মেডিক্যাল ডিভাইস সবচেয়ে বেশি কারা ব্যবহার করেন?
উত্তরটা বেশ সহজ- ডাক্তারেরা।
কিন্তু এই মেডিক্যাল ডিভাইস তৈরি করেন কারা?
এটাও সহজ প্রশ্ন, ইঞ্জিনিয়াররা।
এখন কোন মেডিক্যাল ডিভাইস তৈরি করার সময় ইঞ্জিনিয়াররা ডাক্তারদের কাছ থেকে একমাত্র যে সাহায্য পান, তা হল যন্ত্রটির কাজ কি- সে সম্পর্কে দিকনির্দেশনা। যন্ত্রটি কি কাজ করবে সেটি ডাক্তার বলতে পারবেন, কিন্তু সেটা কিভাবে কাজ করবে সেটা ইঞ্জিনিয়ারকেই ঠিক করতে হবে। আর ঠিক এখানে যে ব্যাপারটা সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় তা হল- ইঞ্জিনিয়ারদের হিউম্যান বডি সম্পর্কে জ্ঞানের স্বল্পতা। ডাক্তার ডিভাইসটিকে দিয়ে ঠিক যেরকম কাজ করাতে চাইছেন ইঞ্জিনিয়ার জ্ঞানের স্বল্পতার কারণে ঠিক বুঝে উঠতে পারছেন না- কিভাবে আগালে ডিভাইসটি সেই কাজটা করতে পারবে?
মূলত এই জায়গা থেকেই আধুনিক দিনের বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর সৃষ্টি।
শেষ ১০ বছরে আন্ডারগ্র্যাড এজুকেশনের নতুন সাবজেক্টগুলোর মধ্যে “মোস্ট টকড অ্যাবাউট” সাবজেক্টগুলির একটি বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং। ইম্পরট্যান্স বা সাব্জেক্টিভিটির স্ট্রেংথের কারণে সম্পূর্ণ নতুন এই বিষয়টার জনপ্রিয়তার গ্রাফ ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী।
বিএমই কিঃ এই প্রশ্নটার উত্তর অনেকভাবে দেওয়া যায়। এক বাক্যে বলতে গেলে সেটা হচ্ছে, “Application of Engineering knowledge into living body”। মানে, সামগ্রিক ইঞ্জিনিয়ারিং জ্ঞানগুলোকে জীবন্ত সত্ত্বায় প্রয়োগ করা। বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারদের মূল কাজ এটাই। তবে এখানে প্রধানত Human Being নিয়েই বেশি কথাবার্তা হয়।
বিএমই তে কি পড়ানো হয়ঃ মূলত অন্যান্য ইঞ্জিনিয়ারিং সাবজেক্টগুলোর জ্ঞানকে মডিফাই করে এখানে পড়ানো হয়। যেমন ধরো, সিভিল বা মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এ যেমন বলবিদ্যা (Mechanics) পড়ানো হয়, এখানে পড়ানো হয় Biomechanics । ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এ পড়ানো হয় Electricity, আমাদের পড়ানো হয় Bioelectricity। ম্যাটেরিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং এ Materials বা পদার্থের ধর্ম নিয়ে পড়ানো হয়, এখানে পড়ানো হয় Biomaterials। তবে মেডিক্যাল স্টুডেন্টদের মত এনাটমি আর ফিজিওলজিও পড়ানো হয় (যদিও ওদের মত সব টপিকে সমান গুরুত্ব না দিয়ে বিএমই এর বিশেষ প্রয়োজনীয় টপিকগুলোতেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়)। আর নরমাল ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, ম্যাথ তো আছেই। সাথে আছে হালকা প্রোগ্রামিং ও যা কিনা Bioinformatics এ বেশ কাজে লাগে।
সুতরাং বুঝতেই পারলে, বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং পুরাতন বা প্রচলিত ইঞ্জিনিয়ারিং ফিল্ড থেকে একটু আলাদা। এটাকে Multidisciplinary field হিসেবেও ধরা যায় কারণ এখানে একই সাথে বেশ কয়েকটা ইঞ্জিনিয়ারিং ফিল্ডের সমন্বয় ঘটেছে।
এসবের পাশাপাশি Biomedical Instrumentation, Biomedical Sensor, BioMEMS, Lab-On-A-Chip Device, Medical Imaging, Tissue Engineering and Regenarative Medicine, Implantable Systems, Microfludics, Cell Mechanics, Neural Engineering, Rehabilitation Engineering, mHealth, Healthcare Management এই বিষয়গুলো নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা করা হয় এখানে।

বিএমই কাদের নেওয়া উচিতঃ অ্যাকচুয়ালি এটা সবাই পড়তে পারে। অনেকে আছে যারা বায়োলজি পছন্দ করে না। তাদের উদ্দেশ্যে, এখানে বায়োলজি বলে আহামরি কিছু নেই, যা আছে তা হল শুধু এনাটমি, ফিজিওলজি বায়োকেমিস্ট্রি, তাও মেডিক্যাল স্টুডেন্টদের মত অতটা ডিটেইলস নেই, কেবলমাত্র যে টপিকগুলো জানা দরকার সেটাই পড়ানো হয়। অবশ্য বুয়েটে বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়টা পেতে হলে ইন্টারমিডিয়েটে লেভেলে বায়োলজিতে অন্তত GPA 4.00 থাকতে হয়।

বাংলাদেশে বর্তমানে যেসকল বিশ্ববিদ্যালয়ে বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়টি পড়ানো হয় তাদের মধ্যে আছে: BUET, KUET, MIST, JUST (Jessore University of Science & Technology), Islamic University (Kushtia) ও সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়। উল্লেখ্য যে আগামী ২০১৮ সাল নাগাদ বাংলাদেশের প্রথম বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার গ্রাজুয়েটরা তাদের স্নাতক সম্পন্ন করবেন।
বিএমই তে পরে ভবিষ্যতে কি করবঃ এই প্রশ্নটা যে কারো মাথায় এই আসা স্বাভাবিক (অভিজ্ঞতা বলে, সবচেয়ে বেশি প্রশ্ন এখানেই আসে)। যাই হোক, ব্যাপারটাকে আমরা দেশীয় ক্ষেত্র ও বিদেশের পারস্পেক্টিভ- এই দুভাবে চিন্তা করতে পারি।

দেশীয় দিক চিন্তা করলে, দেশের প্রতিটা সরকারি মেডিক্যাল কলেজে একজন বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার এর পোস্ট আছে। অথচ দেশে এখন পর্যন্ত একজনও গ্র্যাজুয়েটেড বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার না থাকায় অনেকক্ষেত্রে সেই পোস্টটা ফাঁকা রেখেই হাসপাতালের কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। একজন গ্র্যাজুয়েটেড বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে তাই দেশের সরকারি মেডিক্যাল কলেজগুলোতে চাকরির সুযোগ। এছাড়াও অন্যান্য বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগোনস্টিক সেন্টারে কাজের ক্ষেত্র রয়েছে যেখানে কিনা স্যালারিটা আরও বেশি।

দেশের আরেকটা বড় ফিল্ড হলো ফার্মাসিউটিক্যাল সেক্টর। ফার্মাসিউটিক্যাল সেক্টরে যারা রিসার্চ করেন, তাদের কাজের একটা বিশাল অংশ জুড়ে থাকে ড্রাগ ডেলিভারি (শরীরের ভিতরে ড্রাগ বা মেডিসিন কিভাবে যাচ্ছে এবং তা হিউম্যান বডির দ্বারা কিভাবে absorb হচ্ছে)। আর বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারদেরও পড়াশুনা বা গবেষণার একটা বড় অংশ কাটে ড্রাগ ডেলিভারি নিয়ে কাজ করে। তাই দেশীয় ঔষধ শিল্পে বেশ একটা বড় জায়গা হতে পারে একজন বিএমই গ্র্যাজুয়েটের। এছাড়া সরকার কর্তৃক পরিচালিত বিভিন্ন রিসার্চ প্রোগ্রামেও রিসার্চার হিসেবে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। সুযোগ রয়েছে আর্মি ইঞ্জিনিয়ারিং কোরে বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করার।

এছাড়া যেসব প্রতিষ্ঠান দেশে মেডিক্যাল ডিভাইস তৈরি বা আমদানি করে সেখানেও ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজের ব্যাপক সুযোগ রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ ধরো, Siemens, Hitachi Ltd, ABC Ltd, Transmed Ltd, Medtronic Ltd. ইতাদি- যারা কিনা বায়োমেডিক্যাল গ্র্যাজুয়েটদের চাকরি দিতে মুখিয়ে আছে।

দেশে সম্ভবত সবচেয়ে বড় সুযোগটা হচ্ছে Entrepreneur বা উদ্যোক্তা হওয়ার সুযোগ। যেহেতু এখনো দেশে মেডিক্যাল ডিভাইস তৈরির চেয়ে আমদানিই বেশি হচ্ছে- সেক্ষেত্রে দেশে যদি শিল্প প্রতিষ্ঠান তৈরি করা সম্ভব হয়, তবে তা দেশের প্রেক্ষাপটে Pioneer হিসেবেই গণ্য হবে এবং দেশও আমদানি নির্ভরতা থেকে বাঁচবে।

এখন আসা যাক বিদেশের পারস্পেক্টিভে। এখানে প্রথমে আসবে রিসার্চ ফিল্ড কেমন? সত্যি বলতে বায়োমেডিক্যালের মত রিসার্চ ফিল্ড খুব কম বিষয়েরই আছে। তাই রিসার্চের জন্য ফান্ডিং বা প্রফেসর খুঁজে পাওয়া অন্যান্য বিষয়ের মত দুঃসাধ্য নয়। স্পেসিফিক্যালি BME,BUET এর সাথে বিভিন্ন দেশের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মিউচুয়াল আন্ডারস্ট্যান্ডিং হচ্ছে বা ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। যার ফলে উচ্চশিক্ষায় ও গবেষণায় এই সেক্টর থেকে ছাত্রছাত্রীদের সেখানে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।

আর বিদেশে চাকরির বাজার? সেটা লার্জেস্ট গ্রোয়িং ফিল্ড হিসেবে ইতিমধ্যে সবার নজর কেড়েছে। একটু ওয়েবসাইট ঘাটাঘাটি করলেই এ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যেতে পারে। এই সেক্টরে গ্রোথ রেট প্রায় ২৩ শতাংশ। আর স্যালারিটাও বেশ লোভনীয়।

অনেকটা গল্প করার মত করেই বলে ফেলা হল অনেক কথা। তবে এর মধ্যেই যা বলার বলে দেয়া হয়েছে। এখানে খুব কঠিন কিছু ইঞ্জিনিয়ারিং টার্ম ইউজ করে তোমাদের লিউর করা যেত, কিন্তু করব না, এমনভাবে লেখা হয়েছে যেন সবাই সহজে বুঝতে পারে। মোটকথা এ সময়ের চাহিদা পূরণের জন্যই বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এসেছে। তাই বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং তোমাকে পৃথিবীর স্মার্টেস্ট ও আপ-টু-ডেট মানুষদের একজনে পরিণত করবে।

তোমাদের প্রতি শুভকামনা রইল। দেখা হবে।

-Wahidur Rahman Rafsan
-Farhan Muhib
-Biswarup Goswami
-Meemnur Rashid
Department of Biomedical Engineering, BUET
Batch ‘15

২।

Subject review: Biomedical Engineering(BME)

“বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং” বাংলাদেশে ইঞ্জিনিয়ারিং সেক্টর এ বেশ নতুন একটি নাম।অনেকটা নতুন বলেই অনেকে এই সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানেন না।অথচ বিভিন্ন উন্নত দেশে এটি অত্যন্ত প্রগতিশীল একটি বিষয়।
.
.
#BME কি?
বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং হল সেই সাবজেক্ট যা মেডিক্যাল সাইন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং এর মধ্যে যে বিস্তর ফারাক তা দূর করেছে।বলা হয়ে থাকে যেখানে ডাক্তারদের সামর্থ্য শেষ সেখানেই বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারদের কাজ শুরু। বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারদের ছাড়া কখনোই চিকিৎসা বাবস্থার উন্নয়ন সম্ভব নয়।
.
.
#বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারদের কাজ কি?/বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারদের ক্ষেত্র কি কি?

অনেকের ভুল ধারণা আছে যে বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারদের কাজ হল শুধু চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যবহৃত যন্ত্রের ব্যবহার ও তার রক্ষণাবেক্ষণ। কিন্তু এটি হল খুব খুব ক্ষুদ্র একটি ক্ষেত্র। কিন্তু সত্যিকারে এটি বিস্তৃত একটি শাখা।জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে হিউম্যান রোবটিক্স, সব বায়োমেডিকেলের অংশ।বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারদের মূল লক্ষ্য হল চিকিৎসা বিজ্ঞান কে আরো এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। যে যন্ত্র-সরঞ্জাম গুলো দরকার হয় ওই গুলার আরও উন্নত ও তৈরি করা থেকে শুরু করে মাবন ক্ষেত্রে যে প্রতিবন্ধকতা আছে, তা দূর করে তাদেরকে স্বাভাবিক জীবনে নিয়ে আসা। যেমন ECG Machine, X Ray Machine,,MRI Machine,CT Scan machine, PET, SPECT থেকে শুরু করে কৃত্রিম হৃদপিণ্ড, পেসমেকার, কৃত্রিম বৃক্ক, কৃত্রিম লেন্স, নিউরো হ্যান্ড আবিস্কার সহ কোন দৌড়বিদ কিভাবে দৌড়ালে সবচেয়ে দ্রুত দৌড়াতে পারবেন বা ইনসুলিন কিভাবে আরও উন্নত করা যায় এরকম হাজারটা সমস্যার উন্নত সমাধান দিয়ে বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং আমাদের জীবন করেছে আরও উন্নত। সহজ ভাষায় বলতে গেলে ডাক্তারের হাতে থাকা ইনজেকশন বা গলায় থাকা স্টেথোস্কোপ টাও বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ার এর অবদান। বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং এর বিস্তৃত শাখার কয়েকটার নাম দেয়া হল যেগুলোর ওপর পরে Higher studies ও করা যাবেঃ
.
.
• Musculoskeletal & Neural engineering

•Tissue & Regenerative engineering

• Bio-instrumentation

• Bioinformatics

• Bio-mechanics

• Bio-material

• Biomedical optics

• Bio-signa

l • Biotechnology

• Clinical engineering

• Medical device / equipment

• Medical imaging

• Neural engineering

• Pharmaceutical engineering
• Rehabilitation engineering

• System psychology

• Bio-acoustics
• Biochemical engineering

• Biosystem engineering

• Biotechnical engineering

• Biomolecular engineering

• Bioresource engineering
• Cellular engineering

• Genetic engineering

• Protein engineering
• Food and Biological Process engineering

• Microbiological engineering

• Molecular engineering

• Safety engineering
• Systems biology

• Synthetic biology
.
.
এছাড়াও বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারদের কাজের উদাহরন কার্ডিয়াক পেসমেকার,কৃত্রিম কিডনি, রক্ত অক্সিজেনেটর, হৃৎপিন্ড, রোগীদের নিরীক্ষণ থেরাপিউটিক ব্যবহারের জন্য ডিজাইন মেশীন ও ডিভাইস। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উপর ভিত্তি করে ক্লিনিকাল সিদ্ধান্ত গ্রহণের কৌশল,CT scan, PET scan, MRI বা Ultrasound ইমেজিং পদ্ধতিতে ডিজাইন, উন্নয়ন এবং গবেষণা,নিউরোমডুলেশন ডিভাইস, অস্থি চিকিৎসা মেরামত, এমনকি স্টেম সেল ইঞ্জিনিয়ারিং এর মত কাজ ও হচ্ছে হরহামেশাই।
.
.
#চাকরীর বাজার কেমন?

বাংলাদেশে সাবজেক্ট টা নতুন হওয়ায় এটার চাকরীর বাজার এখন অন্যান্য সাবজেক্টের মতো অতটা বেশী না হলেও চাহিদা বেশী আর এই সাবজেক্টে কম ছাত্র থাকার জন্য চাকরী একদম কম ওনা। অনেক ভালো ভালো হাসপাতালে এখন অনেক ভালো বেতনে বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগ দেয়া হয়। বাংলাদেশে আছে এরকম বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য কয়েকটা কোম্পানির নাম দেয়া হল:

● Bengal ltd
● Hitachi ltd
● ABC ltd
●Transmed ltd
● Spectra ltd
● Hi tech ltd
● Mashruba medical technology
এছাড়া হবিগঞ্জে নতুন আরেকটি কোম্পানি হচ্ছে,এর সাথে দেশের আরো কোম্পানিগুলা তো আছেই।

US Money news এর তথ্য অনুযায়ী ২০১৬ তে USA তে বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারদের গড় বার্ষিক বেতন $86,220।বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং হচ্ছে ৫ম বেস্ট ইঞ্জিনিয়ারিং যাদের job growth ২৩% যা অন্যান্য যে কোন চাকরীর থেকে বেশি।এছাড়াও Germany,Canada, United Kingdom সহ অনেক দেশে বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারদের চাহিদা রয়েছে।
তবে, শর্ত প্রযোজ্য। যথাযথ যোগ্য হলেই তোমাকে আমেরিকা বা অন্যান্যরা চাকরি দেবে।

ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে কি লাভ? পাশ করে তো বাসায় বসে থাকতে হবে হবে আর পাশের বাসার আন্টির কথা শুনতে হবে।তার চেয়ে ডাক্তার হওয়া ভালো পাশ করে বের হলেই টাকা আয় করা যাবে ।

বিসিএসঃ

এই সাবজেক্ট খোলার উদ্যেশ্য ছিল সরকারী হাসপাতালের দামী মেডিকেল যন্ত্রগুলো রক্ষনাবেক্ষন ও মেইনটেনেন্স।তাই সব সরকারী হাসপাতালে সরকারী জবের অপশন থাকবে এবং ইঞ্জিনিয়ারের স্কেলেই বেতব হবে।

সরকারের এই বিষয়ে বিল পাশ হবে বলে শোনা যাচ্ছে।এতটুকু বলা যায়, BUET,KUET,MIST এর উপরমহল থেকে অনেক তোড়জোড় চালাচ্ছে।বর্তমানে শুধুমাত্র সরকারী ভাবে ৩০০০+ বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ার প্রয়োজন।ইতিমধ্যে সরকারিভাবে বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয়া হচ্ছে।

বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং হলো বর্তমান দুনিয়ার সবচাইতে চাহিদাপূর্ণ একটি ক্ষেত্র। বর্তমান চাকুরির বাজারে শুরু থেকেই বেতন অনেক বেশি এমন দারুণ একটা চাকুরি হলো বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারদের । মেডিকেল এবং ইঞ্জিনিয়ারিং এর সমন্বিত রুপ হওয়ায় দুই দিক থেকেই চাকুরির বাজারে শীর্ষস্থান বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারদের।

তবে এতটুকু নিঃসন্দেহে বলতে পারি যে, এতো সম্ভাবনাময় একটি সাবজেক্ট এ পড়লে তোমাকে তোমার ভবিষ্যৎ নিয়ে খুব একটা চিন্তা করতে হবে না। তোমার ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হবেই ইনশাল্লাহ।

বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারদের সাধারণ উপাধিঃ
1. Manufacturing Engineer
2. Quality Engineer
3. Software Engineer
4. Researcher
5. Physician

বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারদের দায়িত্বের মধ্যে রয়েছেঃ
১. বায়োমেডিকেল যন্ত্রপাতি ডিজাইন করা। যেমনঃ দেহের অভ্যন্তরীণ কোনো অঙ্গের ডিজাইন, তা প্রতিস্থাপন, চিকিৎসা ক্ষেত্রে যেসকল যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে রোগ শনাক্ত করা হয় তার ডিজাইন।
২. বায়োমেডিকেল যন্ত্রপাতিগুলো ইনস্টল, সমন্বয়, রক্ষণাবেক্ষণ, মেরামত বা প্রযুক্তিগত সহায়তা সরবরাহ করা।
৩. বায়োমেডিকেল যন্ত্রপাতি গুলোর সুরক্ষা, দক্ষতা এবং কার্যকারিতা মূল্যায়ন।
৪. বায়োমেডিকেল সরঞ্জামগুলোর যথাযথ ব্যবহার সম্পর্কে প্রশিক্ষণ প্রদান।
৫. জীববিজ্ঞানী, রসায়নবিদ এবং চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের সাথে মানুষের ও প্রাণির জৈবিক সিস্টেমগুলোর প্রকৌশল দিকগুলির গবেষণা করা।

এই সাবজেক্টে পড়ে গবেষণার সুযোগ কতটা?
অবশ্যই, এই সাবজেক্টে গবেষণার অনেক বেশী সুযোগ আছে। হয়তো তুমি ক্যান্সার বা কোন ভাইরাস নিয়ে গবেষণাও করতে পারবে। হয়তো বা মানবদেহের জন্য অকল্পনীয় কিছু বানিয়েও ফেলতে পারবে। আরো অনেক মেডিকেল ইকুইপমেন্ট আছে যেগুলো আরও আপগ্রেডে করা একজন বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারের ই কাজ। আপনার জন্য গবেষণার হাজারটা রাস্তা খোলা আছে এখানে।আর উপরে উল্লেখ করা সেক্টরগুলোতে এই গবেষণার অফুরন্ত সম্ভাবনা রয়েছে।

* Biofabrication and Biomanufacturing
‌* Biomedical Imaging and image analysis
‌* Biomolecular Science and Engineering
‌* Musculoskeletal Biomechanics and Mechanobiology
‌* Systems Biology and Health Care Analytics

‌* Tissue Engineering and Regenerative Medicine
* Biological Imaging
* Microbial Pathogenesis
* Biomaterials
* Microbial Systems
* Biomechanics
* Nanoscale Engineering
* Biomolecular Engineering
* Neurobiological
* Biophysics

* Omics
* Carcinogenesis
* Pharmacology
* Computational Modeling
* Synthetic Biology
* Drug Delivery
* Systems Biology
* Drug Metabolism

* Tissue Engineering
* Energy
* Toxicology
* Infectious Disease
* Transport Phenomena
* Macromolecular Biochemistry

ভাই,তোর কথা শুনে মনে হচ্ছে এই subject এ অনেক বেশি Biology পড়তে হবে আর কেউ যদি Biology কম পারে তাহলে তো সে এই subject এ পড়ে কখনো ভালো করতে পারবে না।

ইঞ্জিনিয়ারিং ও মেডিসিন এর সমন্বিত সাবজেক্ট BME, একটি multidisciplinary বিষয়। KUET এ EEE অনুষদের অধীনে হওয়ায় বেশিরভাগ পড়াশোনা EEE অন্তর্ভুক্ত। প্রাথমিক বর্ষে ইঞ্জিনিয়ারিং এর জন্য আবশ্যক গণিত,পদার্থবিজ্ঞান,রসায়ন এর সাথে হালকা বায়োকেমিস্ট্রি নিয়ে ধারণা দেওয়া হয়।

তারপর এনাটমি ও ফিজিওলোজি নিয়েও পড়ানো হয়। তবে ভীত হওয়ার কিছু নেই।মেডিকেল এর মত এত বিশদ ভাবে পড়তে হয়না, শুধুমাত্র ইঞ্জিনিয়ারিং এর জন্য যতটুকু দরকার সেটুকুই পড়ানো হয়।এমনকি HSC তে যাদের বায়োলজি ছিলনা,তারাও BME অনায়াসে পড়তে পারবে ।এবার আসি কোর্স নিয়ে আলোচনায়। ৪ বছরের কোর্সে EEE,CSE,ME ইত্যাদি এর অন্তর্ভুক্ত কিছু কোর্স পড়ানো হয়। যেমন:

EEE এর অধীনে:
1. Electrical circuits.
2. Electronics.
3. Digital signal processing.
4. VLSI.
5. Communication theory
6. Power system etc.

CSE এর অধীনে:
1. Computer programming.
2. Microprocessor and interfacing etc .
ME এর অধীনে:
1. Basic ME
2. Mechanical drawing.

BME এর নিজস্ব কোর্স:
1. Human Anatomy and physiology.
2. Biomaterials.
3. Biofluids.
4. Medical Instrumentation.
5. Biomedical signal processing.
6. Bioinformatics.
7. Hospital Planning and management etc.

সংক্ষিপ্ত অর্থে, বায়োলোজি ও গণিতের এক দারুণ সমন্বয় BME.

বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে কতটুকু Biology পড়তে হয়?
Biology বলতে শুধু Human antomy and physiology পড়তে হয়।তবে মেডিকেল এর মত ওতোটা ব্যাপক ভাবে পড়ানো হয়না।আর থাকবে বায়োকেমিস্ট্রি যা হবে এইচ.এস.সি বায়োলজি বই এর কেমিস্ট্রি অধ্যায়গুলোর কিছুটা বিস্তর আলোচনা।

বাংলাদেশ এ বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং ২০১৪ সালে KUET ও MIST তে ও ২০১৫ সালে BUET,২০১৬ সালে JUST এবং ২০১৭ সালে IU তে Undergraduate খোলা হয়েছে।আর বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় এর মধ্যে Gono University তে এই সাবজেক্ট টা পড়ানো হয়।

শেষ কথা,তোমার যদি মানবদেহের সম্পর্কে জানতে ভাল লাগে আবার ইঞ্জিনিয়ারিংয়েও আগ্রহ থাকে তবে বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং হবে তোমার জন্য যথাযথ।ভালোবাসা থেকে পড়লে তোমাকে কেউ আটকে রাখতে পারবে না;তোমার সাফল্য অবশ্যম্ভাবী।

শুভকামনা রইল ভবিষ্যতে সকল বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের।

Fazla Rabbi Mashrur
BME,KUET-2k15

KUET BME 

Review

KEUT

BUET

CUET