./ # আমার এই লেখার মূল উদ্দেশ্য #কম্পিউটার_সায়েন্সে কি কি পড়ানো হয় সেটা সবাইকে জানানো। বিশেষ করে কম বয়সীদের যারা এখনো কোনো বিষয় বেছে নেয়নি এবং তাদের অভিভাবকদের। অনেকের ধারনা কম্পিউটার সায়েন্স মানে #ms word 🙂 , #powerpoint🙂 , #HTML🙂 , #PHP🙂 , #Website🙂 বানানো এসব শেখানো হয়, এবং এগুলো যেহেতু পাড়ার, বাজারের দোকানদারও ভালো পারে তাই কম্পিউটার সায়েন্স পড়ার কোনো মানে নাই! 🙂🙂 ভর্তি পরীক্ষার্থীদের বলবো, যেসব সাবজেক্ট পড়ার কথা ভাবছো প্রতিটা সম্পর্কে ভালোভাবে জানার চেষ্টা করো, সেখানে কি কি পড়ানো হয় সেটা খোজ নাও, এবং যদি সেগুলো তোমার সত্যিই পছন্দ হয় তাহলেই ভর্তি হয়ে যাও, কোনো সাবজেক্টই ১ নম্বর-২ নম্বর না, #ইলেক্ট্রিকাল মোটেও মেকানিকালের থেকে “ভালো সাবজেক্ট” না, সেটাই তোমার কাছে “ভালো সাবজেক্ট” যেটা তোমার পছন্দ, সেটা যদি লো-লেভেলের মতো মানুষের চোখে নিচের দিকের সাবজেক্ট হয় তাহলেও সেটা ভালো, অন্যের তৈরি বিভাজন অনুসরণ করলে নিজের সাথে প্রতারণা করা হয়। এখন অামি এক এক করে দেখাতে চাই কম্পিউটার সায়েন্সে কি কি টপিক পড়তে হয়। টপিকগুলো সম্পর্কে জেনে তুমি ভেবে দেখ এই সাবজেক্টটা কি সত্যিই তোমার পছন্দ নাকি তুমি ইলেকট্রিকাল, মেকানিকাল , ফিজিক্স বা অন্য কোনো সাবজেক্ট পড়বে? *** #Programming -> কম্পিউটার সায়েন্স বললে প্রথমেই চলে আসে প্রোগ্রামিং। প্রোগ্রামিং হলো কম্পিউটারের সাথে যোগাযোগ করার উপায়, যেকোন কম্পিউটারকে দিয়ে ইচ্ছামত কাজ করিয়ে নেয়া। কম্পিউটার যেহেতু মানুষের ভাষা বুঝেনা তাকে বোঝাতে হয় বিশেষ ভাষায় যাকে বলে প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ। প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ শিখে সফটওয়্যার, ওয়েবসাইট যেমন বানানো সম্ভব তেমনি গাণিতিক সমস্যা সমাধান করা সম্ভব, রকেটের গতিপথ নির্ণয় করা সম্ভব, কোয়ান্টাম মেকানিক্স নিয়ে গবেষণা সম্ভব, DNA অ্যানালাইসিস করা সম্ভব, Medical Science এও গবেষনা করা সম্ভব। এককথায় প্রোগ্রামিং এমন একটা জিনিস যা দিয়ে সমস্ত পৃথিবীকে পরিবর্তন, নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। বাংলাদেশের বেশিভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম সেমিস্টারে শিখানো হয় #C_Programming_Language যেটাকে বলা যেতে পারে প্রোগ্রামারদের মাতৃভাষা। এরপরে Object Oriented Programming কোর্সে শিখানো হয় জাভা। সফটওয়্যার প্রোগ্রামিং এবং বড় বড় প্রজেক্টের জন্য #জাভা জনপ্রিয়। কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে জাভা শেখানোর সময় #অ্যান্ড্রয়েডে_প্রোগ্রামিং শেখানো হয়। পরবর্তীতে #অ্যাসেম্বলী _ল্যাংগুয়েজের জন্য আরেকটি কোর্স থাকে। এখানে একদম লো লেভেলে সরাসরি মেমরির বিভিন্ন অংশ নিয়ে কাজ করা যায়। অ্যাসেম্বলী ল্যাংগুয়েজ জানতে সাহায্য করে কম্পিউটার কিভাবে মেমরিতে বিট/বাইট হিসাব করে ডাটা রাখে, একদম হার্ডওয়্যার লেভেলে কিভাবে ডাটা রাখা হয় সেটা অাপনি জানতে পারবেন। অ্যাসেম্বলী ভালোভাবে শিখলে ভাইরাস বানানোর মতো মজার কাজ করা সম্ভব, প্রোগ্রামিং করে মেমরির বিভিন্ন অংশ কন্ট্রোল করা সম্ভব। প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ কোর্স দুই ভাগে করানো হয়। ক্লাসরুমে কিছু থিওরিটিকাল কথাবার্তা থাকে তবে এই কোর্সের মূল অংশ হয় ল্যাবে। সেখানে প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ দিয়ে বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করতে দেয়া হয়। সবশেষে সাধারণত একটা প্রজেক্ট করতে দেয়া হয়, সেখানে স্টুডেন্টরা ক্রিয়েটিভিটি দেখানোর সুযোগ পায়। কম্পিউটার সায়েন্সের আরো অনেক অংশ থাকলেও ভালো প্রোগ্রামিং জানা এই সাবজেক্টে ভালো করার পূর্বশর্ত। *** #Data_Structure -> #Google, #Facebook কিভাবে এত মানুষের তথ্য সংরক্ষণ করে? এলোমেলো ভাবে সংরক্ষণ করলে তাড়াতাড়ি খুজে পাওয়া সমস্যা, তাই তথ্য সংরক্ষণ করার নির্দিষ্ট কিছু টেকনিক আছে। ড্রয়ারে লেভেল করে কাগজপত্র রাখলে যেমন সহজে খুজে পাওয়া যায় তেমনি কিছু নির্দিষ্ট স্ট্রাকচার ফলো করে ডাটা সেভ করলে সহজে সেটা কাজের সময় পাওয়া যায়। ডাটা স্ট্রাকচার কোর্সে এগুলো সম্পর্কে ধারণা দেয়া হয়। *** #Algorithm -> অাপনি কি জানেন কিভাবে বড় একটা ফাইলকে কমপ্রেস করে সাইজ কমিয়ে ফেলা সম্ভব হয়? গুগল কিভাবে লাখ লাখ ওয়েবসাইট থেকে চোখের পলকে দরকারি ডাটা খুজে আনে? কিভাবে লাখ লাখ টেরাবাইটের ডিএনএ সিকোয়েন্স থেকে খুজে বের করা হয় জীবনের রহস্য? এধরণের প্রবলেম সলভিং এর হাতেখড়ি হয় অ্যালগোরিদম কোর্সে। অ্যালগোরিদম হলো একটি সমস্যাকে সমাধান করার বিভিন্ন ধাপ। অ্যালগোরিদম কোর্সে মূলত শেখানো হয় প্রবলেম সলভিং টেকনিক। সেখানে এধরণের রিয়েল লাইফ প্রবলেম সরাসরি সলভ করা শেখাবেনা, তবে এই কোর্সটা একটা বেস তৈরি করবে, কিছু কমন প্রবলেম সলভিং টেকনিক শিখিয়ে দিবে। কম্পিউটারে মেমরি এবং সময় কম খরচ করে কিভাবে সমস্যা সমাধান করা যায় সেগুলো শেখানো হয় এখানে। এই কোর্সেও ল্যাব এবং থিওরী দুটোই থাকে। এই কোর্সটা করার সময় অাপনি বুঝতে পারবেন যে শুধু প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ জেনে কোনো লাভ নেই, সেটা ব্যবহার সমস্যা সমাধান করতে জানতে হবে। অ্যালগোরিদম এবং ডাটা স্ট্রাকচার হলো কম্পিউটার সায়েন্সের মূল ভিত্তি, প্রতিটা টপিকে এগুলো কাজে লাগে। *** #Mathematics -> কম্পিউটার সায়েন্সের স্টুডেন্টদের ভালো গণিত জানার দরকার হয়। এটার কারণটা সবার কাছে পরিস্কার না। এই বিষয়টা নিয়ে অামি অন্য কোন একদিন অামার মজার একটা experience share করব। নতুন অ্যালগোরিদম বা ডাটা স্ট্রাকচার ডিজাইন করার সময় এগুলো কতটা ভালো কাজ করবে সেটা নির্ধারণ করতে গণিত দরকার হয়। একটা সমস্যা অনেক ভাবে সমাধান করা যায়, কোন পদ্ধতিটা সবথেকে ভালো, কোনটা কম মেমরিতে কম সময়ে কাজ করবে এসব হিসাবের জন্য গণিতের জ্ঞান খুব দরকার। অাপনি যত ভালো গণিত জানবেন অাপনার প্রবলেম সলভিং স্কিল তত ভালো হবে। বাইরের দেশে এজন্য department এর নামটাই এরকম -Department of Computer Science and Mathematics. গণিতের অনেক কঠিন কঠিন সমস্যাও আজকাল কম্পিউটার দিয়ে সলভ করা হয়, এমনকি থিওরেম প্রমাণও করা হয়। গণিতের মধ্যে জানা লাগবে মূলত কম্বিনেটরিক্স, প্রোবাবিলিটি, নাম্বার থিওরি, জিওমেট্রি এবং লিনিয়ার অ্যালজেব্রা ইত্যাদি। এছাড়া কিছু ক্যালকুলাস শেখানো হয়। প্রোবাবিলিটির জন্য আলাদা কোর্স করানো হয় এবং খুবই ইন্টারেস্টিং কিছু প্রবলেম সলভ করানো হয় সেখানে। কারো যদি গণিত ভালো লাগে তার জন্য কম্পিউটার সায়েন্সে ভালো করা সহজ হয় যায়। আবার কেও গণিতের রিয়েল লাইফ অ্যাপ্লিকেশন শিখতে চাইলেও এটা তার জন্য একটা ভালো সাবজেক্ট হতে পারে। *** #Operating_System_and_System_Programming -> এখানে শিখানো হয় কিভাবে অপারেটিং সিস্টেম কাজ করে। তবে তারমানে এই না যে উইন্ডোজ চালানো শেখানো হয়! এখানে শিখায় অপারেটিং সিস্টেমের ইন্টারনাল স্ট্রাকচার কিরকম। কম্পিউটারে একই সাথে ১০টা কাজ করলে অপারেটিং সিস্টেমকে ১০টা কাজের জন্য বিশেষ শিডিউল তৈরি করতে হয়, সেগুলো এখানে শিখানো হয়। তারপর ধরো ২টা প্রোগ্রাম একই সাথে প্রিন্টার ব্যবহার করতে চাইলো, কাকে অপেক্ষায় রেখে কাকে দিবে এ ধরণের রিসোর্স ম্যানেজমেন্টের কাজও শিখানো হয়। সিস্টেম প্রোগ্রামিং এ মুক্তসোর্স অপারেটিং সিস্টেম ইউনিক্স/লিনাক্সের সোর্সকোড নিয়ে ঘাটাঘাটি করা হয়। এই কোর্সটা ভালোমত করলে শেখা যাবে কিভাবে মডেম বা বিভিন্ন ডিভাইসের জন্য ড্রাইভার তৈরি করা যায়, কিভাবে অপারেটিং সিস্টেমের ভিতরের কোড মডিফাই করা যায়। ভবিষ্যতে কেও অপারেটিং সিস্টেম তৈরি করতে চাইলে বা এই সম্পর্কিত রিসার্চ করতে চাইলে সেটার ব্যাকগ্রাউন্ড তৈরি হয় এখানে। *** #Database -> ওয়েবসাইট বা বড়বড় সফটওয়্যার বিশাল ডাটা রাখে “ডাটাবেস” এর ভিতর। ডাটাবেসে কিভাবে ডাটা রাখতে হয়, কিভাবে সেখান থেকে ডাটা নিয়ে আসতে হয় ইত্যাদি নিয়ে এই কোর্স। *** #Artificial_Intelligence -> নাম শুনেই বোঝা যাচ্ছে কি নিয়ে এই কোর্স, থিসিসের জন্য খুবই পপুলার একটা টপিক এটা। কিভাবে রোবটকে দিয়ে কাজ করানো যায়, গেমের ক্যারেক্টার নিজে নিজে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেয়, কম্পিউটার কিভাবে দাবা খেলে এই ধরণের দারুণ ইন্টারেস্টিং সব টপিক এ.আই এর অন্তর্ভূক্ত। ল্যাবে প্রোগ্রামিং করে এসব টেকনিক ইমপ্লিমেন্টও করতে হয়। গেম প্রোগ্রামিং বা রোবোটিকস এ আগ্রহ থাকলে এই কোর্সটি তোমার খুব পছন্দ হবে। নিউরাল নেটওয়ার্ক, জেনেটিক অ্যালগোরিদমের মতো দারুণ সব জিনিস শিখতে পারবে।
ইঞ্জিনিয়ারস ডায়েরী – Engineers Diary *** #Compiler -> সাদামাটা ভাষায় কম্পাইলার জিনিসটার কাজ প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজকে মেশিন ভাষায় পরিণত করা যাতে হার্ডওয়্যার সেটা বুঝতে পারে। প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ কিভাবে কাজ করে, কিভাবে নিজের প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ তৈরি করা যায় এগুলো নিয়েই কম্পাইলার কোর্স। প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজের ইনস্ট্রাকশন গুলো কম্পিউটার কিভাবে মেশিন কোড বানিয়ে কাজ করে সেগুলো শেখানো হয় এখানে। মানুষের ভাষার মতো প্রোগ্রামিং ভাষারও গ্রামার থাকে, সেগুলো নিয়ে জানতে পারবে। *** #Graphics -> আমরা কম্পিউটার গেমস বা অ্যানিমেটেড মুভিতে এত সুন্দর গ্রাফিক্স দেখি তার পিছনে আছে প্রচুর ম্যাথমেটিকাল থিওরী। যেমন গেমসে লাইটিং, শেডিং কিভাবে বাস্তবসম্মত করা যায় তার পিছনে আছে অনেক থিওরী। গেমারদের কাছে প্রচলিত শব্দ “এন্টি এলিয়াসিং”, “শেডিং” ইত্যাদি সম্পর্কে এই টপিকে বিস্তারিত পড়ানো হয়। প্রচুর জ্যামিতি দরকার হয় এখানে। যেমন একটা ৩-ডি বাক্সকে ৪৫ ডিগ্রী ঘুরালে কো-অর্ডিনেট কত পরিবর্তন হবে এসব হিসাব এখানে করতে হয় এবং ল্যাবে সেই অনুযায়ি গ্রাফিকাল প্রোগ্রাম লিখতে হয়, তাই শেখাটা শুধু মুখস্থে সীমাবদ্ধ থাকেনা। তুমি কলেজে থাকতে হয়তো বৃত্ত, সরলরেখার ইকুয়েশন শিখেছো, এখানে শিখবে ওগুলো ব্যবহার করে কিভাবে গ্রাফিক্স তৈরি হয়। *** #Data_Communications_and_Networking -> কিভাবে একটা কম্পিউটারকে আরো ১০ কম্পিউটারের সাথে কানেক্ট করতে হয়, কিভাবে ইন্টারনেট কাজ করে, কিভাবে নেটওয়ার্কে ডাটা প্যাকেট পাঠানো হয় এবং অন্য প্রান্তে রিসিভ করা হয় ইত্যাদি শেখানো হয়। নেটওয়ার্ক সিকিউরিটিও এই টপিকের অন্তর্ভূক্ত। জানতে পারবে ল্যান, ডিএনএস সার্ভার, আইপিভি-৬, ক্রিপ্টোগ্রাফি ইত্যাদি সম্পর্কে। *** #Distributed_System -> ডিস্ট্রিবিউটেড সিস্টেম: তুমি হয়তো জানো বড় বড় যেসব কাজে অনেক মেমরি, শক্তি দরকার হয় সেসব কাজে অনেকগুলো কম্পিউটারকে একসাথে ব্যবহার করে কাজ করা হয়। বড় বড় রিসার্চের কাজ এভাবে করা হয়, ওয়েবসাইটগুলোতেও অনেকগুলো সার্ভার একসাথে কাজ করে। কিভাবে ডিস্ট্রিবিউটেড সিস্টেম ডিজাইন করা যায় সেটা নিয়েই এই কোর্স। *** #Software_Engineering -> আধুনিক সফটওয়্যার ডিজাইনের টেকনিক পড়ানো হয় এই টপিকে। সব বিশ্ববিদ্যালয়ের কারিকুলামে সম্ভবত এটা নেই। *** এখন আসি হার্ডওয়্যারে। কম্পিউটার সায়েন্সে হার্ডওয়ার নিয়ে অনেক কিছু পড়ানো হয়। কম্পিউটার আর্কিটেকচারে কম্পিউটারে মূল গঠন পড়ানো হয়। কিভাবে কম্পিউটারের তথ্য যাবার পথ বা “ডাটা বাস” কাজ করে। ইলেকট্রিকাল সার্কিটের মতো কম্পিউটারে থাকে বিশেষ ডিজিটাল সার্কিট, সেগুলো নিয়ে পড়ানো হয় ডিজিটাল সিস্টেমস টপিকে। এছাড়া বিভিন্ন ডিভাইস যোগ করলে কিভাবে সেটা কম্পিউটারের সাথে যোগাযোগ করে এসব পড়ানো হয় হার্ডওয়্যার অংশে। ল্যাবে বিভিন্ন ধরণের সার্কিট তৈরি করতে হয়। প্রজেক্ট অংশে অনেক ক্রিয়েটিভিটি দেখানোর সুযোগ থাকে, কেও কেও রোবট তৈরি করে, অারডিওনো দিয়েও embedded system বানানো যায়………..। *** এই হলো মোটামুটি কম্পিউটার সায়েন্সে যা যা পড়ানো হয় তার সামারি। অনেক টপিক বাদ পড়ে গেছে। লিখলে লেখাটা অনেক দীর্ঘ হবে তাই সামারি করা অারকি। অার একটা বিষয় কম্পিউটার সায়েন্সের আকর্ষণীয় একটা দিক হলো #কনটেস্ট। সারাবছরই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় বা কোম্পানি প্রোগ্রামিং কনটেস্ট এবং সফটওয়্যার কনটেস্ট আয়োজন করে। প্রোগ্রামিং কনটেস্টে মূলত অলিম্পিয়াড স্টাইলে অ্যালগোরিদমের সাহায্যে প্রবলেম সলভ করতে হয়। এখানে সুযোগ আছে সারা বিশ্বের বড় বড় প্রোগ্রামারদের সাথে কনটেস্ট করার। বাংলাদেশের মানুষের গর্ব করার মতো জিনিস খুব বেশি নেই, তবে প্রোগ্রামিং কনটেস্ট অবশ্যই সেই অল্প জিনিসগুলোর একটা। সফটওয়্যার কনটেস্টে মূলত বিভিন্ন সফটওয়্যার, ওয়েব সাইট ডিজাইন করতে হয়, মোবাইল বিশেষ করে অ্যান্ড্রয়েড ভিত্তিক মোবাইলের সফটওয়্যার কনটেস্ট বর্তমানে খুব জনপ্রিয়। আরেকটি আকর্ষণীয় দিক হলো গবেষণার সুযোগ। কম্পিউটার সায়েন্স শেষ বর্ষে কিছু ক্রেডিট থাকে গবেষণা বা প্রজেক্টের জন্য। প্রতি বছরই বাংলাদেশের অনার্সের ছাত্ররা ভালো ভালো জার্নালে পেপার পাবলিশ করে থাকে। কম্পিউটার সাইন্সের গবেষণার একটা সুবিধা হলো নিজের ডেস্কটপ কম্পিউটার ব্যবহার করেই বড় বড় গবেষণা করে ফেলা যায়, কোটি টাকা যন্ত্রপাতির দরকার হয় না(অবশ্যই দরকার হয়, তবে সেগুলো ছাড়াও অনেক কাজ করা যায়)। কম্পিউটার সায়েন্স অনার্স করে তুমি চাইলে অন্যান্য বিষয় নিয়েও পড়ালেখা করতে পারো কারণ এখন সবকাজে কম্পিউটার দরকার হয়। তুমি চাইলে ফিজিক্সের লাইনে গিয়ে কোয়ান্টাম কম্পিউটার নিয়ে কাজ করতে পারো। আবার বায়োলজী ভালো লাগলে বায়োইনফরমেটিক্স নিয়ে পড়ালেখা করতে পারো, কাজ করতে পারবো ন্যানোটেকনোলজী, ডিএনএ/প্রোটিন অ্যানালাইসিস নিয়ে। এরকম হাজারটা সম্ভাবনা তোমার সামনে থাকবে। আশা করি লেখাটা পড়ার পর কম্পিউটার সায়েন্সে কি পড়ানো হয় সে সম্পর্কে একটা ধারণা তৈরি হয়েছে এবং ভূল ধারণাগুলো ভেঙে গেছে। সকল ভর্তি পরীক্ষার্থীদের প্রতি শুভকামনা আবদুস ছামাদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়,রংপুর