আমি কখনোই ফেইসবুকে অনেক কথা বলার পক্ষপাতি নই, কিন্তু একটা খবর বাংলাদেশের অনেক পত্রপত্রিকায় শেয়ার হতে দেখে আজকে আর থামতে পারলাম না।
খবরটা এরকম — সিঙ্গাপুরের কিছু গবেষক নাকি এক স্টাডিতে বের করেছে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ৯৯% শেষ হতে চলেছে মে মাসের মধ্যেই।
আমার এই লেখা পড়ার আগেই আমি আমার দুটি প্রধান মতামত তুলে ধরছি:
১. সিঙ্গাপুরের এই মডেল পুরোপুরি খেলনা, একে বাস্তবতার সাথে মেলানোর চেষ্টা করলে বা এর থেকে বাস্তব সিদ্ধান্ত নিতে চাইলে খারাপ বৈ ভাল কিছুই হবে না।
২. সারা বিশ্বে যখন এই মহামারি নিয়ে সবাই ভাল কিছু পড়ার জন্যে উন্মুখ হয়ে আছে, তখন এমন আধাখেচড়া গবেষণা কেবল অবৈজ্ঞানিকই না, বরং অনৈতিক।
আর কিছু বলার আগে আমরা দেখি এই খবরটা কীভাবে বাংলাদেশের মিডিয়ায় ছড়িয়ে গেছে:
Prothom Alo: মে মাসে বাংলাদেশ থেকে করোনার বিদায়, সিঙ্গাপুরের গবেষকদের পূর্বাভাস
Dhaka Tribune: Coronavirus: Study says new cases in Bangladesh will fall by 99% in May
সময়ের কণ্ঠস্বর: মে মাসেই বাংলাদেশ থেকে করোনার বিদায়: সিঙ্গাপুরের গবেষণা
Daily Ittefaq: মে মাসেই বাংলাদেশ থেকে করোনার বিদায়: সিঙ্গাপুরের গবেষণা
Rtv । আরটিভি: বাংলাদেশ থেকে মে মাসে বিদায় নেবে ৯৭ শতাংশ করোনা, গবেষকদের পূর্বাভাস
Kaler Kantho: মে মাসে বাংলাদেশ থেকে করোনার বিদায়: সিঙ্গাপুরের গবেষণা
Dhakatimes24.com: বাংলাদেশ করোনামুক্ত হচ্ছে মে মাসে, ডিসেম্বরে বিশ্ব
ভোরের কাগজ: মে মাসে বাংলাদেশ থেকে বিদায় হবে করোনা!
সিঙ্গাপুরের সেই গবেষনার কেন পুরোপুরি খেলনা
- করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রধান উপায় হলো মানুষের সাথে মানুষের মেলামেশার মাধ্যমে। তাই, এই রোগের সংক্রমণে প্রতিটি দেশেই দুইটি পর্যায় থাকে: ১) কোনপ্রকার লকডাউন/কোয়ারেন্টাইন এর আগে, যখন সবাই মুক্তভাবে চলাফেরা করছে, আর করোনাভাইরাসও মুক্তভাবে ছড়িয়ে পড়ছে, আর ২) লকডাউনের পরে, যখন মানুষের চলাফেরা কিছুটা কমে গেছে, আর ভাইরাসও ছড়াচ্ছে ধীরে ধীরে।সিঙ্গাপুরের এই মডেলে এই দুটি পর্যায়ের মধ্যে পার্থক্য ধরার কোন উপায় নেই — একই সমীকরণ দিয়ে তারা দুটি পর্যায় ব্যখ্যার চেষ্টা করেছে। স্বাভাবিকভাবেই, যদি একই সমীকরণ দিয়ে দুটি পর্যায় ব্যখ্যা করতে হয়, মনে হতেই পারে করোনাভাইরাস হঠাৎ গতি হারিয়ে নির্জীব হয়ে পড়েছে। কিন্তু সেটা সত্য নয়, বরং আমরা কেবল পর্যায় ১ থেকে পর্যায় ২ এ প্রবেশ করেছি, এবং লকডাউন আর হোম কোয়ারেন্টাইন ছাড়া আমরা আবারো শীঘ্রই পর্যায় ১ এ ফেরত যাব। সিঙ্গাপুরের এই মডেল এতটাই খেলনা যে এই গতির পরিবর্তনের ধারণা সেখানে নেই।
- করোনাভাইরাস থেকে একটা দেশের পুরোপুরি মুক্তির উপায় কেবল যখন দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এর প্রতি immune বা অনাক্রম্য হয়ে গেলে। এই অনাক্রম্যতা আসতে পারে কেবলমাত্র দুই উপায়ে, ১) ভাইরাসে একবার আক্রান্ত হয়ে গেলে (যেমন চিকেন পক্স), অথবা ২) ভাইরাসের কোন ভ্যাকসিন গ্রহণ করলে (পোলিও)।বিশ্বের সব দেশেই এখন ভয়টা হল, যদিও আমরা লকডাউন করে ভাইরাসের গতি কমিয়ে আনতে পেরেছি, অধিকাংশ মানুষ এখনো অনাক্রম্য হয়ে ওঠেনি। তাই, যদি এখন লকডাউন খুলে দেয়া হয় তাহলে সবচেয়ে বড় বিপদ হলো এক second wave বা দ্বিতীয় দফার ধাক্কা।
এই গবেষণা কেন অনেকটাই অনৈতিক
এখানে প্রথমেই বড়বড় করে লেখা আছে (যেটা লাল কালি দিয়ে চিহ্নিত)
Content from this website is STRICTLY ONLY for educational and research purposes and may contain errors. The model and data are inaccurate to the complex, evolving, and heterogeneous realities of different countries.
Predictions are uncertain by nature. Readers must take any predictions with caution. Overly optimism based on some predicted end dates is dangerous because it may loosen our disciplines and controls and cause the turnaround of the virus and infection, and must be avoided.
লেখকঃ Nur Muhammad Shafiullah
Mathematics and Computer Science
Massachusetts Institute of Technology (MIT)