Mechatronics, এই নাম শুনে খুব কম মানুষই আছেন যারা বিস্ময় প্রকাশ করেননা। Mechatronics কি? নাম শুনেই একটু ধারণা করা যায় এটা Mechanical আর Electronics এর সমম্বয়, বরং এটি হলো যন্ত্রের সাথে মানুষের সমম্বয়। বলা যেতে পারে Mechatronics হলো সেই এরিয়া যেখানে সায়েন্স ফিকশন বাস্তব রূপ লাভ করে।

উইকিপিডিয়া অনুসারে, Mechatronics is a multidisciplinary field of science that includes a combination of mechanical engineering, electronics, computer engineering, telecommunications engineering, systems engineering and control engineering.

বাংলাদেশে মেকাট্রনিক্স সাবজেক্টটার আগমন একেবারে নতুন হলেও বিশ্বের দরবারে সবচেয়ে আলোড়ন সৃষ্টিকারী ইঞ্জিনিয়ারিং সাব্জেক্ট হলো এই মেকাট্রনিক্স।

সরকারী ইউনিভার্সিটিগুলোর মধ্যে ২০১৩ সালে সর্বপ্রথম RUET মেকাট্রনিক্স সাবজেক্টটার (MTE) সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। এই বছর এই department KUET এ চালু করা হয়েছে।

CUET এ ২০১৫ সালে Mechatronics and Industrial Engineering (MIE) ও DU তে ২০১৬ সালে Robotics and Mechatronics Engineering (RME) ডিপার্ট্মেন্ট খোলা হয়।

এর আগে অবশ্য একটি প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে মেকাট্রনিক্স ছিলো।

যাই হোক, এখন আসি মূল কথায়। এই মেকাট্রনিক্স আসলে কি? কিই বা এর কাজ? আর মেকাট্রনিক্সে পড়াশোনা করে ভবিষ্যতই বা কেমন হবে?

সায়েন্স ফিকশন জগতের বাস্তব এক প্রতিচ্ছবি হলো মেকাট্রনিক্স। Dark Knight এর Batmobile, Ironman এর Suit, Real Steel এর Battlebot, Star Trek এর spacecraft Enterprise-D, Robocop এর Cyborg সবই মেকাট্রনিক্সের এপ্লিকেশন। আমাদের নানা-দাদার যুগে যা কল্পনাতেও অবাস্তব ছিলো, তা আজ মেকাট্রনিক্সের ঘরের সাধারণ আসবাবপত্র।

স্বয়ংক্রিয় কিংবা মানবনিয়ন্ত্রিত সব অত্যাধুনিক যন্ত্রের ইনভেনশন, দৈনন্দিন আর ইন্ডাস্ট্রিয়াল যত মেকানিজমকে অটোমেট করে দেয়া, মেকানিকাল-ইলেক্ট্রনিক আর সফটওয়্যার সিস্টেমকে একইসাথে কন্ট্রোল করা ইত্যাদি হলো মেকাট্রনিক্সের মূল কাজ।

এই মেকাট্রনিক্স হলো মেকানিকাল, ইলেকট্রিকাল, কম্পিউটার সায়েন্স, প্রোগ্রামিং, কমিউনিকেশন আর কন্ট্রোল সিস্টেমের অসাধারণ এক কম্বিনেশন।

আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স, ন্যানোটেকনলজি, সাইবারনেটিক্স, রোবোটিক্স, অটোমোবাইল, অ্যারোনটিক্যাল, হাইড্রোডাইনামিক্স, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং, স্মার্ট ভেহিকল সিস্টেম, টেলেকমিউনিকেশন, এভিওনিক্স, বায়োমেডিকেল সবই মেকাট্রনিক্সের অন্তর্গত, আর নাহলে রিলেটেড।

মেকাট্রনিক্সের সেক্টর এতটাই হিউজ যে, ফিউচার এই সাবজেক্টটাই লিড করবে তাতে সন্দেহ নেই।
এবার আসি কি পড়তে হবে মেকাট্রনিক্সে।

ফার্স্ট ইয়ারেই Mechatronic system, Electrical circuit, Computer fundamental and Programming আর Mechanical এর বেসিক কোর্স পেয়ে যাবে তোমরা।

এরপর আস্তে আস্তে পাবে Engineering Mechanics, Manufacturing Process, Electronics, AutoCad, Sensor, Signal Communication, Digital Systems, Electromechanical Systems, Microcontroller and Interfacing, Machine Dynamics, Hydraulic and Pneumatic Control, Material Mechanics, Automation, Digital Signal Processing and Machine Vision, Machine Learning Algorithm, Aerodynamics and Avionics, Advanced Vehicle Technology, Micro-Nano Technology, Embedded Systems, Robotics, Computer Integrated Manufacturing, Artificial Intelligence, Human-Robot Interaction, Biomedical, Multimedia Systems, Rapid Prototyping, Programmable Logic Controller এর মত ইন্টারেস্টিং আর ইমার্জিং সব ফিল্ড নিয়ে কোর্স।

তোমার পুরো পড়ালেখাটাই থাকবে analysis, implementation আর experiment এ পরিপূর্ণ। পুরোই সায়েন্টিস্ট আর ইনভেনটরের মতো ফিলিংস!

মেকাট্রনিক্সের জব সেক্টর নিয়ে বলতে গেলে খুব বেশী ত্যানা পেচানোর প্রয়োজন নেই। এক জরিপে দেখা গেছে অ্যামেরিকার একজন মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারের বার্ষিক গড় বেতন ৮৩ হাজার ডলার। আর মেকাট্রনিক্সের কাজ একইসাথে ইইই, মেকানিক্যাল আর সিএসসি নির্ভর হওয়ায় বেতন আরও বেশি হবার সম্ভাবনাও অনেক। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারদের ভূমিকা হবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

(১) মাইক্রো কন্ট্রোলিং বেসড বেশকিছু কোম্পানি আছে যেখানে মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার দরকার।
(২) যে সকল ইন্ডাস্ট্রিগুলোতে অটোমেটিক কন্ট্রোলের ব্যাপার আছে।

(৩) আর ইলেক্ট্রিকাল, মেকানিকাল, সিএসসি রিলেটেড ফিল্ড তো আছেই।
All the existing fields of engineering represents what we are except Mechatronics is the only field of engineering which represents what we will be

ইতোমধ্যে ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশনে ৫৬টি শূন্য পদে প্রার্থী নিয়োগের জন্য মেকাট্রনিক্স বিভাগের নাম এসেছে, যদিও এখনো পর্যন্ত (২০১৭) কোনো মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার পাব্লিক ভার্সিটিগুলো থেকে বের হয়নি!

এছাড়া বাহিরের দেশের ভার্সিটিগুলোতে মেকাট্রনিক্স নিয়ে অনেক কাজ হওয়ায় উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে মেকাট্রনিক্স তোমার সামনে খুলে দিবে বিশাল এক দরজা। USA, UK, Australia, Canada সহ আরও বেশ কিছু উন্নত দেশের ৫৯টির মত ভার্সিটিতে মেকাট্রনিক্সের জন্য পোস্টগ্র্যাজুয়েশন অফার করছে।

তাছাড়া, মেকাট্রনিক্স থেকে অসংখ্য ফিল্ডে চাইলেই শিফট করা যায়। তুমি চাইলেই Cybernetics, Artificial Intelligence, Quantum Computing ইত্যাদি সাব্জেক্ট নিয়ে হায়ার এব্রোড স্টাডির জন্য যেতে পারবে মেকাট্রনিক্স থেকে।

এবার কুয়েটে মেকাট্রনিক্সের ফ্যাসিলিটি নিয়ে কিছু কথা বলি। কুয়েটের মেকাট্রনিক্স বাংলাদেশের পিওর মেকাট্রনিক্স। এখানে তুমি পাবে কুয়েটের মোস্ট ট্যালেন্টেড কিছু শিক্ষকদের ছত্রছায়া। তাঁদের তত্ত্বাবধায়নে ডিপার্টমেন্টে প্রচুর পরিমাণ কাজ হয়। অসাধারণ একটা সিলেবাসও তৈরী করে দিয়েছেন তাঁরা।

এছাড়া ডিপার্ট্মেন্টে আছে আন্তর্জাতিক মানের Control System ল্যাব , Artificial Intelligence ল্যাব। অতি শীঘ্রই আরও ল্যাব হয়ে যাচ্ছে যেগুলো তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক স্যারের আগ্রহে কমপ্লিট হতে চলেছে।

ভবিষ্যতের খুলনাতে নিউ জেনারেশনের এই সাব্জেক্ট নিয়ে যারা পড়তে চাও, নিঃসন্দেহে একটা আন্তর্জাতিক মানের প্লাটফর্ম পেতে চলেছো যা তোমার ক্রিয়েটিভিটি কাজে লাগাতে ভালোভাবেই সাহায্য করবে আশা করি।

মেকাট্রনিক্স নিয়ে অনেকেরই একটি ভুল ধারণা আছে, এটি বোধহয় রোবোটিক্সের আরেকটি নাম। যা একেবারেই ভুল। মেকাট্রনিক্সের বিশাল রাজত্বের সামান্য একটি অংশ হলো রোবোটিক্স। বরং মেকাট্রনিক্সে ফিল্ডের কোনো অভাব নেই। তাই সপ্ন যদি হয় মানুষকে টেকনলজি ফ্রেন্ডলি করার তাহলে- ওয়েলকাম টু দ্যা ওয়ার্ল্ড অফ মেকাট্রনিক্স! 😀

সারা বিশ্বে যে কটা সাবজেক্ট হইচই ফেলে দেয়  তার মধ্যে একটা মেকাট্রনিক্স। যদিও আন্ডার গ্র্যাজুয়েডে সাবজেক্টে হিসেবে আমাদের দেশে মেকাট্রনিক্স এর প্রচলন কম। এক কথায় বলতে গেলে, “Mechatronics is where science fiction meets reality”।

মেকানিক্যাল,ইলেক্ট্রিক্যাল ও সিএসসি এই তিনটা সাবজেক্টের সমন্বয়ে আমাদের মেকাট্রনিক্স। সেই সাথে কন্ট্রোল ইঞ্জিনিয়ারিংও জড়িত আছে এর সাথে।

যা যা পড়ানো হয় :{Course Structure }

Mechanical engineering and materials science
Electrical engineering
Computer engineering
Computer science(software & hardware engineering)
Systems and control engineering
Optomechanics (optical engineer)

আপনি হয়ত বলতে পারেন এর কাজের ক্ষেত্র কেমন? তাহলে দেখুন প্রয়োগ: {Applications }

1. রোবটিক্স এবং অটোমোটিভ ইঞ্জিনিয়ারিং
2. কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত মেশিন
3. অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং, স্মার্ট ভিয়েকল ডিসাইন
4. বায়ো-মেকানিক্যাল সিস্টেম, সাইবর্গ।
5. আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স

6. মোবাইল ফোন অ্যাপ্লিকেশন
7. স্মার্ট সিকিউরিটি সিস্টেম
8. ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং
৯.পাকেজিং
১০.মাইক্রো কন্ট্রোলার
১১.কনসিউমার প্রোডাক্ট

আরো অনেক।

এবার হয়ত ভাবছেন এতই পড়ব তাহলে চাকরির পর বেতন কত পাব ???

বেতন : এক জরিপে দেখা গেছে অ্যামেরিকার একজন মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারের বার্ষিক গড় বেতন ৮৩ হাজার ডলার।  আপনি হয়তো এও ভাবছেন যে বাংলাদেশে কি
হবে?

আসলে কেউ যদি ভাবে মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার হয়ে আমি বাংলাদেশে থাকবো, তার কি হবে? বাংলাদেশে কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার লাগে কিন্তু ইঞ্জিনিয়ার নেই বলে অন্য ইঞ্জিনিয়ার
দিয়ে কাজ চালাতে হয়।

যেমনঃ

১) মাইক্রো কন্ট্রোলিং বেসড বেশ কিছু কোম্পানী আছে বাংলাদেশে যেখানে দরকার মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার।

২) যে সকল ইন্ড্রাস্টিতে অটোমেটিক কন্ট্রোল এর ব্যাপার গুলো আছে।

৩) এছাড়া মেকানিক্যাল, ইলেক্ট্রিক্যাল আর সিএসইর রিলেটেড ফিল্ড তো থাকছেই।

৪)সর্বপরি আপনি মোবাইল apps ডেভেলপ করতে পারবেন।

এক দিকে যেমন আপনার ভাতের অভাব হবে না অন্য দিকে সৃজনশীল কিছু দিতে পারবেন বাংলাদেশকে।

এত কথা বললাম এবার কাজের কথায় আসি। কোথায় পাবেন এই সাবজেক্ট :

এর আগে একটা বেসরকারী ইউনিভার্সিটি তে মেকাট্রনিক্স থাকলেও প্রথম রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে Mechatronics Engineering Department খোলা
হয়েছে।

KUET  (2018) খোলা হয়েছে !!!!

KUET Review
KUET Mechanical থেকে সফল যারা
ভালোবাসার ১০১ একর:About KUET:::-
How to Prepare for-KUET
Sylebus of KUET

KUET Web