আপনি কি আমেরিকার ইউনিভার্সিটিতে মাস্টার্স বা পিএইচডিতে ফান্ডিং সহ ভর্তি হতে চান?
শিক্ষা ও কর্মসূত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে জড়িত থাকার সুবাদে সেখানকার ভর্তি প্রক্রিয়াকে খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয়েছে। তার সুবাদে বলতে পারি, বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা এসব ক্ষেত্রে এখনো অনেক পিছিয়ে আছে।
জনসংখ্যা কিংবা ছাত্রছাত্রীর সংখ্যার হিসাবে বাংলাদেশ নেপাল থেকে অনেক এগিয়ে, ভিয়েতনামের কাছাকাছি। কিন্তু নানা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসব দেশের শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক অনেক বেশি। কিন্তু কেনো?
অভিজ্ঞতায় যা দেখেছি, বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা খুব সহজ কিছু ধাপে মার খেয়ে যায়। আসুন দেখা যাক —
(১) রিসার্চ ব্যাকগ্রাউন্ড — গবেষণার অভিজ্ঞতা বাধ্যতামূলক নয় মাস্টার্স কিংবা পিএইচডির জন্য। কিন্তু কারো যদি সেটা থাকে, তার গুরুত্বটা অনেক। সেজন্য আন্ডারগ্রাজুয়েট পর্যায়ে কিছুটা চেষ্টা করে দেখুন।
জটিল কিছু করতে হবে না, ইন্টারেস্টিং কিন্তু সহজ কিছু করতে পারেন, যেমন রোবোট, কোনো রকমের সার্ভে, এক্সপেরিমেন্ট ইত্যাদি। মোদ্দা কথা কোনো ছাত্রের সিভিতে যদি দেখি, সে কিছুটা হলেও কাজ করেছে, খুব বড় জায়গায় না হলেও ছোটখাট জায়গায় কিছু পেপার পাবলিশ করেছে, তার গুরুত্বটা ধা ধা করে বেড়ে যায় এডমিশন কমিটির কাছে।
সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক পর্যায়ে একটু চেষ্টা করে দেখুন। (গবেষণায় হাতে খড়িসিরিজে বেশ কিছু পরামর্শ লিখেছি, গবেষণা শুরুর ব্যাপারে, কাজে আসবে হয়তো)।
(২) সঠিক তথ্য জানা — কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর কী বিষয়ে কাজ করছেন, কোন বিষয়ে কাজ করার ফান্ডিং অনেক — এই তথ্যের মূল্য অনেক। এটা যদি জানেন, তাহলে সেসব বিষয়ে পড়ার আগ্রহ দেখাতে পারেন রিসার্চ বা পারপাস স্টেটমেন্টে।
ভারতীয় কিংবা চীনা ছাত্ররা তাদের সিনিয়রদের কাছ থেকে এইটা জেনে বসে থাকে, ফলে প্রতি ইউনিভার্সিটিতে আলাদা করে জায়গামত সঠিক কথাটা তারা লিখতে পারে। একটু উদ্যোগী হন। সিনিয়রদের পটিয়ে পাটিয়ে খবর বের করে নেন।
(৩) লেগে থাকা — প্রায়ই ভারতের নানা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩য় বর্ষের ছাত্রদের কাছ থেকে ইমেইল পাই। তারা হয় সামার ইন্টার্নশিপ খোঁজে কিংবা আমার কাজ সম্পর্কে জেনে বুঝে সেই বিষয়ে আগ্রহ দেখায়।
এর কারণটা আসলে একটু সুবিধা পাওয়া। পাশ করার পরে উচ্চ শিক্ষার কথা ভাববেন — সেই সময় আর নাই, অনেক আগে থেকে নিজের উদ্যোগে লেগে থেকে এসব যোগাযোগ স্থাপন করতে হয়। লজ্জ্বার কিচ্ছু নাই, কেবল একটা ইমেইল লিখে গুঁতানোই তো, তাই না?
এ ছাড়াও যেসব ব্যাপার আছে, জিপিএ, টোফেল, জিয়ারি, সেগুলাতে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের ঘাটতি তেমন নাই। কিন্তু উপরের তিনটা ক্ষেত্রেই তারা পিছিয়ে আছে বহুদূরে।
কাজেই মাস্টার্স কিংবা পিএইচডিতে ফান্ড সহ এডমিশন পেতে হলে এই ব্যাপারগুলায় মনোযোগ দেন, কাজে আসবে।
লেখকঃ Ragib Hasan