#Emerging_Energy:10 
রি-এডমিশন ২০১৭ এটা আসলেই একটা অসাধারণ স্বপ্ন জয় ছিল! এটা হয়তো অনেকের জন্য উৎসাহমুলক পোস্ট ! জারা আবার রি এডমিশন দিতে চাও, তারা পুরোটা পড়ে দেখতে পারো! স্বপ্নের পিছনে ছুটতে যেয়ে আমি ২০১৭ সালে সব থেকে বেশি মিথ্যা কথা বলছি! শুধু পরিবার না, সব থেকে কাছের বন্ধুদের কে ও মিথ্যা বলেছি! ক্লাস ৫ এ থাকা পর্যন্ত, আমার গ্রামের বাড়িতে একটা জায়গা ছিল যেটা দেখে ভাবতাম এখানে একটা ক্লিনিক বানাবো আর আমি ডাক্তার হবো! ক্লাস ৭ এ স্কুলের ইয়াছিন স্যার এর বিজ্ঞান আর অংক পড়ানো দেখে আমি বায়োলজির মায়া থেকে দূরে চলে গেছিলাম! তারপর থেকে ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছা ওখানেই আটকে ছিল! ৯-১০ এ পদার্থ, রসায়ন আর ম্যাথ এর প্রতি দুর্বলতা তৈরী হওয়া শুরু করলো! তখন থেকেই প্রকৌশলী হওয়ার স্বপ্ন শুরু! যদিও তখন এডমিশন এর ব্যাপারে জানি না কিছুই! ইন্টারে উঠেই এক অনাকাঙ্ক্ষিত রিলেশনে আটকে গেলাম! পড়াশুনায় গোজামিল দিয়েও বুয়েট ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন বাচিয়ে রাখছিলাম ২০১৬ এর এডমিশন পর্যন্ত! এডমিশন এর প্রিপারেশন নিতে গেলাম ঢাকায়! ভাইয়ের চক্রে আটকে যেয়ে প্রকৌশলী থেকে আবার ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছা জাগলো! জাগবে না কেন! বিনা পরিশ্রমে ডাক্তার হওয়া কতটা সুখকর হতে পারে তা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছিলাম মেডিকেল পরিক্ষার পর! যেহেতু ডাক্তার হওয়ার চেয়ে প্রকৌশলী হওয়ার ইচ্ছা ছিল বেশি তাই হাল্কা পড়াশুনা করতাম! ভাবতাম ডাক্তার তো শিওর হচ্ছি ই! যদি বুয়েট কুয়েট হয়ে জায়, তাইলে আর ডি এম সি লাগবে না! লিগালি পড়বো!! জাই হোক! খুব কস্টে বাকৃবিতে আমার ২০১৬ এর এডমিশনের শেষ ঠিকানা হয়েছিল! পটুয়াখালী তে সেইবার ই.. ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার চান্স পাওয়ার পর ও তা ছেড়ে দিয়েছিলাম কারন, তখন ই চিন্তা করছিলাম, আমি আবার মিশনে নামবো! আর বাকৃবির বড় ভাইদের আতিথেয়তায় আমি মুগ্ধ ছিলাম! এজন্য সাব্জেক্ট কেমন তা না জেনেই বাকৃবিতে ভর্তি হয়ে গেলাম! আসলে সাব্জেট টা ভালই ছিল আমি যেমন টা ভাবছিলাম! কিন্তু ক্যাম্পাসের কিছু কিছু ভাইরা এই সাব্জেট টা কে নিচু স্তরের মনে করেন কারন এটাতে বিসিএস কোটা নাই! তাদের এ ধরনের আচরন ও আমার ২য় বার প্রিপারেশন নিতে আগুনে ঘি ঢালার মতো কাজ করছিল! ক্যাম্পাসে জেয়ে ফেসবুকে নাঈম জামিল ভাইয়ের একটা পোস্ট পড়ছিলাম, সেটা থেকেই ইন্সপায়রেশন পাইলাম! শিহাব কে বললাম, তুই কি করবি! ও বল্লো ও কেমিস্ট হিসাবে খুশি! আমি ক্যাম্পাসের সবচেয়ে কাছের বড়ভাই কে জানালাম! ভাই আমার জীবন টা পরিবর্তন করে দিয়েছেন! বাসায় আসলাম প্রথম ভ্যাকেশনে! বাসায় আব্বা, মা, আর ভাইদের জানালাম ২য় বার প্রিপারেশন নিতে চাই! তারা বললো, ২য় বার তুই যেখানে যেখানে পরিক্ষা দিতে পারবি তার থেকে বাকৃবি অনেক ভাল! আব্বা পুরো পুরি নারাজ! ভাই বললো অনুমতি দিল!! ক্যাম্পাসে জেয়ে বড় ভাইকে বললাম, ভাই আমি মেস এ উঠবো! হলে থাকলে ২য় বার প্রিপারেশন নিতে পারবো না! আর ক্যাম্পাসের এক বন্ধু কে বললাম ভাই ময়মনসিংহ এ সব থেকে ভাল যে ম্যাথ করায় আমাকে তার কাছে নিয়ে জাবি! আমি বুঝছিলাম জত সমস্যা সব ম্যাথ এ! কারন ইন্টারে ম্যাথ টাকেই বেশি ফাকি দিয়েছি! নতুন মেসে উঠলাম ৫ জন থাকতাম! সবাই ভার্সিটি র ফ্রেন্ড কিন্তু ওরা মেডিকেল প্রিপারেশন নিচ্ছিল! আমার ইচ্ছা ছিল যেহেতু ইঞ্জিনিয়ারিং ভার্সিটি গুলো তে ২য় বার পরিক্ষা দেয়া জায় না, তাই শুধু শাহজালাল মানে সাস্টের প্রিপারেশন নিব! দোয়া করতাম সাস্ট না হলে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এ যে ন একটা ইঞ্জিনিয়ারিং সাব্জেক্ট পাই! ক্যাম্পাসের বাইরে কেউ ই জানতো না, আমি মেসে থাকি! প্রতি মাসে ৫ হাজার টাকা পাঠাতো! তাই দিয়ে টচারের বেতন দিতাম আস্তে আস্তে, মেসের ভাড়া দিতাম, খাওয়ার বিল দিতাম! কয় দিন পর টের পাইলাম ৫ হাজারে চালাতে পারছি না!তখন মনে মনে একটা টিউশনি খুজছিলাম, আর তা পেয়েও গেলাম! কেউ এসব জানতো না! বিপদ বাধলো মাঝখানে,! হঠাত করে আমার ফোন টা চুরি হয়ে গেল মেস থেকে! তার জন্য বাসায় অনেক কথা শুনতে হয়েছে, কারন হল দিয়ে তো ফোন চুরি হওয়ার কথা না! তারা তো জানে না আমি মেসে থাকি! পরে এক সময় আমার মেস চেঞ্জ করতে হলো! সেখানে খাট ছিল না! শুধু তোশক এর উপর ঘুমাতাম! বাকি সবার ই ফ্যান ছিল, আমি পিঠের নিচে ভিজানো গামছা দিয়ে ঘুমাতাম! গামছা শুকায় গেলে আবার ভিজায়ে আনতাম! জখনই বাড়ি আসতাম সবাই কে বলতাম খুব ভাল চলছে ভার্সিটি! কোনো বন্ধুই জানতো না আমি এক বছর গ্যাপ দিতে চলেছি! জখন সেমিস্টার ১ এর রেজাল্ট দেয়, সবাই খুব জোর করেছিল আমার রেজাল্ট শুনার জন্য!মুন্না, রায়হান, ইমরান, লালন, শিহাব, জিহান জারা খুব কাছের তারাও এই স্টাটাসের আগ পর্যন্ত কেউ জানে না, আমি ভার্সিটি তে মাত্র ৩ মাস ক্লাস করছি, কোন পরিক্ষা ই দি নি! মেডিকেল প্রিপারেশন নেয়া বন্ধুদের দেখতাম আর ভাবতাম এরা কিভাবে এত পড়ে! তখন আমি পুরানো রিলেশন জোড়া লাগানোর অনেক চেস্টা করছিলাম! খুব ডিপ্রেশন ই থাকতাম! আল্লাহ মুখ তুলে চাইছিল বলে নতুন কেউ আসছে সাপোর্ট দেয়ার মতো! আমি পড়াশুনো সত্যি বলতে যত টুকু করছি আর থেকে ডিপ্রেশনে ভুগছি বেশি! ২nd timer দের সমস্যা জেটা! অনেক সময় ধরে একই পড়াশুনো কারো ভাল লাগে না! প্রথমে জেরকম জোশ নিয়ে শুরু করলাম, ২য় বার কোপানো পড়া দেব!! ১৮ ঘন্টা পড়বো প্রতিদিন, আর একটুও লাস্ট এ বাকি ছিল না! ডিপ্রেশনে পড়াশুনা বাদ দিয়ে দিয়েছিলাম, রুমমেটরা বলতো তুই খালি খালি ১ বছর নস্ট করলি! খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এ পরিক্ষার আগে আমি ৪ তারিখ বাউ তে পরিক্ষা দিছিলাম এগ্রিকালচার এর জন্য, ! ৪ তারিখ পরিক্ষা দিয়ে বাড়ি রওনা হইছিলাম! বাড়ি এসে শুনি বাকৃবিতে এগ্রিকালচার পেয়ে গেছি! তাহলে বোঝা জাচ্ছে বাড়ি থেকে বাউয়ের দুরত্ব কত দূর! খুব কস্ট হত বাড়ি থেকে এত দূরে থাকতে! ১১ তারিখ খুবি তে পরিক্ষা দিয়ে বুঝছিলাম বায়োলজি তে পাশ হলে চান্স হতে পারে, বাট এরকম সিরিয়াল আসবে বুঝি নি! জাই হোক বাড়ির কাছাকাছি আসাতে শাহজালালে পরিক্ষা দেয়ার সুযোগ হারালাম! বাড়ির কাছাকাছি থাকতে পারবো বলে “সে ” ও অনেক খুশি আর আমিও #আলহামদুলিল্লাহ! বাকৃবির সব বন্ধু আর বড়ভাইদের কাছ থেকে অনেক সাহায্য পাইছি! তাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ! সবার কাছে দোয়া চাই…
মেহেদী হাসান শান্ত CSE 18 KHULNA UNIVERSITY
➽ [তোমার সফলতার বাস্তব গল্পের সন্ধানে আমরা।বিভিন্ন ভার্সিটিতে চান্স পাওয়া শিক্ষার্থীরা তাদের সফলতার গল্পটি জানাতে পারো আমাদের।আগামী বছরের ভর্তি পরীক্ষার্থীদের জন্য যা অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে।তোমার লাইফের এমন গল্পটি বাংলায় টাইপ করে ছবিসহ পেইজের ইমেইল / মেসেজ বাটনে ক্লিক করে সেন্ড করো।]এই লেখাটা বন্ধুদের সাথে শেয়ার করো