আজ ৩ এপ্রিল ।
১৯২৯ সালের এই দিনে জন্ম গ্রহণ করেন ‘বিংশ শতকের শ্রেষ্ঠ প্রকৌশলী’ এর অভিধায় ভূষিত বিশ্বখ্যাত বাংলাদেশী স্থপতি ও পুরকৌশলী, যাকে ‘স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের আইনস্টাইন’ বলা হয়, সেই ড. ফজলুর রহমান খান ( ৩ এপ্রিল, ১৯২৯ – ২৭ মার্চ, ১৯৮২ ) ।
বুয়েট (তৎকালীন আহসানুল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ) থেকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং সমাপ্ত করে ১৯৫২ সালে তিনি সরকারী বৃত্তি এবং ফুলব্রাইট বৃত্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে গমন করেন।
ইউনিভার্সিটি অফ ইলিনয় অ্যাট আরবানা শ্যাম্পেইন থেকে স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং এবং তত্ত্বীয় ও ফলিত মেকানিক্সে যুগ্ম এমএস করার পর ফজলুর রহমান ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে।
ওনার নামেই করা হয়েছে ডুয়েটের একটি হলের নাম ‘ড. ফজলুর রহমান খান হল’
সিয়ার্স টাওয়ার, মালিকানা বদলের কারণে বর্তমান নাম উইলিস টাওয়ার। ১১০ তলা বিশিষ্ট এ ভবনটি ১৯৭৩ সাল থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত শুধু শিকাগো শহরের নয়, পুরো পৃথিবীর উচ্চতম ভবন ছিলো।
আর সেই সর্বোচ্চ ভবনটির রূপকার ছিলেন তিনি। শুধু উইলিস টাওয়ার নয়, তার অদূরে আরেকটি শততল ভবন ‘জন হ্যানকক সেন্টার’, এর সাথেও মিশে আছে এফ আর খানের নাম। এ দুটো গগনচুম্বী প্রজেক্টই তাকে এনে দেয় বিরল সম্মান আর বাংলাদেশের জন্য অশেষ গর্ব।
উইলিস টাওয়ারের যখন কাজ চলছে পুরো দমে, ১৯৭২ সালে তিনি ‘ইঞ্জিনিয়ার নিউজ রেকর্ড’-এর ‘ম্যান অব দ্য ইয়ার’ মনোনীত হন। ১৯৭৩ সালে এফ আর খান যুক্তরাষ্ট্রের ‘ন্যাশনাল একাডেমি অফ ইঞ্জিনিয়ারিং’-এর সদস্য নির্বাচিত হন এবং ১৯৭৪ সালে আমেরিকার ‘নিউজ উইক ম্যাগাজিন’-এর কভার ফিচারে তাঁকে মার্কিন স্থাপত্যের শীর্ষে অবস্থানকারী ব্যক্তি হিসেবে অভিহিত করা হয়।
এছাড়া ‘ইঞ্জিনিয়ারিং নিউজ রেকর্ড’ ম্যাগাজিন তাঁকে পাঁচবার (৬৫, ৬৮, ৭০, ৭১ এবং ৭৯ সাল) স্থাপত্য শিল্পে ‘সর্বোচ্চ অবদানকারী ব্যক্তিত্ব’ হিসেবে ঘোষণা করে।
মুসলিম স্থাপত্য শিল্পে তাঁর গবেষণা আর বিশেষ অবদানের জন্য তিনি ‘আগা খান স্থাপত্য পুরষ্কার’ লাভ করেন।
কম্পিউটার এইডেড ডিজাইন বা CAD-এর সূচনাও তাঁর হাত ধরে। ষাট-সত্তরের দশকে যখন পশ্চিমা প্রকৌশলীদের কাছেও কম্পিউটার খু্ব বেশি পরিচিত ছিলো না, তখন এই বাংলাদেশী প্রকৌশলীর হাত ধরেই পরিচিতি পায় ক্যাড। প্রকৌশলের আধুনিকায়নে তাঁর এ পদক্ষেপ ছিলো যুগান্তকারী।