সিকৃবি ক্যাম্পাসের মেইন গেইট দিয়ে প্রবেশ করলে প্রশাসনিক ভবনের একটু পরেই অত্যাধুনিক ডিজাইন সমৃদ্ধ প্রযুক্তি নির্ভর একটা বিল্ডিং যেকারো চোখে পড়বে । হ্যাঁ এইটা এগ্রিকালচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি অনুষদ ভবন । ভাবছেন সাবজেক্ট রিভিউ দিতে গিয়ে বিল্ডিং বর্ননা দিচ্ছি ! তবে শুনেন । এই বিল্ডিংটা সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এগ্রি ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের শিক্ষকদের করা ডিজাইনেই সম্পন্ন হয় । বাহ ! এগ্রি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে সিভিলের কাজ করা যায় !! হ্যাঁ সম্ভব । এই বিষয়ে আর বলছি না ।

মনে রাখবেন , মনের রিভিউ হচ্ছে সবচেয়ে বড় রিভিউ । অমুক সাবজেক্টে পড়ে এইটা হবে ওইটা হবে চাকচিক্য কথায় না ভেসে নিজের মনে যেই বিষয়ে সন্তুষ্টি কাজ করে ওই দিকেই যাবেন . .

এইবার আসেন একদম মনের কিছু কথা বলি – যারা মুখস্তবিদ্যাকে দুচোখেই দেখতে পারেন না , যারা সৃজনশীলনতায় বিশ্বাসী , যারা পৃষ্টার পর পৃষ্টা ময়না পাখির মত মুখস্ত করতে চান না যাদের মাথায় পদার্থ ,গনিত ,মেকানিক্স এই সব ঘুরপাক খায় তাদের উদ্দেশ্যে বলছি । বুয়েটে পড়ার স্বপ্ন ছিলো ! ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন ছিলো !

তাদের বলছি । চোখ বুঝে এগ্রি ইঞ্জিনিয়ারিং এ প্রবেশ করেন । মনে রাখবেন ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার জন্য ক্যামব্রিজেই পড়তে হবে এমনটা ভাবা বোকামি । আপনি আপনার অবস্থান থেকে সর্বোচ্চ দিয়ে যান , যেই অবস্থাতেই থাকুন আপনি সফল হবেনই ।
এইবার প্রবেশ করছি আমাদের Agricultural Engineering and Technology-তে

Be Modern!  এগ্রিকালচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং, কৃষি উন্নয়নে প্রযুক্তির ছোঁয়ায়..

বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি আনয়ন এবং খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের লক্ষ্যে কৃষি সম্পর্কিত যাবতীয় শাখাসমুহের পাশাপাশি কৃষিতে আধুনিক প্রকৌশল প্রযুক্তি একান্ত অপরিহার্য।এটি উপলব্ধি করে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৬৪সালে এগ্রিকালচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর যাত্রা শুরু হয়। এর সিলেবাস ফিজিক্যাল, বায়োলজীক্যাল ও সোস্যাল সাইন্স এর সম্মিলন যা সিভিল, ওয়াটার রিসোর্স, মেক্যানিক্যাল, ইলেকট্রিক্যাল এন্ড এনভাইরোনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং কে সংযুক্ত করে।

এর মুল বিষয়গুলো হল

  • ফার্ম মেশিনারি,
  • ইরিগেশন এন্ড ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট,
  • ল্যান্ড ড্রেনেজ এন্ড রিক্লেমেশান,
  • সারফেস এন্ড গ্রাউন্ড ওয়াটার রিসোর্স,
  • ইন্টিগ্রেটেড ওয়াটার রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট,
  • ক্লাইমেট এন্ড এগ্রিকালচার,
  • পোস্ট হারভেস্ট টেকনোলজি,
  • রিনিউএবল এনার্জি এন্ড বায়োরিসোর্স,
  • সিমুলেশান এন্ড মডেলিং,
  • লো -কস্ট হাউজিং,
  • ফার্ম এনভায়রোনমেন্ট এন্ড স্ট্রাকচার,
  • স্টোরেজ ফ্যাসিলিটিস এন্ড কম্পিউটার প্রোগ্রামিং।

কোথায় পড়বেন :

তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই বিষয়ে পড়ানো হয়:

১। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি)
তে ১৯৬৪সাল থেকে পড়াশোনা করে অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রী তাদের কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করে চলেছে।
বর্তমানে প্রতিবছর বি.এস.সি কোর্সে ১০০ জন করে শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে।

২। হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়(হাবিপ্রবি)এ ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টি -র আওতায় ২০০৯সাল থেকে বি.এস.সি ইন এগ্রিকালচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং এ শিক্ষাথীরা পড়াশোনা করে আসছে।বতর্মানে প্রতিবছর ৬০ জন ছাত্র-ছাত্রী এই বিষয়ে অধ্যয়ন করছে।

৩। আমাদের চিরসবুজ ক্যাম্পাস সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (সিকৃবি) তে ২০১২ সাল থেকে এগ্রিকালচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং এ বি.এস.সি কোর্সে প্রতিবছর ৬০ জন করে ভর্তি হচ্ছে। ষষ্ঠ ব্যাচ হিসেবে এক ঝাক তারুন্যদীপ্ত ভবিষৎ ইঞ্জিনিয়ারদের হাতছানি দিয়ে ডাকছে আগামী. . .

এছাড়াও বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এও এগ্রি ইঞ্জিনিয়ারিং এর বিভিন্ন বিভাগে এম.এস.সি করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।

এবং শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এ এগ্রিকালচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট এর আওতায় গবেষণা কর্ম চলছে ।

ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে আপনি :
সারাদেশের ইঞ্জিনিয়ারদের নিবন্ধন ও তাদের সব ধরণের কার্যক্রম পরিচালনা করে ইঞ্জিনিয়ার’স ইন্সটিটিউশন,বাংলাদেশ (আই.ই.বি)।এর অনুমোদিতরা শুধু নিজেকে একজন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে দাবি করতে পারে।

আই.ই.বি এর মোট ৭ টি ডিভিশন বা বিভাগ রয়েছে। সেগুলো হল:
১। সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং
২। মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং
৩। ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং
৪। কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং
৫। এগ্রিকালচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং
৬। কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং
৭। টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং
এর মধ্যে একটি অন্যতম বিভাগ হল এগ্রিকালচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং যা ১৯৯৪ সাল হতে আই.ই.বি তে একটি স্বতন্ত্র বিভাগ হিসেবে তার কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছে।

বিদেশে উচ্চশিক্ষা :

বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য এগ্রিকালচারাল ইঞ্জিনিয়াররা অনেক সুযোগ পেয়ে থাকেন।এপ্লাইড সায়েন্স সম্পর্কিত বিদেশে এমন কোনো বিশ্ববিদ্যালয় নেই এই বিষয়ে পড়ানো হয় না।বতর্মানে প্রচুর শিক্ষাথী বেলজিয়াম,সুইডেন, ইংল্যান্ড, আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, চায়না, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, মালেয়শিয়া, ইন্ডিয়া ও বিভিন্ন দেশে উচ্চশিক্ষা নিচ্ছে। তাছাড়া একজন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে সায়েন্স এর অন্য বিষয়েও প্রচুর পড়াশোনার ও গবেষণার সুযোগ রয়েছে।

বাংলাদেশে কর্মক্ষেত্র :

১। বাকৃবি, হাবিপ্রবি , সিকৃবি এবং অনান্য কৃষি , বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শিক্ষকতা)

২।বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি)

৩।বরেন্দ্র বহুমূখী উন্নয়ন কতৃপক্ষ(বিএমএ)

৪।কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর(ডিএই)

৫।বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি)

৬।বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিরি)

৭।বাংলাদেশ গম গবেষণা ইনস্টিটিউট

৮।বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ নিউক্লিয়ার এগ্রিকালচার (বিনা)

৯।বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল

১০।পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড

১১।বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড

১২।বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বার্ড)

১৩।বাংলাদেশ ইক্ষু গবেষণা ইনস্টিটিউট

১৪।বাংলাদেশ সুগার এন্ড ফুড ইনডাস্ট্রিস কর্পোরেশন

১৫।রুরাল ডেভেলপমেন্ট একাডেমি (আর.ডি.এ)

১৬।নদী গবেষণা ইনস্টিটিউট

১৭।ওয়াটার রিসোর্সেস প্লানিং
—————————–

মনে রাখবেন
One man’s ‘magic’ is another man’s engineering. ‘Supernatural’ is a null word.
So You are Welcome in our Family . .

লিখেছেন-
Uttam Kumar
Agri Engineering