সেকেন্ড টাইমরা তোমরা কি অনুপ্রেরণা খুঁজছো?
দিলাম তোমাদের জন্য এই পোষ্ট:
ব্যালন ডি’অর জেতা প্রথম নন-ইউরোপিয়ান
তিনি। ব্যালন ডি’অরজয়ী একমাত্র আফ্রিকান
ফুটবলারও। কিন্তু গতকাল থেকে এসব দিয়েও
জর্জ উইয়াহকে চেনানো কঠিন। তিনি এখন
একটি দেশের প্রেসিডেন্ট।
লাইবেরিয়ার নির্বাচনের দ্বিতীয় রাউন্ডের
৯৮.১ শতাংশ ভোট গণনা হয়েছে। তাতে ৬১.৫
শতাংশ ভোট পেয়ে নিরঙ্কুশ আধিপত্য
উইয়াহর। কাল দেশটির ১৫ কাউন্টির ১২টিতেই
বড় ব্যবধানে এগিয়ে ছিলেন কিংবদন্তি এই
ফুটবলার। আগাম জয়ের সুবাস পেয়ে উইয়াহও
টুইটারে নিজের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন,
‘লাইবেরিয়ার মানুষ তাদের পছন্দের কথা
জানিয়ে দিয়েছে। ফল নিয়ে আমরা খুবই
আশাবাদী।’
আজ অবশ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে উইয়াহই
হচ্ছেন লাইবেরিয়ার প্রেসিডেন্ট। এক সমর্থকই
জানালেন কতটা প্রতীক্ষিত এ জয়, ‘জর্জ
উইয়াহর জয় পুরো দেশেরই জয়। অসুস্থ
অবস্থায় যখন সঠিক ওষুধ পান, তখন আপনি
নিজেই বুঝতে পারেন। আমারও ঠিক তেমন
ভালো লাগছে। তিনি আমাদের দেশের জন্য
ভালো হবেন। তিনি হলেন কিং জর্জ!’
রাজধানী মনরোভিয়া বস্তিতে এক দরিদ্র
পরিবারে বেড়ে ওঠা উইয়াহ একটু বড় হয়েই পেয়ে
গিয়েছিলেন সরকারের টেলিফোন বিভাগের সুইচ
বোর্ড টেকনিশিয়ানের চাকরি। যেটি এনে
দিয়েছিল অভাবের সংসারে দুই বেলা খাওয়ার
নিশ্চয়তা। কিন্তু ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন যাঁর
মনজুড়ে, তিনি কি আর এই চাকরিতে সন্তুষ্ট
থাকেন! কাজের ফাঁকে ফাঁকে লাইবেরিয়ান লিগে
খেলতেন। সেখান থেকে আর্সেন ওয়েঙ্গারের
জহুরির চোখ তাঁকে খুঁজে নিয়ে গেল
মোনাকোতে। ব্যস, বদলে গেল জীবনের গল্প।
মোনাকো থেকে পিএসজি, মিলান, চেলসি,
ম্যানচেস্টার সিটির হয়ে ইউরোপ মাতিয়েছেন।
পিএসজিতে থাকতেই ১৯৯৫ সালে জিতেছেন
ব্যালন ডি’অর আর ফিফা বর্ষসেরা
খেলোয়াড়ের পুরস্কার। এখন পর্যন্ত এ দুটি
পুরস্কার জেতা একমাত্র আফ্রিকান ফুটবলারও
তিনিই।
রাজনীতিতে অবশ্য এমন নাটকীয় মোড় নেয়নি
উইয়াহর ক্যারিয়ার। বছর ১৫ আগে রাজনীতির
মাঠে নেমেছিলেন। কিন্তু কিছুতেই জয় ধরা
দিচ্ছিল না। ২০০৫ সালে লাইবেরিয়ার
প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী হয়ে হেরে যান। ছয়
বছর পর ভাইস প্রেসিডেন্ট পদেও হার। তাই
বলে দমে যাননি। লক্ষ্যে ছিলেন অবিচল, ফলও
ধরা দিয়েছে হাতে। ২০১৪ সালে নিজ এলাকার
সাংসদ নির্বাচিত হন। এরপরই আবার
প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী হওয়ার প্রস্তুতি
নিতে শুরু করেন।
সরকারের টেলিফোন বিভাগের সুইচ বোর্ড
টেকনিশিয়ান থেকে বিশ্বসেরা ফুটবলার। ফুটবল
ছাড়ার পর রাজনীতিতে যোগ দিয়ে দেশের
প্রেসিডেন্ট হয়ে যাওয়াও অসম্ভব নয়। যেমনটি
হতে যাচ্ছেন জর্জ উইয়াহ!
পরিশ্রম, অধ্যবসায় আর সঙ্গে প্রতিভা। এই
তিন এক বিন্দুতে মিলে গেলে কী না হয়!