“এই তীব্র শীতের মধ্যেও আমার মেয়েকে ডান্ডাবেড়ি পরিহিত অবস্থায় আদলতে তোলা হয়েছে।যা দেখে আমার হৃদয় পুরো ভেঙে গিয়েছে।আমি বাড়ি থেকে শীতের কাপড় নিয়ে গিয়েছিলাম,কিন্ত বিচারকের বাধার কারনে আমি পোশাকটি আমার মেয়েকে দিতে পারি নি।”
কথা গুলো ছিলো মাওলা আল-খতিব নামধারী এক ফিলিস্তিনি মহিলার যার চৌদ্দ বছর বয়েসি মেয়ে মালাক কে ইসরায়েলি সেনাদের পাথর ও ছুরি ছোড়ার দায়ে দুই মাসের কারাদন্ড এবং প্রায় দেড় হাজার মার্কিন ডলারের সমমানের অর্থদন্ড দেয়া হয়।মালাকের এই শাস্তি নিয়ে পুরো ফিলিস্তিনেই চাপা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
সৃষ্টি হওয়াটাও স্বাভাবিক,কারন মালাক মূলত পুরো ফিলিস্তিনের প্রতিনিধিত্ব করছিলো।
“আগ্রাসন ” বলে বাংলায় একটি শব্দ আছে।যে শব্দটিকে আধুনিক বিশ্বে তাৎপর্যপূর্ন করেছে ইসরায়েল নামক দেশটি।
একটু পেছনে ফিরে যাই।চলুন।
ইসরায়েল মূলত একটি ইহুদি অধ্যুষিত দেশ।ইহুদিরা এই পৃথিবীর সবচেয়ে আলোচিত যাযাবর জাতি।পৃথিবীতে এদের মতো এত বেশি সংখ্যক বার বিতাড়িত হয়েছে এমন জাতি আর একটিও নেই।তাই এদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য এদের চাটুকারিতা,তেলবাজি,ধূর্ততা,চালাকি,সুদখোরিতা সহ কতিপয় হীন পন্থা অবলম্বন করতে হয়ে ছিলো।
এদের আদি নিবাস ছিলো বর্তমান ফিলিস্তিন-লেবানন-জর্ডান-সিরিয়া অঞ্চল।যুগে যুগে বহু গোষ্ঠিদের দ্বারা এই অঞ্চল আক্রমনের শিকার হয়েছে।সেই সব গোষ্ঠি ইহুদিদের আদি নিবাস দখল করে তাদেরকেই সেখান থেকে বিতাড়িত করে দেয়।যার ফলে এরা পৃথিবী ব্যাপি ছড়িয়ে পড়ে।
প্রায় দুই হাজার বছর পূর্বে এরা জার্মানি সহ পশ্চিমা দেশগুলোতে এরা ছড়িয়ে পড়ে।সেখানে তারা জীবন ধারনের জন্য মহাজনি ব্যাবসা শুরু করে।স্থানীয় লোকদের কে তারা খাজনার বিনিময়ে জমি চাষ করতে দিতো।
একটা সময় দেখা যায় যে স্থানীয় এলাকার প্রায় সকল জমি ইহুদিদের দখলে চলে গেছে।তখন স্থানীয় লোকেরা প্রতিবাদ করে ইহুদিদের সকল জমি দখল করে নিয়ে এদের তাড়িয়ে দেয়।এরা বহু বছর পর জার্মানিতে আবার ফিরে আসে শাসকদের কতিপয় উপঢৌকন আর তেলমর্জনের মাধ্যমে।যদিও ততদিনে জার্মানির শিল্প কারখানা আর জার্মানির মানুষের মনে ইহুদিদের জন্য ঘৃনা দুটোই দাড়িয়ে গিয়েছিলো।
ইহুদিদের লক্ষ্যই ছিলো জার্মানির সাধারন মানুষের স্রোতে মিশে যাওয়া।জার্মানির এগিয়ে চলা শিল্পের ওপর তাদের লোলুপিত দৃষ্টি দেয় ইহুদিরা।মার্ক্সবাদ প্রচারের মাধ্যমে ট্রেড ইউনিয়ন গঠন করে পরোক্ষ প্রভাব খাটিয়ে ধংস করা হয় ততকালীন জার্মান শিল্প ব্যাবস্থা।
ইহুদিদের ধুর্তপনায় পশ্চিমা মানুষজন কতটা বিরক্ত ছিলো তা বোঝা যায় বর্তমান ইহুদি রাষ্ট্রটির অবস্থান দেখলে।পুরো পশ্চিমা দেশগুলোতে ছড়িয়ে পড়া ইহুদিদের মধ্যপ্রাচ্যে এনে জড়ো করার কারন আর অন্য কিছুই নয়।বরং এই বিষতুল্য জাতিকে দূরে সরিয়ে দিয়ে নিজেদের হাফ ছেড়ে বাচার এক ধূর্ত প্রচেষ্টা।
ইহুদিদের নিয়ে পশ্চিমা মানুষজন কতটা বিরক্ত ছিলো তা বোঝা যায় ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ নাটিকার শাইলক চরিত্রটি দেখলে।যেখানে শাইলক ততকালীন পশ্চিমা দেশগুলোতে থাকা ইহুদিদের সামগ্রিক চরিত্রের প্রতিনিধিত্ব করছিলো।
পন্ডিত জহরলার নেহেরু যে ভারত সৃষ্টিতে অসামান্য ভূমিকা রেখেছিলেন তা নয়।ভারতের অসামান্য কয়েকজন রাজনৈতিক ব্যাক্তির মধ্যে যেমন তিনি সামিল তেমনি ভারতে উনার মতো প্রজ্ঞাশীল এবং ইতিহাসজ্ঞান সম্পন্ন মানুষ হয়তো হাতেগোনা কয়েকজন পাওয়া যাবে বর্তমান ভারতে।
উনি উনার এক বইয়ে ইহুদিদের সম্পর্কে উল্লেখ করেছে,’অদ্ভুত জাত এই ইহুদিরা।তাদের ধারণা, তারাই হচ্ছে ঈশ্বরের প্রিয় জাতি। তা নিয়ে তাদের অহংকার রয়েছে।”
১৮৯৬সালে প্রথম ড. থিওডোর হাজরেল একজন ইহুদি ধর্মীয় নেতা ইহুদিদের জন্য একটি আলাদা রাষ্ট্রের জন্য প্রথম দাবি জানায় যার নেপথ্য কারন ছিলো ততকালীন সময়ে পশ্চিমা দেশগুলোতে চলা ইহুদি বিদ্বেষ আর নব্য জাতীয়তাবাদীদের মনে ইহুদিদের সহ্য না করার প্রবনতা।১৮৯৬সালে জায়ানিস্ট সংঘ গঠিত হয় যার লক্ষ্য ছিলো পৃথিবীর সকল ইহুদিদের একত্র করে ইহুদি রাষ্ট্র গঠনের আন্দোলনকে জোরদার করা।
ততকালীন সময়ে ইহুদিদের আদি নিবাস তথা জর্ডান-লেবানন-মিশর-ফিলিস্তিন অঞ্চল ছিলো অটোম্যান সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত। ততকালীন সময়ে ব্রিটেন তুরস্কের বনিকদের কাছ থেকে সামরিক কাজে ব্যাবহারের জন্য গ্লিসারিন আমদানি করতো।১৯শ শতকের প্রথম দিকে তুরস্কের বনিকরা ব্রিটেনের কাছে গ্লিসারিনের রপ্তানি বন্ধ করে দিলে ব্রিটেন তার অস্তিত্ব রক্ষার্থে তুরস্কের ওপর আক্রমন করে।ঠিক এমন সময়ই ব্রিটেনের কাছে আসিটোনের ফর্মুলা হস্তান্তর করে ইহুদি বিজ্ঞানী ড, কাইয়ুম ওয়াইজম্যান এই শর্তে যে যদি ব্রিটেন এই ফর্মুলা ব্যাবহার করে যুদ্ধে সফলতা লাভ করে তবে ইহুদিদের জন্য একটি আলাদা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধে আসিটোনের ব্যাবহারের ফলে ব্রিটেন বিশাল সফলতা অর্জন করে।আর অন্য দিকে ততকালীন অটোম্যান সাম্রাজ্যের পতন আর মুসলিম খিলাফতের বিলুপ্তির কারনে ততকালীন জর্ডান-লেবানন-ফিলিস্তিন-সিরিয়া অঞ্চল ব্রিটেন ফ্রেঞ্চ ম্যান্ডেটের অধীনে চলে যায়।ততকালীন ফিলিস্তিন অঞ্চল ব্রিটেনের অধীনস্ত হওয়ার পরপরই ব্রিটেন ইহুদিদের প্রতি কৃতজ্ঞতা দেখিয়ে ইহুদিদের আদিভূমি তথা ফিলিস্তিনে ইহুদিদের স্থায়ী আবাসনে আনুষ্ঠানিক সমর্থন দেয় ২নভেম্বর ১৯১৭সালে।যা বেলফোর ঘোষনা নামে পরিচিত।এর পর থেকে ফিলিস্তিনে ইহুদিদের আগমন শুরু হয় সারা পৃথিবী থেকে।যা ১৯৩৫সালে এসে ১লাখ ৮০ হাজারে এসে উপনীত হয়।
১৯৩০সালে নাৎসি পার্টি জার্মানির ক্ষমতায় আসে।আর ১৯৩৩সাল নাগাত হিটলার জার্মানির চ্যান্সেলর নির্বাচিত হন।ইহুদিদের সম্পর্কে হিটলারের মনোভাব সবসময়ই প্রতিকূলে ছিলো।ইহুদিদের চরিত্রগত সমস্যা অনেক বেশি প্রভাবিত করেছিলো হিটলারকে।হিটলারের জীবনে ঘটে যাওয়া কতিপয় ঘটনা ১৯৪১সালে হয়ে যাওয়া হলোকাস্ট তথা ইহুদিনিধনে ইন্ধন দিয়েছিলো হয়তো।হিটলার খুব ভালো ছবি আকতো।কিন্ত তিনি বারং বার একটি আর্ট স্কুলে গিয়ে প্রত্যাখিত হয়েছিলেন যার প্রধান ছিলেন একজন ইহুদি।
হিটলার লক্ষ্য করলো সেই স্কুলে ইহুদিদের আধিক্য বেশি।হিটলারের মা অসুস্থ হয়ে যে হসপিটালে মৃত্যুবরন করেন সেখানে তার মায়ে চিকিৎসার দায়িত্বে যে ডাক্তার ছিলেন তিনি ছিলেন একজন ইহুদি মহিলা।তাছাড়া জার্মানিতে রাজতন্ত্রের বিলুপ্তির নেপথ্যে ছিলো এই ইহুদিরাই যা হিটলারের মনে গভীর দাগ কেটেছিলো।
তাছাড়া হিটলারের নিজস্ব দর্শন খুবই চমকপ্রদ ছিলো।তিনি রক্তের শুদ্ধতায় বিশ্বাসি ছিলেন।উনার মতে স্বগোত্রের পুরুষ সবসময় স্বগোত্রের নারীর সাথেই মিলিত হবে,এর ব্যত্যয় প্রকৃতি পছন্দ করে না।তাইই হয়তো নিম্ন শ্রেনির প্রানীরা এই নিয়ম মেনে চলে।
উনি সংস্কৃতির স্বকীয়তায় বিশ্বাসি ছিলেন।উনার মতে বহিরাগত কোন সংস্কৃতির মিশ্রন নিজস্ব সংস্কৃতির গতিশীলতা নষ্ট করে দেয়।আর মিশ্রনের পর যদি বহিরাগত সংস্কৃতির আগমন কোন কারনে বন্ধ হয়ে যায় তবে তা নিজস্ব সংস্কৃতির গতিকে চিরতরে বন্ধ করে দেয়।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর জার্মানি একটি হতাশ জাতিতে পরিনত হয়েছিলো।হিটলার মানুষ হিসেবে কেমন তা নিয়ে হয়তো বিতর্ক থাকতে পারে কিন্ত উনি যে নেতা হিসেবে বিশ্বে সেরাদের একজন তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই।একটি হতাশ জাতিকে উনি জাতীয়তাবাদী জাতিতে পরিনত করে তুলতে পেরেছিলেন।তাইই হয়তো আজও জার্মানি অনেক মানুষের কাছে তিনি ‘হিরো’ কিংবা “রোলমডেল”।
হিটলারের চোখে ইহুদি সমস্যা ছিলো ততকালীন সময়ে সবচেয়ে বড় সমস্যা।উনার মতে ইহুদিদের নিধন করার মাধ্যমেই বিশ্ব জয় করা সম্ভব।তবে উনার একার পক্ষে এই ধংসযজ্ঞ চালানো সম্ভব হয় নি।উনি প্রথমেই জার্মানিদের মনে জাতীয়তাবাদের সৃষ্টি করেছিলেন।সেই জাতীয়তাবাদের উপর দাড়িয়েই তিনি প্রায় ৬০লক্ষ ইহুদি নিধন করেন যা ততকালীন ইহুদিদের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩৭% ছিলো।
হিটলার একবার কোন এক বক্তৃতায় বলেছিলেন,”আমি পৃথিবীব সব হুদিদের মারবো না শুধু মাত্র এটা বোঝানোর জন্য যে আমি কেন ইহুদিদের মেরেছিলাম”
হিটলারের কথার মর্মার্থ হয়তো এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে বর্তমান ফিলিস্তিনি মানুষেরা।।
ইহুদিদের পক্ষে থাকা ব্রিটেন এবং আমেরিকার কারনে অন্যায় ভাবে ১৯৪৭সালে জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের ভুমি বন্টন সংক্রান্ত ১৮১নং প্রস্তাব গৃহীত হয় যেখানে ফিলিস্তিনের মোট ভূখন্ডের ৫৫% ইহুদিদের দান করা হয়।১৯৪৮সালের১৪ই মে ব্রিটেন ফিলিস্তিনে শাসনাবসান ঘোষনা দেয়ার সাথে সাথেই ইহুদি ধর্মীয় নেতারা ইসরায়েল রাস্ট্রের ঘোষনা দেন।
সেদিন থেকে শুরু হয় ফিলিস্তিনি মুসলিমদের দুর্দশা আর হাহাকার।
ইসরায়েল সৃষ্টির পর হতে এখন পর্যন্ত ফিলিস্তিনের সাথে তিনটি যুদ্ধ সংগঠিত হয়।প্রত্যেকটিতেই ফিলিস্তিনিদের কপালে দুর্দশা ছাড়া আর কিছুই জোটে নি।তিনটি যুদ্ধ হয় ১৯৫৬, ১৯৬৭ আর ১৯৭৩ সালে।
আমেরিকা আর ব্রিটেনএর ছায়াতলে থাকা ইসরায়েল দ্রুতই সামরিক শক্তিতে শক্তিশালি হয়ে ওঠে।মুক্তির এক যুগের মধ্যেই এরা পারমানবিক শক্তিধর হয়ে যা ফিলিস্তিনিদের ওপর অত্যচারের মাত্রা কিঞ্চিত হলেও বৃদ্ধিতে ভুমিকা রেখেছিলো।
অত্যাচারের মাত্রা শুধু বিগত শতকেই নয়,বিগত শতক সমাপ্ত করে অত্যাচারের অঙ্গার এই শতকেও বার বার ছড়িয়েছে ইসরায়েলের বাহীনি।
২০০৫ থেকে ২০০৬সালের মধ্যে ফিলিস্তিনিদের ওপর প্রায় সাত থেকে নয় হাজার গোলা বর্ষন করে ইসরায়েলিরা যা কেড়ে নেয় ৮০এর অধিক তাজা প্রান।২০০৬সালে হামাস ইসরায়েলি করপোরাল গিলাদ সালিত কে অপহরন করার জবাবে ইসরায়েলি বাহিনী “অপারেশন সামার রেইনস” পরিচালনা করে।এর পূর্বে সাত বছরের শিশু হুদা ঘালিয়ার সহপরিবারে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে মৃত্যু বর্বরতার এক অনন্য নজীর সৃষ্টি করেছিলো।
২০০০সাল হতে ২০০৬ সাল পর্যন্ত প্রায় ১৩০০টি রকেট হামলা হয় ফিলিস্তিনে যা সাময়িক ভাবে স্তগিত হয় তখন যখন ইসরায়েলি করপোরাল গিলাত সালিতকে ফেরত দেয় হামাস।যদিও ২০০৬এর শেষের দিকে ইসরায়েলি বাহিনী চালায় “অপারেশন অটাম ক্লাউড” যা একদিন পরেই স্থগিত করা হয়।যদিও অপারেশন স্থগিত করার একদিন পরেই গাজার একটি শহরের একসারি বাড়িতে বোমা হামলা হয় যেখানে প্রায় ১৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয় যে ঘটনাকে ইসরায়েলি সামরিক বাহীনি যান্ত্রিক গোলযোগ আখ্যা দিয়ে দায় সেরে নেয়।
২০০৭ সালে ইসরায়েল সরকার ফিলিস্তিনের একটি রকেট হামলাকে কারন দেখিয়ে গাজাকে শত্রুভাবাপন্ন হিসেবে ঘোষনা করে তার বিদ্যুৎ এবং জ্বালানী সরবরাহ বন্ধ করে দেয় ইসরায়েল।
২০০৮ সালে ইসরায়েল গাজার সাথে সিমান্ত বন্ধ করে দেয়ায় প্রায় ১.৫মিলিয়ন ফিলিস্তিনিকে জীবন ধারনের জন্য মিশরের শরনাপন্ন হতে হয়।২৮ফেব্রুয়ারি ২০০৮ সালে ইসরায়েলি এয়ারক্রাফট থেকে হামাস নেতার বাসার উদ্দেশ্য করে ছোড়া রকেট ফিলিস্তিনি পুলিশ স্টেশনে ভুপতিত হয় যা কেড়ে নেয় বহু শিশুসহ প্রায় ২৮ জন সসস্ত্র ফিলিস্তিনি পুলিশ সদস্যের প্রান।যার প্রতিবাদে জর্ডানে প্রায় ১০হাজারের ও বেশি মানুষ রাস্তায় নেমে আসে।ততকালীন সৌদি আরব সরকার একে নাৎসি যুদ্ধাপরাধ হিসেবে আখ্যা দেন।সে সময় ইসরায়েলি বাহীনি অপারেশন হট উইন্টার,অপারেশন কাস্ট লীড এর মতো ধংসলীলা চালায় ফিলিস্তিনে।
২০০৮এর জুন মাসে একটি শান্তি চুক্তিতে স্বাক্ষর করে ইসরায়েল যা নভেম্বর পর্যন্ত বজায় ছিলো।এসময় গাজার বর্ডার খুলে দিয়ে প্রয়োজনীয় সামগ্রী রপ্তানীও শুরু করে গাজায় যা ছিলো মোট চাহিদার ২০%এর কম।বার্তা সংস্থা বিবিসি এর উদ্ধৃতি দিয়ে জানা যায় কয়েকজন আমেরিকান অফিশিয়াল কে ইসরায়েলের দেয়া স্টেটমেন্ট অনুযায়ী তাদের প্রধান লক্ষ্য সবসময়ই ছিলো গাজাকে অর্থনৈতিক ভাবে পঙ্গু করে দেয়া।
এই শান্তি চুক্তি ২০০৮সালের ৪নভেম্বর ইসরায়েলি বাহিনীর পুনরায় হামলা চালানোর মাধ্যমে শেষ হয়।এতে করে ২৭ডিসেম্বর থেকে ১৮জানুয়ারি পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় ১১০০-১৫০০ মানুষ নিহত হয়।এর জবাবে ফিলিস্তিনিরাও রকেট হামলা চালায় যাতে প্রায় ১৩জন ইসরায়েলি নাগরিকের মৃত্যু হয়।
২০১৪সালে হামাস ইসরায়েলি সরকারের ২জন নেতা আর ২কিশোর কে অপহরন করে নেয়,যাদের মৃতদেহ কিছু দিন পর পাওয়া যায় আর এর জন্য হামাস দায় স্বীকার নেয়।ইসরায়েল এর জবাব এত নির্মম ভাবে দেবে এটি জানলে হয়তো হামাস কখনই এই কাজটি করতো না।
২০১৪সালের ৮জুলাই থেকে ২৬আগস্ট পর্যন্ত ইসরায়েলি বাহীনি ফিলিস্তিনের ওপর অপারেশন প্রোটেকটিভ এড্জ চালায় যে অপারেশনে প্রায় ৫২৬৩টি বোমা হামলা চালায় ফিলিস্তিনে যার ফলে প্রায় ২১২৫-২৩১০জন ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয় আর প্রায় ১০হাজার থেকে ১১হাজার ফিলিস্তিনি আহত হয় যাদের মধ্যে সাড়ে তিন হাজারের মতো ফিলিস্তিনি শিশুও ছিলো এদের মধ্যে ১হাজার শিশু সারা জীবনের জন্যে পঙ্গু হয়ে গিয়েছিলো।
২০১৮সালেও ইসরায়েলি বাহিনী নির্মম হামলা চালায় ফিলিস্তিনিদের ওপর যার প্রতিবাদ সারা বিশ্বের সকল সাধারন মানুষের মনেই উঠেছিলো হয়তো ভূ-রাজনীতির মারপেচে সাধারন মানুষের মনের ক্ষোভ তাদের মনেই চাপা পড়ে গিয়েছিলো।
নির্মমতার মাঝেও মমতা শব্দটির অস্তিত্ব হয়তো কাগজে কলমেই খুজে পাওয়া যায়।তবুও দিনের শেষ আলো যেন শুধু আধারকেই নয়,একটু দেরী হলেও যেনো সে ফিরে আসে শান্তির বারতা নিয়ে।
লিখাঃপ্রীতম মজুমদার
তথ্যসংগ্রহেঃপ্রীতম মজুমদার
সাদিয়া আফরিন মীম
তথ্যসূত্রঃ
- https://www.google.com/amp/s/www.bbc.com/bengali/amp/news-44189055
- http://alhassanain.org/m/bengali/?com=content&id=772
- https://www.kalerkantho.com/print-edition/islamic-life/2016/06/24/373690
- http://prethebi.blogspot.com/2015/12/blog-post_2.html?m=1
- https://www.prothomalo.com/opinion/article/273820/%E0%A6%88%E0%A6%A6%E0%A7%87-%E0%A6%A8%E0%A6%A4%E0%A7%81%E0%A6%A8-%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A6%BE-%E0%A6%86%E0%A6%B0-%E0%A6%AA%E0%A7%81%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%BE-%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%AA%E0%A6%A1%E0%A6%BC%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%AB%E0%A6%A8-part-2
Join Our Science Team 🙂