ছয় মাসে সাত দফা চিঠি চালাচালির পর অবশেষে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পে ‘ত্রুটি’র সমাধান হচ্ছে। ত্রুটিপূর্ণ চারটি পিলারের প্রতিটিতে অতিরিক্ত দুটি করে পাইল যুক্ত করে নতুন নকশার (রি-ডিজাউন) মাধ্যমে এ সমাধান করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তে রেল সংযোগ প্রকল্পে এ চারটি পিলারে নকশা-ত্রুটির কারণে ছয় মাস কাজ বন্ধ ছিল। এতে একই দিনে পদ্মা সেতুতে সড়ক যানের পাশাপাশি ট্রেন চালানো কঠিন হয়ে পড়ে।

রেলওয়ের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকটি বিশেষ নকশা পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু সেতু কর্তৃপক্ষ তা গ্রহণ করেনি। এ নিয়ে ছয় মাসে যুগান্তরে ছয়টি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী গোলাম ফখরুদ্দিন এ চৌধুরী বৃহস্পতিবার বিকালে যুগান্তরকে জানান, দীর্ঘ ৬ মাস পর ত্রুটির সমাধান হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেতুর দুই প্রান্তে ত্রুটি এলাকায় কোনো পিলার না ভেঙ্গে ১৪, ১৫, ২৫-১ ও ২৫-২ নম্বর পিলারে ২টি করে পাইল বাড়িয়ে ত্রুটি সমাধান করা হচ্ছে। জাজিরা প্রান্তের দুই পিলারের চূড়ান্ত নকশা পাঠানো হয়েছে পদ্মা সেতু প্রকল্প পরিচালকের কাছে।

গোলাম ফখরুদ্দিন বলেন, যে সময় নষ্ট হয়েছে তা পুষিয়ে নিতে ব্যাপক হারে কাজ চলছে। অতিরিক্ত লোকবল নিয়োগ করা হয়েছে। সব ধরনের নির্মাণ সামগ্রীর সরবরাহ বাড়ানো হয়েছে।

প্রতিদিন নির্ধারিত সময়ের অতিরিক্ত ২ ঘণ্টা করে কাজ করা হচ্ছে। আমরা আশা করছি, এর মাধ্যমে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই কাজ সমাপ্ত করতে পারব। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী পদ্মা সেতু উদ্বোধনের দিনই ট্রেন চালানো সম্ভব হবে।

সূত্র জানায়, রোববারের মধ্যে মাওয়া প্রান্তের সংশোধিত নকশাও পাঠানো হবে। নির্দেশনা অনুযায়ী, জাজিরা ও মাওয়া প্রান্তে ভার্টিক্যাল ৫ দশমিক ৭ মিটার এবং হরাইজনটাল ১৫ দশমিক ৫ মিটার রাখা হয়েছে।

এদিকে জাজিরা প্রান্ত থেকে মূল সেতুতে কাজ শুরু করার অনুমতি চেয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এ সপ্তাহেই কাজ করতে চেয়ে তিন দিন আগে চিঠি দিয়েছে তারা।

সূত্র জানায়, মূল সেতুতে রেলপথ নির্মাণে ২ হাজার ৯৫৯টি স্লাবের মধ্যে ২০৭৭টি স্লাব বসানো হয়েছে। বাকি রয়েছে ৮৮২টি। মাওয়া থেকে জাজিরা হয়ে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৪০ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করা হচ্ছে। সেতু কর্তৃপক্ষ দুই প্রান্তে ৭টি করে পিলার তৈরি করে দিয়েছে।

বাকি অংশে রেল ১৭৬টি পিলার স্থাপন করছে। এরই মধ্যে মাওয়া প্রান্তে ৬৮টি পিলারের মধ্যে ৬৫টি পিলার এবং ৬৭টি স্প্যানের মধ্যে ৫১টি বসানো হয়েছে। জাজিরা প্রান্তে ১০৮টি পিলারের মধ্যে ১০৫টি এবং ১০৬টি স্প্যানের মধ্যে ৪৪টি বসানো হয়েছে।

এ বিষয়ে রেলপথমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন  জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় ত্রুটি সমাধান হয়ে গেছে। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের দিনই সেতু দিয়ে যাত্রীবাহী ট্রেন চালানো হবে। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আমরা চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করছি।