১৯৮৬ সালে মিখায়েল পুচকভ (Mikhail Puchkov) নামের ২০ বছর বয়সী এক রাশিয়ান এক আসন বিশিষ্ট একটি সাবমেরিন তৈরি করে বিশ্বব্যাপি আলোড়ন সৃষ্টি করেন। স্থানীয় ছোট্ট একটি কারখানা শ্রমিক স্বল্প শিক্ষিত পুচকভ স্বপ্ন দেখতেন দেশ বিদেশে ঘুরে বেড়ানোর।

পুচকভ

    পুচকভ ও তার প্রথম সাবমেরিন

কিন্তু আর্থিক সাধ্য নেই, তাই কি আর করা যায়! কয়েক বছরের চেষ্টায় নিজেই তৈরি করলেন প্যাডেল চালিত মাত্র ২৩০ কেজি ওজনের ছোট কিন্তু কার্যকর এক সাবমেরিন!

বেরিয়ে পড়লেন সাগর জলে, কিন্তু নরওয়ের সমুদ্র সীমানায় প্রবেশকালে পানির নিচের তারের সীমান্ত বেড়ায় ধাক্কা খেয়ে দ্রুতই ধরা পড়লেন রাশিয়ান গোয়েন্দা বাহিনী (KGB)র হাতে।

তদন্ত শেষে KGB সরকারকে সুপারিশ করলো এই ছেলে অত্যান্ত মেধাবী, একে জেলে বন্দী না করে পড়াশোনা করালে ভালো ফল পাওয়া যাবে।
সবচেয়ে বয়স্ক ছাত্র হিসেবে তাকে ভর্তি করা হলো সেন্ট পিটার্সবার্গ শিপ বিল্ডিং ইন্সটিটিউটে।

এক সময় পাশ করে বের হলেন এবং ২০০৬ সালে পুচকভ উপহার দিলেন মাত্র ২৩’শ কেজি ওজনের দুই আসন বিশিষ্ট পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট এবং অত্যাধুনিক একটি সাবমেরিন।

যাতে ছিল স্যাটেলাইট যোগাযোগ প্রযুক্তি, জিপিএস নেভিগেশন সিস্টেম, অক্সিজেন জেনারেটিং প্লান্ট ইত্যাদি। সাবমেরিনটি তখন রাশিয়ান নৌবাহিনীতে যুক্ত করা হয়।

(লেখার পরের দিকে এরকম আরো কিছু উদাহরণ দেওয়ার চেষ্টা করবো।)

এবার আসি মূল বিষয়ে। আসলে মেধা পাচার (Brain Drain) কি?

উপরের বিষয়টি থেকে কিছুটা নিশ্চয়ই আঁচ করা যাচ্ছে!

একটি দেশের উচ্চ শিক্ষিত, উচ্চতর প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত এবং নিজ নিজ ক্ষেত্রে মান সন্মত অবদান রাখার সামর্থ সম্পন্ন ব্যক্তিরা যখন নিজ দেশ ছেড়ে অন্য দেশে গিয়ে সে দেশের স্বার্থে স্থায়ী ভাবে কাজ করে বা মেধাকে কাজে লাগায় তখন এই বিষয়টিকেই মেধা পাচার বলে।

মেধা পাচার এজন্য যে, তিনি তার মেধা যোগ্যতা সামর্থ উদ্ভাবনী ক্ষমতা সব নিয়ে গিয়ে অন্য দেশকে দিচ্ছেন। এরকম ব্যক্তিগণ যে কোন পেশার হতে পারেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, খেলোয়াড়, রসায়নবিদ, পদার্থবিদ, গণিতজ্ঞ, পাইলট, কৃষক, কৃষিবিদ,স্থপতি,বিজ্ঞানী, গবেষক, উদ্ভাবক, প্রোগ্রামার… প্রভৃতি।

এমনকি যার শিক্ষাগত যোগ্যতা কম কিন্তু তিনি কোন একটি বিশেষ ক্ষেত্রে অনেক অভিজ্ঞ (Highly experienced technician) তার ক্ষেত্রেও বিষয়টি প্রযোজ্য।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রিধারীরা হলো সারা বিশ্বের সম্পদ। তাদের অর্জিত জ্ঞান হয় বিশ্বমানের। (আর এজন্যই এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম University, অর্থাৎ এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার মান Universal বা চিরন্তন।) তথাপি তাদের পিছনে দেশের দেওয়া “শ্রম-সময়-অর্থ” ইত্যাদির প্রতিদান দেশকেই আগে বুঝিয়ে দিতে হবে।

দেশের জন্য কাজ করেও এবং দেশে থেকেও সারা পৃথিবীর জন্য অবদান রাখা সম্ভব।

আর্থসামাজিক কারণে বাংলাদেশে একজন বিশ্ববিদ্যালয় গ্রাজুয়েট তৈরি হয় অনেক কষ্ট করে। পরিবার যতোই দরিদ্র হোক কিংবা ধর্ণাঢ্য হোক তাদেরকে অনেক কষ্ট এবং বিনিয়োগ করতে হয়।

এর সাথে আছে রাষ্ট্রের বিনিয়োগ এবং সহায়তা (fecility)। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (University Grand Commission-UGC) এর তথ্য মতে অনার্স- মাস্টার্স সম্পন্ন করাতে একেক জন ছাত্রের পিছনে শুধু সরকারেরই খরচ হয়-পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে ৬ লাখ টাকা, বুয়েটে-১০ লাখ এবং সরকারি মেডিকেল কলেজে MBBS এর জন্য ১৫ লাখ টাকা করে।

আর প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করাতে সরকারের গড় খরচ আরো প্রায় ১০ লাখ টাকা করে! এসব খরচের হিসাব শুধু রাষ্ট্রের থেকে, পরিবারের খরচের হিসাব নয়!

এসব শিক্ষার্থীদের অনেকেই আবার উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে যায়। যদিও সেখানে তাদের অধিকাংশই নিজ খরচে পড়াশোনা করেন, তথাপি তার পিছনে রাষ্ট্রের একটি পরোক্ষ খরচ থাকে।

কেননা তখন তিনি এই দেশের পাসপোর্ট ব্যবহার করেন এবং বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সহায়তা পেয়ে থাকেন, অনেকের খরচ বাংলাদেশ থেকেই পাঠানো হয়। আর যারা শিক্ষা ছুটি নিয়ে বিদেশে যায় তারা ৬ বছর পর্যন্ত রাষ্ট্র (নিজ প্রতিষ্ঠান) খরচ বহন করে।

পরিতাপের বিষয় যে- পড়াশোনা এবং গবেষণা শেষ করে এসব শিক্ষার্থীদের একটি বিরাট অংশ আর দেশে ফেরত আসেনা।

এমন সব শিক্ষার্থীদের ফিরে না আসাটাও এক ধরনের মেধা পাচার।

UNESCO এর Global flow of tertiary level students বিষয়ক রিপোর্টের তথ্য অনুযায়ী এক বছরে বাংলাদেশ থেকে মোট 57675 জন শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হয়। (রিপোর্ট টি প্রকাশিত হয় ২৬-৯-২০১৯ তারিখে এবং সেদিন পর্যন্ত এক বছরের হিসাব)

তাদের হিসাব মতে, যেসব দেশে সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশী শিক্ষার্থী গিয়েছে তার মধ্যে প্রথমেই আছে মালয়েশিয়া- ২০৮১১, যুক্তরাষ্ট্র-৭০২৮, অস্ট্রেলিয়া-৪৯৮৬, বৃটেন-২৫৩৬, জার্মানি-২৩১১, কানাডা-২১৯০,জাপান-১৪০৪, ফিনল্যান্ড -৬২০, সুইডেন -৪৯৫ এমনকি লুক্সেমবার্গে ৫ জন সহ ইউরোপের সব কয়টি দেশে।

আর নিশ্চিত ভাবেই বলা যায় এসব শিক্ষার্থীদের একটি বিরাট অংশ আর কখনোই বাংলাদেশে ফিরে আসবেনা। অর্থাৎ আমাদের দেশের মেধা গুলো এই ফিরে না আসার মাধ্যমেই পাচার হয়ে যাচ্ছে।

বিগত ৭০ বছর ধরে শিক্ষা বিষয়ক আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান Open doors এর প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী উন্নত দেশগুলোতে এসে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি-৮৭২২১৪ জন, তারপর অষ্ট্রেলিয়া-৭২০১৫০, কানাডা-৬৪২৪৮০, বৃটেন-৪৮৫৬৪৫ এবং জার্মানিতে-৩৯৩৫৭৯ জন শিক্ষার্থী। এছাড়া অন্যান্য দেশে তো আছেই। Open doors এর তথ্য মতে এসব দেশ গুলোতে আসা শিক্ষার্থীদের ৩০% শিক্ষা জীবন শেষ হওয়ার ৫ বছর পরও নিজ দেশে ফেরত যায়না। সুতরাং এটাকে স্পষ্টতই মেধা পাচারের একটি দুঃখজনক দিক বলা যায়।

Open Door এর প্রতিবেদন

বিগত ৭০ বছর ধরে শিক্ষা বিষয়ক আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান Open doors এর প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী উন্নত দেশগুলোতে এসে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে।

এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি-৮৭২২১৪ জন, তারপর অষ্ট্রেলিয়া-৭২০১৫০, কানাডা-৬৪২৪৮০, বৃটেন-৪৮৫৬৪৫ এবং জার্মানিতে-৩৯৩৫৭৯ জন শিক্ষার্থী। এছাড়া অন্যান্য দেশে তো আছেই।

Open doors এর তথ্য মতে এসব দেশ গুলোতে আসা শিক্ষার্থীদের ৩০% শিক্ষা জীবন শেষ হওয়ার ৫ বছর পরও নিজ দেশে ফেরত যায়না। সুতরাং এটাকে স্পষ্টতই মেধা পাচারের একটি দুঃখজনক দিক বলা যায়।

কিন্তু তারা কেন ফিরে আসেনা? কেনই বা মেধা পাচার হয়?
আমার (মাসুদ আলম) মতে বাংলাদেশ থেকে মেধা পাচারের কারণ গুলো হল-

★★ সামাজিক কারণ-

১- উন্নত দেশ উন্নত পরিবেশে জীবন যাপনের আশায়।
২- উচ্চ বেতন বা আয়ের আশায়/আয় নিশ্চিত হলে।
৩- শিক্ষা বা গবেষণা শেষে ভালো চাকুরির প্রস্তাব পেলে।
৪- চাকুরির নিরাপত্তা ও প্রশাসনিক নমনীয়তা (Official flexibility) বেশি পেলে।
৫- সন্তানদের তথা পরিবারের জন্য উন্নত দেশে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে।
৬- জীবনের নিরাপত্তা (বিদ্বেষ, আক্রমণ, হত্যা ইত্যাদি থেকে) অধিক থাকায়।

★★ শিক্ষা বিষয়ক কারণ-
৭- গবেষণার বিস্তৃত ও নিরবচ্ছিন্ন সুযোগ থাকায়।
৮- গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ ও স্বাধীনতার নিশ্চয়তা পাওয়া।
৯- শিক্ষা ও গবেষণার কাজে অত্যাধুনিক সরঞ্জামের সহজ প্রাপ্যতা।
১০- সহকর্মী বা রিসার্চ ফেলোদের থেকে/ প্রতিষ্ঠান থেকে সামগ্রিক ও মানসিক সহযোগিতা প্রাপ্তি।
১১- ভালো কাজের (achievement) স্বীকৃতি পাওয়া।
১২- নামী ও বিখ্যাত প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়ন/অধ্যাপনা/গবেষণা করার আত্মতৃপ্তি।

★★ নিজ দেশের পরিবেশগত কারণ-
১৩- রাজনৈতিক কারণে/ অন্যায় কারণে হয়রানির শিকার হওয়া।
১৪- কর্মক্ষেত্রে কাঙ্খিত পদমর্যাদা/পদোন্নতি/যথাযোগ্য সন্মান না পাওয়া।
১৫- চাকুরীতে নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধার যথাযথ মূল্যায়ন না পাওয়া।

★★ নৈতিক/অনৈতিক কারণ-
১৬- নৈতিকতার অভাব/দেশের প্রতি মমত্ববোধ না থাকা ও অকৃতজ্ঞ থাকায়।
১৭- দেশের তরে কাজ করার/ উন্নয়নে অবদান রাখার মানসিকতা না থাকা।
১৮- পরিবার ও সন্তানদের চাপ (চলে যেতে)
১৯- নিজ দেশে আইনত অপরাধী হলে
২০- সুন্দরী বিদেশি মেয়ের প্রেমে পড়া/বিয়ে করে নাগরিকত্ব পেলে অথবা জীবনসঙ্গী সে দেশের নাগরিক হলে।

এছাড়া, স্বাধীনতার পরবর্তী সময় থেকে বাংলাদেশ থেকে মেধা পাচারের কিছু খন্ড চিত্র ও কারণ তুলে ধরছি-

★ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৭ জন শিক্ষক উচ্চ শিক্ষা ও গবেষণার জন্য বিদেশ গিয়ে আর ফিরে আসেননি। তারা ৫ বছর পূর্ণ বেতন+১ বছর অর্ধেক বেতন+ ১ বছর বিনা বেতনে ছুটি নিয়েছিলেন।

★ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১০ জন শিক্ষক বিভিন্ন সময়ে উচ্চ শিক্ষা ও গবেষণার জন্য বিদেশ গিয়ে ফিরে আসেননি। তারা প্রত্যেকেই ছুটিতে থেকে নিয়মিত বেতন নিয়েছেন।

★ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৪ জন শিক্ষক উচ্চ শিক্ষার্থে বিদেশ গিয়ে ফিরে আসেননি।
(১১-১১-১৯, ঢাকা ট্রাইবুন)

★ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ঃ ১৯৮৩-২০১৩ এই ৩০ বছরে ১৩৯ জন শিক্ষক উচ্চা শিক্ষা ও গবেষণার জন্য বেতনসহ বিদেশ গিয়ে আর ফেরত আসেননি। যার মধ্যে বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকই ৮৩ জন। যদিও ৩৫ জন তাদের নেওয়া বেতনের টাকা ফেরত দিয়েছেন।
(প্রথম আলো, ৩১-৫-১৩)।

উচ্চ শিক্ষার্থে বিদেশ গিয়ে আর ফিরে না আসায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ শিক্ষককে চাকুরিচ্যুত। (ইনকিলাব,৩০-১১-১৯)

★ বুয়েট অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য মতে, কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের ১৯৮৬ র ব্যাচে মোট শিক্ষার্থী ছিলেন ৩১ জন, তাদের ২৫ জনই এখন বিদেশে।

১৯৯৪ র ব্যাচের ৪৫ জনের মধ্যে ৩৫ জনই স্থায়ী হয়েছেন বিদেশে। ১৯৯৮ র ব্যাচের ৬৫ জনের মধ্যে ৩০ জন বিদেশে। তারা বিশ্বের নানা স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন।

বুয়েটের ইইই বিভাগের ২০০০ সালে পাস করে বের হওয়া ১৩০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে অর্ধেকই দেশের বাইরে স্থায়ী হয়েছেন।

এভাবে দেশের প্রায় সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের একটি অংশ বিদেশ গিয়ে আর ফিরে আসেননা এবং পাশ করে বের হওয়া ছাত্রদের একটি বিরাট অংশ দেশের বাইরে গিয়ে আর ফিরে আসেননা।

এবার দেখা যাক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাইরের চিত্র-
★ বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটে ৩১ জন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির বিপরীতে ৪৬ জনের জন্য শুধুমাত্র বিভিন্ন মন্ত্রী আলাদাভাবে সুপারিশ করেছেন! (ভোরের কাগজ, ১১-১১-২০০১)

এই একই প্রতিষ্ঠান থেকে হতাশা বঞ্চনা এবং পর্যাপ্ত সুযোগসুবিধা না পেয়ে ১১৫ জন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও গবেষক চাকুরী ছেড়েছেন। তাদের অর্ধেকেরও বেশি পাড়ি দিয়েছেন বিদেশে! (প্রথম আলো, ২৪-১-১৩)

তানিয়া আহমেদ: শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এর সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হওয়া একজন ছাত্রী। নিয়মানুযায়ী শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে তাকে শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হলেও তা সম্ভব হয়নি। কেননা তারই সহপাঠী এক ছাত্র যিনি একটি রাজনৈতিক দলের বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতা তাকে কর্তৃপক্ষ নিয়োগ দিতে বাধ্য হয়। যদিও তিনি অনেক টেনেটুনে শুধু পাশ করেছিলেন। তানিয়া পাড়ি জমালেন সুইডেনের লুন্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে মেধার স্বাক্ষর রেখে একমাত্র ছাত্র হিসেবে আদায় করে নিয়েছেন ১০০% ফ্রি স্কলারশিপ। (বর্তমানে তিনি) ভবিষ্যতের সুইডিশ নাগরিক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক শিক্ষক!(তার ফেইসবুক স্ট্যাটাস থেকে)

ফেইসবুক স্ট্যাটাস থেকে

★ তানিয়া আহমেদ: শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এর সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হওয়া একজন ছাত্রী। নিয়মানুযায়ী শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে তাকে শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হলেও তা সম্ভব হয়নি।

কেননা তারই সহপাঠী এক ছাত্র যিনি একটি রাজনৈতিক দলের বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতা তাকে কর্তৃপক্ষ নিয়োগ দিতে বাধ্য হয়। যদিও তিনি অনেক টেনেটুনে শুধু পাশ করেছিলেন।

তানিয়া পাড়ি জমালেন সুইডেনের লুন্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে মেধার স্বাক্ষর রেখে একমাত্র ছাত্র হিসেবে আদায় করে নিয়েছেন ১০০% ফ্রি স্কলারশিপ। (বর্তমানে তিনি) ভবিষ্যতের সুইডিশ নাগরিক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক শিক্ষক!(তার ফেইসবুক স্ট্যাটাস থেকে)

★ একই বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র ছিলেন তাইফুর রহমান প্রতীক। স্নাতক (সম্মান) পরীক্ষায় তিনি বিভাগে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়েছিলেন।

কিন্তু অভিযোগ আছে নানান ভাবে তাকে অসহযোগিতা করা হয় ফলে তিনি মাস্টার্সে খারাপ ফলাফল করেন। শেষ হয়ে যায় তার উচ্চশিক্ষা গবেষণা ও নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন। আত্মহত্যা করেন তিনি। (সমকাল, ১৬-১-২০১৯)

নিজামুদ্দিন আউলিয়া লিপুঃ বিশ্বখ্যাত অটোমোটিভ ইঞ্জিনিয়ার ও গাড়ির ডিজাইনার। ঢাকায় জন্ম নেওয়া ও বেড়ে ওঠা লিপু যাকে চেনে পৃথিবীর সব বিখ্যাত গাড়ী নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। তাদের অনেকেই লিপুর প্রতি আগ্রহ দেখিয়ে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল তাদের প্রতিষ্ঠানে, দিয়েছিল লোভনীয় সুযোগ সুবিধা সহ উচ্চ বেতনের চাকুরির প্রস্তাব। সব ছেড়ে লিপু এসেছিলেন বাংলাদেশে, গড়েছিলেন গাড়ি তৈরির সামান্য গ্যারেজ। ২০০০ সালে ঢাকার রাস্তায় চালিয়েছেন নিজের হাতে তৈরি করা ল্যাম্বুরগিনি গাড়ি, খুব সহজেই পুরাতন গাড়ীকে নতুন কোন মডেলে রুপান্তরিত করার আশ্চর্য ক্ষমতা আছে তার। (ছবিতে তার গাড়ি দেখুন) টিকতে পারেননি দেশে। রাতে তার গাড়ি পরীক্ষা (টেস্ট ড্রাইভ), উচ্চ শব্দ, নম্বর প্লেট না থাকা.... পুলিশি হয়রানি ইত্যাদি নানান জটিলতায় ত্যাক্তবিরক্ত হয়ে আবারো পাড়ি জমালেন আমেরিকায়! পাচার হয়ে গেল আমাদের আরেকটি মেধা।

★নিজামুদ্দিন আউলিয়া লিপুঃ বিশ্বখ্যাত অটোমোটিভ ইঞ্জিনিয়ার ও গাড়ির ডিজাইনার। ঢাকায় জন্ম নেওয়া ও বেড়ে ওঠা লিপু যাকে চেনে পৃথিবীর সব বিখ্যাত গাড়ী নির্মাতা প্রতিষ্ঠান।

তাদের অনেকেই লিপুর প্রতি আগ্রহ দেখিয়ে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল তাদের প্রতিষ্ঠানে, দিয়েছিল লোভনীয় সুযোগ সুবিধা সহ উচ্চ বেতনের চাকুরির প্রস্তাব। সব ছেড়ে লিপু এসেছিলেন বাংলাদেশে, গড়েছিলেন গাড়ি তৈরির সামান্য গ্যারেজ।

২০০০ সালে ঢাকার রাস্তায় চালিয়েছেন নিজের হাতে তৈরি করা ল্যাম্বুরগিনি গাড়ি, খুব সহজেই পুরাতন গাড়ীকে নতুন কোন মডেলে রুপান্তরিত করার আশ্চর্য ক্ষমতা আছে তার। (ছবিতে তার গাড়ি দেখুন)

টিকতে পারেননি দেশে। রাতে তার গাড়ি পরীক্ষা (টেস্ট ড্রাইভ), উচ্চ শব্দ, নম্বর প্লেট না থাকা…. পুলিশি হয়রানি ইত্যাদি নানান জটিলতায় ত্যাক্তবিরক্ত হয়ে আবারো পাড়ি জমালেন আমেরিকায়! পাচার হয়ে গেল আমাদের আরেকটি মেধা।

নিজামুদ্দিন আউলিয়া লিপুঃ বিশ্বখ্যাত অটোমোটিভ ইঞ্জিনিয়ার ও গাড়ির ডিজাইনার। ঢাকায় জন্ম নেওয়া ও বেড়ে ওঠা লিপু যাকে চেনে পৃথিবীর সব বিখ্যাত গাড়ী নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। তাদের অনেকেই লিপুর প্রতি আগ্রহ দেখিয়ে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল তাদের প্রতিষ্ঠানে, দিয়েছিল লোভনীয় সুযোগ সুবিধা সহ উচ্চ বেতনের চাকুরির প্রস্তাব। সব ছেড়ে লিপু এসেছিলেন বাংলাদেশে, গড়েছিলেন গাড়ি তৈরির সামান্য গ্যারেজ। ২০০০ সালে ঢাকার রাস্তায় চালিয়েছেন নিজের হাতে তৈরি করা ল্যাম্বুরগিনি গাড়ি, খুব সহজেই পুরাতন গাড়ীকে নতুন কোন মডেলে রুপান্তরিত করার আশ্চর্য ক্ষমতা আছে তার। (ছবিতে তার গাড়ি দেখুন) টিকতে পারেননি দেশে। রাতে তার গাড়ি পরীক্ষা (টেস্ট ড্রাইভ), উচ্চ শব্দ, নম্বর প্লেট না থাকা.... পুলিশি হয়রানি ইত্যাদি নানান জটিলতায় ত্যাক্তবিরক্ত হয়ে আবারো পাড়ি জমালেন আমেরিকায়! পাচার হয়ে গেল আমাদের আরেকটি মেধা।★★ মেধা পাচার রোধে আমাদের করণীয় কি?

মেধা পাচার সম্পূর্ণভাবে রোধ করা উন্নয়নশীল এবং দরিদ্র দেশগুলোর পক্ষে কখনোই সম্ভব হবেনা। তবে নানাবিধ দীর্ঘ মেয়াদি কার্যকর পদক্ষেপের ফলে এই প্রবণতা কমিয়ে আনা সম্ভব। এজন্য করণীয় কি তা মেধা পাচারের কারণ গুলোর দিকে তাকালে খুব সহজেই নিরূপণ করা সম্ভব।

অর্থাৎ যেসব কারণে এসব সুপ্রশিক্ষিত দক্ষ জনশক্তি বিদেশে চলে যায় সেগুলোর প্রতিকার করা।
মেধা পাচার একটি বিশ্বময় সমস্যা। তবে সমস্যাটি সল্পোন্নত ও অনুন্নত দেশ গুলোতেই সবচেয়ে বেশি। যদিও ইউরোপের উন্নত দেশ গুলোতেও এই সমস্যাটি পরিলক্ষিত হয়।

তাই বলা যায় এসব দেশের মেধা পাচার সম্পূর্ণভাবে রোধ করা কখনোই সম্ভব নয় তবে দেশ গুলোর নেয়া কিছু পদক্ষেপের কারণে তা কমে আসতে পারে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আমার মতে দুই ভাবে এটি করা যেতে পারে। যথা-

(ক) দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ
(খ) দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা ও পদক্ষেপ গ্রহণ।

★কঃ-১- বিশেষ মেধা ও যোগ্যতা সম্পন্নদের জন্য বিশেষ উচ্চ বেতন কাঠামো নিশ্চিত করা।
২- উন্নত আবাসন (বাড়ি,গাড়ি) উন্নত কর্ম পরিবেশ নিশ্চিত করা।
৩- প্র‌যোজ্য ক্ষেত্রে পেশাগত নমনীয়তা (Office duty flexibility) প্রদান করা। (যেমন আর্কিটেক্ট, ডিজাইনার ইত্যাদি) অর্থাৎ চাইলে ঘরে বসে অফিস করতে পারা।

৪- গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর ও সুবিধাদির নিশ্চয়তা প্রদান করা।
৫- বিনামূল্যে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা।
৬- যুক্তিসঙ্গত ক্ষেত্রে তাদের কর (Tax) না থাকা বা মওকুফ করা।

★খ) দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা ও পদক্ষেপ গ্রহণঃ
৭-আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় শিক্ষা ব্যবস্থার আধুনিকায়ন করতে হবে।

৮- বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে মেধা ভিত্তিক ছাত্র ভর্তি এবং মেধাবী শিক্ষক গবেষক নিয়োগ করতে হবে।
৯- শিক্ষা ও গবেষণায় আলাদা উচ্চ বাজেট করতে হবে এবং তার সঠিক প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।
১০- বিশ্বমানের আধুনিক গবেষণার স্থাপন করতে হবে।
১১- সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার পরিবেশ উন্নত করতে হবে।
১২- ছাত্রাবাসের বা আবাসন সঙ্কট দূর করতে হবে। ( ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাস গুলোর গণ রুমের অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে!)
১৩- “দেশে ফিরে যাই” বা এরকম অন্য কোন নামের একটি দীর্ঘ মেয়াদি প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে। তাতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থান করা স্বনামধন্য মেধাবী পেশাজীবিদের এবং ছাত্রদের দেশে ফিরিয়ে এনে কাজে লাগানোর চেষ্টা করতে হবে (নিম্নে বর্ণিত চীনের প্রকল্পটি অাদর্শ হতে পারে)।

শুধুমাত্র এক বছরে বাংলাদেশ থেকে অবৈধ ভাবে পাচার হয়ে যাওয়া টাকা রক্ষা করতে পারলে তা দিয়েই এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা সম্ভব।

গত কয়েক দশকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তাদের দেশ থেকে পাচার হয়ে যাওয়া মেধা ফিরিয়ে আনতে এবং মেধা পাচার ঠেকাতে নানান রকমের উদ্যোগ নিয়েছে। ভারত থাইল্যান্ড পর্তুগাল আফ্রিকান ইউনিয়ন ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ভিয়েতনাম প্রভৃতি দেশ সহ আরো অনেক দেশ।

কয়েকটি দেশের গৃহীত প্রকল্প গুলোর সংক্ষিপ্ত রুপ তুলে ধরছি –

(১)- Brain Return 500ঃ দক্ষিণ কোরিয়া- ২০১৭ সালে শিক্ষা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় (MEST) ৫০০ জন বাছাইকৃত মেধাবী কোরিয়ানকে দেশে ফিরিয়ে আনার একটি প্রকল্প চালু করে। এই ৫০০ জন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিজ্ঞানী গবেষক উদ্ভাবক প্রোগ্রামার শিক্ষক প্রভৃতি পেশায় নিয়োজিত আছেন।

ব্রেইন রিটার্ন ৫০০ প্রজেক্টে ফিরিয়ে আনাদের জন্য বর্তমানের সমান বা তার চেয়েও বেশি সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে। (Korean IT times- 30.01.12)

★ EU Horizon Programঃ ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ২৭টি দেশ মিলে ৭ বছর মেয়াদি (২০১৪-২০) একটি যৌথ গবেষণা ও উদ্ভাবনী প্রোগ্রাম শুরু করেছে।

যার ফান্ড ৮০ বিলিয়ন ইউরো এবং এই প্রোগ্রামের মূল লক্ষ্য হলো EU’র বাইরে থাকা মেধাবীদের নিজ দেশে ফিরিয়ে এনে কাজে লাগানো।

★ Reverse Brain Drain (RDB)ঃ ১৯৯৭ সালে থাইল্যান্ডের National Science and Development Agency (NSTDA) বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চলে যাওয়া মেধাবীদের দেশে ফিরিয়ে এনে কাজে লাগানোর জন্য মোট ৩৫ টি ভিন্ন ভিন্ন দীর্ঘ মেয়াদি প্রজেক্ট শুরু করেছে এবং অনেকেই এর মধ্যে ফিরে এসেছেন।

★ চীনের প্রকল্পঃ 1000 talent program- পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি মেধা পাচার হয় চীন থেকে। দেশের জনসংখ্যার অনুপাতেও সংখ্যাটি অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি।

২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে শুধু মাত্র যুক্তরাষ্ট্রেই মোট ৩ লাখ চীনা শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষার্থে গমন করে। ১৯৭৮-২০১৭ সাল পর্যন্ত মোট ৫৮ লাখ চীনা শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছে এবং এর ৩০% আর কখনোই দেশে ফিরে আসেনি!

যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত Oak Ridge Institute ২০১৪ সালে আমেরিকায় সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং এর উপর ডক্টরেট সম্পন্ন করা ৪১২১ জন চীনা শিক্ষার্থীকে চিহ্নিত করে, যারা কমপক্ষে ৫ বছর আগে শিক্ষা ও গবেষণা শেষ করেছেন অথচ দেশে ফিরে যাননি।

চীনা শিক্ষার্থীদের এই চিত্রের প্রেক্ষিতে ২০০৮ সালে চীন 1000 talent program নামক একটি মেগা প্রজেক্ট চালু করেছে।

এর লক্ষ্য বিভিন্ন দেশে, বিশেষ করে আমেরিকায় অবস্থান করা অন্তত 1000 গুরুত্বপূর্ণ ও মেধাবী বিজ্ঞানী গবেষক উদ্ভাবক শিক্ষক ও প্রোগ্রামারকে দেশে ফিরিয়ে আনা। প্রজেক্টের মূল বিষয়বস্তু হলো- ফিরে আসতে হলে তারা কি চায়, তার সব দেওয়া হবে!

আর এজন্যই এটি “মেগা প্রজেক্ট”।
এই প্রজেক্টের আওতায় যারা ফিরে আসতে সন্মত হয় তাদের প্রত্যেকের জন্য ১ লাখ ৫০ হাজার ডলারের সাইনআপ বোনাস এবং দেশে আসলে ১৫ লাখ ডলারের রিসার্চ ফান্ড দেওয়া হবে, যেটা তিনি তার ইচ্ছে মতো নির্ধারিত খাতে ব্যয় (গবেষণা, সরঞ্জাম কেনা ইত্যাদি) করার কর্তৃত্ব পাবেন।

চীনা সরকারের তথ্য মতে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ৬ হাজার জন মেধাবী পেশাজীবি এই প্রজেক্টে সাড়া দিয়ে ফিরে আসার চুক্তি করেছেন।

(South China Morning Post- 06.8.2016)

পরিশেষে আমার মতামত দিয়ে শেষ করি- বাংলাদেশের মতো একটি দরিদ্র দেশ থেকে মেধা পাচার অবশ্যই রোধের উদ্যোগ নিতে হবে।

এজন্য ২০ হাজার কোটি টাকার একটি প্রাথমিক তহবিল গঠন করে শুরু করা যেতে পারে। কেননা মেধা পাচারের আসল কারণ হলো অর্থনৈতিক, সুতরাং এটা ঠেকানোর জন্য ‘অর্থনৈতিক হাতিয়ার’ ব্যবহার করতে হবে।

আর শীঘ্রই কোন উদ্যোগ না নিলে আগামী একশত বছরেও আমারা কাঙ্খিত উন্নয়নের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছাতে পারবোনা। এজন্য দেশের আপামর নীতি নির্ধারকদের উদ্যোগ নিতে হবে।

রাজনীতিবিদের আশায় বসে থাকলে সব শেষ হয়ে যাবে, কেননা এদেশের ৭৪% রাজনীতিকের সন্তানরা বিদেশে পড়াশোনা করে। (মানবজীবন, ২৪-১০-১৪)

(লেখাটি তৈরি করতে বিদেশে অবস্থানরত সহপাঠী বন্ধু, আত্মীয়, দেশি বিদেশি কতোগুলো সংবাদপত্র এবং জার্নালের সহায়তা নিয়েছি। আর অবশ্যই আমার দীর্ঘদিনের চিন্তা ভাবনা এবং পর্যবেক্ষণের সমন্বয় ঘটানোর চেষ্টা করেছি)

[পরিমার্জিত]

ধন্যবাদ
মাসুদ আলম
০৪-০৭-২০২০
আবুধাবি সিটি, ইউএই