সাবজেক্ট রিভিউ: ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ

২০১১-১২ সেশন থেকে শুরু হওয়া বিভাগটি মাত্র ১০টি আসন নিয়ে যাত্রা শুরু করে। চলমান প্রথম বছরই আরো পাঁচটি আসন বৃদ্ধি করে। ফলে অপেক্ষমান তালিকা থেকে নতুন বিভাগে ভর্তি হওয়ার সুযোগ মিলে। কিন্তু আসন বৃদ্ধির কাজটা বিলম্বিত হওয়ায়, সর্বমোট ১৪ জন ছাত্রছাত্রী নিয়ে প্রথম বর্ষের যাত্রা শুরু হয়। ভাষা ইনস্টিটিউটের ফারসি ভাষার শিক্ষক, সহযোগী অধ্যাপক আবুল হাশেম স্যারকে বিভাগীয় সভাপতি করা হয়। ভাষা ইনস্টিটিউটের দুইটি কক্ষের একটিতে অফিস অন্যটি ক্লাস রুম হিসেবে ব্যবহার করা হয়। প্রথম বর্ষের জমজমাট অরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম হয় আবদুল করিম ভবনের ২নং গ্যালারীতে। নবীন ছাত্রছাত্রীদের পাঠ সহায়ক প্রথম বর্ষের সম্পূর্ণ কোর্সের বেশ কিছু বই উপহার দেওয়া হয়।

একজন খন্ডকালীন শিক্ষকসহ মোট দুইজন দিয়ে কোর্স শেষ হয় ২০১২ সালের অক্টোবরে। এবং পরীক্ষাও শেষ হয়। হরতাল অবরোধেও ক্লাস, পরীক্ষা হতো। দ্বিতীয় বর্ষে শিক্ষক স্বল্পতার জন্য দুইটি ব্যাচের পাঠদানে দুইজন শিক্ষককে(খন্ডকালীন শিক্ষকসহ) হাঁফিয়ে উঠতে দেখা যায়। ২০১৩ সালে একসাথে নিয়োগ দেওয়া হয় চারজন শিক্ষককে(খন্ডখালিন শিক্ষক স্থায়ী হয়ে উঠেন), সবাই প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন। মোট পাঁচজন শিক্ষক দুই ব্যাচের পাঠদান প্রদান করেন। এক ক্লাস রুমে চলে পাঠদান।
.
নিয়োগ সংক্রান্ত ঝামেলার জন্য ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ২য় বর্ষের(২০১২-১৩) ফাইনাল পরীক্ষায় ৬ মাসের বিলম্ব দেখা দেয়। ২০১১-১২ সেশনের বি,এ (সম্মান) শেষ হয় ২০১৬ সালে। বর্তমানে ২০১৬-২০১৭ ব্যাচসহ মোট ৬টি ব্যাচ আছে। তন্মধ্যে ২টি এম,এ ২০১১-১২ ও ২০১২-১৩ ব্যাচ। ২০১২-১৩ ব্যাচের সম্মান কোর্স শেষ হয় ২০১৭ মে। ২০১৩-১৪ ব্যাচ আছে ৪র্থ বর্ষে, ২০১৪-১৫ ব্যাচ ৩য় বর্ষে, ২০১৫-১৬ ব্যাচ ২য় বর্ষে ও ২০১৬-১৭ ব্যাচের ১ম বর্ষ চলছে।নতুন শিক্ষক নিয়োগ না করায় শিক্ষক সংকট কাটছেনা। বিভাগীয় সভাপতিসহ পাঁচজন শিক্ষককে ছয়টি ব্যাচ চালাতে নিয়মিত হিমসিম খেতে হচ্ছে। বিভাগটিতে রয়েছে রুম সংকট। বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ খুবই আন্তরিক। 
.
বিভাগে রয়েছে ওয়াইফাই সুবিধা। রয়েছে সেমিনার কক্ষ। কোর্স সহায়ক বইয়ের ঘাটতি রয়েছে। গবেষণা ক্ষেত্রে বিভাগটিতে রয়েছে দারুণ সম্ভাবনা। সেইসাথে ফারসি ভাষায় আরোও উন্নতি করতে রয়েছে বিদেশ ভ্রমণের(ইরান) সুযোগ। ঢাকাস্থ ইরানিয়ান কালচারেল সেন্টার কর্তৃক বিশেষ বৃত্তি প্রদান করা হয়। ভালো ফলাফল করলে বিভাগেই যোগদানের অপার সম্ভাবনার পাশাপাশি দেশের সাধারণ কোটার যেকোনো চাকুরীতে আবেদনের সুযোগতো থাকছেই। রয়েছে ফারসি থেকে বাংলায় পাঠ্যোদ্ধারসহ সাহিত্য, ইতিহাস, বিজ্ঞান, দর্শন, জ্যোতির্বিদ্যা, ইসলামিক নানান বিষয়াবলীর অনুবাদ করার মুখ্যম সুযোগ। বলার মত এতো জট নেই, যা আছে তা কেবলমাত্র শিক্ষকস্বল্পতার জন্য। রয়েছে সহযোগী শিক্ষাগ্রহণের সুযোগ, বনভোজন, ওয়ার্কসপ, নবীনবরণ অনুষ্ঠান, রমজানের ইফতার পার্টি,ক্লাস পার্টি,ঈদ পূণর্মিলনীসহ নানান আয়োজন।
.
বিভাগটিতে আগ্রহ থাকলে পড়তে সমস্যা নেই। সাধারণ শিক্ষার্থীরাও পড়তে পারবে। আমি নিজে এস,এস,সি ও এইচ,এস,সিতে বিজ্ঞানে পড়াশোনা করার পর এই বিষয়টিতে প্রথম শ্রেণিসহ অনার্স শেষ করেছি। আছমা আকতার নামে একজন সহকারি অধ্যাপিকা রয়েছেন যিনি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে বিজ্ঞানে পড়ার পর ঢাবি থেকে ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ থেকে পাশ করার পর চবিতে তিনি একজন মেধাবী শিক্ষিকা হিসেবে আছেন। বিভাগটির অবস্থান হলো; আবদুল করিম ভবনের নিচতলায়, প্রশাসনিক ভবনের সামনের গেইটের আশেপাশের রুমগুলোতে। বিভাগটিতে সর্বমোট রুম রয়েছে ছয়টি। তন্মধ্যে দুইটির একটিতে শিক্ষকদের চেম্বার। একটি রুমে চেয়ারম্যান স্যারের কক্ষসহ অফিস রুম। বাকি চারটির একটি সেমিনার যা ক্লাস রুম হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। বাকি তিনটি রুমে নিয়মিত ক্লাস হয়।
.
লেখক : মোঃ হুমায়ুন কবির
বি,এ (সম্মান)
ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ সেশন: ২০১১-১২
এম,এ (শিক্ষার্থী)