‘দ্যা গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’ নামে পরিচিত বিশ্বকাপ ফুটবল ২০২২ এর স্বাগতিক দেশ কাতার। বর্ণাঢ্য এ আয়োজনকে সামনে রেখে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করছে আয়োজক দেশটি।

এরই অংশ হিসেবে দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্যশৈলী আর প্রযুক্তির মিশেলে নতুন করে গড়ে তোলা হচ্ছে নয়টি স্টেডিয়াম। সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সৌরচালিত স্টেডিয়ামগুলোর সৌন্দর্য হার মানাবে আধুনিক বিশ্বের যেকোনো স্টেডিয়ামকে।

আর এসমস্ত অবকাঠামো নির্মাণের সুপারভাইজার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে দেশটি ভরসা খুজেছে অস্ট্রেলিয়া নিবাসী একজন বিশিষ্ট ইন্টারন্যাশনাল এক্সপার্ট ড.আবদুল্লাহ আল মামুনের কাছে।

হ্যাঁ, তিনি চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় – চুয়েট এর ই একজন প্রাক্তন ছাত্র।

ড.আবদুল্লাহ আল মামুন তৎকালীন চট্টগ্রাম ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ (বর্তমানে চুয়েট) এর পুরকৌশল বিভাগের ৯ম ব্যাচের ছাত্র।

চুয়েট থেকে গ্র‍্যাজুয়েশন সম্পন্ন করার পর থাইল্যান্ডের Asian Institute of Technology থেকে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। সেখান থেকে চলে যান অস্ট্রেলিয়ায়।

অস্ট্রেলিয়ার Western Sydney University এর স্কুল অব কম্পিউটিং, ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড ম্যাথমেটিক্স থেকে জলবায়ু পরিবর্তন ও ড্রেইনেজ সিস্টেম

(Impact of Climate Change on Rainfall and Drainage System) এর উপর পিএইচডি ডিগ্রি সম্পন্ন করেন।

বহুপ্রতিভার অধিকারী ড.মামুন একাধারে একজন প্রখ্যাত লেখক, গীতিকার ও সংগীতশিল্পী। কুমার বিশ্বজিৎ এর গাওয়া কালজয়ী গান ‘তোরে পুতুলের মতো করে সাজিয়ে’ তারই লেখা।

এছাড়াও ‘এই মুখরিত জীবনে চলার পথে ‘, ‘ওরে ছোট্টোবেলার সাথী’ এর মতো আরও অনেক জনপ্রিয় গানের রচয়িতা তিনি। আশির দশকের অত্যন্ত জনপ্রিয় ব্যান্ড SOULS এর বেশকিছু গানও তারই লিখা।

SOULS ব্যান্ডের সুবাদে বাংলাদেশের ব্যান্ড মিউজিকের প্রবাদপ্রতিম লিজেন্ড Ayub Bachchu AB এর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ও শ্রদ্ধাভাজন হয়ে উঠেন তিনি।

যখন চুয়েটে পড়তেন, তখন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া তার বন্ধুরা তারই লেখা বিভিন্ন গান গেয়ে শাটল ট্রেনের বগি মাতিয়ে রাখতেন।

থাইল্যান্ডে পড়বার সময় ভিনদেশী ছাত্রদের নিয়ে গড়ে তোলেন LOTUS নামের একটি ব্যান্ড।

ব্যান্ডটি সেসময় জনপ্রিয় কিছু থাই সংগীত পরিবেশন করতো। ‘তোমার জন্য’ নামের একটি একক সংগীত এলবাম রয়েছে তার।

এমনকি চুয়েটের সুবর্ণজয়ন্তীতে কণ্ঠশিল্পী Konal ও Sabbir zaman এর গাওয়া ‘চুয়েট চুয়েট’ ও তারই রচনা। ‘কাতারে বহতা সময়’ নামে একটি বই লিখেছেন তিনি। ছিলেন ‘নবোষা’ পত্রিকার সম্পাদকও।

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা ও চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য বর্তমানে তিনি গবেষণা করছেন।

এ সম্পর্কে তার লেখা একাধিক গবেষণামূলক নিবন্ধ বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।

ড.আবদুল্লাহ আল মামুন বর্তমানে কাতারের পরিবেশ ও নগর মন্ত্রণালয়ে কর্মরত আছেন।

চাকরি ও গবেষণার পাশাপাশি সফলতার সাথে তিনি প্রকৌশলীদের সংগঠন The Institution of Engineers, Bangladesh – IEB এর কাতার শাখার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

অসাধারণ প্রতিভাধর, হাসোজ্জ্বল, সদালাপী ও বিনয়ী এ মানুষটি তার কর্মের মাধ্যমে বহুদিন আমাদের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন।

চুয়েট পরিবার অভিভাবকতূল্য এ মানুষটির নীরোগ, দীর্ঘায়ু কামনা করে। ❤