আমেরিকান কংক্রিট ইনষ্টিটিউট (এসিআই) এর ২০২০ আউটস্টান্ডিং ইউনিভার্সিটির তালিকায় সারাবিশ্বে ৫ম সেরা হিসেবে উঠে এসেছে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)।

গত ৭ ফেব্রুয়ারি “এসিআই অ্যাওয়ার্ড ফর স্টুডেন্ট এক্টিভিটিজ’ এর তালিকা প্রকাশিত হয়।
প্রতি বছরের মতো ২০২০ সালের কার্যক্রমের জন্য তালিকায় ‘এক্সিলেন্ট ইউনিভার্সিটি’ ও ‘আউটস্টান্ডিং ইউনিভার্সিটি’ এই দুটি বিভাগে অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়।

সারাবিশ্ব হতে ৩৩ টি বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘এক্সিলেন্ট’ এবং ৬৬টি বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘আউটস্ট্যান্ডিং অ্যাওয়ার্ড’ এর জন্য মনোনীত করা হয়েছে।

এসিআই স্টুডেন্ট চ্যাপ্টার চুয়েট ছাড়াও বাংলাদেশ থেকে আইইউটি চ্যাপ্টার ‘এক্সিলেন্ট’ ক্যাটাগরিতে স্থান করে নিয়েছে।

পুরকৌশল শিক্ষার্থীদের কংক্রিট বিষয়ে পেশাদার জ্ঞান বৃদ্ধি, পুরকৌশলী হিসেবে নেতৃত্ব প্রদানের ক্ষমতা অর্জন ও দেশ বিদেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে নেটওয়ার্কিং বৃদ্ধিই মুলত এই সংগঠনটির কাজ।

এসিআই অ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনীত বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে বাছাই প্রক্রিয়ায় মূলত এসিআই বিষয়ক কার্যক্রমে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখা বিভিন্ন মানদণ্ডে পয়েন্টের ভিত্তিতে অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়ে থাকে।

পদবীপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলি কংক্রিট আন্তর্জাতিক ম্যাগাজিনে প্রদর্শিত হবে এবং প্রতিটি অধ্যায়ের অর্জনকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য একটি ব্যানার পাবে।

এসিআই তাদের নিজস্ব মানদণ্ডে স্টুডেন্ট চ্যাপ্টারের এ সকল কর্মকাণ্ডের ভিত্তিতে এক্সিলেন্ট ও আউটস্ট্যান্ডিং স্টুডেন্ট চ্যাপ্টার অ্যাওয়ার্ড দিয়ে থাকে। তাই ২০২০ এর শুরু থেকেই এসিআই চুয়েট চ্যাপ্টারের সদস্যরা চেষ্টা করেছিলেন এসিআই এর মানদণ্ড অনুযায়ী চুয়েট চ্যাপ্টারকে পরিচালনা করত।

যাতে করে সমগ্র বিশ্বের অন্যান্য স্টুডেন্ট চ্যাপ্টারের মাঝে এসিআই চুয়েট চ্যাপ্টার একটি শক্ত অবস্থানে থাকতে পারে।

কংক্রিট বিষয়ক সেমিনার, পুরকৌশলে উচ্চশিক্ষা, করোনায় তহবিল সংগ্রহের মাধ্যমে দরিদ্র মানুষের সহায়তা, কর্মক্ষেত্রে সফল চুয়েটের পুরকৌশলীদের সাথে ছাত্রদের সংযোগ স্থাপন, বিদেশে পুরকৌশলীদের চাকুরী ইত্যাদি ছিল গত বছরের উল্লেখযোগ্য কাজ।

মূলত তাদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও চেষ্টার ধারাবাহিকতায় এই অ্যাওয়ার্ডটি অর্জন সম্ভব হয়েছে।

এসিআই চুয়েট শাখার উপদেষ্টা পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. জি এম সাদিকুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় পেশাগত চ্যাপ্টার না থাকার পরও আমাদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এসিআই হেডকোয়ার্টার চুয়েট কে কিছু শর্তসাপেক্ষে ‍স্টুডেন্ট চ্যাপ্টার প্রদান করে।

বিগত ২ বছরে চ্যাপ্টারটি ভিন্ন আঙ্গিকে অনেকগুলো প্রোগ্রাম আয়োজনের মাধ্যমে তার অবস্থানকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। আশাকরছি তা ভবিষ্যতে অব্যাহত থাকবে।

চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. সুদীপ কুমার পাল বলেন, ‘আমি জেনে আনন্দিত যে চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধীনে এসিআই ছাত্র অধ্যায়টি বিশ্বের বিভিন্ন শাখার মধ্যে আউটস্ট্যান্ডিং স্বীকৃতি পেয়েছে।

আমরা বিশ্বাস করি যে, কঠোর পরিশ্রম পুরস্কৃত হয় এবং এই অর্জন অবশ্যই আসন্ন বছরগুলিতে আমাদের আরও একটি মাইলফলকে পৌঁছাতে উৎসাহিত করবে।’

চুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এ ধরনের সাফল্য অবশ্যই আমাদের জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি ও গর্বের বিষয়।

আমরা চাই আমাদের শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যতেও এরকম বড় বড় সাফল্য নিয়ে আসবে এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে চুয়েটকে প্রতিনিধিত্ব করবে। আন্ডারগ্র্যাজুয়েট গবেষণার প্রতিও আমরা বিশেষ নজর দিচ্ছি।

সেরা গবেষণার জন্য অ্যাওয়ার্ড প্রদান, ফান্ড সংগ্রহ থেকে শুরু করে গবেষণার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে ইতিমধ্যে। আগামীতে চুয়েটে ‘সেন্টার রিসার্চ ল্যাবরেটরী’ তৈরির জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি যেখানে সকল বিভাগের শিক্ষার্থীরা গবেষণার জন্য উন্মুক্ত পরিবেশ পাবে।

উল্লেখ্য, সারাবিশ্বের দুই শতাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আমেরিকান কংক্রিট ইনষ্টিটিউট (এসিআই) এর ষ্টুডেন্ট চ্যাপ্টার রয়েছে। এসিআই চুয়েট স্টুডেন্ট চ্যাপ্টার বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রথম স্টুডেন্ট চ্যাপ্টার।

/সাঈদ চৌধুরী