ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছুদের অনেকেরই মন খারাপ।  গতকালকে শেষ ভরসার তিন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের দরজায় যাওয়ার আগেই যখন তাড়িয়ে দিয়েছে তখন আর যাই হোক ভাল থাকা যায় নাহ।

এখন দেখ, অনেকে অনেক ধরনের কথা বলবে কিন্তু যেটা নির্মম সত্য এবং বাস্তব যে তুমি ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাচ্ছ নাহ। এই জিনিসটা যত তাড়াতাড়ি মাথা থেকে মুছে ফেলে নতুন উদ্যেমে পড়াশোনা শুরু করতে পারবে ততই তোমাদের জন্য মঙ্গল।

এবার আসি, করোনার এই পরিস্থিতির জন্য তুমি আমি কেউই দায়ী নাহ। তাই যা হয়ে গেছে মানে হয়ে গেছে, সেসব ভেবে কি আর লাভ আছে? তবে একটা জিনিস বলি টপ লেভেলের তুখোড় মেধাবী মানুষ গুলোই ইঞ্জিনিয়ারিং এ পড়ার সুযোগ পায়।

অন্যান্য অনেক জায়গাতেই টপ লেভেলের গুলা যায় কিন্তু এই ইঞ্জিনিয়ারিং গুলোতে পার্সেন্টেজটা বেশি। মেডিকেলকে কেউ আবার এখানে টানতে যাবেন নাহ।

আমি জানি তোমাদের অনেকের এইসএসসিতে আশানুরূপ ফলাফল আসে নাই শুধুমাত্র জেএসসি এসএসসির ফলাফল দিয়ে বিচার করায়। কিন্তু বিশ্বাস কর ভাই প্রতিবছর ১৭ পয়েন্ট নিয়েও অনেকে ইঞ্জিনিয়ারিং তিনটায় টপ লেভেলে থাকে।

এমন তুখোড় মেধাবী অনেক মানে অনেক আছে যারা হয়ত এইবার পরীক্ষায় বসার সুযোগই পাচ্ছ নাহ। এই যে আমি লিখছি আমারও কিন্তু ১৯ পয়েন্ট আর দেড় মাস পর যেখানে শিক্ষাজীবনও শেষ। যাই হোক, তোমাদের এ নিয়ে আফসোস থাকলেও আফসোস এই প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর যারা তোমাদের মত এই রতন গুলোকে পাবে নাহ।

আমরাও হয়ত সেই রতন গুলোকে আমাদের সহকর্মী হিসেবে পাব নাহ। এই আক্ষেপ আমাদের সবার শুধু তোমার একার নাহ। অনেকে বলবে হয়ত এরা যেখানে যাবে সেখানেই ভাল করবে কিন্তু ভাই ভালটা কোথায় করবে শুনি??? জায়গাগুলোই তো পেল নাহ।

এবার কিছু পরামর্শ দেই। ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয় যেহেতু পাচ্ছ না কিন্তু একটু কষ্ট করলে অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং সাবজেক্টগুলোতে পড়তে পারবে। যদিও জানি সব জায়গার ফ্যাসিলিটিস সেইম নাহ সাথে ল্যাব, যন্ত্রপাতি শিক্ষক অনেক জায়গাতেই স্বল্পতা আছে।

জানি এখানে অনেকে আবার চুল্কাবে কিন্তু ভাই যতই মারামারি করেন নাহ কেন দিনশেষে এটা স্বীকার করতেই হবে যে প্রায় সব ধরনের সুযোগ সুবিধায় মানে ল্যাব, স্যার, যন্ত্রপাতি চার প্রকৌশল এগিয়ে।

ইঞ্জিনিয়ারিং সাবজেক্ট হিসেবে বলব এখন ইইই, সিএসই মোটামুটি সবগুলো সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে। তাই এই দুই বিষয় নিয়ে আমি তেমন কিছু বলব নাহ।

বাশটা সব থেকে বেশি খাইলা যাদের ইচ্ছা ছিল সিভিল, মেকানিক্যাল, আইপিই, বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং, কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, রোবোটিকস বা মেকাট্রনিক্স, পানি সম্পদ কৌশল, টেক্সটাইল, লেদার, আর্কিটেকচার, ইউআরপি এই সমস্ত বিষয়ে পড়ার। তাদের হয়ত এইসব বিষয়ে আর পড়াই হবে নাহ।

তবে কিছু কিছু বিষয় বিভিন্ন পাবলিকে খুজে পাবে। তবে পরামর্শ দিব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ও গুচ্ছ এর জন্য এখন তোমরা খুব ভাল ভাবে প্রস্তুতি নিতে থাকো।

একটা তালিকা দিচ্ছি ইঞ্জিনিয়ারিং এই বিষয়গুলো কোথায় কোথায় পাবেঃ

ইইই, সিএসই সব জায়গায় আছে তাই তা নিয়ে তালিকা দিচ্ছি নাহ।

সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং- SUST, HSTU, PUST, BSMRSTU, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ – SEC, MEC, FEC, BEC

মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং – SUST, HSTU, PSTU,

নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং – DU,

আইপিই- SUST, JUST,

পিএমই- SUST, JUST

বায়োমেডিক্যাল- JUST,

কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং/ এপ্লাইড কেমিস্ট্রি- DU, SUST, JUST, RU, BSMRSTU, NSTU, CU,

আর্কিটেকচার- KU, SUST, HSTU, BSMRSTU,

লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং – DU,

ইউআরপি- JU, PUST, KU,

রোবোটিকস/ মেকাট্রনিক্স- DU,

টেক্সটাইল- JUST, MBSTU, বুটেক্স অধিভুক্ত ৬ কলেজ, NITER, STEC

ম্যাটিরিয়াল সাইন্স ইঞ্জিনিয়ারিং- RU,

আরও আছে ইটিই, ইসিই, আইসিটি, আইসিই যা ইইই বা সিএসই এরই সাব ব্রাঞ্চ। তাই সেসব নিয়ে বলি নাই।

তবে আরেকটা জিনিস বলে রাখি বিভিন্ন ইঞ্জিনিয়ারিং সাইডে আসার জন্য আরও একটা ওয়ে আছে। পদার্থ, রসায়ন বা গনিত বিষয়ে বিএসসি করে মাস্টার্স এসবের বিভিন্ন সাইডে আসার সুযোগ আছে যদিও সবগুলোতে আসতে পারবে নাহ তবে কিছুগুলোতে যেতে পারবে।

তাই মন খারাপ না করে হতাশ না হয়ে আল্লাহ বা সৃষ্টিকর্তার নামে আবার পড়াশোনা শুরু করে দাও। স্বপ্নজয়ের যুদ্ধে এবার যে তোমাকে সফল হতেই হবে।

আর একটা জিনিস কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য এই লাইনটা মাথায় রাখবা,
জ্বলে পুড়ে মরে ছারখার,
তবু মাথা নোয়াবার নয়।

শুভ কামনায়,

Sazzadul Islam,
Dept. of Civil Engineering-’15,
CUET.

আরো পড়ুন