Aeronautical Engineering নামটি শুনতেই আমাদের সামনে ভেসে আসে প্লেনের ছবি।

আমাদের দেশের প্রেক্ষিতে সাব্জেক্ট টি খুবই নতুন।

আর এই কারনে এর সম্পর্কে আমাদের ধারনাও অনেক কম।অনেকেই এরোনটিকাল ইঞ্জিনিয়ার বলতে পাইলটই ভেবে বসেন…!!

কিনতু আসলে এরোনটিকাল ইঞ্জিনিয়ার দের সাথে পাইলটদের কোন সস্পরক নেই।

এরোনটিকাল ইঞ্জিনিয়ার দের সাথে সম্পর্কিত বিষয় গুলি হল-

1.Aircraft designing.
2.Aircraft engine designing.
3.Aircraft management.
4.Aircraft control tower management.
5.Aircraft management system etc.

এখন তাহলে প্রশ্ন আসতে পারে কি পড়ানো হবে তোমাদের??

এরোনটিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং ২টি বিভাগে বিভক্ত।

একটি Aerospace অপরটি Avionics ।

Aerospace:

Aerospace Engineering এ বিমানের মেকানিক্যাল অংশ নিয়ে পড়ানো হয়। এই বিভাগের আলোচ্য বিষয়গুলো হল :

1. Aerospace Propulsion
2. Applied & High Speed Aerodynamics
3. Aerospace Vehicle Design
4. Rotorcraft Performance
5. Weapons Engineering
6. Aircraft Structural Design
7. Aircraft Loading & Structural Analysis
8. Space Engineering etc

Avionics:

Avionics এ বিমানের ইলেক্ট্রিক্যাল অংশ পড়ানো হয়। এই বিভাগের আলোচ্য বিষয়গুলো হল:

1. Avionics Engineering
2. Radar Engineering
3. Satellite Communication
4. Optoelectronics
5. Optical Fiber Communication
6. Microwave engineering
7. Aero-measurement & Instrumentation
8. Guidance, Navigation & Control etc

তাই কারও যদি মেকানিকাল বা ইলেক্ট্রিকাল এমঙ্কি কম্পিউটার সাইন্স পড়ার ইচ্ছা থকে তবে Aeronautical Engineering থেকেই তার সাদ তুমি নিতে পারবে। কারন Aeronautical Engineering এগুলা সব নিয়েই আলোচনা করে থাকে।

এখন আসি সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয় অর্থাৎ job sector নিয়ে।

Aeronautical Engineering বাংলাদেশে খুবই নতুন আর এই কারনে এটি সম্পর্কে মানুষের ধারনা অনেক কম। তাই অনেকেই বলে Aeronautical Engineering
পড়লে বেকার বসে থাকতে হবে।

এখন বিষয়টি নিয়ে কথা বলা যাক- বাংলাদেশে বর্তমান সময়ে এভিয়েশন কোম্পানি আছে তিনটি আর এ সেক্টর টি একটি developing sector।

তাই অদুর ভবিষ্যতে এভিয়েশন কোম্পানির সংখ্যা যে আরও বাড়বে তা আশা করতে দোষ নেই ।

আর Aeronautical Engineering পড়ান হই শুধুমাত্র Mist তেই। আর প্রতি বছর গ্রাজুয়েট হচ্ছে মাত্র ৫০-৬০ জন। তাহলে Aeronautical Engineering পড়ে বেকার বসে থাকতে হবে ভাবাটা কি বোকামি নই? 😛

(বঙ্গবন্ধু এভিয়েশন বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন যুক্ত হয়েছে)

আর যদি আমরা আসি scholarship এর কথাই, তাহলে একটা কথাই বলা যায়-  Aeronautical Engineering এ পড়ে চাকরি পাওয়ার থেকে স্কলারশিপ পাওয়া সহজ :p

তবে ফান্ডিং এর জন্য চাই ভাল সিজিপিএ সাথে ভাল জি আর ই স্কোর 😀

আর এখন আসি চাকরি তে বেতন এর কথায়।

একটি কথা অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়াররা হচ্ছে বিশ্বের “Most Highly Paid” ইঞ্জিনিয়ার।

একটি উদাহরণ দিলে পরিস্কার ভাবে বুঝতে পারবে, NASA তে ১জন অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারের মাসিক বেতন ৯৭,৪১১ US Dollar এবং বোয়িং এ বার্ষিক বেতন ৭০,০২৩ US Dollar, আর যা বাংলাদেশী টাকায় কত তা তোমরা হিসেব করে বের করো।

আর, দেশীয় এয়ারলাইন্স গুলোতে বেতন অন্যান্য ইঞ্জিনিয়ারিং শাখার তুলনায় মোটামুটি বেশ ভালো অঙ্কেরই বলা চলে।

Aeronautical Engineering পড়েই যে তুমি NASA তে বা ROLLS ROYCE এ চলে যাবা আর মাসে মাসে কাড়ি কাড়ি টাকা বেতন পাবা এমন কোন কথা নেই।

NASA বা ROLLS ROYCE এ যেতে হলে তোমাকে সেই রকমের যোগ্যতা নিয়েই যেতে হবে। আবার চাকরি বাকরি না পেয়ে সেক্টর চেঞ্জ করে অন্য চাকরি করা লাগবে ব্যাপারটা এমনো না।

পরিপূর্ণরূপে Aeronautical Engineer হওয়ার জন্য গ্রাজুয়েট হওয়ার পর LICENSED AERONAUTICAL ENGINEER হওয়ার জন্য তোমাকে ৩-৪ বছরের একটি কোর্স করতে হয়, যে সময়ে তোমাকে trainee engineer(তবে ১ বছরের মধ্যে ASSISTANT AERONAUTICAL ENGINEER এ প্রমোটেড হওয়া যায়) হিসেবে থাকতে হবে।

এই course টি প্রাইভেট ভাবে করতে গেলে তোমাকে ৮-১০লক্ষ টাকা গুনতে হবে।

যদি দেশে করতে চাও তবে দেশের এভিয়েশন কোম্পানিগুলা তা অফার করে তবে তোমাকে তাদের সাথে বন্ড সাইন করে তাদের কোম্পানি তে চাকরি করতে হবে।

তবে কিছু কিছু কোম্পানি এখন এ ক্ষেত্রে বন্ড সাইন করানো বন্ধ করেছে । তারা course টি তোমাকে ফ্রি তে করাবে। কিন্তু trainee engineer থাকা কালীন স্যালারি একটু কম। তবে বর্তমান প্রেক্ষিতে অন্যান্য ইঞ্জিনিয়ার দের থেকে ভাল স্যালারিই আশা করা যায়।

আর লাইসেন্সড Aeronautical Engineer হওয়ার পরের বেতন কত তা না হয় তোমরা একটু গুগল করেই নিও :p

Aeronautical Engineering Department, MIST

Aeronautical Engineering Department, MIST

বিশ্বের প্রায় ৬২টি দেশে অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ানো হয়। এ দেশ গুলোর মধ্যে অন্যতম হল China, USA, UK, Russia, Italy, Germany, Canada।

এশীয় দেশগুলোর মধ্যে China ও India তে সবচেয়ে বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ানো হয়। এছাড়াও Japan, Indoneshia, Korea, Malaysia প্রভৃতি দেশ সমূহে অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যপকভাবে জনপ্রিয়।

বাংলাদেশ ও বিশ্বের অন্যান্য দেশে এর চাহিদা খুবই বেশি। বাংলাদেশে অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারদের স্বল্পতার কারণেই airlines কোম্পানিগুলো বর্তমানে দেশের বাইরের ইঞ্জিনিয়ারদের দিয়ে কাজ চালাচ্ছে।

তাই এই বিভাগের শিক্ষার্থীরা airlines কোম্পানিগুলোতে চাকরি নিতে পারবে।

এছাড়াও দেশের বাইরের airlines কোম্পানিগুলোতেও চাকরি করতে পারবে।
একটা প্রশ্ন সবার মনে আসতেই পারে যে, বাংলাদেশে যেহেতু অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার নেই,  তাহলে এই বিষয়টি পড়াচ্ছে কারা?

এই প্রশ্নের উত্তরে আমি বলব

– MIST তে অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগটির Faculty member হচ্ছে ‘Bangladesh Air Force` এর ইঞ্জিনিয়াররা এবং এই বিভাগকে আরও সমৃদ্ধ করতে Indian Air Force এর ২ জন ইনস্ট্রাক্টর এখানে কর্মরত আছেন।

আর যাদের mechanics পছন্দ তাদের জন্য আছেন MECHANICAL ENGINEERING LEGEND খ্যাত ডক্টর তাহের স্যার।

guest faculty হিশেবে আছেন সব জিনিয়াস স্যাররা।

আর যদি জানতে চাও ল্যাব ফেসিলিটিস সম্পরকে তাহলে বলব দেশের অন্যতম অত্যধুনিক ল্যাব হচ্ছে আমাদের PROPULSION lab।

যেখানে রয়েছে একটি FOUGA MAGISTER 170 AIRCRAFT. আরও রয়েছে RADAR LAB সহ আরো অনেক ল্যাব।

Aeronautical Engineering Department Lab, MIST

তাই আকাশকে চ্যালেঞ্জ জানাতে চাইলে অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংকে ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নিতে পারো ।

লেখক-
Refayate Manju Maruf
AE, MIST – 2011
Abdullah Al tasim
AE-MIST 2016