প্রসঙ্গ পদ্মা সেতু: এ সেতু পূর্ণ হতে পারলে তা দেশের এক বিশাল সমস্যার সমাধান হবে। কিন্তু প্রতিবারের মতই এবারও সেতুর নকশায় গুরুতর ভুল।
কাজের ব্যয় বৃদ্ধি তো আছেই।
এর আগেও মতিঝিল ফ্লাই ওভার করতে গিয়ে বিশাল ডিজাইন মিসটেইক হয়েছিল।
মনে পড়ে? রাইট লেন হয়ে গেছে লেফট লেন, আর লেফট লেন রাইট। উঠার রাস্তা হয়ে গেছে নামার। মানে পুরাটাই ভুল। ডিজাইনার যা করতে চেয়েছিলেন, তা হয়নি।
পরে ফ্লাই ওভার এর সামনে সিগনাল গিয়ে গ্রীনিজ বুক ওয়ার্ল্ড রেকর্ড করে ফেলেছি আমরা। পৃথিবীর আর কোন ফ্লাই ওভার এমন আছে বলে জানিনা।
এবার ত্রুটি পাওয়া গেলো পদ্মা সেতুর রেল প্রকল্পের ডিজাইনে। রেললাইন যে উচ্চতায় হচ্ছে, তাতে সড়ক দিয়ে সেতুতে ওঠার সময় লরি আটকে যাবে।
সেতুর দুই প্রান্তের ভায়াডাক্ট (সেতু থেকে সড়ক পর্যন্ত উড়াল রেললাইন) নকশায় একই সমস্যা আছে বলে জানা গেছে।
পদ্মা সেতুর কাজের ব্যয় প্রায় ১০ হাজার কোটি থেকে এখন ৩০ হাজার কোটি টাকায় এসেছে। ভবিষ্যতে আরও বাড়বে।
গত দশকে বড় কোন ইঞ্জিনিয়ারিং প্রজেক্ট এরকম মিসম্যানেজমেন্ট এবং ডিজাইন মিসটেইক ছাড়া হয়নি। এর সমাধান কি?
এর সমাধান হয় যারা আমলা ( বিসিএস এডমিন ) তাদের দিয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং কাজ না করানো।
বরং দেশের ইঞ্জিনিয়ার রা যাতে কাজ করতে পারে, তার জন্য সিস্টেম গড়ে তোলা। ইঞ্জিনিয়ারিং প্রজেক্ট যদি আমলারা করেন, তাহলে দেশে ইঞ্জিনিয়ার বানিয়ে কি লাভ? বুয়েট কুয়েট সব বন্ধ করে দেন। সবাইকে ইতিহাস ভূগোল পড়ান।
যেসব ইঞ্জিনিয়ার এটা বুঝতে চায়না, তাদের অবস্থা হয় ইঞ্জিনিয়ার দেলোয়ারের মতন। পুলিশ মাস্টারমাইন্ড খুজে পায়না।
সরকার যদি চায় এসব সমস্যার সমাধান, সরকারকে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা করে দেশে ইঞ্জিনিয়ারদের কাজের ব্যবস্থা করে দিতে হবে।
এখন যেটা হয়, বিদেশী কোম্পানী ঠিকাদার আমলা মিলে কাজ করে, আর দেশী ইঞ্জিনিয়ারদের রাখা হয় শো অফ প্রজেক্ট হিসেবে।
এর থেকে বের হয়ে আসতে হবে বাংলাদেশকে। রাজনৈতিক নেতৃত্বের ইচ্ছার ব্যাপার মাত্র।
আশা করি সরকার ইঞ্জিনিয়ার দেলোয়ার হত্যার মাস্টারমাইন্ডকে খুঁজে বের করতে স্বচেষ্ট হবেন।
লেখকঃ মোহাম্মদ রেজাউল করিম ভুইঞা
প্রকৌশলী