Subject Review – Mechanical Engineering
মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বা যন্ত্রকৌশল পৃথিবীর অন্যতম বৃহত্তম ও বিস্তৃত ইঞ্জিনিয়ারিং ক্ষেত্র। অনেকে মজা করে একে “যন্ত্রনা”কৌশলও বলে থাকে  এটার পক্ষে যুক্তি হলো “ভালো জিনিস অর্জন সহজসাধ্য নয়”
মেকানিক্যাল নিয়ে সবচেয়ে প্রচলিত রিউমার গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো মেকানিক্যাল কঠিন + দেশে মেকানিক্যালের চাকরী নাই।
কোন ইঞ্জিনিয়ারিং ই সোজা না। শুধু শুধু মেকানিক্যাল কে দোষ দিয়ে লাভ আছে? তবে এটা ঠিক মেকানিক্যালে অনেক বেশি টপিক পড়তে হয়, অন্যদের তুলনায় একটু বেশি চিন্তা ভাবনা মাথার ভেতর রাখতে হয়। ১২ বছর পড়াশোনা করার পর যারা এই পর্যন্ত আসছ, তাদের জন্য এইটুকু করা কঠিন কিছু না।
চাকরির ব্যাপারে যেটা বলবো, সেটা হলো, শোনা কথায় কান না দিয়ে জব প্রোভাইডারদের সাইট গুলোতে একটু ঘুরে আসো। অধিকাংশ চাকরিতে তে লেখা BSc in ME/EEE বা BSc in ME/IPE মানে, মেকানিক্যাল পড়লে তুমি অনেক EEE + IPE রিলেটেড জব এও এপ্ল্যাই করতে পারবা। এইটা একটা advantage। দেশে মেকানিক্যালের চাকরি নাই, কথা টা ১০০% ভুল। আর, বিদেশে তো সোনায় সোহাগা।
“২০০৯ সালের হিসাব মতে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ১৬ লক্ষ প্রকৌশলী কর্মরত আছেন। তারমধ্যে প্রায় ২৩৯০০০ (১৫%) যন্ত্র প্রকৌশলী যা পুরকৌশলীদের(২৭৮০০০) পর দ্বিতীয় সর্ব বৃহৎ বিভাগ। ২০০৯ সালের পরিসংখ্যান মতে প্রতি দশকে ৬% হারে যন্ত্রপ্রকৌশলীদের কর্মসংস্থান বাড়ছে, যাতে প্রত্যেক স্নাতক ডিগ্রীধারী প্রকৌশলীদের প্রাথমিক বেতন হল প্রতি বছরে ৫৮,৮০০ মার্কিন ডলার । যন্ত্রপ্রকৌশলীদের গড় বেতন প্রতি বছরে ৭৪,০০০ মার্কিন ডলার, যা সর্বোচ্চ প্রতি বছরে ৮৬,০০০ মার্কিন ডলার এবং সর্বনিম্ম ৬৩,০০০ মার্কিন ডলার”
(ওপরের এই প্যারাটুকুর দায়দায়িত্ব উইকিপিডিয়ার – http://bn.wikipedia.org/wiki/যন্ত্র_প্রকৌশল)
তবে, শর্ত প্রযোজ্য। তোমাকে এগুলার যোগ্য হতে হবে। পাশ করলেই আমেরিকা তোমাকে ডেকে নিয়ে চাকরি দিবে – এইটা কিন্তু বলা হয় নাই। এখন আসি মেকানিক্যালে মূলত কি কি পড়ানো হয় + তুমি কোন কোন সেক্টরে চাকরি করে “চাকরি নাই” কথা টা ভুল প্রমানিত করতে পারো
Applied Mechanics
Fluid Engineering
Heat Transfer
Tribology
Aerospace & Automobile
Energy Conversion
Fuels & Combustion Technologies
Nuclear Engineering
Power Engineering
Advanced Energy Systems
Solar Engineering
Petroleum
Ocean, Offshore & Arctic Engineering
Environment & Transportation
Noise Control & Acoustics
Rail Transportation
Solid Waste Processing
Engineering & Technology Management
Manufacturing Engineering
Pressure Vessels & Piping
Systems & Design
Fluid Power Systems & Technology
Electrical & Electronic Packaging
Robotics
আরো অ-নে-ক কিছু। এতকিছু পড়ে + এত চাকরির সুযোগ থাকার পরেও যারা বলে চাকরি নাই, তাদের জন্য সমবেদনা। পৃথিবীর প্রথম পেসমেকার যখন বানানো হয়, তখন সেই টীমে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারও ছিলো পেসমেকারের ম্যাটারিয়াল প্রপার্টি, পালস, ইফোর্ট – এগুলা এ্যানালাইসিস করার জন্য। তাইলে বোঝো ঠেল্যা  তবে এইগুলো তো আর একদিনে পড়বা না। ৪ বছর ধরে পড়বা। আর, অনেক টপিক পড়ানো হয় দেখে উচ্চ শিক্ষার সুযোগও মেকানিক্যালে বেশি।
যদি তুমি ফিজিক্স ভালোবাসো, যদি প্র্যাক্টিকাল ওয়ার্কে তোমার বেশি মজা লাগে, যদি মেকানিক্যাল রিলেটেড কোন সেক্টরে তোমার একটু হলেও ইন্টারেস্ট থাকে, তাহলে তোমার জন্য আমার পরামর্শ – মেকানিক্যাল পড়। তবে, মেকানিক্যালে নিজেকে মানিয়ে নেয়া অনেক বড় একটা ফ্যাক্টর। যদি মন থেকে ইচ্ছা না করে, তাহলে প্লিজ মেকানিক্যালে এসো না, নিজেও বিপদে পড়বা, অন্যদেরও বিপদে ফেলবা। প্যাশন সব ইঞ্জিনিয়ারিং ক্ষেত্রে, স্পেশালি মেকানিক্যালের জন্য অনেক বড় একটা ফ্যাক্টর।
চুপি চুপি আরেকটা কথা বলি। দেশে কিন্তু গণহারে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ানো হয় না, পড়াও যায় না। বুয়েট (১৮০), কুয়েট(১২০), রুয়েট(১২০), চুয়েট(১৩০), IUT (মেকানিক্যাল + কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, MCE নামে পরিচিত) (৪৫), AUST (৫০)
এটাও কিন্তু একটা সুবিধা। তো? অপেক্ষা কেন? যন্ত্রকৌশলের মন্ত্রমুগ্ধ দুনিয়াকে বেছে নাও তোমার জীবন ও জীবিকার সঙ্গী হিসাবে। শুভকামনায়
Ratul Anick Paul
ME, KUET – 2011