প্রশ্ন ১. ভাইয়া গুগল এর সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হতে গেলে কি কি করতে হবে..?

উত্তর :–> গুগল ওয়ার্ল্ড ওয়াইড একটা প্লাটফরম। সারাবিশ্বের প্রায় সবাই ই এই প্লাটফরম এ নিজেকে নিয়ে যেতে চায়। তবে এটার জন্য অনেক পরিশ্রম + অধ্যবসায় এর প্রয়োজন পড়ে।

যারা ছোটবেলা থেকেই প্রোগামিং এ ভালো বা যাদের কোডিং করতে অনেক ভালো লাগে তারা এই প্রতিযোগিতায় অন্যদের থেকে একটু বেশীই এগিয়ে থাকে। আসলে আমরা গুগল এর জব বলতে সাধারণত সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারকেই বেশি জানি।

কিন্তু গুগল এ সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার ছাড়াও আরও ৫০++ জব আছে। আমরা সেইসব ব্যাপারে অনেকেই জানি না বা জানতেও চাই না। তবে এই ব্যাপারে কথা বলতে গেলে পোস্টটা অনেক বড় হয়ে যাবে। যদি তুমি কোডিং এ অনেক পাকা হয়ে থাক, তাইলে গুগল তোমাকেই প্রিফেয়ার করবে।

প্রশ্ন ২. গুগল এ আ্যপ্লাই করার জন্য মিনিমাম যোগ্যতা কি…??

উত্তর ২ : গুগল সহ বিশ্বে যতো বড় বড় জব প্লেস আছে, সেইগুলাতে সার্টিফিকেট কোন ভেরিফাইড করে না। করে শুধু মাত্র তোমার ভিতরে কতোটুকু মেধা আছে সেটা। গুগল এ জব করার জন্য যে তোমাকে CSE বা Software Engineer বা বিভিন্ন ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট এর হতে হবে তেমন টাও না।

তুমি যদি SSC বা HSC পাশ করেও কোডিং খুব ভালো ভাবে করতে পার তাইলে তারা তোমাকে ডেকে নিবে। তাই বলা যেতেই পারে গুগল সহ বিশ্বের বড় বড় জব প্লেস গুলাতে সার্টিফিকেট এর থেকে ক্রিয়েটিভিটি দেখে।

তারা তোমাকে যাচাই করে নিবে আসলে তোমার মধ্যে কতোটুকু মেধা আছে কিছু সৃষ্টি বা কিছু বানানোর জন্য। যদি তুমি সেইদিক থেকে কোয়ালিফাই হও তাইলে তুমি কোয়ালিফাইড।

প্রশ্ন ৩। ভাইয়া গুগল এর জন্য কোন কোন প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ জানা খুব বেশী দরকার..??

উত্তর ৩. এটা অনেক সহজ সেইসাথে জটিল একটা প্রশ্ন। তার কারণ গুগল এর ইন্টার্ভিউ বোর্ড এ প্রশ্ন করা হয়, তুমি প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ এর কোন ল্যাংগুয়েজ টা সবথেকে ভালো জানো।

তখন কেউ C টা ভালো পারে আবার কেউবা C++ আবার কেউ জাভা আবার কেউ জাভা স্কিপ্ট আবার কেউ বা পাইথন যেটাই হোক না কেন, ধরো তুমি জাভাটা ভালো পার।

তাইলে তারা তোমাকে জাভা থেকেই প্রশ্ন করবে, কখনো অন্য কোন প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ থেকে প্রশ্ন করবে না। তবে সেই প্রশ্ন গুলা এমন টাইপ এর হবে ঠিক যেমন, একটা খড়ের গাদার মধ্যে একটা সুঁই খোঁজার মতো অবস্থা।

তারমানে তোমাকে সেই প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ এতোটাই জানতে হবে যে সেটার মধ্যে কোন প্রকারের খুঁদ থাকা যাবে না।

প্রশ্ন ৪ :–> গুগল এর ইন্টারভিউ বোর্ডটা কেমন…??

উত্তর ৪ : গুগল এ সবমিলে ৫টা স্টেপ থাকে।

( ১. সিলেকশন

২. ফোন ইন্টারভিউ

৩. ফোন ইন্টার্ভিউ ২

৪. মক টেষ্ট

৫. লাস্ট সিলেকশন )।

[আরো পড়ুনঃগুগলে চাকরি পেতে যেরকম প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়]

প্রথম দুইটা ফোন ইন্টারভিউ এর সময় ৩০-৪৫ মিনিট এর হয়ে থাকে। গুগল ইঞ্জিনিয়ার রাই এই ভাইভা গুলা নিয়ে থাকে। ৩-৪ জন গুগল ইঞ্জিনিয়ার থাকে। আর মক টেষ্টটা প্যাকটিকেল।

নিজের হাতে সাদা একটা বোর্ড এ তাদের সামনে কোডিং লিখে দিতে হয়।

প্রশ্ন ৫. ভাইভা বোর্ড এ কি কি প্রশ্ন বেশী করা হয়ে থাকে..??

উত্তর ৫. ভাইভা বোর্ড গুলোতে সবথেকে বেশী প্রশ্ন করা হয়ে থাকে, ডাটা স্টার্কচার, ফ্লো চার্ট, এলগরিদম ( ৬৫% প্রশ্নগুলাই এই ৩টা টাইপ এর মধ্যে করা হয়ে থাকে ).

প্রশ্ন ৬. আমি কি গুগল এর সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হবার স্বপ্ন দেখতে পারি..??

উত্তর ৬ : কেনো নয়। যদি তোমার মধ্যে স্কিল থেকে থাকে তাইলে তুমিও হতে পারবা একজন গুগলার। আমরা সবাই যেমন ভাবি যে, গুগল এর সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হতে গেলে মনে হয়, এলিয়েন টাইপ এর কিছু হতে হয়।

এটা ভূল চিন্তা-ভাবনা। আসলে এতোটাও জটিল কোন কিছুই না। আসলে আমি নিজেও সর্ব প্রথম এর দিকে এটাই ভাবতাম তবে, গুগল জব এ ইন্টার্ভিউ দেবার পরের থেকে আমার এই চিন্তাটা বাদ হয়ে গেছে।

আমি পর পর সব স্টেপ এ পার করার পরে লাস্ট স্টেপ এ গিয়ে বাদ পড়েছি, নিজের কিছু ভূল এর কারণে। তাই যেহেতু এটা আমি নিজেই ফেইস করেছি তাই এই ব্যাপারে আমার অনেক ধারণা হয়ে গেছে। সেইদিক থেকে বলতেই পারি, এটা কঠিন তবে এতোটাও কঠিন কিছু না ঠিক যেমন টা আমরা ভাবি।

প্রশ্ন ৬. গুগল এর সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হবার ক্ষেত্রে আমার পরামর্শ টা কি..??

যেহেতু আমি এখনো গুগল এর সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হতে পারি নি, তাই এই ব্যাপারে আমার থেকে পরামর্শ চাওয়াটাই বোকামি তবে হ্যাঁ যেহেতু একদম লাস্ট স্টেপ পর্যন্ত যেতে পেরেছি তাই এই ব্যাপারে আমার অনেকটাই ধারণা হয়ে গেছে।

সেইদিক থেকে বলতে চাই, বস হয়ে যেতে হবে প্রোগ্রামিং এ। চোখ কান বন্ধ করে দিনের মধ্যে ৬-৭ ঘন্টা শুধু প্রোগ্রামিং করে যেতে হবে আর সেই সাথে জটিল জটিল প্রব্লেম গুলার সমাধান এর ওয়ে খুঁজতে হবে আর সেই সাথে করতে হবে।

যদি তুমি এইভাবে করতে থাক,তাইলে নিজের মধ্যেই অন্যরকম একটা শক্তি আবিষ্কার করে ফেলবে। আর যখন সবকিছু করতে আনন্দ লাগবে, বোরিং না লেগে তখন ই ধরে নিবে তুমি এখন স্কিল।

৭. একজন গুগল এর সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার এর বেতন কতো বাংলাদেশি টাকায়..?

উত্তর ৭. সাধারণত গুগল এর একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার এর বেতন হয় বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১ কোটি ৩৫ লাখস টাকা।

সেই সাথে আর ও সম্মান বিশ্বজুড়ে। সেই সাথে গুগল এ জব করলে গুগল কোম্পানি থেকে মাথার চুল কাটা থেকে শুরু করে, খাওয়া দাওয়া ফ্রি দেওয়া হয়।

সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার ছাড়া আর কী জব আছে গুগলে?

অনেকে আমার কাছে জানতে চেয়েছিলেন গুগল এর সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার বাদে, গুগল এ অন্য জব এর ব্যাপারে।

আমি আজ গুগল এর কিছু জব এর কথা তুলে ধরছি এই জায়গাতে অনেক এর কাছে বেতন এর তারতম্য হতে পারে তাই আমি কোন জব এই কতোটাকা বেতন সেটা উল্লেখ্য করবো না তবে সবগুলো বেতন ই কোটি টাকার উপরে এটা সিউর দিয়ে বলতে পারি।

আর সেই সাথে কিভাবে গুগল এ জব এর জন্য অ্যাপ্লিকেশান করা যায় সেটাও তুলে ধরবো। পোস্টটা অনেক বড় হবে তাই শর্ট করে লিখছি, যেন অনেক ইনফো দেওয়া যায়।

আর দুংখিত আমার আগের পোস্ট এ একটা ভূল ছিল আজকে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার বাদে গুগল এ অন্যজব গুলোর কথা তুলে ধরছি….

১. প্রোডাক্ট ম্যানেজার : এদের কাজ কোম্পানির সকল প্রজেক্ট এর সাথে সকল প্রোডাক্ট মিল + এরা একই সুতোয় বাধা আছে কি না তা দেখা।

২. মার্কেটিং ডাইরেক্টর : গুগল আসলে তাদের প্রোডাক্ট এর মাধ্যমে কি অফার করছে তারা এটা তুলে ধরে সেই সাথে এরা গুগল এর কনফারেন্স প্রেজেন্টেশন, টেলিভিশন কর্মাশিয়াল এর কাজ করে গুগলকে বিশ্বে তুলে ধরে।

৩. সিনিয়র অনলাইন সেলস ও অপারেশনস ম্যানেজার : এরা অনলাইন বিক্রয় কৌশল, এবং কোম্পানিটির বার্ষিক নেট ইনকাম বৃদ্ধি এর কাজ করে থাকে।

৪. সিনিয়র ফিন্যান্স ম্যানেজার : গুগল তাদের কোম্পানি পরিচালনা এবং কোম্পানি এর অগ্রগতি এর জন্য একেক সময় একেক কোম্পানিকে কিনে নেয়।

যেমন গুগল মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম কিনে নেয়। আবার ২০০৭ সালে ইউটিউব কিনে নেয়া। আর এই সব নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে বাজেট পরিচালনা করেন যে কর্মকতা তিনি সিনিয়র ফিন্যান্স ম্যানেজার।

৫. সেলস স্ট্যাটেজি ম্যানেজার : এরা গুগল এর বিক্রয় কৌশল পরিচালক। যেখানে গুগল এর মূল ভিত্তি হলো, বিজ্ঞাপন সেবা। তাই একে ভালোভাবে গ্রাহক এর কাছে তুলে ধরতে এরা কাজ করে।

৬. সিনিয়র রিসার্চ সায়েন্টিস্ট : এরা মেশিং লানিং এবং অার্টিফিসিয়ালি ইন্টিলিজেন্স এর মতো প্রোজেক্ট করে। এরা কোটি কোটি ইউজার এর ডাটা এনালাইসিস করে গুগল সফটওয়্যারকে আরও স্মার্ট বানাতে চেষ্টা করে।

৭. সিনিয়র টেকনিক্যাল প্রোগ্রাম ম্যানেজার : এরা গুগল এর অন্তঃকমিউনিটির ভিতরে বিভিন্ন রকম প্রোজেক্ট পরিচালনা + পর্যালোচনা করে।

৮. স্টাফ ইউজার এক্সপেরিয়েন্স ডিজাইনার : এরা অনলাইন সার্ভিস বা প্রোডাক্ট এর ইউজার পর্যায়ে ডিজাইন সহজ + সুন্দর + ব্যবহার বান্ধব করে।

৯. ইঞ্জিনিয়ারিং ম্যানেজার : এরা গুগল এর বিভিন্ন প্রোডাক্ট তদারকি + টিম এর ক্যাপ্টেন + গুগলের নতুন কোন প্রোডাক্ট বের করার সময় এরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

১০. ডাইরেক্টর : এরা সিকিউরিটি, গেমিং, মার্কেট, রিসার্চ ইত্যাদি সেক্টর এ কাজ করে থাকে।

গুগল এর আরও জব এর কথা এইভাবে বিস্তারিত লিখতে গেলে পোস্টটা আরও অনেক বড় হয়ে যাবে। তাই আমি সংক্ষিপ্ত ভাবে আর ও কয়েকটি জব এর কথা এইখানে উল্লেখ্য করলাম।

১১. ডেটাবেইস এডমিন ১২. প্রোডাক্ট মার্কেটিং ম্যানেজার ১৩. অ্যাসোসিয়েট প্রোডাক্ট ম্যানেজার ১৪. কোয়ানটিটেটিভ কমপেনশেসন ১৫. কোয়ানটিটেটিভ অ্যানালিষ্ট ১৬. বিজনেস অ্যাসোসিয়েটস ১৭. সময়সূচী ও সময় ব্যবস্হাপক ১৮. ছবি ব্যবস্হাপক।

আমি সময়ের সল্পতা থাকার কারণে আজ এই ১৮টা জব এর কথায় ই তুলে ধরলাম। ইনশা-আল্লাহ নেক্সট পার্টস এ অন্যগুলাও তুলে ধরবো সেইসাথে আরও কিছু দিক তুলে ধরার চেষ্টা করবো।

এখন আসি গুগল এ জব এ অ্যাপ্লিকেশান মেথড এ। আসলে গুগল এ জব ইন্টার্ভিউ দেবার অনেক ওয়ে আছে।

অনেকে অনেক ওয়েতে আসে। কিছু কিছু সময় ভাগ্যটাও ফেভার করে। তবে সাধারণত প্রোগ্রামিং কনটেস্ট এর মাধ্যমে, বা ইন্টারন্যাশনাল কনটেস্ট বা ভালো ব্লগ বা ভালো প্রোজেক্ট বা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কোম্পানি থেকে বা কারো রেফারেন্স থাকলে বা অ্যাপ্লিকেশান এর মাধ্যমে এটা ছাড়াও আরও অনেক মেথড এ গুগল ইন্টার্ভিউ এর জন্য কল করে।

অনেকে অনলাইন এ বেশী প্রোগ্রামিং এর কারণে বা বেশী ঘাটাঘাটি করার কারণেও ডাক পেয়ে থাকে। তবুও আমি গুগল এ জব এর জন্য অ্যাপ্লিকেশান এর লিংঙ্কটা সবার উপকার এর জন্য শেয়ার করছি।

গুগল জব এর জন্য অ্যাপ্লিকেশান লিংঙ্ক –> ( https://careers.google.com/how-we-hire/ )

এইখান থেকে গুগল জব এর জন্য অ্যাপ্লিকেশান করা যাবে। সময়ের সল্পতা এর কারনে আজ এই পর্যন্তই, নেক্সট এ দরকার পড়লে আরও পোস্ট করবো এই ব্যাপারে এই কথা ভেবে যে, এটা অনেকের উপকার এ কাজে লাগবে + অনেকে উপকৃত হবে।

আশাকরি আমার এই পোস্টটা অনেকের ই কাজে আসবে। অনেকের রিকুয়েস্ট এর কারণে পোস্টটা লিখেছি, তাই আশাকরি সবার ই কাজে লাগবে আর সেইসাথে অনেকেই উপকৃত হবে আর সেইসাথে inspiration পাবে।

Md. Ruhul Amin

আরো পরামর্শ ঃঃ বুয়েট থেকে গুগলের পথে- জুলকারনাইন মাহমুদ

প্রশ্ন করুন আমাদের গ্রুপে