বিশ্বাস করুন,
কখনোই সে ব্যাংকে জব করবে বলে টারবাইন, পাম্প, জেনারেটর কিংবা রেফ্রিজারেশনের মত টপিকগুলোকে আত্মস্থ করে না।

ছোট একটা বাচ্চাকে জিজ্ঞেস করলে সে আনমনেই বলে দেয়, “ডাক্তার/ইঞ্জিনিয়ার” হতে চায়।

ইয়েস সোসাইটি,
এটা ৯৫% মানুষের ছোটবেলার ড্রিম যে, সে ডাক্তার নয়তো ইঞ্জিনিয়ার হবে।

ক্লাস এইট থেকে নাইনে উঠার সময় যুদ্ধ করে Science পাওয়া, SSC তে রেজাল্ট ভালো করে ভালো কলেজে ভর্তির প্রচেষ্টায় টিকে থাকা, HSC তে রেজাল্ট অক্ষুণ্ণ রেখে ভর্তি যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়ে শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে টিকে স্বপ্নের সোপানে পা দেয়া। অথবা ভালো মানের প্রাইভেট ভার্সিটিতে পা রেখে স্বপ্নের পথে এগিয়ে যাওয়া।

জানেন???
তার স্বপ্ন কিন্তু এসি রুমে বসে ফাইলপত্রে সাইন করা নয়। কিংবা অফিস আওয়ারে চেয়ারে বসে কফি খাওয়া নয়।

তার ইচ্ছে, চারটি বছর ধরে সে যেই P-V কিংবা T-S ডায়াগ্রামগুলো শিখেছে, Gear, Shaft, Molding, Refrigeration & Air Conditioning, কিংবা Fluid Mechanics & Machinery’র যে ফাংশনগুলো এতদিন বইয়ের পাতায় পড়েছে তা নিজ চোখে দেখে তৃপ্ত হওয়া।

কিন্তু, আজকে আমাদের সোসাইটিতে থেকে সে শিক্ষার্থীটি তার ইচ্ছেপূরণে অক্ষমতা অর্জন করছে দিনকে দিন।

আগে মানুষ কিছুদিন জব করার পর অতিষ্ট হয়ে BCS দেয়ার চিন্তা করতো। আর এখন অবস্থা এতটাই খারাপ যে, ফার্স্ট ইয়ারে থাকতেই ইঞ্জিনিয়ারিং সাব্জেক্টের ফাঁকে ফাঁকে পড়ার টেবিলে শোভা পায় MP3, ডাইজেস্ট কিংবা ওরাকল….

প্রাইভেট ভার্সিটির কথা জানি না। বাট, পাবলিক ভার্সিটি থেকে পাশ করা প্রতিটি ইঞ্জিনিয়ার এই সাইকোলজি নিয়েই চাকরির অঙ্গনে আসে যে, তাকে কষ্ট করেই উপরে উঠতে হবে। কিন্তু, সেই কষ্টের বিনিময়ে পিয়ন লেভেলের স্যালারী সে কখনোই ডিজার্ভ করে না।

ফলশ্রুতিতে, শিক্ষার্থীরা ব্যাসিক ডাবল হয়ে যাওয়া BCS ক্যাডার হওয়ার প্রতিই মনোনিবেশ করে বেশি।

প্রিয় পাঠকবৃন্দ,
আমাদের ইফোর্টগুলো আমরা ভুল জায়গায় বেশি দেই।

একটি দেশের উন্নয়ন নির্ভর করে তার টেকনোলোজির উপর। যে দেশ টেকনোলজিতে সমৃদ্ধ, সে দেশ ততবেশি উন্নত।

ক্রিকেটে জিতে স্বর্গসুখ পাওয়া, কোহলি, ইন্ডিয়া আর পাকিস্তানকে দুই চারটা গালি দিয়ে রাগ দমন করা আদৌ বুদ্ধিমানের কাজ নয়।

ও হ্যাঁ, আমাকে রাজাকার কিংবা ভাদা ভাববেন না। আমি বাস্তবিক কথা বলছি। আমরা আবেগ দিয়ে বিশ্বজয় করতে চাই। জগৎটা এত সোজা না ব্রো, এত সোজা না।

আজ, আমাদের ক্রিকেটারেরা কিছু জয় করে এলে প্রত্যেকে ১ কোটি টাকা কিংবা একটা করে ফ্ল্যাট পায়।

আর যে ইঞ্জিনিয়াররা সভ্যতা গড়ে দেয়, যারা সভ্যতাকে সমৃদ্ধ করে টেকনোলজি দিয়ে, তাদের পিয়নের স্যালারীতে জব করে কষ্টে দিন নিপাত করতে হয়। নয়তো, টেকনিক্যাল লাইন ছেড়েছুড়ে নেমে যেতে হয় BCS যুদ্ধে। তাও আবার পুলিশ, কোস্টগার্ড পোস্টে।

দেশকে টেকনোলজিতে উন্নত করতে প্রয়োজন অনেক রিসার্চ সেন্টারের। অথচ, তার অভাবে এ দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীদের পাড়ি জমাতে হয় সুদূর প্রবাসে।

হ্যাঁ,
তবু আমরা বুঝি না কিংবা বুঝতে চাই না কোথায় আমাদের বেশি ইফোর্ট দিতে হবে???

আফসোস….

Saifullah Sakib, cuet