গত বছর এই সময়ে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে বিদ্ধস্ত অবস্থায় বাড়িতে গেলাম। একদিন আমার এক স্কুল টিচার এর সাথে দেখা:
-কোথায় ভর্তি হবা??
-জি,স্যার। কুয়েটে।
– কোন সাবজেক্ট?
-দেখি,EEE বা CSE, দুইটার একটা পড়ব।
-CSE ই নাও কম্পিউটার শিখবা,ঝামেলা নাই, EEEতে কারেন্টের কাজ,রিস্ক আছে।
কুয়েটে আসার পর এখনো পর্যন্ত কোন ইলেকট্রিকাল ল্যাবে ঝামেলায় পরিনি।কিন্তু প্রথম ফিসিক্স ল্যাবেই রিপিট খাইছি।যদিও এখন এতো ভালো মান আসে যে, স্যার ও কনফিউশনে পরে যায়(সবই বন্ধুদের আশীর্বাদ )।
আসলে আমাদের জীবনে সিদ্ধান্ত নেওয়াটা খূব জরূরী,আর নিজের সিদ্ধান্তের ওপর ভরসা রাখাটা আরও বেশি জরূরী।
সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে অগ্রজদের সাহাজ্য নেওয়া ভালো, কিন্তু তাদের ওপর নির্ভর করাটা সর্বদা মঙ্গলজনক নাও হতে পারে।
আমাদের সিদ্ধান্তগুলো সঠিক কিনা,এই ভয়ে আমরা অনেক সময় সিদ্ধান্তই স্থির করতে পারিনা।এই রোগে আক্রান্ত হয়ে অনেকে আবার ভর্তি মৌসুমে ৩ মাসে ৩টাইপ কোচিং করে(ইন্জিনিয়ারিং,ভা্র্সিটি,মেডিকেল) ।
আমার মতে, কোন সিদ্ধান্ত সঠিক কিনা তা নির্ভর করে ফলাফলের ওপর।
-২০০৬ সালে, সালমান খান তার লোভনীয় চাকরিটা ছেড়ে দেয় ইউটিউবে তার অলাভজনক প্রতিষ্ঠান “খান একাডেমী”র জন্য।নিজের ও নিজের পরিবারের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় ফেলা সেই সিদ্ধান্তটা যদি আজকে সফল না হত,তাহলে আমরা সালমান খানকে একজন শিক্ষিত বোকা বলতাম।কিন্তু খান একাডেমি আজ সাফল্যের শীর্ষে, আর সালমান খান একজন আদর্শ।
-সাউদ আফ্রিকা টেস্টে মুশফিক যখন টসে জিতে বোলিং নিল,আমরা কেউই তাকে গালি দিতে বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করিনি।অথচ দিনশেষে বাংলাদেশ ভালো কিছু করলে সেই গালিগুলোই প্রশংসায় রূপান্তরিত হত।
-১৯৭১ সালের মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের গর্ব।তাদের গৌরবউজ্জল ইতিহাস পড়ে আমরা বড় হই।কিন্তু আমরা যদি হেরে যেতাম,তখন কি হত?
ইতিহাসটা ঠিক ১৮০ডিগ্রি কোনে ঘূরে যেত। তখন আমরা পড়তাম”১৯৭১ সালে কিছু দূষ্কৃতিকারী বাঙ্গালী, ভারতের প্ররোচনায় দেশের স্বাধীণতা ও সার্বভৌমত্বকে ভূলুন্ঠিত করার জন্য দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করেছিল।কিন্তু আমাদের বীর সেনারা তাদেরকে শক্তহাতে দমন করেছে”।
আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধরা স্থান নিত ইতিহাসের
একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়ে।
কিন্ত তারা তাদের সিদ্ধান্তটাকে সঠিক প্রমাণ করেছে।ফলস্বরুপ, আমরা পেয়েছি প্রকৃত স্বাধীনতা।
~সিদ্ধান্তটা সঠিক কিনা তা নিয়ে ভাবার চেয়ে,সিদ্ধান্তটাকে সঠিক প্রমাণ করাটাই অধিক শোভনীয় ।
Rafiqul
EEE’KUET