সাবজেক্ট রিভিউ লিখার আগে একটা ব্যাপার ক্লিয়ার করে নেওয়া ভাল।সেটা হল জট নিয়ে।অনেকের ধারনা হল চবির বিবিএ ফ্যাকাল্টি হল জটের আখড়া। ব্যাপারটা সামান্য সত্য,সামান্য মিথ্যা।

কয়েকবছর পিছিয়ে যাওয়া যাক। একসময় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, বিবিএ অনুষদ আর জট এক সুতায় গাথা ছিল। দুই তিন বছর আগের কথা বলছি। আমি নিজেও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এর বিবিএ অনুষদের ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্ট এর সদস্য। কয়েকবছর আগেও অনেকেই প্রশ্ন করত “ভাইয়া চবির বিবিএতে নাকি জট?”

একটু আছে বলতাম।কিন্তু এখন আমিও বলতে পারি চবির বিবিএতে তেমন জট নাই।এমন কি ১৬-১৭ সেশনের প্রথম সেমিস্টারের পরীক্ষা রমজানের আগেই হয়ে যাচ্ছে মানে ছয় মাসের সেমিস্টার, চার মাসেই শেষ হচ্ছে।তাই আমার কথা বিশ্বাস না হলে, আসলেই জট আছে কিনা নাই সেটা জানার জন্য কাউকে নক দিলে অনুরোধ করব যেন ১৬-১৭ সেশনের কাউকে নক দেন। থার্ড ইয়ার,ফোর্থ ইয়ারের কাউকে জিজ্ঞাস করলে তিনি বলবেন তাদের জট আছে।

আসলে জটটা কমা শুরু হয়েছে ১৪-১৫ সেশন থেকে আর জট বন্ধ হয়েছে বলা যায় ১৫-১৬ সেশন থেকে। তাই ১৪-১৫ সেশনের আগের ভাইয়া,আপুরা জটের শিকার। তাই ১৪-১৫ এর আগের সেশনের সবাই মোটামুটি জটেই আছে,কিন্তু ম্যানেজমেন্ট এর জট বরাবরই অন্যান্য ডিপার্টমেন্ট এর তুলনায় কম ছিল। আর আমাদের ডিপার্টমেন্টে এখন নাই বললেই চলে। তাই তোমরা যারা স্বপ্ন দেখছো বড় ম্যানেজার হবা তাদের স্বাগতম বিবিএ ফ্যাকাল্টির একমাত্র করিডোর সমৃদ্ধ ডিপার্টমেন্ট ম্যানেজমেন্টে।

১৯৭০ সালে আমাদের এই প্রিয় ডিপার্টমেন্ট এর যাত্রা শুরু।ডিপার্টমেন্ট এর ফেসবুক গ্রুপ অনুযায়ী আমাদের ডিপার্টমেন্ট এর বর্তমান স্যার,ম্যাডাম আছেন ২৫ জন। আর চেয়ারম্যান হিসেবে আছেন মোয়াজ্জেম স্যার।আমাদের ডিপার্টমেন্ট এর প্রতিষ্ঠাকালীন চেয়ারম্যান ছিলেন শামসুজ্জোহা স্যার।উনার হাত ধরেই ডিপার্টমেন্ট এর যাত্রা শুরু।

আর বিবিএ অনুষদের নিয়ম অনুযায়ী বছরে দুই সেমিস্টার। ছয় মাসের এক সেমিস্টার।আর প্রথম পাচ সেমিস্টার সব ডিপার্টমেন্টে একই কোর্স পড়ানো হয়।শেষ তিন সেমিস্টার মেজর সাবজেক্ট পড়ানো হয়।যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ম্যানেজমেন্ট সংক্রান্ত কোর্স গুলো পড়ানো হয় মেজরে।

বিবিএ তে তো রেজাল্ট বড় ফ্যাক্টর। ৩.৫০ ছাড়া এপ্লাই করা যায় না,৩-৩.২৫ লাগে সরকারি জব পেতে ইত্যাদি নানা কথা প্রচলিত আছে।তাই তোমরা যারা পয়েন্ট নিয়ে চিন্তিত তাদের বলছি আমাদের স্যার,ম্যাডামরা অনেক বেশি আন্তরিক এই ব্যাপারে।আর উনারা আমাদের নিয়ে সবসময় চিন্তা করেন। সেটার প্রতিফলন ক্লাসে যেমন পাওয়া যায় তেমনি রেজাল্টেও পাওয়া যায়।তাই বলে সাদা খাতা জমা দিয়ে নাম্বার পাওয়ার কথা ভুলেও ভাবিও না।

তুমি লিখলে তোমাকে স্যার,ম্যাডামরা বঞ্চিত করবেন না।তাই না লিখে নাম্বার না পাওয়া কাউকে জিজ্ঞেস করলে উনি অবশ্যই বলবেন নাম্বার দেন না।তবে তুমি তোমার যোগ্যতার সঠিক বিচার পাবা এটা তুমি সিউর থাকো।তাই তুমি চেষ্টা করলে চারে চার ও পেতে পারো আবার নিজের ভুলে সাড়ে তিনও পেতে পারো।

কি কি পড়ানো হয়? আমাদের ডিপার্টমেন্ট এর কোর্স এমনভাবে করা হয় যেন বিশ্ব দরবারে সে নিজেকে তুলে ধরতে পারে খুব সহজেই।আমাদের স্যার,ম্যাডামরা সবসময় সিলেবাস তৈরি করাসহ নিজেদের আপডেট রাখেন।তাই এই ব্যাপারে চিন্তা করিও না।আর আমাদের ডিপার্টমেন্ট এর নিয়মকানুন নিয়ে খুবই সচেতন।এই ব্যাপারে ছাড় নাই।

এবার আসি কোথায় জব করব এখন থেকে পাস করে। বিসিএস,মাল্টিন্যাশনাল,প্রাইভেট, সরকারি জব সহ সব জায়গায় এই ডিপার্টমেন্ট এর বড় ভাইয়া,আপুরা আছেন। তুমি আসো,কোন গল্পে বিশ্বাসী না আমরা।তুমি নিজে এসে দেখে যাও সব। চান্স পাওয়ার পর ভর্তি হওয়ার আগেই ছয়( ১৬-১৭ থেকে সাত) ডিপার্টমেন্ট এর চিত্র দেখে যাও। ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্ট তোমাকে নিরাশ করবে না। এবার আসি চাকরীর কথাতে।

এখন যে প্রতিষ্ঠানেই টাকা পয়সার লেনদেন হয়, সেখানেই এমবিএ পাশ ক্যান্ডিডেট দরকার হয়।তাই জব নিয়ে চিন্তা করিও না। তুমি তোমার যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি পাবা। কোন ডিপার্টমেন্ট বলতে পারে না যে তোমার চাকরি এখানেই নিশ্চিত। তাই আমাদের ডিপার্টমেন্ট এও এরকম কোন নিশ্চয়তা দিবে না।তবে ভাল জব পাওয়ার জন্য যা যা লাগবে তা সবই তোমাকে দেওয়া হবে।

তোমাদের আকাশকুসুম কথা বলে লাভ নাই।ম্যানেজমেন্ট এ ভর্তি হও বা না হও অন্তত দেখে এসো।আশা করি হতাশ হবা না।

এই আশাভরা মানুষগুলোর অপেক্ষায় রইলাম,

লিখেছেন:
Abdullah Al Mahmood Taisir
Department of Management
University of Chittagong
Session – 2014-15
Batch – 28