আরো দুটি বিশ্ববিদ্যালয়। এর একটি খোদ আমার জেলা কিশোরগঞ্জে আর অন্যটি ভাটির দেশের রাজধানী সুনামগঞ্জে। বাংলাদেশের ভাটি অঞ্চল হলো সেই অঞ্চল যেখানে প্রায় ছয় মাস পানি থাকে আর বাকি ছয় মাস শুকনো মৌসুম। বাংলাদেশের সুনামগঞ্জ, সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে ভাটি অঞ্চল বলা হয়। এর মধ্যে সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জের ভাটি অঞ্চলগুলো অপরূপ সুন্দর অঞ্চল।

কথা সেটা না। কথা হলো মাত্র কয়েকদিন আগে দুটো বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘোষণা আসলো। আজকে আবার আরো দুটি। এর মাধ্যমে বাংলাদেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা দাঁড়ালো ৫০টি। অবিশাস্য! তার উপর আছে প্রায় ১০০ টি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়। একেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি ১০ জন করেও ওয়ার্ল্ড ক্লাস স্কলার শিক্ষক থাকতো তাহলেও ১৫০০ জন স্কলার শিক্ষক থাকার কথা। আমিতো বাংলাদেশে ১০০ জন ওয়ার্ল্ড ক্লাস শিক্ষক দেখি না। কোথায় গবেষণা? কোথায় পোস্ট-ডক আর পিএইচডি?

যেইগুলো আছে সেগুলোর অবস্থা কল্পনাতীত খারাপ। আছে ১০ গ্লাস শরবত বানানোর মত চিনি আর আমরা ওই চিনি দিয়েই যত অতিথি আসে ততই পানি দিয়ে শরবত বানিয়েই যাচ্ছি। একসময় যে এটা আর শরবত থাকবে না সেই জ্ঞানটুকুও আমাদের নেই মনে হচ্ছে। এই খারাপগুলোকে ভালো করার পদক্ষেপ না নিয়ে আরো খারাপ বানানো কেমন পদক্ষেপ? মানে বলদামিরও একটা সীমা আছে।

এরা বিশ্ববিদ্যালয় মানে প্রজেক্ট, প্রজেক্ট মানে অবকাঠামো উন্নয়ন, কিছু মানুষের ভিসি প্রোভিসি হওয়া, কিছু দলান্ধের কর্মসংস্থান হওয়া। এর বাহিরে এরা বিশ্ববিদ্যালয় যে কি সেটা বোঝার ক্ষমতা নাই। আসলে এইসব বিশ্ববিদ্যালয় বানানো মানে হাজার হাজার কোটি টাকার অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্প বানানো। এইগুলো না করে বরং যেইগুলো আছে সেগুলোকে সত্যিকারের বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করার জন্য বরাদ্দ বৃদ্ধি করা উচিত। কিন্তু এই উচিত কাজটি বোঝার জন্যও কিছু উচিত মানুষ লাগবে। এই উচিত মানুষেরই বড় সংকট।