নিভন্ত শিক্ষার্থী সমাজের ইহা একটি জ্বলন্ত প্রশ্ন। কেউ গ্রূপিং এর স্বীকার হয়ে পরীক্ষা দিতে পারেনি, কেউ অতিসুখে ব্যাকলগ দিয়েছে, কেউ অন্যায়ের প্রতিবাদে কালার হয়েছে (কালো কালার) আবার কেউ পাকা বদমাশ, বেয়াদবী করে নিজের সর্বনাশ ডেকেছে।

এবং সবচেয়ে কমন কারণ, পড়াশুনা না করা…. পরীক্ষার আগে পড়ার ফাঁকে ফাঁকে মুভি দেখা… একরাত পড়ে পরীক্ষা দিসি টাইপ ভাব নেয়া ও রেজাল্ট প্রকাশ হলে কুঁচকে যাওয়া…..

আসলে গ্রাজুয়েশন শেষ না হলে বোঝা যায় না কতটা সর্বনাশ হয়েছে, কোনটা দরকার ছিল বেশী…. কে আসলেই ভাল কে আসলেই খারাপ…. কাকে ত্যালানী দরকার ছিল আর কাকে মান্ডার মর্দন করে পুরোটাই লস গেছে…. (হাহা… Its OK , Part of life. Experience)

দেখুন বিশ্ববিদ্যালয় ভেদে স্কলারশিপ পাবার ক্ষেত্রে CGPA গোনা হয় কম-বেশি। কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয় তাদের CGPA নির্ধারণ করে দেয় যে এত হতেই হবে। তবেঃ

1)আপনি কোন দেশের মানুষ (সাধারণত ৩য় বিশ্বের দেশগুলির জন্য বেশিরভাগ স্কলারশিপ থাকে)
2)আপনার কোন বৈজ্ঞানিক প্রকাশনা আছে কিনা, থাকলে তার গুরুত্ব কতটা ও কতটা আছে সংখ্যায়…
3)আপনার কো-কারিকুলার এক্টিভিটি সনদ আছে কিনা
4)আপনার ইংরেজি দক্ষতা সনদ আছে কিনা
5)আপনার লেখা গবেষণা প্রস্তাবটি কতটা ইন্টারেস্টিং
6)আপনি কার আন্ডারে কাজ করেছেন, তার লিংকাপ ও খ্যাতি কেমন…. মাঝে মাঝে পুরাতন সুপারভাইজরের রিকমেন্ডেশনেই কোন যোগ্যতা যাচাই না হয়েই অনেকের ঘটনা ঘটেও যায় বলে দেখেছি… 😉

(তবে এই পাওয়ার রাজনৈতিক পাওয়ার নয়, ইহা গবেষনা শক্তি 🙂 )

এর উপরেও কিছুটা মার্কিং করে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়। মাঝে মাঝে এগুলি আপনার কম CGPA এর ঘাটতি কভার করবে। তাই হালকা বাউন্ডূলে হলেও ক্ষতি নেই….. 😉 তবে বেশি CGPA বেশি সুযোগ বাড়ায়। মনে রাখতে হবে….

তাহলে এগুলি ছাড়া কি স্কলারশিপ পাওয়া যায় না? দেখুন ভাল ইউনিভার্সিটির (UK, USA, AUS) স্কলারশিপে শর্ত একটু বেশি থাকেই… ধরুন বাংলাদেশের দিনাজপুরে হাজী মোহাম্মদ দানেশ   বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নেপালের শিক্ষার্থীদের জন্য তেমন কোন যোগ্যতা ছাড়াই শুধু পাসপোর্ট আর কোনমতে গ্রাজুয়েশন থাকলেই ফুলফ্রি মাস্টার্সের স্কলারশিপ দিচ্ছে।

এখন আপনার জন্য দিনাজপুর চুল হলেও নেপালের জন্য তো তা বিদেশ। নাকি?

তেমনি বিদেশে (ভারত, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, কানাডা, চায়না) একটি দেশের বিভিন্ন প্রদেশের অখ্যাত বা নতুনখ্যাত বা নতুন গড়ে ওঠা বিশ্ববিদ্যালয়গুলি এমন স্কলারশিপ দেয় যাতে CGPA ততটা ম্যাটার করে না…. তাই সেগুলোর জন্য সুযোগ খুঁজতে হবে আপনাকে। নিয়মিত স্কলারশিপ আপডেটেড সাইটগুলিতে ঢুঁ মারতে হবে।

খুঁজতে হবে আপনার সাবজেক্টের উপযোগী বিশ্ববিদ্যালয়। 🙂

তবে আপনার কথার কারিশমাতে যদি কোন প্রফেসর পটিয়ে ফেলতে পারেন তবে সব শর্ত মওকুফ হয়ে যাবে।

মনে রাখুন, আমাদের দেশে প্রফেসরের কথা কেউ না শুনলেও বিদেশে প্রফেসরের একটা হালকা ইমেইলে বাঘে গরুতে এক ঘাটে জল খায়….. তাই আশা হারাবেন না…. 🙂

তবে টিপস হিসেবে কিছু কথাঃ
আর যে কটা টার্ম আছে, কষে পড়া দিন, দিনরাত এক করে…

জানার চেষ্টা করুন বেশি (ওটা জানার দরকার নেই বলে জানবো না হলেই বিপদ, কখন যে কোন জ্ঞানটি লেগে যায়…..)

সকলের সাথে (স্যার,বন্ধু,শত্রূ) ভাল ব্যবহার করুন। প্লিজ। খুব ঝামেলা হলে এড়িয়ে চলুন অন্তত।
যা গেছে গেছে, আজ হতেই নতুন শুরু হতে পারে, বসে পড়ুন, কাল বসবো বললেই ওই কালটি পরশু হয়ে যেতে পারে…. তাই আজই নয় কেন? এখনই নয় কেন?

সবসময় মনে রাখবেন, আমাদের দেশী শিক্ষা ব্যবস্থায় Only CGPA is Real. (৯৯.৯৯%)

ঘাড়ত্যাড়া কালারিফাইড বেয়াদব শয়তান প্রেমিক মদন যে ছেলেটি ২য় টার্মে ২.৯০ GPA পেয়ে শেষ টার্মে ৩.৮৭ GPA তুলতে পারে একটু পড়াশুনা বাড়িয়ে তবে আপনারাও পারবেন।

নিশ্চয়ই আপনাদের অবস্থা ততটা খারাপ নয়… 🙂

লেখক M Shahanul Islam