MIST এডমিশন পরীক্ষা হয়ে গেলো। কয়েক দিনের মধ্যেই ফলাফল ও দিয়ে দিবে। চান্স পেলেই কি ভর্তি হয়ে যাবো? জীবনের প্রথম এডমিশন টেস্ট, আর প্রথম বারেই অনেকে ভালো সাব্জেক্টে চান্স পাবে।

তাই অনেকে ভাববে যে ভর্তি হয়েই থাকি, পরে যদি বুয়েট,রুয়েট,চুয়েট,কুয়েট বা ঢাবি, মেডিকেল এ চান্স পাই তাহলে সেগুলো তেই ভর্তি হয়ে যাবো। ব্যাপার টা এতো টা সোজা না।

মিস্ট অথোরিটি হলো সম্পূর্ণ মিলিটারি অথোরিটি। কিছু দিনের মধ্যেই ১ম ইয়ার সহ অন্যান্য ইয়ারের ক্লাস শুরু হয়ে যাবে। এবং সে হিসেব অনুযায়ী রোযার ঈদের মধ্যে তাদের মিড ব্রেক দেয়া হবে। আর রোযার ঈদের পরই অন্যান্য সকল বিশ্ববিদ্যালয় এর ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়ে যাবে।

তো ঐ সময়ে যদি ১ম ইয়ারের স্টুডেন্ট রা মন মতো কোথাও চান্স পেয়ে চলে যায় তাহলে মিস্টের ১ম ইয়ারে স্টুডেন্ট ই থাকবে না। প্রতি বছর ৫৭০ জন করে স্টুডেন্ট নেয়া হয়। যেহেতু সবার আগে মিস্টের এক্সাম হলো,তাই সাভাবিক ভাবেই দেশ সেরা স্টুডেন্ট গুলোই মিস্টে এডমিট হবে।

আর তারা যখন মনের মতো কোথাও চান্স পাবে তখনই হবে ঝামেলা। সেটা কি? তারা যদি চলে যায় তাহলে মিস্টের ১ম ইয়ার একদম খালি হয়ে যাবে। যেটা অথোরিটি কোনো ভাবেই চাইবে না। এক্ষেত্রে যেটা হতে পারে তা হলো আবার ওয়েটিং লিস্ট থেকে স্টুডেন্ট ডাকা হবে। কিন্তু সেটা সম্ভব নয়।

কারন অলরেডি এক সেমিস্টারের হাফ শেষ হয়ে মিড ব্রেক দিয়ে দিয়েছে। নতুন স্টুডেন্ট এসে কিভাবে পড়া শুরু করবে তাও আবার সেমিস্টারের মাঝখানে এসে। তাহলে অন্য যেটা করা যেতে পারে তা হলো ১ম ইয়ারের ক্লাস দেরী করে শুরু করা যেতে পারে। কিন্তু সেটাও সম্ভব না।কারন মিস্টের অন্যান্য ইয়ারের ক্লাস শুরু হবে এপ্রিল থেকে।

আর মিস্টের একটা অনন্য বৈশিষ্ট্য হলো এখানে সিভিল স্টুডেন্ট এর সাথে মিলিটারি অফিসার রাও পড়াশোনা করেন, ক্যাপ্টেন, মেজর আর লেফটেন্যান্ট পদবীর অফিসার রা। তো সাভাবিক ভাবেই টাইম মেইনটেইন করা টা তাদের জন্য খুবই জরুরি। সেক্ষেত্রে যদি টাইম মেইনটেইন করতে না পারে তাহলে ১ম ইয়ারের অফিসার দের সমস্যা হয়ে যাবে।

যেটা সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী এবং নৌ বাহিনীর অভ্যন্তরীণ বিষয় গুলোর জন্য সমস্যা তৈরি করবে। তাহলে কি করা যায়? মিস্ট অথোরিটি ক্লাস ঠিকই শুরু করবে কিন্তু তারা অন্য চাল খাটাবে। মিস্টে ৪ বছরে সাড়ে তিন লাখ টাকার মতো লাগে। যার মধ্যে ১ লাখ টাকা ভর্তির সময়ই দিতে হয়। খেলা টা হিবে এখানেই।

যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয় এ এডমিট হওয়ার সময় SSC,HSC এর certificate গুলো জমা নিয়ে নেয়। যেনো এক স্টুডেন্ট একাধিক যায়গায় এডমিট হতে না পারে। একজন স্টুডেন্ট কে মিস্টে এডমিট হওয়ক্র জন্য ১লাখ টাকা আর ওসব সারটিফিকেট জমা দিতে হবে।

কোন স্টুডেন্ট অন্য কোথাও এডমিট হতে চাইলে তাকে অবশ্যই ওই certificate গুলো মিস্ট অথোরিটি থেকে চেয়ে নিতে হবে। কিন্তু বাবা তুমি যে বছরের মাঝে এভাবে সিট খালি রেখে চলে যাবা সেটা অথোরিটি মেনে নিবে? তুমি একা হলে কোনো কথা ছিল না। তোমার মতো শত শত স্টুডেন্ট যখন চলে যেতে চাইবে তখন সেটা অথোরিটির বিশাল মাথা ব্যাথার কারন হয়ে যাবে।

সেক্ষেত্রে অথোরিটি যেটা করতে পারে তা হলো সেই এক লাখ টাকা ফেরত দিবে না, অথবা বলবে মিনিমাম এ সেমিস্টার মিস্টে থাকতে হবে। যদি এক লাখ তারা রেখে দেয় তাহলেও অনেক পোলাপান ই চলে যাবে। কারন যারা বুয়েট মেডিকেল এ চান্স পাবে তারা তো কখনোই এখানে থাকতে চাইবে না।

আর যেহেতু একদম প্রথমেই এডমিশন এক্সাম হয়েছে তাই দেশ সেরা স্টুডেন্ট গুলোই তো মিস্টে এডমিট হবে। আর তারাই পরে চলে যেতে চাইবে। সুতরাং এক লাখ টাকা হুদাই নষ্ট হবে।কিন্তু এখানে একটা ব্যাপার আছে।তা হলো এক লাখ টাকা মিস্ট কে দিয়ে চলে গেলেও মিস্টের লস।

কারন ৪ বছরের যায়গায় এক বছর এর টাকা পাচ্ছে। আর নতুন স্টুডেন্ট ও নেয়া যাচ্ছে না যা আগে বললাম। তাই স্টুডেন্ট দের ৪ বছরই রাখার জন্য তারা হয়তো বলতে পারে যে মিনিমাম এক সেমিস্টার মিস্টে থাকতে হবে। এতে করে দেখা যাবে অন্য সকল বিশ্ব বিদ্যালয়ের এডমিশন শেষ।

তখন আর বুয়েটে চান্স পাওয়া ছেলে টাও বুয়েটে এডমিট হতে পারবে না। আশা করি ব্যাপার টা সকল কে বুঝাতে পেরেছি। উপরের সব গুলো কথাই হলো সম্ভাব্য। এগুলো অথেনটিক কোনো সোর্স থেকে নেয়া না হলেও এগুলোই হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। আমার এগুলো বলার কারন হলো ছোট ভাই বোন গুলো যেনো বুঝে শুনে সিদ্ধান্ত নিতে পারে, যেনো ঝামেলায় না পরে।

তবে হ্যা, আশা করি, আশা করি, আশা করি যে মিস্ট অথোরিটি এমন কিছু করলে বা চিন্তা ভাবনা থাকলে আগেই জানিয়ে দিবে, বা কোথাও স্বাক্ষর করিয়ে নিবে।

Ex MIST Student
EECE Dept.