ইট পাথরের নগরী ঢাকা শহরেই জন্ম ও বেড়ে উঠা। বাবা ডা. আজিজুল হক খান একজন সরকারী কর্মকর্তা। মা সালমা সুলতানা গৃহিণী। ৫ম শ্রেণীতে পেয়েছেন ট্যালেন্টপুল বৃত্তি।

ছোট বেলা থেকেই বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতেন। অর্জনের ঝুলিতে রয়েছে গান ও একক অভিনয়ে জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কার। কাব স্কাউট জাতীয় পর্যায়ে রানার্স আপ হয়েছেন।

এছাড়াও বিভিন্ন সময় নাচ,অভিনয় ও গানে সেরা হয়ে পেয়েছেন পুরস্কার। এসব কাজে সব সময় তার মা অনুপ্রেরণা দিতেন ও তার সাথে যেতেন।

পড়ালেখাও সেরা ছিলেন। সব সময় ক্লাসে প্রথম হতেন। বিন্দুবাসিনী সরকারি বালিকা বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিকে বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে জিপিএ ৫ পেয়েছেন। উচ্চ মাধ্যমিকে কুমুদিনী সরকারী কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে এবারও জিপিএ ৫ পেয়ে উচ্চ মাধ্যমিকের সমাপ্তি ঘটান।

উচ্চ মাধ্যমিকের সফল সমাপ্তির ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর শুরু থেকেই ভালো পড়াশোনা করেন। সুন্দরী হওয়াতে বন্ধুদের উৎসাহে লাক্স চ্যালেন আই সুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন।

লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার-২০১০ এ টপ সেভেনে জায়গা করে নেন। পুরস্কার জিতে নেন ক্লোজ আপ মিস বিউটিফুল স্মাইল ক্যাটাগরিতে। তারপর কিছু টিভিসিও করেন।

রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ভালো ফলাফলের মাধ্যমে স্নাতক সম্পন্ন করার পর স্বপ্ন দেখেন বিসিএস ক্যাডার হয়ে দেশের সেবায় নিয়োজিত হবেন।

তখন থেকেই বিসিএসের জন্য জোর প্রস্তুতি শুরু করেন। বাংলা ও ইংরেজি পত্রিকা নিয়মিত পড়তেন।

বাংলাদেশের ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ, সংবিধান, সম্প্রতি ঘটে যাওয়া দেশ বিদেশের ঘটনাগুলো জানতেন। আর গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নোট করে রাখতেন। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষার্থী হওয়ায় এসব বিষয় সম্পর্কে জানার আগ্রহ তৈরি হয়।

তাছাড়া তিনি যেকোনো বিষয়ে মুক্তহস্তে লিখতে পারতেন। উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান বিভাগ থাকায় গণিত আর ইংরেজিতে দক্ষ ছিলেন।

প্রতিদিন একটা লক্ষ্য নির্ধারণ করে তা পুরণ করতেন। একঘেয়েঁমি যাতে না আসে এজন্য প্রতিদিন ৩-৪টা বিষয় পড়তেন।

তখনকার সহপাঠী বর্তমান স্বামী মেহেদী হাসান ফুয়াদের সাথে ইংরেজিতে কথা বলতেন। ইংরেজিতে কথা বলার অভ্যাস ভাইভাবে কাজে দিয়েছে। নিয়মিত ও কৌশলী পড়ালেখার দরুন জীবনের প্রথম চাকরির ভাইভায় ২০১৭ সালে সাধারন বিমা কর্পোরেশনে সহকারী ব্যবস্থাপক পদে চাকরি পান। তারপর ৩৭তম বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন।

বিসিএস ক্যাডার হতে: যারা বিসিএস ক্যাডার হতে চায় তাদের উদ্দেশ্যে সোহানিয়া পরামর্শ দিয়ে বলেন, নিয়মিত জাতীয় দৈনিক পত্রিকা পড়া উচিত। প্রতিদিনের পড়া প্রতিদিনই শেষ করতে হবে। প্রতিদিন কিছু সময়ের জন্য হলেও কিছু লেখা উচিত।

লেখালেখির দক্ষতা বেশ কাজে দেয়। আর ব্যসিক তৈরি করার জন্য মাধ্যমিকের মৌলিক বইগুলো পড়া যেতে পারে। সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করে পড়াশোনা করতে হবে।

যদি আত্মবিশ্বাস আর লক্ষ্য ঠিক থাকে তাহলে স্বপ্ন পুরণ হবেই। মন থেকে কিছু চাইলে আর সে অনুযায়ী পরিশ্রম করলে আল্লাহ তার স্বপ্ন পুরণ করেন।