“এশিয়ান সাইন্টিস্ট” নামের একটা ম‍্যাগাজিন প্রতি বছর এশিয়ার একশো জন সেরা গবেষকের তালিকা প্রকাশ করে। সিঙ্গাপুর ভিত্তিক এই ম‍্যাগাজিনটি ২০১৬ সাল থেকে এই কাজটি করে আসছে। https://www.asianscientist.com/as100/

এ বছরের তালিকায় বাংলাদেশের তিনজন বিজ্ঞানীর নাম স্থান পেয়েছে। এবং তিনজনই নারী বিজ্ঞানী। পুরুষ বা নারী গবেষক বলে তো আলাদা করে কিছু নেই। তবে ভালো লাগছে যে, বাংলাদেশের নারীরা বিজ্ঞান গবেষণায়ও পিছিয়ে নেই।

এই খবরটি আমাদের মেয়েদের জন‍্য আলাদা করে একটা অনুপ্রেরণার বার্তা। বিজ্ঞানী হওয়ার জন‍্য যেসব মেয়েরা চেষ্টা করে যাচ্ছে তাদের জন‍্য একটা শক্তি। গত বছর, সাইন্স ম‍্যাগাজিনের বর্ষসেরা তরুণ বিজ্ঞানীর তালিকায় উঠে এসেছিলো তনিমা তাসনিম নামে এক বাংলাদেশির নাম।

জলবায়ু পরিবর্তন থেকে শুরু করে কোভিড–১৯–এর মতো এ বছরের গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা মোকাবিলায় ভূমিকা রাখা গবেষক ও উদ্ভাবকদের এবার বেছে নেওয়া হয়েছে। ছবি- জনপরিসর

 

বাংলাদেশের মেয়েরা, শৈশব-কৈশোর থেকে সামাজিকভাবে যে ভয়ের সংস্কৃতিতে বেড়ে উঠে, সেটা সম্ভবত দুনিয়ার খুব বেশি দেশের মেয়েদের বেলায় হয় না। তারা রাস্তায় হাঁটতে পারে না। নির্ভয়ে সন্ধ‍্যায় বাড়ি ফিরতে পারে না। এমন অনেক ভীতির মধ‍্যে তাদের জীবন কাটে।

এমন ভয়ের সংস্কৃতিতে বেড়ে না উঠতে হলে, তারা হয়তো আরো অদম‍্য অপ্রতিরোধ‍্য হতো। তাদের ভিতর শৈশব-কৈশোর থেকে আরো বড়ো বড়ো স্বপ্ন বাসা বাঁধতো। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ‍্য, সেই সমাজ ব‍্যবস্থা এখনো হয়নি।

আমি বিশ্বাস করি, সরকার যদি সঠিক ব‍্যবস্থাপনা নিয়ে আগায়, তাহলে আগামী পঞ্চাশ বছরে বাংলাদেশ গবেষণা-উদ্ভাবনে আত্মনির্ভরশীল হবে। দেশের আবিষ্কার-উদ্ভাবন বিক্রি করে বহু অর্থ উপার্জন করতে পারবে। গ্লোবাল ইনোভেশন ইনডেক্সে লজ্জা নিয়ে তালিকার নিচে পড়ে থাকতে হবে না।

আমাদের ছেলে-মেয়েরা দেশের বাহিরে অসাধারণ কাজ করছে। জগৎখ‍্যাতদের সাথে প্রতিযোগিতা করে নিজের জায়গা করে নিচ্ছে। তাহলে তারা দেশে কেন পারবে না? প্রয়োজন শুধু উত্তম বীজতলা তৈরিতে মনযোগ দেয়া!

বাংলাদেশ থেকে মারি কুরি, ডরথি হজকিন, রোজল‍িন্ড ফ্রাংলিন, ফ্রান্সিসকো আরনল্ডের মতো বিজ্ঞানীরা বেরিয়ে আসুক—এটাই তো কাম‍্য!
……………

Rauful Alam

ড. রউফুল আলম: গবেষক, ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভানিয়া (UPenn), নিউজার্সি, যুক্তরাষ্ট্র।
ইমেইল: [email protected]