____

মধুমতির পাড় ঘেঁষে গোপালগঞ্জ। অযুত মনীষীর জন্মস্থান। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের স্মৃতিধন্য এ জনপদে ৭৫ পরবর্তী কোন সরকার উল্লেখযোগ্য কাজ করেনি। রাজনৈতিক বিদ্বেষের আগুনে দগ্ধ এ জনপদ ছিলো অবহেলিত দুর্গমও অনগ্রসর। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ক্ষমতায়
আসার পর এলাকার ভাগ্যহত মানুষের জন্য কাজ শুরু করেন। গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরবিপ্রবি) সেশনজটহীন এক অনন্য বিশ্ববিদ্যালয় তারই অবদান।

এই বিশ্ববিদ্যালয়টি এখন দেশের অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। প্রধানমন্ত্রীর এই জনকল্যাণমূখী কার্যক্রমকে যারা কঠিন শ্রম দিয়ে বাস্তবায়ন করেছেন
ভিসি ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিন তাদের একজন। তার একান্ত নিষ্ঠার কারণে এ বিশ্ববিদ্যালয়টি ভর্তির আসন সংখ্যার দিক থেকে বর্তমানে বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে পঞ্চম স্থানে রয়েছে। ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষে মাত্র পাঁচটি বিভাগে ১৬০জন শিক্ষার্থী নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হলেও মাত্র ৫ বছরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ২৩টি বিভাগে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৬,০০১জন।
সবুজের কার্পেটে ঢাকা এ শিক্ষাঙ্গনের ক্যাম্পাস অযুত বৃক্ষরাজীর মেলা। প্রান ভরে যায় এর নৈসর্গিক পরিবেশ দেখলেই। ধুমপান ও সেসনজটমুক্ত শেখ মুজিবর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল বৈশিষ্ট্য। ভিসি প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিনের একান্ত প্রচেষ্টায় শেখ মুজিবর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এখন শিক্ষা-সংষ্কৃতি সর্বোপরি মনোবিকাশে এখন দক্ষিন বাংলার অহংকার।
সেশনজটমুক্ত ক্যাম্পাস
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে সেশনজট নেই। ৪ বছর পূর্ণ হওয়ার একদিন আগেই শিক্ষার্থীরা তাদের সার্টিফিকেট হাতে পেয়ে যায়। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি বছর ১ জানুয়ারী অনুষ্ঠান করে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের বরণ করে নেওয়া হয় এবং স্নাতক(সম্মান)ম, স্নাতকোত্তর শ্রেনির শিক্ষার্থীদের হাতে সনদ তুলে দেওয়া হয়। ভিসি প্রফেসর ডঃ খোন্দকার নাসিরউদ্দিন নিজে উপস্থিত থেকে শিক্ষার্থীদের বরণ ও সনদ তুলে দেন।
র‌্যাগিং ও নেশামুক্ত ক্যাম্পাস
ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিনের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বর্তমানে র‌্যাগিং ও নেশামুক্ত। তিনি প্রতি বিভাগের শিক্ষকগণ যাতে শিক্ষার্থীদের কাউন্সিলিং এর উদ্যোগ গ্রহন করতে পারে সেজন্য শিক্ষকদের জন্য কাউন্সিলিং ভাতা চালু করেছেন। এছাড়া ক্যাম্পাসের ছাত্রীরা শালীন ও স্বাধীনভাবে জীবন যাপন করতে পারছেন।
দেশের বৃহৎ উদ্ভিদ সংগ্রহশালা
ভিসি প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিন এ বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের সময় (২ফেব্রয়ারী ২০১৫) ক্যাম্পাসে কোন উদ্যান ছিল না। উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের দিনই ক্যাম্পাসে বৃক্ষরাজি রোপনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহন করেন। মাত্র দুই বছরে তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস দেশের সর্ববৃহৎ উদ্ভিদ সংগ্রহশালায় পরিণত হয়েছে। ক্যাম্পাসে শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির ফুল, ফল, ঔষধি ও বনজ বৃক্ষ। এছাড়া গোপালগঞ্জ কৃষি প্রযুক্তি মেলা ২০১৬ এবং ২০১৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রযুক্তি নার্সারি প্রথম স্থান অধিকার করেছে এবং বৃক্ষরোপণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরষ্কার ২০১৬ এর খ শ্রেণীতে প্রথম স্থান লাভ করেছে।
আধুনিক ল্যাব স্থাপন
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মানসম্মত শিক্ষা প্রদানের জন্যে বিভিন্ন বিভাগে আধুনিক ল্যাব স্থাপন করেছেন। ইলেকট্রিক এন্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ার বিভাগে স্থাপন করা হয়েছে আধুনিক পাওয়ার গিয়ার সিস্টেম ল্যাব। যা বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে এককভাবে প্রথম। এছাড়া কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, অ্যাপ্লাইড কেমিষ্ট্রি এন্ড কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ফার্মেসীসহ অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্থীরা আধুনিক ল্যাবের সুবিধা আছে। অতি দ্রুত জেনম সিকুয়েন্সিং ল্যাব স্থাপন করা হবে। এছাড়াও অন্যান্ন বিভাগে আধুনিক ল্যাব স্থাপনের কাজ চলছে।
আধুনিক গ্রন্থাগার
বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে রয়েছে পর্যাপ্ত বইয়ের সংগ্রহ। শিক্ষার্থীরা গ্রন্থাগারের আইটি কর্ণারে সার্বক্ষনিক কম্পিউটার ব্যবহার করতে পাচ্ছে। এছাড়া অটোমেশন পদ্ধতিতে বার কোড ব্যবহার করে বই আদান প্রদান করছে। ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. নাসিরউদ্দিন বিজয় দিবস ২০১৬ এ গোপালগঞ্জের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে বঙ্গবন্ধু কর্ণার উদ্বোধন করেছেন।
ইন্টারনেট সুবিধা
উপাচার্য ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিনের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়েছে। শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারীরা ক্যাম্পাসের সর্বত্র উচ্চ গতির ব্রডব্যান্ড ও ওয়াইফাই এর মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধা পাচ্ছে।
বিদেশে গবেষণার সুযোগ
ভাইস চ্যান্সেলের প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে সম্প্রতি আমেরিকান ইনষ্টিটিউট অব বাংলাদেশ এর সংগে একটি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভালদোষ্টা ষ্টেট ইউনিভার্সিটির সঙ্গে আরেকটি সমঝোতা স্বাক্ষর করেছেন। এর ফলে এ বিশ্বদ্যিালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ওই দুটি প্রতিষ্ঠানে গবেষণা ও উচ্চ শিক্ষার জন্য যেতে পারবেন। বিদেশ গিয়ে শিক্ষার্থীরা যেনো ভাষার প্রতিবন্ধকতার শিকার না হন- তার জন্য এখানে একটি ভাষা ক্লাব খোলার কথা সক্রিয়ভাবে চিন্তা করা যাচ্ছে।
বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি
এর আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তবে উপাচার্য প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিনের উদ্যোগে ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে থেকে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি শুরু হয়েছে। এজন্য গঠন করা হয়েছে আন্তজার্তিক শিক্ষার্থী ভর্তি সেল। এ বছর নেপালের ৩০ জন শিক্ষার্থী অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে ভর্তি হয়েছেন।
যাতায়াত ও আবাসন
শিক্ষার্থীদের যাতায়াত ও আবাসন সংকট নিরসনে ভাইস চ্যান্সেলর কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন করেছেন। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অর্থায়নে দুটি বাস ক্রয় করা হয়েছে এবং আরও দুটি বাস ক্রয় প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসের সংখ্যা ১০টি। বাসগুলো বিভিন্ন রুটে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আনা নেওয়া করে। শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট নিরসনে ইতিমধ্যে দুটি হলের নির্মাণকাজ দ্রুত চলছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য ৬০০ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প জমা দেওয়া হয়েছে। এ প্রকল্পে অন্যান্য অবকাঠামোর মধ্যে ছাত্রছাত্রীদের এক হাজার আসন বিশিষ্ট দুটি হল অর্ন্তভূক্ত রয়েছে।
শিল্প, সংষ্কৃতি ও ক্রীড়া
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলা ও সংষ্কৃতি চর্চার সুযোগ পায়। ভাইস চ্যান্সেলরের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে নিয়মিত খেলাধুলা ও সাষ্কৃতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
বঙ্গবন্ধু বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল এন্ড কলেজ প্রতিষ্ঠা
ভিসিড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিন তার যোগদানের মাত্র দুই বছরের মধ্যে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠা করেছেন বঙ্গবন্ধু বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল এন্ড কলেজ। প্রথম বছর প্লে-গ্রুপ থেকে সপ্তম শ্রেনী পর্যন্ত প্রায় ৬০০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়েছে। স্কুর এন্ড কলেজে পর্যাপ্ত সংখ্যক শিক্ষকও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ভিসি ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিন। তাঁরই প্রচেষ্টায় ইতিমধ্যে কৃষি বিভাগের নাম পরিবর্তিত হয়ে শেখ হাসিনা কৃষি ইনষ্টিটিউট হয়েছে। প্রতিটি বিভাগে আধুনিক চাহিদা সম্পন্ন পাঠ্যসূচি প্রণয়ন করা হয়েছে। তাঁর নেতৃত্বে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের বিশ্ববিদ্যালয়টি দিন দিন এগিয়ে যাচ্ছে শিক্ষা শিখরে। এখানে সারা দেশের শিক্ষার্থীরা আসছে। জ্ঞানের আলোকবর্তিকা হাতে নিয়ে চলে যাচ্ছে। আধুনিক শিক্ষা বিস্তারের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরনের পথে চলছে শিক্ষা বিস্তারের অগ্রযাত্রা।
বঙ্গবন্ধু স্টাডিজ বাধ্যতামূলক
২৩ টা ডিপার্টমেন্ট এর সবকয়টিতে বঙ্গবন্ধু স্ট্যাডিজ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। যাতে করে শিক্ষার্থীরা বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের সঠিক ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারে।
আইটি পার্ক স্থাপন
আইটি মন্ত্রণালয় সারা বাংলাদেশে ১২ টি আইটি পার্ক স্থাপন করবে। তার মধ্যে গোপালগঞ্জ জেলার আইটি পার্ক স্থাপন করা হবে বিশ্ববিদ্যলয় ক্যাম্পাসে। ইতোমধ্যে ক্যাম্পাসের ৫ একর জমিতে আইটি পার্ক স্থাপনের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে।
সিসি ক্যামেরা আওতাভুক্ত
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গুরুত্বপুর্ন পয়েন্টে সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে ও সার্বক্ষনিক তদারকির মাধ্যমে ক্যাম্পাসের নিয়ম শৃঙ্খলা রক্ষা করা হয়।
ভিসির বক্তব্যঃ
ভিসি ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়কে শিক্ষা এবং ছাত্রছাত্রী ভর্তির দিক থেকে প্রথম সারিতে আনার জন্য তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। আধুনিক ল্যাব স্থাপন, ডিজিটাল লাইব্রেরী, পর্যাপ্ত পরিবহণ ব্যাবস্থা, মাদক ও র‌্যাগিং মুক্ত ক্যাম্পাস, সিসি ক্যামেরা আওতাভুক্ত ক্যাম্পাস, বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি, সেশনজট মুক্ত ক্যাম্পাস, দেশের বৃহৎ উদ্ভিদ সংগ্রহশালা, ইন্টারনেট সুবিধা ইত্যাদি অন্যান্য ক্যাম্পাসের তুলনায় গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে। তিনি এবং তার বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করার লক্ষে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
মোঃ রেজোয়ান হোসেন