হ্যা তোমার জন্যই লিখাটা।

বোর্ড পরীক্ষা গুলো নিয়ে না অনেকেরই অনেক ভ্রান্ত ধারণা থাকে এস্পেশালি ssc আর hsc নিয়ে,এদের মধ্যে আবার hsc খারাপ হলে তো কথাই নেই।

কোথাও পরীক্ষা দিতে পারবে না চান্স তো দূর থাক,তার উপর আরও বাহ্যিক চাপ তো আছেই।আর পাশের বাড়ির আন্টি তো স্পেশাল।এ+ অর গোল্ডেন এ+ না পেলে নাকি জীবন শেষ।আর এসব কথাই ডিপ্রেশান এর জন্য যথেষ্ট।গোল্ডেন এ+ এট লিস্ট এ+ ছাড়া নাকি সায়েন্স এর ছাত্রদের গতি নেই।

যদি কেউ প্রতিবাদ করতে যায় তখন তাকে বলা হয় উদাহরণ দিতে।এক বছর আগে আমিও এই ধাপ টা পার করেছি।কলেজে গিয়ে আমার স্বপ্ন জাগলো ইন্জিনিয়ারিং পড়ার।কিন্তু আমার ssc রেজাল্ট ৪.৬১ (ssc ২০১৬) বলে ওটাকে শুধু নিছক স্বপ্নই ভাবতাম যা কি না কখনই সত্যি হবার নয়।

তারপর ২০১৮ এর জানুয়ারি তে এক প্রকার জেদ করেই উদ্ভাস এর ইন্জিনিয়ারিং কোচিং এ ভর্তি হলাম এই আশায় যে hsc ভালো হলে হয়তো কোথাও পরীক্ষা দিতে পারবো।কিন্তু আমি কখনই কোনো ইন্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয় যেমন বুয়েট রুয়েট কুয়েট চুয়েট এ পরীক্ষা দিতে পারবো না। এই থিওরিকে আমি পুরোপুরি বিশ্বাস করে কোচিংটা করেছি।

hsc পরীক্ষার এর পর তো আরো ডিপ্রেসড হয়েছিলাম কারন রেজাল্ট আসছে ৪.৮৩ (hsc ২০১৮)।এবার আমি পুরোপুরি শিওর আমার দ্বারা কিছু হবেই না।কিন্তু জেদের জন্য কোচিংটা কন্টিনিও করতে থাকি।আমি হসচ এর পর ইঞ্জিনিয়ারিং প্রশ্নব্যাংক পড়া পর্যন্ত ছেড়ে দিসিলাম আর বুয়েটের প্রশ্নব্যাংকটা কে কখনও স্পর্শ করারও শক্তি পাই নি।

সময় গরালো।আমি শুধু বুয়েট ছাড়া সব জায়গায় এপ্লাই করার এবং পরীক্ষা দেবার সুযোগ পাই।আলহামদুলিল্লাহ্ যেখানেই পরীক্ষা দিয়েছি কোথাও ব্যর্থ হইনি।ট্রাস্ট মি এটা আমার লাইফের সবচেয়ে বড় পাওয়া।

পড়াশুনার দিক থেকে বলতে গেলে কখনো কোনো বোর্ড পরীক্ষায় ভালো করিনি বলে আমাকে এবং আমার parents কে কম খোঁটা শুনতে হয়নি।কিন্তু এডমিশন এক্সাম পুরো ১২.৫ বছরের ব্যাকাপ হয়ে দাড়ালো।

আজ আমি রুয়েটিয়ান।

আমি এখনও যখনই ফ্রি হই যখন অগোছালো চিন্তা মাথায় আসে তখন ভাবি আমি কি আসলেই রুয়েটিয়ান নাকি সব মেকি,ঘুম থেকে উঠলে মিষ্টি স্বপ্নগুলো যেমন হাওয়ায় মিলিয়ে যায় ওরকম হবে না তো?আমার এসব চিন্তা মাথায় আসার যথেষ্ট কারন আছে।একটা মেয়ে hsc আর ssc তে নন এ+ হয়েও আজ একটা ইন্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত।

এটা এক বাক্যে শুনলে অনেকেই বিশ্বাস করতে চায় না।আমারই বিশ্বাস হয় না।এটা হয়তো অনেকের কাছে সামান্য ব্যপার কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ এটা আমার কাছে আমার জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া একদম টোটালি আনএক্সপেক্টেড।

 

লিখেছেনঃ জান্নাতুল ফেরদৌসি আনিকা।
পুরকৌশল বিভাগ, রুয়েট।

ছবিঃ লেখক