“BUET Admission Test 2018”
বুয়েট ভর্তিচ্ছুরা,
প্রশ্নটা হলো “কি পড়বো”, “কিভাবে পড়বো” …
ওকে! জুনিওরদের থেকে পাওয়া নানাসময়ে নানা প্রশ্নের সবগুলা উত্তর এক পোস্টে দেয়ার চেষ্টা করি।
কিভাবে পড়বোঃ
এটা ভ্যারি করে। একেকজনের একেকভাবে পড়ায় একেক রকম এফিশিয়েন্সি থাকে, কেউ কেউ ভোরের পাখি, কেউ কেউ রাতের পেঁচা । তোমরা সবাইই কমবেশি অ্যাডমিশন কোচিং করবা।
কেউ কেউ একাধিক অ্যাডমিশন কোচিং করতে যাচ্ছো , কেউ কেউ এরও সাথে সাথে বাসায় পার্সোনাল কেয়ার রেখে পড়ছো।
আগামী কিছু সময় আমি যা লিখতে যাচ্ছি, ধরে নিচ্ছি তুমি জাস্ট একটা অ্যাডমিশন কোচিং সেন্টারে পড়ছো এবং বাসায় নিজের পড়ার এবং নিজের চিন্তা করার জন্য অনেক খানি সময় আছে তোমার হাতে।
ওকে, ধরে নেই সকালে তোমার কোচিং থাকে। আরো ধরে নেই আজকে সকালে ফিজিক্স পড়ে আসছো কোচিং থেকে।
এটা তোমার মাথায় রাখতে হবে, তুমি যতই এটেনটিভলি ক্লাস করো না কেনো কোচিং থেকে ঐ চ্যাপ্টার গুলার উপর ৬০-৭০% এর বেশি জ্ঞান নিয়ে আসতে পারবানা।
বাকি কাজ করতে হবে বাসায়।
শুরুতেই ওই দিন সন্ধ্যায় ক্লাস লেকচারটা পড়া শুরু করবা। খুব মন দিয়ে মিনিমাম ২ বার ক্লাস লেকচারটায় চোখ বুলাবা।
স্যারেরা কি কি বলসে , কোন রেফারেন্স দিসে বিভিন্ন জিনিস পড়ানোর সময় তা মনে করবা। দেন, ঐ ঐ চ্যাপ্টার গুলার বোর্ডে আসা প্রশ্ন গুলা সলভ করবা। যেহেতু ইন্টারেই ম্যাক্সিমাম সব সলভ হয়ে গেছে একাধিক বার, তাই এ কাজটা বেশ ফাস্ট হয়ে যাওয়া উচিত।
এবং ঐ রাতের শেষ পড়া হিসেবে ইন্টারে বাদ দিয়ে যাওয়া ( আই মিন বোর্ডে না আসা) প্রশ্ন গুলা সলভ করবা।প্রয়োজনে গাইড কিনে নিবা। আমি জানি টাফ, বেশ টাফ।
let me tell u what the problem is. We all want the prize, but who is there to pay the price ? 🙂 we are not talking about the easy vs hard right ? this is supposed to be hard! this is meant to be a tough job 🙂 anything with a value is not that easy…
যাই হোক, নেক্সট দিন সকালে উঠে ও চ্যাপ্টার গুলা থেকে বুয়েট, কুয়েট, চুয়েট, রুয়েট, মিস্ট, সাস্টে আসা সব প্রশ্ন সলভ করবা।
খেয়াল করলে দেখবা বুয়েটে আসা প্রশ্নগুলা কম্পারেটিভলি ইজিয়ার, সাস্ট আর কুয়েট এর প্রশ্ন বেশ কঠিন, বেশ ভালো রকমেরই কঠিন। হতাশ হবার দরকার নাই।
সব পারারও দরকার নাই তোমার। ফুল আন্সার কে করতে বলসে তোমাকে ? ঠান্ডা মাথায় যা পারো করে যাবা ।
করতে করতে হুট করেই খেয়াল করবা চ্যাপ্টার গুলার বেসিক স্বচ্ছ হয়ে গেছে একদম জাফলং এর ছোট ছোট হ্রদের পানি গুলার মতো।
আর ঐ রাতেই কনসেপ্ট বুক ক্লিয়ার করবা। প্রতিটা অ্যাডমিশন কোচিং সেন্টার থেকেই কিছু প্রবলেম নিয়ে একটা ছোট বই বের করে চ্যাপ্টার ওয়াইজ।
আমার কথা বলি, আমি কোনোকালেই কন্সেপ্ট বুকের ম্যাথ গুলার ৩৫% ও পারতাম না, শেষের দিকে এসে কোচিং থেকে এ জিনিস নেয়াই বন্ধ করে দিসিলাম।
ঐ রাত গুলায় আমি ঘুরে ফিরে ইন্টারে বাদ দিয়ে যাওয়া বোর্ডে না আসা ম্যাথ গুলাই বারবার করতাম, কারন আগের রাতে শেষ করতে পারতাম না :p
কিন্তু তোমরা সবাই যেহেতু আমার থেকে মেধাবী, ইনশা আল্লাহ তোমরা দুটাই করতে পারবা।
আর যারা বাসার স্যারের কাছে পড়ো বিধায় এতো কিছু করতে পারবানা।
তারা প্লিজ স্যার এর কাছ থেকে ঐ ঐ চ্যাপ্টার গুলার বেসিক ক্লিয়ার করে নিয়ো। সম্ভাব্য সব প্রশ্নের আন্সার জেনে নিয়ো। এটা খুব গুরত্বপূর্ন, ট্রাস্ট মি।
এবং পরের দিন সকালে কোচিং এ গিয়ে ঐ টপিকের উপরের ডেইলি এক্সামে ফাটিয়ে দাও 😀 এবং এই প্রসেস কন্টিনিউ করো। ইনশা আল্লাহ সফল হবা।
কী পড়বোঃ
যতখানি তোমার কুলায় ততখানিই পড়বা। লোড নিয়ে অতিরিক্ত পড়ার দরকার নাই। বদহজম হবে। সাবজেক্ট ওয়াইজ বলতে গেলে এভাবে বলতে হয়ঃ
ফিজিক্সঃ শুরুতেই শাহজাহান তপনের সব গুলা প্রশ্ন সলভ করবা, সব গুলা মানে ধরে ধরে সবগুলা…
এখান থেকে অনেক প্রশ্নই হুবহু বুয়েটে চলে আসে। দেন ধরবা ইসহাক, এটার ও সব সলভ করবা। খেয়াল করলে দেখবা তপন শেষ করার পর ইসহাকের ৬০% ই শেষ হয়ে গেছে।
দেন ধরবা তোফাজ্জল ( সুশান্ত ও ধরতে পারো) এই তিনটা বই সলভ করলে আর ভার্সিটি গুলায় আসা প্রশ্ন সলভ করলে ইনশা আল্লাহ ২০০ তে তুমি ১৪০+ তুলতে পারবা।
গিয়াস অনেকেই পড়ে। আমিও শেষের দিকে এসে এটা পড়সিলাম। তুমিও দেখতে পারো।
ম্যাথঃ
ম্যাথ ধরায়ে দিবে, প্রতিবারই ধরায়ে দেয় :p এটার জন্য তোমার সবচাইতে বেশি সময় বরাদ্দ করা লাগবে। কেতাবউদ্দীন ফুল শেষ করবা। কোনো ছাড় নাই।
“ভাইয়া আমি যদি কেতাব না পড়ে এটা… ভাইয়া আমি যদি কেতাব না পড়ে ওটা … “ উহু! কোনো মাফ নাই ! ধরা খাবা।
এস ইউ আহমেদ করবা ত্রিকোনোমিতির এর জন্য, আফসার বীজগণিতের জন্য, হারুন করবা মেকানিক্সের জন্য।
আর কেতাব করবা সব গুলার জন্য, ক্যালকুলাসের জন্য তো বটেই! বুয়েটে ক্যালকুলাস থেকে সর্বাধিক প্রশ্ন করবে।
মাথা ঘুরানো ইন্টিগ্রেশন, ভৌতিক ফাংশনের লিমিট এর ম্যাথ, ডিফারেন্সিয়েশনের এপ্লিকেশন দিয়ে ভরায়ে দিবে।
ভালো বেসিক এবং আরো ভালো প্র্যাক্টিস না থাকলে এক্সাম হলে মাথা ঘুরায়ে পরে যাবা। সো জেন্টেলম্যান, বি কেয়ারফুল।
কেমিস্ট্রিঃ
তোমাদের নতুন সিলেবাস অদ্ভূত। বড়ই অদ্ভূত। না বলতে পারি ধুমায়ে মুখস্ত করো, না বলতে পারি বুঝে বুঝে পড়ো। তবে মুখস্ত করাটাই বেটার ওয়ে। সব মুখস্ত করবা।
না বুঝে মুখস্ত করা প্রতিভা ধ্বংস করলেও বুয়েটে চান্স পাওয়া ঠেকায়ে রাখতে পারবেনা। প্রয়োজন হলে বুয়েটে চান্স পাবার পর ধ্বংস হয়ে যাওয়া প্রতিভা গুলা না হয় গুছিয়ে নিবা, বাট তাও কষ্ট ফষ্ট করে যতখানি পারো বেশি বেশি পড়ে রাখো।
একটা ইন্টারেস্টিং তথ্য জানিয়ে রাখি, কেমিস্ট্রির প্রশ্ন এমনভাবে করা হয় যেনো অনেকগুলা গিফটেড নাম্বার পাওয়া যায়!
প্রিভিয়াস ইয়ারের প্রশ্ন গুলা চেক করলে দেখবা একটু স্ট্র্যাটেজিক ভাবে পড়লে এটায় ২০০ তে ১৮০ ও তোলা পসিবল!(আমি আমার সময় এরকমই তুলসিলাম ) :p
ফলো করবা সুভাষ স্যার, গুহ স্যার আর হাজারী নাগের বই তিনটা। নিয়ম কানুন গুলা নিয়ে আরেক দিন লিখে পোস্ট দিবোনি।
পোস্ট টা শেষ করছি কিছু কমন মিথ আর FAQ দিয়ে।
১) ভাইয়া, এতো আন্সার করসি, চান্স পাবো ?
– “হ্যা, এটা বলা যায় যে, তুমি যদি নিখুতভাবে ৫০-৬০% ও ফুল আন্সার করতে পারো দেন অবশ্যই তুমি চান্স পাবা”
২) ভাইয়া, কোচিং এ টানা বাঁশ খেয়ে যাচ্ছি। ডেইলি এক্সামগুলায় ৭৫ এ ৪০ পাই। আমার কি হবে ?
_ “চিল! আমি অন এভারেজ ৩৫-৩৬ করে পাইতাম। আমার ফ্রেন্ড রাও এরকম পেতো, সবারই হয়ে গেছে চান্স। তোমার হবে না কেন? “
৩) ভাইয়া, যদি বুয়েটে শেষের দিকে একটা সাব্জেক্ট পাই, আর ঢাবির জেনেটিক্স বা ফার্মাসী পাই কই যাবো?
– Lame Question . এর চেয়ে GOT এর সিজন ৭ এর ট্রেইলার দেখো, কাজে দিবে।
৪) ভাইয়া ডেইলি কতক্ষন করে পড়বো?
– “১০ ঘন্টা থেকে ২৪ ঘন্টা, এর বেশি পারলেও সমস্যা নাই”
আজ এটুকুই থাক। নেক্সট পোস্টে ঢাবির প্রিপারেশন নিয়ে লেখার ট্রাই করবো ইনশা আল্লাহ। তোমরা ভালো ভাবে পড়ো জ্যান্টেলম্যান। ধরে নিতে পারো লাইফের শেষ একাডেমিক স্ট্রেসফুল টাইম। ক্যাম্পাসটা একদিন তোমাদের হাসি আর পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠুক।
শুভ কামনা সবসময়, and ask me questions if you have any, you are always welcomed
Ashfaq Ahmed Nihal
Mechanical Engineering Dept.
BUET, 2014.
আরো পড়ো হতে চাইলে BUETian – 2
প্রেরণার নাম বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়
জিপিএ-৫ না পেয়েও বুয়েট, ঢাবি ও জাবিতে চান্স পাওয়ার গল্প
শুয়ে বসে শুধু বুয়েট নিয়েই চিন্তা করতাম।