জীবনে অনেক চড়াই উতরাই পার হয়ে প্রায় অর্ধশত বছর পার করেছি। অনেক ঠেকেছি, ধরা খেইেছি, ঠকেছি, জিতেছি। ভাবলাম ভুলে যাওয়ার আগে আমার এই এক ডজন শিক্ষা গুলো জানিয়ে যাই। কাজে লাগলেও লাগতে পারে!
১. টাকা ধার? না না না না! পারলে দান করে দিন, লেকিন কাউরে টাকা ধার দিয়েছেন তো মরেছেন। শত্রু বানালেন আর টাকা হারালেন!
২. সব কিছুর এক্সট্রা কপি রাখতেই হবে। আমি সামান্য স্লিপ, বাসের টিকেট থেকা শুরু করে আইডি কার্ড, পাসপোর্ট পর্যন্ত সব কিছুরই ছবি তুলে রাখি মোবাইলে; আর ফটোকপি করে বাসায় রাখি! আর ফোনের কন্টাক্টস সেভ করে রাখার প্রয়োজনীয়তা বলাই বাহুল্য!
৩. কোনদিন কাউকে অহংকার বশত অবজ্ঞা করেছেন, দাম্ভিকতা দেখিয়েছেন, তাইলে ধরা খাবেন। কে, কোথায়, কখন, কী অবস্থায় থাকবে; সৃস্টিকর্তা ছাড়া কেউই জানেনা।
আমার আর্মির ব্যাটম্যান আব্দুল কুদ্দুস নিজ চেস্টায় এখন সাভারে দু’টো ৬ তলা বিল্ডিং এর মালিক। এখনো সেই humble আর নিরহংকারী! ভাগ্যিস তার সাথে আমি কোনদিন ও কোন কটু কথা বলি নাই! মুখ দেখানো যাইতো না!
৪. Money is NOT the root of all evil. টাকা পয়সার কী প্রয়োজন তা ভুক্তভোগী মাত্রই বোঝে। জীবন ধারনের জন্য টাকা দরকার। তাই আজ থেকেই সঞ্চয় শুরু করেন।
হ্যাংআউট শুন্যের কোঠায় নিয়া আসেন, CNG এর বদলে বাসে চড়েন, বফ গফ কে ইম্প্রেস করার জন্য ধার করা কমিয়ে দিন।
আজ ১০০ টাকা বাঁচালেন তো ভবিষ্যৎ এর ১০,০০০ টাকার শান্তি কিনলেন। Don’t let your hard earned money make other people rich, without justification.
৫. রুপ, যৌবন, সিক্স প্যাক, coolness আর ৩২ দাঁত দেখে রিলেশন করবেন না। বফ গফ selection এ সাবধান!
জীবনে এমন মানুষ কে allow করবেন যে আপনার জীবন কে improve করতে, valuable করতে আসবে, not to suck your blood like mosquito!
৬. হুট করে কোন চাকরী তে অফার পেলেই ঢুকে যাবেন না। মাঝে মাঝে আমাদের কাছে কোন অপশন থাকে না; বুঝি! কিন্তু অপশন না থাকার কারন আপনার শিক্ষার, skills, experience আর network এর কমতি!
সুতরাং এসব গড়ার জন্য আজ থেকেই লাগেন। নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে অন্যের গোলামী করা কী ভয়ানক, তা আমি জানি।
৭. নিজের সহায় সম্পদ এর সব হিসাব কম্পিউটার এ টাইপ করে, প্রিন্ট করে আলমারির দরজার ভিতরে আটকে রাখেন টেপ দিয়ে।
হঠাৎ করে মারা গেলে ব্যাংক এ লাখ লাখ টাকা পড়ে থাকবে, জমি অন্যে দখলে নিবে – নিজের বউ বাচ্চা কিন্তু রাস্তায় রাস্তায় ঘুরবে। পরিবারের একান্ত আপনজনকে সব পাই পাই কইরা জানিয়ে রাখবেন। দরকার হলে বড় একাউন্টগুলো জয়েন্ট একাউন্ট করাই ভালো।
৮. আপনে হঠাৎ মরে গেলে কাকে কাকে জানাতে হবে তার একটা লিস্ট করে রাখা ভালো। আপনার কোথায় কী করতে হবে, কাকে জানাতে হবে, তা ভাই, বোন, বউ বাচ্চারে জানানো জরুরী।
৯. সন্তানকে অন্তত ‘Thank you’, ‘Sorry’, ‘I appreciate that’, এ সমস্ত ভব্যতা শিখাবেন। ধর্ম এবং সামজিক নিয়মনীতি ঘর থেকেই শেখানো দরকার। আর কোন দিনও বিশেষ করে, ভবিষ্যৎ এ কী করবে তা নিয়ে চাপাচাপি না করা ভালো।
১০. খাবার দাবার এর ব্যাপারে সাবধান। অসুস্থতায় হাসপাতালে পড়ে থাকার প্রধান কারণ এই uncontrolled food habit! নিজের ভুলের মাশুল পরিবারের অন্যরা কেন বইবে?
১১. ঘরে বা নাগালের মধ্যে Emergency কিছু ক্যাশ রাখতেই হবে। সময় মতো কারো কাছে টাকা পাওয়া যায় না!
১২. Smile! আর খুবই সাধাসিধা জীবন যাপন করেন। এর চেয়ে সুখের কিছু নেই!
পরিকল্পনা মতো জীবন চলে না। Life has too many surprises! কিন্তু আমার দিকটা অন্তত আমি ঠিক রাখি। বাকিটা না হয় ভবিতব্যই দেখবেন!
হ্যাপি লাইফ!
Writer: Shabbir Ahsan, 21 Feb, 2018
Operations Advisor, World Bank,Bangladesh Section,
Former Major, Bangladesh Army.
MBA from IBA,DU,
BSc(eng) in CE, BUET
লেখকের আরো লেখা পড়ুনঃ
- যশোর বোর্ডে প্রথম হওয়ার গল্প – শাব্বির আহসান
- তিন সাবজেক্টে ফেল করেও যশোর বোর্ডে প্রথম- শাব্বির আহসান
- হতে চাইলে Harvard’ian
- Ultimate Excel Treasure- Shabbir Ahsan
- How to improve English Writting
- How to write a RESUME
- Failure in Admission test? Then CA, CFA, CMA, MCIPS, FCS, IBA waiting for you
[শাব্বির আহসান। সোশ্যাল একটিভিস্ট।
জন্ম অক্টোবর ১৯৬৮। ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে বুয়েটে ভর্তি হন। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ থেকে এমবিএ-ও করেন ম্যানেজম্যান্ট ও ফিনান্সে। শিক্ষাজীবন শেষে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক এ মেজর অবসর গ্রহণের পূর্বে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ঘুরেছেন, অংশগ্রহণ করেছেন প্রথম উপসাগরীয় যুদ্ধে (গালফ ওয়্যার, ১৯৯০-১৯৯১)। এছাড়াও তিনি দীর্ঘদিন সাফল্যের সাথে কঙ্গোতে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষার মিশনে কাজ করেন।
শাব্বির আহসানের বই ‘দ্য পিসকিপার’ তার এসব অভিজ্ঞতার আলোকেই লেখা। ২০০৭ সালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে এই বইটি প্রকাশিত হয়। সেনাবাহিনী থেকে অবসরের পর শাব্বির আহসান লেখালেখিতে আগ্রহী হন।
অবশ্য এর পূর্বে কিছুকাল কর্পোরেট জগতেও পদচারণা ছিল তার। বিশ্বব্যাংকের একটি প্রকল্পে কাজ করেছেন পরামর্শক হিসেবে। এসময় তিনি প্রচুর বই পড়তেন। পাশাপাশি অব্যহত রেখেছিলেন দেশ-বিদেশে ভ্রমণ।
বাবা ছিলেন বুয়েটের প্রথম ব্যাচের সিভিল ইঞ্জিনিয়ার, মা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলায় মাস্টার্স। স্ত্রী ফাহিমা রুশদী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মনােবিজ্ঞানে পড়াশােনা করেছেন আর কন্যা ফাইজা পড়াশােনা করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েই অর্থনীতিতে।
বই পড়তে অত্যন্ত ভালােবাসেন আর ভালােবাসেন দেশে-বিদেশে ঘুরতে। ফেসবুকে লেখালেখি করেন।
সোশ্যাল মিডিয়াতে হাজারো তরুনের মেন্টর। পড়তে, চিন্তা করতে ও লেখালেখি করতে ভালোবাসেন]