চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের চূড়ান্ত বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা দিতে আসা কতিপয় শিক্ষার্থী আবাসিক হল বন্ধ থাকায় থাকার জন্য মেস না পেয়ে বিকাল ৪ টা থেকে শহীদ তারেক হুদা হলের সামনে অবস্থান করছেন।
বিভিন্ন বিভাগের প্রায় ২০ জন শিক্ষার্থী থাকার জায়গার ব্যবস্থা করতে না পেরে শনিবার বিকাল ৪ টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তারেক হুদা হলের সামনে অবস্থান করছেন।
অবস্থান নেওয়া শিক্ষার্থীদের ৭ ঘণ্টা অতিবাহিত হওয়ার পর ও থাকার কোনো ব্যবস্থা হয়নি।
হলের সামনেই কাঁথা মুড়ি দিয়ে তাদের শুয়ে থাকতে দেখা যায়। ছবিটি রাত ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তারেক হুদা হলের প্রধান ফটকের সামনে থেকে তোলা।
করোনায় আটকে থাকা স্নাতক শেষ বর্ষের শিক্ষার্থীদের চূড়ান্ত পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চুয়েট কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানা যায়, স্নাতক শেষ বর্ষের প্রায় সাতশ শিক্ষার্থী নিয়ে আগামী ২২ ফেব্রুয়ারী এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
শিক্ষার্থীদের থেকে জানা যায়, প্রথমে এই পরীক্ষা অনলাইনে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো প্রশাসন। সেই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে হল বন্ধ রেখে ৩রা জানুয়ারি স্বশরীরে পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় চুয়েট প্রশাসন।
কিন্তু তখন অধিকাংশ শিক্ষার্থী মেসের ব্যবস্থা করতে না পারায় সে সময় পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত স্থগিত করে ফেব্রুয়ারি-মার্চে এই পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
সে অনুযায়ী শিক্ষার্থীরা ফেব্রুয়ারি মাসের শুরু থেকেই চুয়েটের পাশে পাহাড়তলি, উনসত্তর পাড়া ও শহরের বিভিন্ন এলাকায় মেস ভাড়া করতে শুরু করে। তবে যেসব শিক্ষার্থী মেস পাচ্ছিলেন না বা মেসে থাকা অবস্থায় বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হয়ে হয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিয়মিতই হল খুলে দেওয়ার দাবিতে সরব হতে দেখা যায়।
সেই ধারাবাহিকতায় শনিবার বিকেল ৪ টা হতে শিক্ষার্থীরা তারেক হুদা হলের সামনে বিছানা তোষক বিছিয়ে অবস্থান শুরু করে।
শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে জাফর আহমেদ জানান-আমরা সকল সম্ভাব্য থাকার জায়গায় চেষ্টা করেও কোথাও জায়গা না পেয়ে হলের সামনে অবস্থান করেছি।অন্তত এখানে অবস্থান করার দাবি আমরা ছাড়বো না।
শিক্ষার্থীদের জন্য এখন কিরূপ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে শহীদ তারেক হুদা হলের প্রভোস্ট ডক্টর জিয়াউল হক হায়দার জানান, “আমরাও চাচ্ছি, আমাদের শিক্ষার্থীরা ভালভাবে থেকে কোন রকম ভোগান্তি ছাড়া পরীক্ষা দিক ।
আমরা সবসময় শিক্ষার্থীদের পক্ষেই আছি । এখন হলের মালিক হলেন কতৃপক্ষ । কতৃপক্ষ অনুমতি দিলেই আমরা হল খুলে দিতে পারি ।”
এসব বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহম্মদ রফিকুল আলম বলেন, শহীদ তারেক হুদা হলের সামনে শিক্ষার্থীদের অবস্থান নেওয়ার বিষয়টি আমি শুনেছি।
এ ব্যাপারে কি করা যায় সেজন্য শিক্ষামন্ত্রী, বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরি কমিশনের সভাপতি ও সরকারের অন্যান্য উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তি বর্গের সাথে আলোচনা চলছে।
এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রাক্তনরাও যেকোনো শর্তে শেষ বর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য হল গুলো খুলে দেওয়ার দাবি জানাতে দেখা গেছে।
উল্লেখ্য চুয়েটে ছাত্রদের জন্য পাঁচটি এবং ছাত্রীদের দুইটিসহ মোট সাতটি হল আছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ছাত্রাবাসগুলোও বন্ধ আছে।