স্থপতি Aupee Karim

ছোটপর্দা কাঁপানো জনপ্রিয় অভিনেত্রী অপি করিম। কী মঞ্চ, কী টিভি নাটক অথবা চলচ্চিত্র এমনকি নাচ- সব ক্ষেত্রেই তার দ্যুতি ছড়ানো প্রতিভা। তার প্রাণবন্ত হাসি যেন দর্শকদের মন ভরিয়ে দেয়। তার উপস্থিতি দর্শকের বিপুল আগ্রহের বিষয়।

অপি করিম ছোটবেলায় হতে চেয়েছিলেন একজন ‘রাজমিস্ত্রি’! তখন তার ধারণা ছিল, রাজমিস্ত্রিরাই বড় বড় বাড়ি বানান। আর সে বাড়ি বানানোর ইচ্ছাতেই তার রাজমিস্ত্রি হতে চাওয়া।

শেষ পর্যন্ত সেই ইচ্ছাকে তিনি নিয়ে গিয়েছেন অনেক দূর….. হয়েছেন, মানে স্থপতি। বুয়েট থেকে স্থাপত্যবিদ্যায় ডিগ্রি নিয়েছেন তিনি।

এইযে অপি করিম নামে যাকে চিনছেন, যে অপি করিমের অভিনয়ে মুগ্ধ হচ্ছেন- তার আসল নাম কিন্তু অপি করিম না!

অবাক হচ্ছেন? অপি করিমের ভালো নাম ‘সৈয়দা তুহিন আরা করিম’ হলেও প্রিয় মানুষরা তাকে ডাকেন ভিন্ন নামে। পরিবারের কেউ ডাকেন অর্পিতা, কেউবা অপরূপা।

আর বিদেশি বন্ধুদের কাছে ‘সাইদা’ নামে তার পরিচিতি থাকলেও স্কুলের সবাই তাকে ডাকতেন ‘তুহিন’ নামে।

‘কচি কাঁচার আসর’-এর প্রতিষ্ঠাতা বিখ্যাত লেখক রোকনুজ্জামান খান (দাদাভাই) তার নাম দিয়েছেন ‘অপি করিম’।

বিখ্যাত নাটক ‘রক্ত করবী’র নন্দিনী চরিত্রে অভিনয় করে তার নিজের নাম প্রায় ‘নন্দিনী’ই হতে বসেছিল একসময়।

অনেকেই অভিনেত্রী অপি করিম কে চিনেন কিন্তু হয়তো চিনেন না স্থপতি অপি করিম কে । আজকে আপনাদের কে পরিচয় করিয়ে দিবো স্থপতি অপি করিমের সাথে।

সৈয়দা তুহিন আরা অপি করিম

উনার (জন্ম: ১ মে, ১৯৭৯) যিনি মূলত পরিচিত বাংলাদেশী মডেল এবং অভিনেত্রী হিসেবেই। অপি করিম ১৯৯৯ সালে লাক্স ফটোজেনিক প্রতিযোগিতায় ‘মিস ফটোজেনিক’ খেতাব অর্জন করেন।

২০০০ সালে হন লাক্সের মডেল। তিনি বাংলা টেলিভিশন নাটকে এবং বাংলা চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন।মুভি, নাটক, টেলিফিল্ম, উপস্থাপনা, সিনেমা, মঞ্চ, বিজ্ঞাপন, নাচ অনেক ক্ষেত্রেই দেখিয়েছেন প্রতিভা।

ধারাবাহিক ও খণ্ড নাটকের পাশাপাশি ‘ব্যাচেলর’ ছবিতে অভিনের মাধ্যমে অপি করিম ব্যাপক দর্শক জনপ্রিয়তা লাভ করেন। পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও।

তবে আমরা অনেকেই তার অন্য একটা দিক সম্পর্কে জানিনা শুধু ছোটপর্দায় বা রুপালি জগতে নয়, পড়াশোনার ক্ষেত্রেও ছিলেন সমান পারদর্শী।

পড়েছেন Bangladesh Air Force Shaheen College থেকে এবং ২০০৫ সালে বুয়েটের স্থাপত্য বিভাগ থেকে স্নাতক শেষ করেন।

পরবর্তীতে জার্মানির Anhalt University of Applied Sciences থেকে মাস্টার্স শেষ করেন।

উচ্চশিক্ষা নিয়ে দেশে ফেরার পর অপি করিমের পরিবর্তনের চিত্রটা বেশ ভালোভাবেই পরিলক্ষিত হয়।

তিনি অভিনয়ের পরিবর্তে শিক্ষকতা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। যোগ দেন আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (এআইইউবি)-এ।

অভিনয়ে যেমন দক্ষ ছিলেন, তেমনি শিক্ষকতাতে ও নিজের দক্ষতা দেখিয়ে চলেছেন তিনি।

তার এক ছাত্র বললেন,
‘মেম যে বাংলাদেশের এত বড় একজন জনপ্রিয় অভিনেত্রী তা ক্লাসের সময় তার কোনো কথায় বা কাজে তিনি আমাদের বুঝতে দেন না। অসাধারণ ক্লাস নেন।

অপি করিম জানালেন, অন্য সবকিছু যেমন তিনি মন থেকে করেছেন, তেমনি শিক্ষকতাও মন দিয়ে করার চেষ্টা করেন।

অনেক অনেক শুভকামনা অপি করিমের জন্য।