স্বাধীনতা ও বিজয়ের ৫০তম বছরে এসে আমাদের এই আত্ম সমালোচনার জায়গায় পৌঁছাতে হবে যে, বর্তমানের সূর্য সন্তান কারা, যোগ্য করা- তা সঠিক ভাবে নির্ণয় করা, তাঁদের মূল্যায়নের কাজ কি জাতি করছে? ৫০ বছরী দেশে কি যোগ্য লোককে সঠিক জায়গায় বসানোর বিধিবদ্ধ প্রসেস তৈরি হয়েছে?

একজন গবেষক, শিক্ষক উচ্চ শিক্ষা, ডক্টরাল কিংবা পোষ্ট ডক্টরাল শেষ করে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং পাবলিক সার্ভিসে ঢুকতে পারে কিনা! কিংবা সরকারি কাজে ইনপুট দিতে পারে কিনা?

বিভিন্ন ক্ষেত্রে উদ্ভাবকদের কি প্রশাসন থেকে প্রো এক্টিভ্লি যোগাযোগ করা হয়? প্রশাসন কি মেধাকে নার্চার করার কোন প্রসেস ডেভেলপ করেছে?

আমাদের রাজনীতিতে কি গবেষণা নির্ভর সিদ্ধান্ত নেয়ার প্রসেস আছে? রাজনৈতিক দলের পলিসি উৎপাদনের সাথে বৈশ্বিক জ্ঞান, শিক্ষা-গবেষণার, সমীক্ষা ইত্যাদির সম্পর্ক তৈরি হয়েছে?

চাটুকার-তোষামুদের দলীয়করণ বা নেপুটিজমের সংস্কৃতিকে উপড়ে সরকার ও রাজনীতিতে মেধা ও যোগ্যতার লালন কি প্রাধান্য পেয়েছে? দলীয় বুদ্ধিজীবীদের চিন্তা, পরিকল্পনা এবং প্রস্তাবনাকে চ্যালেঞ্জ করা কোন প্রসেস দেশে আছে?

জাতীয় সংসদের আইন প্রণয়নে, পিলিসি তৈরির কাজে শিক্ষা-গবেষণার গুরুত্ব, পাবলিক সার্ভে, সার্ভে ডিজাইন, কোয়ালিটেটিভ কিংবা কোয়ান্টিটেটিভ একাডেমিক সার্ভের গুরুত্ব কতটুকু? মন্ত্রী কিভাবে কিভাবে শিউর হন যে, তাঁর প্রণীত আইন নাগরিককে ভাল কিছু এনে দিবে?

প্রশাসনের সিদ্ধান্ত নেয়ার কাজে, উন্নয়ন প্রকল্পের ইনপুট নেয়ার কাজে জ্ঞান ও গবেষণার সম্পর্ক কতটুকু?

আমরা কি বিসিএস নির্ভর কিংবা দলীয় বিবেচনায় চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ, সাবেক আমলা, এমনকি বিচারক নিয়োগের প্রক্রিয়া নিয়ে আদৌ ভাবিত? আমরা কি গৎবাঁধা বিসিএস এর বদলে বিশেয়ায়িত প্রশাসনিক দক্ষতা তৈরির শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে ভাবছি?

প্রশ্নটা হচ্ছে, দলের সাথে জড়িত নয় এমন একজন জ্ঞানী, একজন গবেষক, একজন বুদ্ধিজীবী কি নিজের সাধ্যমত, যোগ্যতা মাফিক, ইচ্ছামত রাষ্ট্রকে সার্ভ করতে পারে, চাইলেই রাষ্ট্রকে কোন বিষয়ে নিজের অব্জার্ভেশন কিংবা পেশাদার ইনপুট দিতে পারেন?

যদি মেধাকে, শিক্ষা-গবেষণাকে, নতুন জ্ঞানকে রাষ্ট্র ধারণ করতে না পারে, প্রতি বছর ১৪ই ডিসেম্বরে এসে ‘মেধা’ হননের জন্য, মেধা ড্রেইন আউটের জন্য, বুদ্ধিজীবীতার জন্য, গবেষকের জন্য আমাদের আর্তনাদ কি ‘মায়াকান্না’ উৎসবের মত দেখায় না!

লেখকঃ ফাইজ তাইয়েব আহমেদ

টেকসই উন্নয়ন বিষয়ক লেখক।