২০১৩-২০১৮ সাল প্রায় তেইশ লক্ষ কলেজ গ্রেজুয়েট ইমিগ্রেন্ট আমেরিকায় এসেছে। তাদের মধ্যে এক-চতুর্থাংশ হলো ভারত থেকে আসা। চীন থেকে এসেছে প্রায় দশ ভাগ। বাংলাদেশ থেকে এসেছে ১.১ ভাগ।

কলোম্বাস একসময় ভুল করে আমেরিকাকে ইন্ডিয়া মনে করলেও, ভবিষ্যত আমেরিকায় যে ভারতীয়দের দাপট থাকবে—সেটা আগেও বহুবার লিখেছি। শুধু ২০১৯ সালে যতোগুলো H-1B ভিসা অনুমোদিত হয়েছে, তার ৭২% হলো শুধু ভারতীয়।

ভারতীয়দের শক্তিটা হলো শিক্ষা। চীনাদের শক্তিটা হলো শিক্ষা। এই শিক্ষা দিয়ে তারা শুধু আমেরিকা নয়, গোটা দুনিয়া রাজত্ব করে বেড়াচ্ছে। গোটা দুনিয়াতে তারা ছড়িয়ে পড়ছে। অথচ ভারতেও দারিদ্রতা আছে। ভারতেও খাবারের সমস্যা আছে। কিন্তু ওরা ওদের শিক্ষাকে শক্তভাবে গড়ে তোলার চেষ্টা করেছে। ক্রমাগত করে যাচ্ছে।

এর একটা প্রমাণ হলো, ভারতের ইউনিভার্সিটি বা রিসার্চ ইনস্টিটিউট থেকে পিএইচডি করে বহু ছেলে-মেয়ে সরাসরি ইউরোপ-আমেরিকায় পোস্টডক্টরাল গবেষণা করার জন্য যেতে পারে। বাংলাদেশে এমন একটা প্রতিষ্ঠান নেই যেখানে গবেষণা করে আপনি অনুরূপ করতে পারবেন!

আমেরিকার ইউনিভার্সিটিতে, হাসপাতালে, ইন্ড্রাস্ট্রিতে, সিলিকেন ভ্যালিতে সবর্ত্র ভারতীয়দের জয়জয়কার। এই সাফল্য কিন্তু ভারতেও একটা পজেটিভ প্রভাব ফেলছে। ভারতের অসংখ্য কিশোর-তরুণ তাদের পূর্ববর্তীদের সাফল্য দেখে অনুপ্রাণিত হয়। স্বপ্ন দেখে। বড়ো হওয়ার একটা দৃঢ় প্রত্যায় নিয়ে পরিশ্রম করে। আর রাষ্ট্রের উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থা এই অসংখ্য উদ্যোমী তরুণদের শ্রমকে, নেশাকে সার্পোট দেয়ার চেষ্টা করে।

অসংখ্য মেধাবীরা যে ভারত ছাড়ছে, এতে করে ভারত কিন্তু শূণ্য হচ্ছে না। গরীব হচ্ছে না। উল্টো দিন দিন ধনী হচ্ছে—ধনে, শিক্ষায়, গবেষণায়, বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদে। যেসব মেধাবীরা দেশে ফিরতে চায়, সরকার তাদের জন্য ধীরে ধীরে অনেক প্রকল্প চালু করেছে। সারা দুনিয়াব্যাপী ভারতীয় মেধাবীদের একটা নেটওয়ার্ক তৈরি হচ্ছে। গ্লোবাল এই নেটওয়ার্কের কারণে, ওরা নিজের দেশের অনেক অনিয়ম দূর করার লক্ষ্যে কাজ করতে পারছে!

আজকে চীনকে আপনি যে অবস্থানে দেখছেন, আগামী দুই দশকে ভারত সেই অবস্থানে যাবে। আর সেটার মূলে অন্যতম ভূমিকা রাখবে, গ্লোবাল স্কেলে তরুণদের গড়ে তোলার এই চেষ্টা!

আমাদের অসংখ্য তরুণ আছে। তাদের নিজেদের অদম্য স্পৃহা আছে। কিন্তু রাষ্ট্রীয়ভাবে তাদেরকে গ্লোবাল স্কেলে গড়ে তোলার কোন দৃঢ় প্রচেষ্টা কি আছে?
……………
@Rauful Alam