মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (সংক্ষেপে : মাভাবিপ্রবি | MBSTU); ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয় নামেও পরিচিত।
বাংলাদেশের একটি সরকারী পর্যায়ে পরিচালিত উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ১৯৯৯ সালে এই বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকা বিভাগের অন্তর্গত টাঙ্গাইলের সন্তোষে প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি বাংলাদেশের ১২ তম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। এর নামকরণ করা হয় বাংলাদেশের কিংবদন্তি রাজনৈতিক নেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর নামানুসারে।
এখানকার পড়াশোনার মাধ্যম ইংরেজি। পড়াশোনার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য এখানে শিক্ষক এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
এই বিশ্ববিদ্যালয়টি টাঙ্গাইলের সদর উপজেলার উত্তর-পশ্চিমে মাওলানা ভাসানীর স্মৃতিধন্য সন্তোষে অবস্থিত। এই ক্যাম্পাসের আয়তন প্রায় ৭০.৬৯ একর । এই জায়গার ভেতরই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয়টি অনুষদ, প্রশাসনিক ভবন, সাতটি আবাসিক শিক্ষার্থী হল, একাডেমিক বিল্ডিং, রিসার্চ সেন্টার, মাল্টিপারপাস বিল্ডিং, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার, খেলার মাঠ ইত্যাদি অবস্থিত।
এছাড়া ক্যাম্পাসের অধিভুক্ত জায়গার ভেতরই মাওলানা ভাসানীর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে নির্মিত ঐতিহাসিক দরবার হল, প্রখ্যাত সুফি সাধক পীর শাহ্ জামানের নামানুসারে পীর শাহ্ জামান দীঘি, মাওলানা ভাসানীর মাজার, একটি মসজিদসহ আরো বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
অনুষদ এবং বিভাগসমুহঃ
🔺প্রকৌশল অনুষদ
১) কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগ।
২) তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ।
৩) বস্ত্র প্রকৌশল বিভাগ।
৪) ইইই বিভাগ। (নতুন অনুমোদিত)
🔺 জীববিজ্ঞান অনুষদ
১) খাদ্যপ্রযুক্তি ও পুষ্টিবিজ্ঞান বিভাগ।
২) পরিবেশবিজ্ঞান ও সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ।
৩) অপরাধবিদ্যা ও পুলিশবিজ্ঞান বিভাগ।
৪) জৈবপ্রযুক্তি ও জিন প্রকৌশল বিভাগ।
৫) ফার্মেসী বিভাগ।
৬) বায়োকেমিস্ট্রি এ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগ
🔺 ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ সম্পাদনা
১) ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগ
২) হিসাববিজ্ঞান বিভাগ।
৩) ব্যবস্থাপনা বিভাগ।
🔺 বিজ্ঞান অনুষদ সম্পাদনা
১) গণিত বিভাগ।
২) পরিসংখ্যান বিভাগ।
৩) রসায়ন বিভাগ।
৪) পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ।
🔺 সামাজিক বিজ্ঞান অনুষ
১) অর্থনীতি বিভাগ
🔺 কলা অনুষদ
১) ইংরেজি বিভাগ।
সাপ্তাহিক ছুটির দিন (বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার) বাদে প্রতিদিন সকাল ৮ টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ক্লাস হয়ে থাকে। প্রায়শই শিক্ষার্থীদের জন্য নানান জায়গায় শিক্ষা সফরের আয়োজন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ৫টি আবাসিক হল রয়েছে, যার মধ্যে ৩টি ছাত্রদের জন্য এবং বাকি ২টি ছাত্রীদের জন্য।
নানারকম আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসহ আরো কয়েকটি হল স্থাপনার বিষয়গুলো বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন।বছরজুড়েই ক্যাম্পাসে নানারকম সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড চলে এবং বিশেষ দিবস উদযাপিত হয়। যেমন – আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, মাওলানা ভাসানীর জন্ম ও প্রয়াণ দিবস, পহেলা বৈশাখ, বসন্ত বরণ ইত্যাদি।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায়ই বিভিন্ন বিষয়ের ওপর নানারকম সেমিনার বা কর্মশালা ইত্যাদি আয়োজিত হয়ে থাকে। এসব অনুষ্ঠানে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা আমন্ত্রিত দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সাথে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তাদের জ্ঞান ভাগাভাগি করে নেবার সুযোগ পান।
বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের যাতায়াতের জন্য রয়েছে মাইক্রোবাসের এবং মিনিবাসের ব্যবস্থা। আর ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব বাস। যেগুলো প্রায় ১ ঘণ্টা পর পর ক্যাম্পাস থেকে শহরে যাতায়াত করে।
শিক্ষার্থীদের আবাসন এবং অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের সংযুক্তির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ৭টি হল রয়েছে। প্রত্যেক হল পরিচালনার জন্য একজন প্রভোস্ট এবং একজন সহকারী প্রভোস্ট নিযুক্ত আছেন। হলগুলো হলো :
🔺 ছাত্র হল
১) জননেতা আব্দুল মান্নান হল।
২) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল।
৩) শহীদ জিয়াউর রহমান হল।
৪) শেখ রাসেল হল। (নির্মানাধীন)
🔺 ছাত্রী হল
১) আলেমা খাতুন ভাসানী হল।
২) শহীদ জননী জাহানারা ইমাম হল।
৩) বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল। (নির্মানাধীন)
🔴 কিছু প্রশ্নের উত্তর:
১) টাঙ্গাইল শহরের অনেক কাছে ক্যাম্পাস। প্রতি ঘন্টায় বাসের সুবিধা। তাই চাইলে শহরেও থাকতে পারবে অনেকে।
২) এখানে অনেক স্কুল কলেজ থাকায় টিউশন পাওয়া যায়।
৩) হলের সুব্যবস্থা রয়েছে। ছেলেদের তিনটি হল রয়েছে। ছেলেদের আরেকটি নতুন হলের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষের পথে। মেয়েদের জন্য রয়েছে দুইটি হল যা অত্যন্ত নিরিবিলি পরিবেশে অবস্থিত। সেই সাথে মেয়েদের জন্যও আরো একটি বিশাল হলের নির্মান প্রায় শেষের পথে।
৪)ঢাকা থেকে যাতায়াত ব্যবস্থা খুব ভালো। ট্রেন বা বাস দিয়ে দেশের প্রায় সব জায়গায় যাওয়া যায় টাঙ্গাইল থেকে।
৫) মেসে থাকলে আনুমানিক ৪-৫ হাজারের মত ( থাকা+খাওয়া)খরচ হতে পারে। আরো কমও লাগতে পারে।
৬) সেশন জট নিয়ে কোথাও নিশ্চয়তা নেই। আজ বললাম সেশন জট নেই, কাল যে কোন কারণে জট দেখা দিতে পারে।
তবে ২০১৬-১৭ সেশনের পর এখানে জট নেই আলহামদুলিল্লাহ। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে কেউ নিশ্চিত হয়ে নিতে পারেন।
৭) ল্যাব ফেসিলিটিস একটা প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের যেমন থাকার কথা তেমনই। আশাহত হবেন না।
নতুন একটি রিসার্চ সেন্টার তৈরী হয়েছে যা আগামীতে গবেষণা কাজে আরো সহায়ক হবে ।
৮) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি ডিপার্টমেন্টে প্রয়োজনীয় সকল সুযোগ সুবিধা রয়েছে। যেমন- পর্যাপ্ত সংখ্যক ক্লাস, ল্যাব, কম্পিউটার ল্যাব, লাইব্রেরি ইত্যাদি। তিনটি বিশাল একাডেমিক ভবন রয়েছে।
৯) কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার আছে যেখান থেকে ছাত্রছাত্রীরা বই সংগ্রহ করে পড়তে পারে।
১০) পুরো বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা জুড়ে আছে ফ্রি ওয়াইফাই সুবিধা।
Read all Universities Reviews