বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থায় একজন শিক্ষার্থীকে সবচেয়ে কঠিন বাঁধাটি অতিক্রম করতে হয় এইচএসসি পাশ করার পর উচ্চ শিক্ষার প্রবেশ মুখে। দীর্ঘ দশ/ বার বছরের লালিত স্বপ্ন বাস্তবে রূপ পাবে কি পাবে না, তা নির্ধারিত হয় এ পর্বে। তাছাড়া ভবিষ্যতের উজ্জ্বল ক্যরিয়ার এ সময়ের নির্ভুল সিদ্ধান্তের উপরেই নির্ভর করে। এসব কারণে বহু শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকগণ নানা দুশ্চিন্তায় পড়ে যান এইচএসসি উত্তর সময়টাতে। এ অধ্যায় সে দুশ্চিন্ত লাঘবে কিছুটা হলেও সাহায্য করবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

ভর্তি পরীক্ষার কঠিন বৈতরণী পার হবার পরেও অনেকে সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগেন উচ্চশিক্ষার বিষয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে। কারণ সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে উচ্চশিক্ষার এক একটি বিষয়ের এক এক সকম মূল্য। সময়ের নিরন্তর ধেয়ে চলার ধারায়-এ মূল্যের উত্থান পতন হয়। এক সময় যে বিষয়টি শিক্ষার্থীদের পছন্দ তালিকার শীর্ষে থাকে সময়ের ব্যবধানে যুগের চাহিদায় সেটিই হয়তোবা নেমে যায় পছন্দ তালিকার একেবারে নিচে। বর্তমান সময়ে কোন বিষয়ের চাহিদা কেমন, কর্মসংস্থান ও দেশ- সেবার বিস্তৃতি কতদূর, ভবিষ্যত কেমন হতে পারে ইত্যাদি বিষয়ে মোটিামুটি একটি প্রারম্ভিক ধারণা পাওয়া যাবে এ পর্বে।

ক্যারিয়ার বিষয়ক সিদ্ধান্তের সিংহভাগ গৃহীত হয় ব্যক্তির উচ্চ শিক্ষার উপর ভিত্তি করে। এ কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের অনেক পূর্বেই উচ্চশিক্ষা বিষয়ক ভাবনা শিক্ষার্থী ও তার অভিভাবকের মনে জন্ম নেওয়া দরকার। এইচএসসি পাশের পূর্বেই অর্থাৎ স্কুল পূর্বেই যদি ‘ক্যারিয়ার: বিকশিত জীবনের দ্বার’ একজন অভিভাবক কিংবা শিক্ষার্থীর হাতে যায় তাহলে এইচএসসি উত্তর উচ্চ শিক্ষা বিষয়ক যে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে হয় সেটিতে অনেক সুবিধা হবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

এমবিবিএস (MBBS)

চিকিৎসা বিজ্ঞানের বিভিন্ন স্তরে ক্যারিয়ার গড়ে তোলা যেতে পারে। এগুলো হচ্ছে

১। এম বি বিএস (অনার্স কোর্স)

২। বিডিএস (অনার্স কোর্স)

৩। ডেপ্লোমা ইন হেলথ টেকনোলজি

বিষয়

Bachelor in Medicine & Bachelor in Surgery (MBBS) কোর্সটি দেশের একমাত্র কোর্স যেখানে একই সাথে দুটি বিষয়ে (মেডিসিন ও সার্জারি) অনার্স করানো হয়।

সময়

MBBS কোর্সটি ৫ বছর ব্যাপী একটি কোর্স। এরপর এক (১) বছর ইন্টার্নশিপ রয়েছে। তবে ইন্টার্নী করার সময় ডাক্তারগণ সরকারী নিয়ম অনুযায়ী নির্দিষ্ট ভাতা পেয়ে থাকেন।

যা পড়ানো হয়

৫ বছর ব্যাপী ও কোর্সটিতে অ্যানাটমি, ফিজিওলজি ও বায়োকেমিস্ট্রি, প্যাথলজি, মাইক্রোবায়োলজি, ফরেনসিক মেডিসিন, কম্যুনিটি মেডিসিন, ফার্মাকোলজি, মেডিসিন, সার্জারী ও গাইনকোলজি ইত্যাদি বিষয় পড়ানো হয়।

চাহিদা

সমাজে ডাক্তারদের চাহিদা সম্বন্ধে নতুন করে বলার কিছুই নেই। সেই আনাদিকাল থেকে ডাক্তারগণ সমাজের অবকাঠামোর অন্যতম চালিকাশক্তি হিসাবে টিকে আছেন। সমাজের সর্বত্রই ডাক্তারদের সম্মানের দৃষ্টিতে দেখা হয় এবং সম্ভবত পেশাগত মর্যাদার দিক থেকে ডাক্তাররাই সবার চেয়ে এগিয়ে। এজন্যই ডাক্তারদের বলা হয় “The second god”. এই পেশায় একদিকে যেমন সম্মান অন্যদিকে হালাল উপায়ে পর্যাপ্ত অর্থ উপার্জনেরও সুযোগ রয়েছে একজন ডাক্তার শুধু MBBS ডিগ্রি নিয়েও এই সামাজে সম্মানের সাথে টিকে থাকতে পারেন।

এই অনার্স ডিগ্রি নেওয়ার পর একজন ডাক্তর যেমন সরাসরি চিকিৎসা সেবায় অংশগ্রহন করতে পারেন এবং ক্লিনিক্যাল সেক্টরে উচ্চতর ডিগ্রি যেমন এম ডি/ এম এস (চিকিৎসা শাস্ত্রে মাস্টার্স কোর্স) অথবা এফসিপিএস (বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিসিয়াম এন্ড সার্জনস কর্তৃক প্রদত্ত এমআরসিপি (রয়েল কলেজ অব ইংল্যান্ড কর্তৃক প্রদত্ত) ইত্যাদি করার মাধ্যমে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হতে পারেন আবার এমবিবিএস করার পর বিভিন্ন নন ক্লিনিক্যাল সবাজেক্ট যেমন হেলথ ইকোনমিক্স, পাবলিক হেলথ, মাইক্রোবায়েলজি, এম্ত্রায়োলজি, বায়োটেকনোলজি, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং, ইম্মুউনোলজি, বায়োক্যাম্যাষ্ট্রি ইত্যাদির মত অসংখ্য কোর্সে মাষ্টার্স বা পিএইচডিকরা যায়।

বিষয় রেটিং

চাহিদার দিক থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়ের সেরা বিষয়সমূহ পাশাপাশি ডাক্তারীও শীর্ষে অবস্থান করছে। প্রতিবছর মেডিকেল কলেজগুলোতে শীর্ষ মেধাবীরা পেশা হিসাবে ডাক্তারী বেছে নেবার জন্য ভর্তিযুদ্ধে অবতীর্ন হয়।

কোথায় পড়ানো হয়

আমাদের দেশে বর্তমানে ১৪টি সরকারি মেডিকেল কলেজ রয়েছে। এর সবগুলোতেই MBBS কোর্স চালু রয়েছে। এছাড়া বেসরকারি পর্যায়ে অনেকগুলো মেডিকেল কলেজ রয়েছে। সরকারি পর্যায়ে আসন সংখ্যা ২০৬০টি। ছাত্রদের পছন্দ ও মেধাস্থান অনুযায়ী কে কোন মেডিকেলে চান্স পাবে তা নির্ধারিত হয়। সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোর নাম-

১. ঢাকা মেডিকেল কলেজ, ঢাকা।

২. স্যার সলিমূল্লাহ মেডিকেল কলেজ, ঢাকা।

৩. বেগম খালেদা জিয়া মেডিকেল কলেজ, ঢাকা।

৪. ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ, ময়মনসিংহ।

৫. চট্রগ্রাম মেডিকেল কলেজ, চট্রগ্রাম।

৬. রাজশাহী মেডিকেল কলেজ, রাজশাহী।

৭. সিলেট এম. এ. জি. ওসমানী মেডিকেল কলেজ, সিলেট।

৮. শের-এ-বাংলা মেডিকেল কলেজ, বরিশাল।

৯. খুলনা মেডিকেল কলেজ, খুলনা।

১০. শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ, বগুড়া।

১১. রংপুর মেডিকেল কলেজ, রংপুর।

১২. ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ, ফরিদপুর।

১৩. দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ, দিনাজপুর।

১৪. কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ, কুমিল্লা।

বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল-

১. বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ, ধানমণ্ডি, ঢাকা।

২. আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজ, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, ঢাকা।

৩. ইনস্টিটিউট অব অ্যাপ্লাইড হেলথ ক্যাব টেকনোলজি, চট্টগ্রাম।

৪. মেডিকেল কলেজ ফর উইমেন্স, উত্তরা, ঢাকা।

৫. জরিনা শিকদার মহিলা মেডিকেল কলেজ, রায়ের বাজার, ঢাকা।

৬. ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজ, ঢাকা।

৭. ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ, রাজশাহী।

৮. সেন্ট্রাল মেডিকেল কলেজ, কুমিল্লা।

৯. ডা. ইবরাহীম মেডিকেল কলেজ, ঢাকা।

১০. জালালাবাদ আর আর মেডিকেল কলেজ, সিলেট।

১১. ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ, জনসন রোড, ঢাকা।

১২. কম্যুনিটি বেইসড মেডিকেল কলেজ, ময়মনসিংহ।

১৩. নর্থ ইস্ট মেডিকেল কলেজ, সিলেট।

১৪. হলি ফ্যামিলি মেডিকেল কলেজ, ঢাকা।

১৫. নর্দার্ন ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ, ঢাকা।

সাধারণত সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি কার্যক্রম সমাপ্তির পর এদেশের প্রাইভেট মেডিলেকল কলেজের ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। এক্ষেত্রে খরচ অত্যন্ত বেশি।

উচ্চশিক্ষা

মেডিকেল সাইন্সে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেবার জন্য বাংলাদেশে একটি মাত্র বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। সেটি হল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, যেটি ঢাকার শাহাবাগে অবস্থিত। এখানে অ্যানাটমি, ফিজিওলজি, বায়োকেমিষ্ট্রি, প্যাথলজি, মাইক্রোবায়োলজি, ফরেনসিক মেডিসিন, কম্যুনিটি মেডিসিন, ফার্মাকোলজি, সিন-ডিডি কার্ডাওলজি, ইউরোলজি, নেক্রলজি, বেমাটোলজি ও গাইনিকোলজিতে এমফিল, এমডি করা যায়। এছাড়া সার্জারির বিভিন্ন বিষয়ে যেমন জেনারেল সার্জারি, ইএলটি অর্থপেডিক সার্জারি, নিউরোসার্জারি, সাইনাল সার্জারি, কার্ডিওথেরাপিক সার্জারি, হেপাটোরিলিয়ারী সার্জারি প্রভৃতি বিভাগে এমএস (MS) করা যায়। এছাড়াও শীর্ষস্থনীয় ৮টি সরকারি মেডিকেল কলেজে এমডি বা এম এস করার সুযোগ রয়েছে। সরকারি বিভিন্ন যেমন- NICVD বা জাতিয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট, NITOR বা পশু হাসপাতাল, শিশু হাসপাতাল, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, জাতিয় ক্যান্সার ইনস্টিটিউট প্রভৃতি স্থানে ক্লিনিক্যাল বিষয়গুলোতে উচ্চশিক্ষা নেওয়া যায় আর নিপসম এর মত প্রতিষ্ঠানগুলোতে নন-ক্লিনিক্যাল বা গবেষণামুলক বিষয়ে উচ্চশিক্ষা নেওয়া যায়।

বিদেশে ভর্তি

মেডিকেল এডুকেশন খুব ব্যয়বহুল হবার কারণে নিজ খরচে বিদেশে পড়ার খরচ চালানো কষ্টসাধ্য। এইচএসসি পরীক্ষার পরপরই যেকোন ছাত্র-ছাত্রী ইচ্ছা করলে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ায় বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে ভর্তি হতে পারে। তবে সেক্ষেত্রে প্রতি বছর কোর্স ফি হিসাবে বাংলাদেশী টাকার ৪০-৫০ লক্ষ টাকা দিতে হবে। এজন্য সাধারণত ছাত্ররা দেশেই MBBS পাশ করে বিভিন্ন ডিগ্রির জন্য বিদেশে গমন করে। সেক্ষেত্রে খরচ কিছুটা কম হয়। বিদেশে ডিগ্রি নেবার ক্ষেত্রে “রয়াল ইউনিভর্সিটি অব ইংল্যান্ড” সবার চেয়ে এগিয়ে। এখান থেকে FRCS অথবা MRCP ডিগ্রি নিতে পারলে বিশ্বব্যাপী এ স্বীকৃতি রয়েছে। এছাড়া এভিনবার্গ, গ্লাসগো ও আমেরিকার বিভিন্ন ইউনিভর্সিটি থেকেও ডিগ্রি নেওয়া যায়।

এই অনেকগুলো পরীক্ষার প্রথম কয়েকটি অংশ আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকেও দেওয়া যায়। যেমন MRCP, MRCS এর প্রথম দুটি অংশই কলকাতা থেকে দেওয়া যায়। এছাড়াও PLAB এর প্রথম অংশ বাংলাদেশে, দ্বিতীয় অংশ কলকাতায় দেওয়া যায়। এই সকল ইন্টারন্যাশনাল ডিগ্রি নেওয়ার সুবিধা হল এই যে, এই ডিগ্রি নেবার পর ডাক্তারগণ বিশ্বের যেকোন দেশে ডাক্তারি করতে পারবেন। এমবিবিএস ও ইন্টার্ণী করার পর ক্লিণিক্যাল বিষয়গুলোতে বিদেশে স্কলারশীপ খুবই নগন্য। তবে কয়েক বছর ট্রেইনিং থাকলে পৃথিবীর বিভিন্ন বড় বড় হাসপাতালে অব সারডারশীপ ও পরবর্তীতে ফেলোশীপ পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু নন-ক্লিনিক্যাল বিষয় বা গবেষণার জন্য খুব সহজেই স্কলারশীপ পাওয়া যায় এবং এক্ষেত্রে গবেষকের জন্য খুব লোভণীয় চাকরির সুযোগ রয়েছে।

চাকুরি

সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ডাক্তারগণের জন্য চাকুরির সুবিধা আছে। এছাড়া ডাক্তারগণ ইচ্ছা করলে বিসিএস এর মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজে সরকারি ক্যাডারভুক্ত হয়ে চাকুরি করতে পারেন। দেশের পাশাপাশি বিদেশেও তারা পর্যাপ্ত চাকুরির সুবিধা পাবেন। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান- জাতিসংঘ, WHO, CARE ইত্যাদিসহ অন্যান্য মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে ডাক্তারগণের জন্য চাকুরির ব্যবস্থা আছে। বাংলাদেশ থেকে পাশ করা বহু ডাক্তার এখন বিদেশে চাকুরিতে আছেন।

স্কলারশীপ

মেডিকেল শিক্ষা ব্যবস্থা ব্যয়বহুল হওয়ার কারণে এ সংক্রান্ত বৃত্তির সংখ্যা নগণ্য।

দেশে: (ক) ডাচ বাংলা ব্যাংক বৃত্তি,

(খ) ইমদাদ সিতারা বৃত্তি,

(গ) ফেয়ার এন্ড লাভলি বৃত্তি (শুধুমাত্র মেয়েদের)।

বিদেশে: (ক) মনোবুশো বৃত্তি (পোস্ট গ্রাজুয়েশন এর জন্য),

(খ) কমনওয়েলথ বৃত্তি (পোস্ট গ্রাজুয়েশন এর জন্য),

(গ) বৃটিশ কাউন্সিল বৃত্তি (পোস্ট গ্রাজুয়েশন এর জন্য)।

ডেন্টাল সার্জারি

যা পড়ানো হয়

গ্রাজুয়েশন লেভেলে ডেন্টাল বিষয়ে ৪ বছর মেয়াদি BDS’ (Bachelor in Dental Surgery) কোর্স চালু রয়েছে। এছাড়া ১ বছর ইন্টার্নীশিপ চালু রয়েছে।

ডিমান্ড

মেডিকেলের পাশাপাশি দেশে ডেন্টালের চাহিদাও ব্যাপক। বিসিএস এর সাথে সাথে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে চাকুরির সুবিধা থাকায় অনেক পিতামাতাই তাদের সন্তানদের এই বিষয়ে পড়াতে আগ্রহী হয়। তাছাড়া প্রাইভেট প্রাকটিসের ব্যবস্থাতো রয়েছেই। সামাজিক মর্যাদার পাশাপাশি সততার সাথে অর্থ উপার্জনের সুযোগ এই পেশার জন্য বাড়তি আকর্ষণ।

কোথায় পড়ানো হয়

দেশে সরকারি ডেন্টাল কলেজ বর্তমানে ৩টি। এগুলো হল-

(ক) ঢাকা ডেন্টাল কলেজ

(খ) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ডেন্টাল ইউনিট

(গ) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ডেন্টাল ইউনিট

মোট আসন সংখ্যা- ২০৫টি

এছাড়া দেশে বেশ কয়েকটি বেসরকারি ডেন্টাল কলেজ রয়েছে।

উচ্চশিক্ষা

পোস্ট গ্রাজুয়েশন লেভেল BSMMU (IPGMR) থেকে এই বিষয়ে ডিগ্রি নেওয়া যায়।

বিদেশে ভর্তি

“ডেন্টাল” এডুকেশন, মেডিকেল এডুকেশনের মত ব্যয়বহুল হওয়ার কারণে গ্রাজুয়েশন লেভেলে বিদেশে ভর্তি কষ্টসাধ্য। গ্রাজুয়েশন লেভেলে বাংলাদেশী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য Russia, Canada, England, Ireland এ ভর্তির সুযোগ রয়েছে। তবে পোস্ট গ্রাজুয়েশন পর্যায়ে ডিগ্রি নেবার জন্য বিদেশে নামিদামি কিছু বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে যাদের ডিগ্রি সারা বিশ্বেই স্বীকৃত। এদের মধ্যে Royal College of England অন্যতম।

স্কলারশীপ

ডেন্টাল বিষয়ে বৃত্তির সংখ্যা খুবই সীমাবদ্ধ-

দেশেঃ (ক) ডাচ বাংলা ব্যাংক বৃত্তি (খ) ইমদাদ সিতারা বৃত্তি

বিদেশেঃ (ক) মনোবুশো বৃত্তি, জাপান (খ) কমনওয়েলথ বৃত্তি

চাকুরি

ডেন্টাল ডাক্তারগণের জন্য সরকারি বিভিন্ন ব্যাংক হাসপাতাল ও প্রতিষ্ঠানসহ বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানেও চাকুরির ব্যবস্থা আছে। বিসিএস এর মাধ্যমে সরকারি হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজসমূহে চাকুরি নিতে পারেন। তাছাড়া তারা চাইলে প্রাইভেট প্রাকটিস বা ক্লিনিকেও চাকুরি নিতে পারেন। এছাড়া বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ডিগ্রি নিয়ে বিদেশের বিভিন্ন দেশে চাকরির জন্য যেতে পারেন।

হেলথ টেকনোলজি

বাংলাদেশে ঢাকা, রাজশাহীসহ বিভিন্ন শহরে বেশ কয়েকটি সরকারি হেলথ টেকনোলজি ইনস্টিটিউট ও প্যারামেডিকেল ইনস্টিটিউট রয়েছে। এছাড়া বেসরকারি পর্যায়ে ঢাকায় বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে যেমন- সাভারে সিআরপি-এর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ হেলথ প্রফেশনস ইনস্টিটিউট। এসব প্রতিষ্ঠানে মেডিকেল টেকনোলজি (যেমন, রেডিওলজি/ ইমেজিং), ফিজিওথেরাপী, ল্যাংগুয়েজ- থেরাপী, অবুপেশনাল থেরাপী ফার্মেসী, প্যাথলজী এন্ড ল্যাব টেকনোলজি, প্যারামেডিক্স প্রভৃতি বিষয়ে ডিপ্লোমা এবং অনার্স কোর্স করার সুযোগ রয়েছে। ডিপ্লোমা কোর্সের সুবিধা হচ্ছে এসএসসি পাশ করার পরই তা কারা যায়। এসকল বিষয়ে বাংলাদেশের সরকারি বেসরকারি পর্যায়ে প্রচুর খালি আছে এবং দেশের বাইরেও উচ্চ শিক্ষার্থে যাওয়ার সুযোগ আছে।

চিকিৎসার সাথে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ে

আরো বেশ কয়েকটি বিষয় রয়েছে যেগুলি কোন না কোনভাবে চিকিৎসা সেবার সাথে জড়িত এবং যে কেউ ক্যারিয়ার হিসেবে এ পেশাগুলো গ্রহণ করতে পারেন। নিচে এদের কয়েকটি সম্পর্কে ধারনা দেওয়া হল- হেলথ ইকোনমিক্স ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় যেমন ব্যান্ড ইউনিভার্সিটিতে হেলথ ইকনোমিক্স পড়া যায়। বড় বড় এনজিও ও WHO, UNICEF ও অন্যান্য গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো খুব লোভণীয় বেতনের চাকরির সুযোগ রয়েছে। ব্রাক ইউনিভর্সিটিতে এ বিষয়ে স্কালারশীপ দেওয়া হয়। তবে প্রার্থীকে অবশ্যই ভাল অংকের মেধা থাকতে হবে।

পুষ্টিবিজ্ঞান: হাসপাতালের ডায়েটিশিয়ান হিসেবে চাকরির সুযোগ রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় পড়া যায়।

হেলথ ম্যানেজমেন্ট: বড় বড় হসপিটাল পরিচালনা করার কৌশল নিয়ে এ বিষয় গড়ে উঠেছে। এমবিবিএস করার পর এ বিষয়ে মাস্টার্স করা যায় অথবা সরাসরি বিবিএ করে হেলথ ম্যানেজমেন্টে মাস্টার্স করা যায়।

এই লেখাটা বন্ধুদের সাথে শেয়ার করো