গতকাল থেকে বুয়েট admission testএর circularকে ব্যঙ্গ বা কটাক্ষ করে দেওয়া একের পর এক পোস্টে নিউজ ফিড সয়লাব।

দীর্ঘদিন ধরে বুয়েটে ভর্তি হবার স্বপ্ন যারা দেখে এসেছে কিংবা সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি নিয়েছে, কিন্তু ২৭০ নাম্বারের এই হাস্যকর thresholdএর পাল্লায় পড়ে সেই স্বপ্ন অনেকখানি অধরাই থেকে যাচ্ছে – তাদের জন্যে এই circular কতটা বেদনাদায়ক আর হতাশাজনক সেটা খুব সহজেই বুঝা যায়।

চলুন পুরা situationটা আরেকবার একটু ফিরে তাকানোর চেষ্টা করি, তবে একটু ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে। বুয়েট ভিন্ন কি করতে পারতো সেটা একবার ভেবে দেখি।

একটা জিনিস প্রথমেই মাথায় রাখা দরকার বুয়েটে ভর্তিচ্ছুক শিক্ষার্থীর সংখ্যা শুধু যে অস্বাভাবিকরকমের বেশি তাই না, আমাদের দেশে শুধু এই একটি বিশ্ববিদ্যালয়কে ঘিরে অপ্রয়োজনীয় রকমের একটা hype গড়ে তোলা হয়েছে।

এই hype কেন গড়ে উঠেছে বা কারা গড়ে তুলেছে – সেই আলোচনা অন্য আরেকদিন detailএ করা যাবে, তবে মূল কথা এই যে বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষা দিতে চাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা আর বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সক্ষমতার মধ্যে একটা বিশাল বিশাল পার্থক্য রয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে বুয়েটের সক্ষমতা কম কেন?

বুয়েট দীর্ঘদিন ধরে যেই practiceটা কঠোরভাবে follow করার চেষ্টা করে সেটা হচ্ছে নিজের ক্যাম্পাসের বাইরে কোনভাবেই ভর্তি পরীক্ষা না নেওয়া এবং পরীক্ষার হলে খুব কঠোরভাবে শুধুমাত্র বুয়েটের শিক্ষকদেরকেই পরিদর্শক হিসেবে রাখতে।

প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে এবং সবধরনের বিতর্কের উর্ধ্বে উঠে বুয়েট ভর্তি পরীক্ষার মান বজায় রাখতে এই কাজকে আমি সম্পূর্ণ সমর্থন করি।

আমাদের দেশ কোন ideal system এর ধারেকাছেও নাই, তাই নিজেদের campusএর বাইরে গিয়ে এবং বুয়েটের কাছে জবাবদিহি করতে হয় না এমন লোককে পরীক্ষার processএ involve করে transparency ensure করা possible বলে আমি মনে করি না।

নিকট অতীতে দেশের অন্যান্য পাবলিক পরীক্ষাগুলোর দিকে আরেকবার ফিরে তাকালেই বুয়েটের এই “অতিরিক্ত খুঁতখুঁতে” হওয়ার কারণ বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা না।

বুয়েটের নিজস্ব ক্যাম্পাসে লোকধারণ করার যেমন একটা সীমাবদ্ধতা আছে, তেমনি বুয়েটের শিক্ষক সংখ্যারও সীমাবদ্ধতা আছে। বিগত বছরগুলোর ভর্তি পরীক্ষার দিকে তাকালে খুব সহজেই বুঝা যায় এই সীমা ১০-১২ হাজারের আশেপাশে। বুয়েট ক্যাফেতে পর্যন্ত পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে এই সীমাকে বাড়ানোর জন্যে, এই সীমাকে আর বাড়ানো প্রায় অসম্ভব।

তাই বুয়েট বাধ্য হয়েই ভর্তি পরীক্ষা কারা কারা দিতে পারবে সেটা বাছাই করতে নির্ভর করে সেই imperfect পাবলিক পরীক্ষার উপরেই। SSCকে বুয়েট কখনোই বিশেষ পাত্তা দেয় নাই, HSCতে ২৩+/২৫ বা ৫৪০+/৬০০ এর মত নানা শর্ত বসিয়ে top ১০-১২ হাজারকে বাছাই করার চেষ্টা করেছে।

এই শর্তগুলোও অনেক সময়েই সমালোচিত হয়েছে, কিন্তু মানুষের এটা বুঝা প্রয়োজন বুয়েট নিজের ইচ্ছায় এই শর্তগুলো বসায় নাই, বরং HSCর রেজাল্টে ১০-১২ হাজারের চেয়ে অনেক বেশি মানুষ already ৫৪০+ পেয়ে বসে আছে বলেই বসাতে বাধ্য হয়েছে।

মরার উপর খাড়ার ঘা হচ্ছে করোনার ন্যূনতম সতর্কতা ensure করতে গিয়ে এবার সেই ১০-১২ হাজারকে অর্ধেক করে ৬ হাজারে নামিয়ে আনতে হয়েছে।

এইবার যখন HSCতে অটোপাশ ঘোষণা করা হল – শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন গ্রুপে দেখলাম আনন্দের জোয়ার। কিন্তু কেউ একবার প্রশ্ন করলো না বুয়েটের মত যেসব বিশ্ববিদ্যালয়কে এভাবে করে পঙ্গু বানিয়ে দেওয়া হল, তারা এখন student select করবে কিভাবে?

তাদেরকে তো এখন বাধ্য হয়ে নির্ভর করতে হবে ৩ বছরের পুরানো SSC resultএর উপর, যেটা আরও বেশি imperfect. এই প্রশ্নগুলো বা প্রতিবাদগুলো সেই সময় আসা কি উচিত ছিল না?

দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় যত অনিয়ম হবে হোক, সবকিছু ঠিক করে দেওয়ার ঠেকা বা দায়িত্ব একমাত্র বুয়েটের না। বুয়েট তার সাধ্যের মধ্যে যতটুকু পারে ভালো solution বের করে আনার চেষ্টা করে বলেই ৪ শিফটে preli নিচ্ছে ২৪০০০ ছাত্রকে সুযোগ দিতে, আলাদা দিনে আরেক দফা written exam নিচ্ছে।

এটা করতে যে বুয়েটের শিক্ষক আর stuffদের উপর দিয়ে কি অমানুষিক চাপ যাবে, সেটা ফেসবুকে বসে আন্দাজ করা সম্ভব না। বুয়েটও মানুষ, বুয়েটেরও সীমাবদ্ধতা আছে – কিন্তু বুয়েটের intentionটা যে good সেটা বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা না।

বুয়েট এটা খুব ভালোভাবেই বুঝে যে এটার ফলে হয়তো অনেকগুলা ভালো ছাত্রছাত্রীকে তাদের হারাতে হবে এবং এখানে lossটা শুধু এবং শুধুমাত্র বুয়েটেরই।

এই ভালো ছাত্রছাত্রীগুলো যে ভার্সিটিতেই যাবে – সেখানেই shine করবে, ওই ভার্সিটির নাম উজ্জ্বল করবে। এত কঠোর নাম্বারের সীমা বেঁধে দেওয়াটা বুয়েটের নির্মমতা না, বরং অসহায়ত্ব।

লেখকঃ সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার, গুগল।
সাবেক শিক্ষার্থী, কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, বুয়েট ‘১৪। 

আরো পড়ুন

আমাদের নতুন কমিউনিটি গ্রুপ Campus Connect