পদ্মা সেতুর সর্বশেষ স্প্যান বসানো উপলক্ষে ‘স্বপ্নের পদ্মা সেতু এখন দৃশ্যমান’ শিরোনামে গত সোমবার আয়োজিত একটি ওয়েবিনারে বক্তারা এসব কথা বলেছেন।

পৃথিবীতে পদ্মা সেতুর চেয়ে বেশি দৈর্ঘ্যের সেতু রয়েছে। কিন্তু মাটির কারণে পদ্মা নদীতে সেতু নির্মাণ করতে গিয়ে নতুন নতুন প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হয়েছে। চ্যালেঞ্জিং এ নির্মাণকাজ ভবিষ্যতে পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে।

পদ্মা সেতুর সর্বশেষ স্প্যান বসানো উপলক্ষে ‘স্বপ্নের পদ্মা সেতু এখন দৃশ্যমান’ শিরোনামে গত সোমবার আয়োজিত একটি ওয়েবিনারে বক্তারা এসব কথা বলেছেন।

পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ ভবিষ্যতে পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে

‘স্বপ্নের পদ্মা সেতু এখন দৃশ্যমান’ শিরোনামের ওয়েবিনারে বক্তারা

অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে ছিলেন পদ্মা সেতু প্রকল্পের বিশেষজ্ঞ দলের প্রধান অধ্যাপক শামীম-উজ-জামান বসুনিয়া, দলের সদস্য মো. ফিরোজ আহমেদ, এ এম এম সফিউল্লাহ ও আইনুন নিশাত এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. শামসুল হক।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই পদ্মা সেতু প্রকল্পের বিশেষজ্ঞ দলের প্রয়াত প্রধান জাতীয় অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীকে স্মরণ করা হয়। ওয়েবিনারটি সঞ্চালনা করেন কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক আনিসুল হক।

মূল আলোচনায় এ এম এম সফিউল্লাহ বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে গিয়ে মাটি-সংক্রান্ত অনেক সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছে। পৃথিবীতে পদ্মা সেতুর চেয়ে লম্বায় বড় সেতু রয়েছে। কিন্তু মাটির অবস্থানগত কারণে পদ্মা একটি বিশেষ ধরনের নদী।

তাই পদ্মা নদীতে সেতু নির্মাণ করতে গিয়ে নতুন নতুন প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হয়েছে। ভবিষ্যতে চ্যালেঞ্জিং এ নির্মাণকাজ পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে। তিনি এ সেতু নির্মাণের সঙ্গে থাকতে পেরে গর্বিত বলে উল্লেখ করেন।

পদ্মা সেতুকে পরিবেশবান্ধব করে তৈরি করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়েছে বলে জানান ফিরোজ আহমেদ। তিনি বলেন, এ সেতু ঘিরে পুরো এলাকা সবুজায়ন করার পরিকল্পনা রয়েছে। পদ্মা সেতু এলাকাকে বিশ্বের কাছে পরিবেশবান্ধব প্রকল্প হিসেবে তুলে ধরা হবে।

আইনুন নিশাত বলেন, ‘পদ্মা সেতু শুধু নির্মাণ করেই আমাদের কাজ শেষ করলে হবে না। এটি ভালোভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে। দীর্ঘ মেয়াদে টিকিয়ে রাখার জন্য আমাদের বেশ কিছু সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা হাতে নিতে হবে।

শুধু সেতু নয়, নদী এবং নদীর পানি নিয়েও আমাদের পরিকল্পনা করতে হবে। তাহলেই আমরা এর সুফল অনেক দিন ভোগ করতে পারব।’

পদ্মা সেতু নির্মাণে গুণগত মান বজায় রাখা হয়েছে এবং এ সেতুতে সবচেয়ে ভালো মানের উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে জানিয়ে শামসুল হক বলেন, ‘আমাদের দেশে এখন আন্তর্জাতিক মানের সেতু তৈরির রডসহ সব উপকরণ উৎপাদিত হয়।

সেগুলোই পদ্মা সেতুতে ব্যবহার করা হয়েছে। আগে সিমেন্ট, রড থেকে শুরু করে নির্মাণের উপকরণ বিদেশ থেকে আমদানি করতে হতো। সময়ের পরিবর্তন হয়েছে।

এখন যত বড় কাঠামোই হোক না কেন দেশের প্রতিষ্ঠানগুলো থেকেই সেই চাহিদা পূরণ করা সম্ভব।’

পদ্মা সেতু প্রকল্পের বিশেষজ্ঞ দলের প্রধান প্রকল্পের প্রধান শামীম-উজ-জামান বসুনিয়া অনুষ্ঠানে ভিডিও বার্তা পাঠান। এতে তিনি বলেন, শুরু থেকেই পদ্মা সেতু একটি সুন্দর পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে এগিয়ে গেছে।

এ প্রকল্পে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য কয়েক ধাপে সবকিছু তদারকি করা হয়েছে। এ জন্য পদ্মা সেতু নির্মাণের সময় যত প্রতিবন্ধকতাই এসেছে, সবকিছুই সুন্দরভাবে সমাধান করা গেছে।

সঞ্চালকের বক্তব্যে আনিসুল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সাহসিকতায় আজ পদ্মা সেতু স্বপ্ন নয়, বাস্তব। বিশ্বব্যাংকসহ দাতা সংস্থাগুলো যখন পদ্মা সেতুর জন্য টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানায়, তখন শেখ হাসিনার সাহসিকতায় দেশের টাকা দিয়ে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়।