয় ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের পূজনীয় মূর্তি, ধ্বংস করে দেওয়া হয় মহামূল্যবান প্রত্নতাত্ত্বিক ভাস্কর্য। তারপরও পাকিস্তানে রয়েছে ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের মূর্তি; রয়েছে দৃষ্টিনন্দন ভাস্কর্য শিল্প।

এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো— স্টক এক্সচেঞ্জ ভবনের সামনে ষণ্ডমূর্তি, লাহোরে বাদশাহি মসজিদের পার্শ্বে মেরি মাতার মূর্তি, পাঞ্জাবের জং শহরের রাস্তায় ঐতিহ্যবাহী ঘোড়সওয়ারের মূর্তি, লাহোরে ন্যাশনাল কলেজ অব আর্টস প্রাঙ্গণের নানা মূর্তি।
ইরানের পথে পথে মনীষী

পৃথিবীর বৃহৎ সভ্যতাগুলোর মধ্যে ইরান অন্যতম। প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণায়  পারস্যের ইতিহাসের সূচনা প্রায় এক লাখ বছর আগে থেকে।

ইরানের সাত কোটি ৪৭ লাখ জনসংখ্যার ৯৮ শতাংশ মুসলিম ধর্মাবলম্বী। যার মধ্যে প্রায় ৯৩ শতাংশ শিয়া, বাকিরা সুন্নি ধর্মাবলম্বী।

১৯৭৯ সালে ইরানি গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে রাজতন্ত্রের পতন ঘটায় এবং ইরানে একটি ইসলামী প্রজাতন্ত্র স্থাপন করে। ইরানে প্রচুর উল্লেখযোগ্য ভাস্কর্য শিল্প রয়েছে। বেশির ভাগই ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বদের স্মরণে নির্মিত।

যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—তেহরানের ফেরদৌসী স্কয়ারে স্থাপিত মহাকবি ফেরদৌসীর মূর্তি, ইরানের হামাদানে ইবনে সিনার মূর্তি, তেহরানের লালেহ পার্কে ওমর খৈয়ামের ভাস্কর্য, কবি হাফিজের ভাস্কর্য, খোরাসানের মাসাদে নাদির শাহর মূর্তি।

ইরানের ইসলামী বিপ্লবের নেতা আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনি (১৯০১-১৯৮৯) বা ইমাম খোমেনির একাধিক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল রয়েছে ইরানে। এর মাধ্যমে ইমাম খোমেনি এবং ইরানের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও বিপ্লবের আদর্শ তুলে ধরা হয়েছে।

আধুনিক মালয়েশিয়া

আধুনিক মুসলিম রাষ্ট্র হিসেবে মালয়েশিয়ার সাফল্য চোখধাঁধানো। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটির রাজধানী শহর কুয়ালালামপুর এবং পুত্রাজায়া হলো ফেডারেল সরকারের রাজধানী।

মুসলিম জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত মালয়েশিয়ার অবস্থান মুসলিম বিশ্বে ১৩তম। দুই কোটি ৮০ লাখের অধিক জনসংখ্যার দেশটির ৬০.৪ শতাংশ মানুষ মুসলিম।

রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। মালয়েশিয়ার সবচেয়ে বিখ্যাত ভাস্কর্য হলো ওয়াশিংটন মনুমেন্টের আদলে গড়া ন্যাশনাল মনুমেন্ট। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে শহীদ হওয়া বীরদের স্মরণে ১৫ মিটারের এই ভাস্কর্যটি উন্মুক্ত করা হয় ১৬৬৩ সালে।

প্রতীকীভাবে সাতজন বীরের প্রতিমূর্তির মাধ্যমে বিশ্বস্ততা, আত্মত্যাগ আর বন্ধুত্বের বিষয়টি এই ভাস্কর্যের মধ্য দিয়ে বোঝানো হয়েছে। মালয়েশিয়ার ভাস্কর্য শিল্প সনাতন ও আধুনিক ধারার এক স্বতন্ত্র মেলবন্ধন।

মালয়েশিয়ার অন্যান্য উল্লেখযোগ্য ভাস্কর্য হলো : বাতু কেভসের বিখ্যাত মুরুগান মূর্তি, কুচিং হলিডে ইন হোটেলের সামনে মার্জার মূর্তি এবং কনফুসিয়াসের মূর্তি।

তুরস্কজুড়ে কামাল আতাতুর্ক

ইউরোপ ও এশিয়ার সঙ্গমস্থলে অবস্থিত বলে তুরস্কের ইতিহাস ও সংস্কৃতির বিবর্তনে বিভিন্ন ধরনের প্রভাব পড়েছে।

গোটা মানব সভ্যতার ইতিহাসজুড়েই তুরস্ক এশিয়া ও ইউরোপের মানুষদের চলাচলের সেতু হিসেবে কাজ করেছে। তারপরও স্থাপত্য, চারুকলা, সংগীত ও সাহিত্যে তুরস্ক নিজস্ব পরিচয়ের সৃষ্টি করতে পেরেছে।

তুরস্কের জনসংখ্যা সাত কোটি ১৫ লাখ ১৭ হাজার ১০০। ৯৯.৮ শতাংশ মুসলিম। এককালের সারা মুসলিম জাহানের খলিফার দেশ সাংবিধানিকভাবে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হলেও বর্তমানে ক্ষমতায় রয়েছে ইসলামী দল।

সারা তুরস্কের বিভিন্ন স্থানে আধুনিক তুরস্কের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রথম প্রেসিডেন্ট কামাল আতাতুর্কের (জন্ম : ১৮৮১-মৃত্যু ১৯৩৮ সালে) রয়েছে অগণিত মূর্তি। একেকটি দৃষ্টিনন্দন ভাস্কর্যে একেক রকমভাবে আতাতুর্ক এবং তুরস্কের ইতিহাস, ঐতিহ্য বিবৃত করা হয়েছে।

কামাল আতাতুর্কের ভাস্কর্য ছাড়াও তুরস্কের উল্লেখযোগ্য ভাস্কর্য হলো : মর্মর সাগর তীরে পোতাশ্রয়ে অপূর্ব মর্মর মূর্তি, আঙ্কারাতে ইন্ডিপেনডেন্স টাওয়ারের পাদদেশে তুরস্কের জাতীয় সংস্কৃতির ধারক তিন নারী মূর্তি ও আন্তালিয়ায় এডুকেশন অ্যাক্টিভিস্ট তুরকান সায়লানের মূর্তি।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিস্ময়

আবুধাবি, আজমান, দুবাই, আল ফুজাইরাহ, রাআস আল খাইমাহ, আশ শারিকাহ এবং উম্ম আল কাইওয়াইন নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাত। আবুধাবি শহর ফেডারেশনের রাজধানী এবং দুবাই দেশটির বৃহত্তম শহর।

৫০ লাখের অধিক জনসংখ্যার দেশটি বিশ্বের অন্যতম ধনী দেশ। ৭৬ শতাংশ মানুষ মুসলিম। রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম।

জাঁকজমক আর চাকচিক্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত। নির্মাণ শিল্পে বিশ্বকে নিয়মিত তাক লাগাচ্ছে দেশটি।

আকাশছোঁয়া দালান, দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্য নিয়ে মরুর বুকে এক কল্পনা রাজ্য। আধুনিকতার সঙ্গে শিল্প-সমাহার ঘটছে এই মরুর দেশে।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের উল্লেখযোগ্য ভাস্কর্য হলো : বুর্জ আল খলিফার বিপরীতে সংস্থাপিত আরবীয় যুগলের মূর্তি, দুবাইয়ের ওয়াফি অঞ্চলের প্রবেশপথে পাহারাদারের প্রতিমূর্তি হিসেবে সংস্থাপিত কুকুরের মূর্তি, দুবাইয়ের ইবনে বতুতা মার্কেটে স্থাপিত মূর্তি

দৃষ্টিনন্দন কাতার

পারস্য উপসাগরের একটি দেশ কাতার। প্রায় সাড়ে সাত লাখ অধিবাসীর দেশটি পেট্রোলিয়ামের আয় থেকে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী দেশগুলোর একটি। মোট জনসংখ্যার ৭৭.৫ শতাংশ মুসলিম।

সুন্নি সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটির রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম।   শাসন ব্যবস্থা রাজতন্ত্র। উচ্চ আয়ের জন্য কাতারেও দেখা যায় ব্যয়বহুল ও দৃষ্টিনন্দন সব ভাস্কর্য ও স্থাপত্য। কাতারের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ভাস্কর্য হলো ‘হারনেসিং দ্য ওয়ার্ল্ভ্র’, মানে হচ্ছে বিশ্বের সঙ্গে সংযোগ।

কাতারের রাজধানী দোহায় কাতার সংস্কৃতি কেন্দ্রে কাতারা আম্পি থিয়েটারের সামনে স্থাপিত হয় পুরো পৃথিবীকে সংযোগ স্থাপন করা নারী প্রতিমূর্তির অবয়বের এই ভাস্কর্য।

এই ভাস্কর্যের মধ্য দিয়ে শিল্প, সংস্কৃতিতে পুরো বিশ্বের সঙ্গে সংযুক্ত হওয়ার কথা বলা হয়েছে। বিশ্বের নানা প্রান্তের পর্যটকের জন্য এটি একটি আকর্ষণীয় স্থান।