প্রকৌশল গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা।
১. কী চাওয়া হলো সার্কুলারে ?
- মাধ্যমিকে নূন্যতম জিপিএ ৪.০০
- উচ্চ মাধ্যমিকে পদার্থ, রসায়ন, গনিত ও ইংরেজি তে মোট জিপিএ ২০ এর মধ্যে ২০ চাওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, এই চার সাবজেক্টে প্রতিটিতে জিপিএ ৫ থাকতে হবে।
- আবেদনকারীর মধ্যে সর্বোচ্চ ৩০০০০ জনকে মূল পরীক্ষার জন্য বাছাই করা হবে। বাছাইয়ের ক্ষেত্রে উচ্চ মাধ্যমিকের পদার্থ, রসায়ন, গনিত ও ইংরেজির নাম্বার বিবেচনা করা হবে।
২. পরীক্ষা পদ্ধতি কেমন হবে?
- এবছর MCQ পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়া হবে।
- বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং এর জন্য ৫০০ নম্বর এবং আর্কিটেকচারের জন্য ৭০০ নম্বর বরাদ্দ থাকবে।
- নেগেটিভ নম্বর থাকবে ২৫% হারে। ১০০ টি MCQ এর জন্য ২.৫ ঘন্টা সময় বরাদ্দ থাকবে।
- তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় এর মোট আসন সংখ্যা ৩২০১ টি। সংরক্ষিত আসন ২১ টি।
- ২ জুন কেন্দ্র সহ নির্বাচিত প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হবে। ১২ জুন দুপুর ১০ টা থেকে ১২.৩০ পর্যন্ত ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
৩. MCQ কিন্তু MCQ নয়
এবছর অনেকেই এমসিকিউ পরীক্ষা মনে করে ভর্তি পরীক্ষা সহজ মনে করছো। প্রতিটি এমসিকিউ কিন্তু লিখিতর মতো। অর্থাৎ, রিটেন টাইপ প্রশ্নের মতো McQ. Calculator ব্যাবহার করতে পারবে। প্রশ্ন পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা নিতে কুয়েট ১৮ সালের এবং ইঞ্জিনিয়ারিং প্রশ্ন ব্যাংকের বুয়েটের McQ question গুলো দেখতো পারো। অনেকেই মনে করলেন, রিটেন কেনো নেওয়া হচ্ছে না। এই McQ গুলো কিন্তু রিটেন টাইপের। প্রতিটা প্রশ্ন সমাধান করতে অর্ধেক পৃষ্ঠা লেগে যাবার কথা।
আরো একটা গোপন কথা বলি। প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় গুলো লিখিত খাতা কাটার সময় একটা strict rule follow করে। ধরুন, বুয়েটে ৬০ টি লিখিত প্রশ্ন করা হলো। এবার 60 জন শিক্ষক একটি গোল টেবিলের মধ্যে বসেন। তারপর একজন শিক্ষক একটি মাত্র প্রশ্ন সকল খাতার কেটে থাকেন। এতে স্বচ্ছতা আরো বেশি বৃদ্ধি পায় ।
লক্ষ্য করলে দেখবেন এবছর বুয়েট ২৪ হাজার পরীক্ষার্থী থেকে ৬ হাজার পরীক্ষার্থী লিখিত পরীক্ষার জন্য বাছাই করবে।
তারা কিন্তু স্বচ্ছ ভাবে ৬০০০ পরীক্ষার্থীর কাটতে পারবে। কিন্তু গুচ্ছতে ৩০০০০ পরীক্ষার্থীর লিখিত খাতা কাটা কোন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে সম্ভব না। যদি তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক একযোগে খাতা কাটে তাহলে কোন শিক্ষার্থী বেশি নম্বর কোন শিক্ষার্থী কম নম্বর পেতে পারে।
আমার মতে , অধিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য এরকম পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
৪. ৩০০০০ শিক্ষার্থী তো অনেক কম ?
প্রতিবছর এই তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ৩০ হাজার পরীক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারতো।
কিন্তু সেখানে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী ঘুরেফিরে পরীক্ষা দিতো বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে। এবছর অনেকে পরীক্ষা দিতে পারবে।
কিন্তু এখানেও একটা সমস্যা আছে। বুয়েটের ২৪০০০ আবেদনকারীর মধ্যে অনেকেই গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় সিলেকশন পেয়ে যাবে। আবার এমন অসংখ্য শিক্ষার্থী দেখা যাবে যারা বুয়েটে আবেদন করতে পারবে কিন্তু গুচ্ছ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে পারবে না।
৫. তাহলে স্বপ্ন কি এখানেই শেষ ?
ছোট থেকে প্রকৌশলী হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি শেষ করে যখন আবেদন করতে পারা যায় না তার কষ্টটা অনেক। প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় গুলো হয়তো তোমাদের মিস করবে।
বাংলাদেশের সাধারণ ও বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে কিছু প্রকৌশল বিষয় রয়েছে। প্রস্তুতি চালিয়ে যাও। হতাশ হয়ে থেকো না। মন খারাপ করিও না। ঐ যে উপরে একজন বসে আছেন তিনি সব ঠিক করে দিবেন।
আজ তুমি ব্যার্থ বলে কিছু মানুষ সার্থক। নিজেকে ছোটো করে দেখো না। তোমাদের ভবিষ্যত জীবন সুখের হোক।
আর একটা অনুরোধ, দিনশেষে নিজের দেশকে বা দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে গালি দিও না। আমরা যেমন আমাদের তেমন সিদ্ধান্ত মেনে নিতে হবে। দেশটা তো আমাদের।
তোমরাই হয়তো এমন কোনো সিদ্ধান্ত হয়তো ভবিষ্যতে পরিবর্তন করবে সেটাই প্রত্যাশা করি।
Stay home stay safe.
সাদমান সাদিক শোভন
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় , কুয়েট ।