পানি টাকায় ফেলবেন না!

ইঞ্জিনিয়ারিং মানে শুধু টেকনিক্যাল সলুশন না। বরং এটার সাথে ইকোনমি ইনক্লুডেড। যে স্ট্রাকচারটা পার স্কয়ারফিটে ১০০০ টাকায় করা যায় সেটা যদি আপনি ১৫০০ টাকা ব্যয় করে করেন তাহলে আর সেটা ইঞ্জিনিয়ারিং হলো না।

রিসেন্টলি এমন এতো কাজ দেখছি যে খুবই খারাপ (পড়ুন ভালো) লাগে। এক ভদ্রলোক একটা কাজ নিয়ে এসেছে তার খরচ ছিলো ২৭ কোটি টাকা অথচ এটা অনায়াসে ২০ কোটিতে করা যায়। এর আগে একটা বিল্ডিংয়ের শুধু ফাউন্ডেশন রিভিউ করে দেখলাম ২০ লাখ টাকা সেইভ হয়।

এক ভদ্রলোক দেখলাম আটতলার পাইলিং করেছে এগারো তলার মতো। রাজশাহীর এক মাদ্রাসার পাইলিং দেখে মনে হলো আরও তিন তলা বাড়ানো সম্ভব। শুধু পাইলিং বা ফাউন্ডেশন নয় বরং বিভিন্ন ক্ষেত্রে এরকম অপব্যয় আছে।

সত্যি কথা বলতে বেশীর ভাগ ক্লায়েন্টেরই ইঞ্জিনিয়ারিং নলেজ থাকেনা আর এটাই স্বাভাবিক । আর যদি ফান্ডিং অন্য কেউ করে তাহলেতো কথাই নাই। মসজিদ মাদ্রাসার ডিজাইন নিয়ে মানুষ সবচেয়ে বেশি ক্যাজুয়াল। এছাড়া আমাদের ইঞ্জিনিয়ারদের স্কিল আর নৈতিকতার স্বল্পতাও বড় বিষয়। আমরা অনেক সময় জানিই না যে আমি জানি না। ওদিকে লক্ষ লক্ষ টাকা অপচয়।

মানুষ সাধারণত কন্সাল্টেন্সি ফি এর কারনে ভালো ইঞ্জিনিয়ারকে হায়ার করে না। কি এক অশিক্ষা চিন্তা করেন। ১৫০০ টাকার ডাক্তার কি ৫০০ টাকায় দেখানো যায়? নাকি একই সার্ভিস পাওয়া যায়! কন্সাল্টান্টকে দুই লাখ টাকা দেবে না কিন্তু বিশ লাখ টাকা পানিতে ঢালবে অনভিজ্ঞ আর অদক্ষ টেকনিক্যাল সাপোর্ট নিয়ে।

মাঝে মাঝে ক্লায়েন্টকে বকা দিই যে ভালোই তো হয়েছে। যেমন ঔষধ কিনেছেন তেমন ফল পেয়েছেন। ফার্মেসি থেকে ঔষধ কিনে শর্টকাটে রোগ সারবেন ভেবেছিলাম কিন্তু রোগ বেড়ে গেলো!

দিন বদলের সময়ে আমাদের মন মানসিকতাও বদলাতে হবে। যেমন ইঞ্জিনিয়ার তেমন ক্লায়েন্ট। উভয়েরই। আরেকটা কথা। পাশ করলেই লোকেরা ইঞ্জিনিয়ার হয় না। এখনতো ইঞ্জিনিয়ার এমন হয়েছে প্রতি পাচজনের একজন ইঞ্জিনিয়ার। ফুটপাতেও ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটি। এরা ইঞ্জিনিয়ারতো নয়ই বরং কোন সত্যিকার ইঞ্জিনিয়ারকে এসিস্ট করার যোগ্যতাও এদের নাই। এদের থেকে সার্ভিস নিয়ে ভাববেন না জিতে গেছেন।

একটা মানুষ অনেক সময় অনেক কিছু জানবে না স্বাভাবিক। কিন্তু তার উচিৎ সিনিয়রদের সাথে কনসাল্ট করে প্রপার ডিসিশিন নেওয়া। এভাবেই মানুষ বড় হয়। ভালো করে না জেনে ডিসিশন নিয়ে দুটো পয়সার জন্য মানুষের ক্ষতি করা নয়।

লেখাঃ S M Nahid Hasan