বুয়েট ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকারী ও সম্প্রতি গুগলে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে যোগ দেয়া অনিক সরকার সম্প্রতি নিজ ফেসবুক আইডিতে স্ট্যাটাস এর মাধ্যমে অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণ নিয়ে তার অনুভূতি জানিয়েছেন –

আমার সবসময়েরই একটা বিশাল আফসোস, আমি স্কুল-কলেজের পড়াশুনা করার সময়ে কখনো কোন অলিম্পিয়াডের সাথে সরাসরি যুক্ত ছিলাম না।

চট্টগ্রামে এমনিতেই অলিম্পিয়াডের প্রচারণা কম হইতো, প্রত্যেকবারই ম্যাথ অলিম্পিয়াডের রেজিস্ট্রেশন ক্লাসমেটরা করে ফেলার পরের দিন আমি খবর পাইতাম যে কয়েকদিন পরেই অলিম্পিয়াড হচ্ছে একটা।

আমার নিজেরও আলস্য ছিল – সেটা অস্বীকার করবো না, তবে প্রথম আলোর শিক্ষা পাতায় পরে যখন কিছু কিছু প্রশ্ন ছাপা হত, খুব আগ্রহভরে প্রশ্নগুলো solve করার চেষ্টা করতাম আর ভাবতাম – ইস এগুলা করতে পারলে কত কিছু শিখা হইতো। প্রতি বছর এই একই লুপ চলতো।

বুয়েটে এসে সক্রিয়ভাবে competitive programming / problem solving করতে গিয়ে হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছিলাম আমরা traditional curriculumএ যেভাবে ম্যাথ নিয়ে চিন্তাভাবনা করতে শিখি, সেটা কতটা ভুল এবং অপ্রতুল।

বোর্ডের পরীক্ষায় আসা কিছু দাগানো ম্যাথ solve করে ভালো রেজাল্ট করা আর সত্যিকার ম্যাথ পারার বা চিন্তা করার মধ্যে অনেক অনেক difference, এইটা একদম ভালোভাবে বুঝে গিয়েছিলাম সেই সময়েই।

ছোটবেলা থেকে অলিম্পিয়াড বা এই ধরনের analytical ability related competition করে আসলে analytical skill যেভাবে develop হয়, সেটা বড় হয়ে যাওয়ার পরে cover up করতে অনেক বেশি effort দেওয়া লাগে (আদৌ পুরোপুরি ওই লেভেলে যাওয়া যায় কিনা আমার সন্দেহ আছে)।

আমাদের মূল শিক্ষাক্রমটাই অলিম্পিয়াডের মত হইলে হয়তো আরও বেশি ভালো হইত, কিন্তু সেটা দুরাশা।

নিজের অভিজ্ঞতা থেকে জানি বলেই স্কুল-কলেজের যেকোন জুনিয়র বা পরিচিত পোলাপাইন পড়াশুনা নিয়ে পরামর্শ চাইলেই, তাদেরকে অলিম্পিয়াডগুলো বেশি করে করতে উৎসাহিত করি।

Classical পড়াশুনাকে অবহেলা করার তো কোন দরকার নাই, অলিম্পিয়াড করা ছেলেমেয়েদের আমি অধিকাংশকেই দেখসি ক্লাসের অন্যতম ভালো রেজাল্টগুলোও করতে।

বরং অলিম্পিয়াড করাটাই তাদের মেধা বা চিন্তাক্ষমতা বাড়াতে আরও বেশি সাহায্য করার কথা।

নিজের প্রাতিষ্ঠানিক সাফল্যের বড়াই করতে গিয়ে তাই অলিম্পিয়াডের মত মেধা বিকাশের মাধ্যমগুলোকে ছোট করার চেষ্টা একেবারেই গ্রহণযোগ্য না।

আমাদের দেশে কিভাবে অলিম্পিয়াডগুলোকে আরও ছড়িয়ে দেওয়া যায়, যেন স্কুল-কলেজের ছেলেমেয়েরা নিজেদের অবসর সময়গুলো নষ্ট না করে এইসব প্রতিযোগিতায় বেশি বেশি অংশগ্রহণ করে – সেইটাই আরও বেশি উৎসাহিত করা দরকার।

অনিক সরকার

সিএসই, বুয়েট ‘১৪

সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার, গুগল

সংযুক্তি: গুগলে যোগ দিচ্ছেন বুয়েটের অনিক সরকার

আমাদের বিজ্ঞান ক্লাবে যোগ দিন