মুহাম্মদ সরোয়ার হোসেনঃ
কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের নেইল ফার্গুসনের ম্যাথম্যাটিক্যাল মডেলিং এর উপর ভিত্তি করে প্রত্যেকটি দেশ ক্যাপাবল জনগণের (যাদের কয়েকমাসের থাকা-খাওয়ার চিন্তা নেই) চাপে পড়ে দীর্ঘ-মেয়াদী লকডাউনে গেছে। তার মডেল সায়েন্টিফিক্যালি প্রমানিত ছিল না।

এমনকি আফ্রিকার দরিদ্র দেশগুলো জোর করে লকডাউনে যেতে চাপে ফেলেছে। তার মডেল অনুযায়ী বাংলাদেশে ইতিমধ্যে ১+ লক্ষ মানুষ মরার কথা ছিল।

সুইডেন সেই মডেলকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে নিজের দেশ এবং রিসার্চ ফাইন্ডিংস এর উপর ভিত্তি করে স্ট্র্যাটেজি নিয়েছে এবং সেটির উপর আমল করছে। আমেরিকা, ইউকে, স্পেন, ইতালির মত তারা লকডাউনে যায়নি এবং এমনকি সোস্যাল ডিস্টেন্সিং বাধ্যমূলক করেনি।

যাদের মৃত্যুর সম্ভাবনা বেশী তাদের রক্ষা করতে ফোকাস করেছে। বাধ্যতামূলক লক ডাউন না দেয়ার পরও করোনায় মৃত্যুর ট্রেন্ড সেসব দেশের মতই হচ্ছে; অথার্ত কমছে। ইতালি-স্পেন-ইউকের চেয়ে সুইডেন ভাল অবস্থানে রয়েছে। ফার্গুসনের মডেল অনুযায়ী সুইডেন জুনের মধ্যে প্রায় ১ লক্ষ মানুষ মারা যাওয়ার কথা।

বিশ্বব্যাপী মিডিয়া (এমন কি আমাদের দেশেরও) লকডাউনের কট্রর সমর্থক। সুইডেন যেহেতু বিরুদ্ধাচারন করেছে যেজন্য মিডিয়া ইচ্ছাকৃতভাবে ডাটা ম্যানিপুলেট করে সুইডেনকে পঁচানোর চেষ্টা করে।

তাদের সম্পর্কে মিথ্যা ধারনা দেয় ! গতকাল একটি খবর ভাইরাল হয়েছে। সেখানে তারা গত ৭ দিনের ডাটার উপর ভিত্তি করে হেডলাইন বানিয়ে সাধারন মানুষকে ধোঁকা দেয়। সুইডেনের চিফ স্ট্র্যাটেজিস্ট পত্রিকার ভুয়ামি তুলে ধরেন। কোন স্ট্র্যাটেজি মূল্যায়নে সবকিছুর কস্ট-বেনিফিট হিসেব করতে হয়।

এখনো আউটব্রেক শেষ হয়নি। সেকেন্ড ওয়েভে সুইডেন ছাড়া অন্যান্য দেশের বেশী বিপদে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

মিডিয়া একাধারে লকডাউনের জন্য কেম্পেইন করে অন্যদিকে ভেক্সিন আবিষ্কার হবে বলে অতিরঞ্জিত আশা প্রচার করে যার তেমন সায়েন্টিফিক এভিডেন্স নেই। অক্সফোর্ড ভেক্সিন নিয়ে কি কান্ডটাই না করল। এটা ফেইল করল কিন্তু বেশিরভাগ মিডিয়া এটি চেপে গেছে!

যে যার দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা বিবেচনা করে করোনা পরিস্থিত ম্যানেজ করা উচিত। বাংলাদেশের বেশীভাগ পাবলিক হেলথ ডিগ্রীধারীরা অন্য দেশেরটা কপি করে মিডিয়া বয়ান দেন।

দেশের প্রেক্ষাপট তেমনভাবে বিবেচনা করেন না। সারাবিশ্ব এখন লকডাউন থেকে বের হওয়ার জন্য ‘ছেড়ে দে মা কাইন্দা বাঁচি’ অবস্থা আছে। সবাই যেহেতু লেজ কেটেছে তারা চায় অন্যরাও যেন লেজ কাটুক!

লেখকঃ
মাইক্রোবায়োলজিস্ট
শিক্ষক
ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ
নির্বাহী পরিচালক
থ্যালাসেমিয়া রিসার্চ ফাউন্ডেশন