আধুনিক বিশ্বের নবায়নযোগ্য শক্তিচালিত অটোমোবাইল কোম্পানির পথিকৃৎ হিসেবে ধরা হয় ইলন মাস্কের Tesla কে। বহুজাতিক এই কোম্পানিটিতে এনার্জি সিস্টেম ডিজাইনার পদে সম্প্রতি যোগ দিয়েছেন চুয়েটের তড়িৎকৌশল বিভাগের ‘১১ ব্যাচের শিক্ষার্থী শুভ দাশ।

বহুজাতিক ওই কোম্পানিটিতে তিনি এনার্জি সিস্টেম ডিজাইনার হিসেবে কাজ করবেন।

টেসলা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান। সবচেয়ে বেশি লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি প্রস্তুতকারী কোম্পানিও টেসলা।

শুধু চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকেই টেসলা তৈরি করেছে এক লাখ তিন হাজার গাড়ি। আধুনিক বিশ্বের নবায়নযোগ্য শক্তিচালিত অটোমোবাইল কোম্পানির পথিকৃৎ হিসেবে ধরা হয় ইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠান টেসলাকে।

প্রতিষ্ঠানটির মূলধন এখন ২০৭.২ বিলিয়ন ডলার। এই প্রতিষ্ঠানটিতে কাজ করা যে কারও জন্যই রীতিমতো স্বপ্নের। সেই স্বপ্নই হাতে এসে ধরা দিল বাংলাদেশী শুভর হাতে।

শুভ দাশ চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) তড়িৎকৌশল বিভাগের ২০১১ ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন।

এর আগে সরকারি হাজী মোহাম্মদ মহসিন কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং চট্টগ্রাম সরকারি হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক শেষ করেন তিনি।

২০১৭ সালে চুয়েট থেকে স্নাতক শেষ করার পর উচ্চশিক্ষার জন্য পাড়ি জমান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। পরের বছরের আগস্টে মাস্টার্স শুরু করেন জর্জিয়া সাউদার্ন ইউনিভার্সিটিতে।

ওই ইউনিভার্সিটির রিসার্চ সিম্পোজিয়ামে ড. রামি হাদ্দাদের অধীনে শুভর রিসার্চ ‘জর্জিয়া পাওয়ার ইনোভেশন’ অ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনীত হয়।

টেসলায় যোগ দেওয়ার আগের অভিজ্ঞতা জানিয়ে শুভ বলেন, ‘টেসলায় যোগদানের পুরো জার্নিতেই আমাদের চুয়েটেরই বড় আপু অনন্যা নাগ আমাকে গাইড করেছেন।

মাস্টার্স শেষের পর ইন্ডাস্ট্রিয়াল অভিজ্ঞতা না থাকায় জবের জন্য এপ্লাই, রিজেকশন আর হতাশা— এসবের মধ্য দিয়েই যাচ্ছিলাম। কিন্তু সেই সময়টায় বটবৃক্ষের মতো কিছু মানুষ আমাকে অনুপ্রেরণা ও পথ দেখাচ্ছিলেন।

এরপর হঠাৎ করেই একদিন টেসলার চান্সটা চলে আসে। এপ্লাই করার পর কল না পেয়ে আশা ছেড়েই দিয়েছিলাম। এরপর হঠাৎ একদিন কল পেলাম।’

চুয়েটকে নিজের ‘মেরুদণ্ড’ হিসেবে উল্লেখ করে শুভ বলেন, ‘জর্জিয়া সাউদার্ন ইউনিভার্সিটিতে আমার গবেষণা ছিল স্মার্ট রিনিউয়েবল এনার্জি ইন্টিগ্রেশন নিয়ে।

পুরো গবেষণার জার্নিতে, অন গ্রিড-অফ গ্রিড পিভি সিস্টেম ডিজাইনিং, সিগনাল প্রসেসিং, মেশিন লার্নিং এসব বিষয় শিখতে পেরেছিলাম।’

এই শেখাটাই তার ভিত্তি গড়ে দিয়েছে টেসলায় কাজ করার ক্ষেত্রে। তিনি বলেন, ‘পিভি/এনার্জি স্টোরেজ সিস্টেম ডিজাইনিংয়ের সেই অভিজ্ঞতা নিয়ে এখন টেসলায় কাজ করছি।

আসলে চুয়েটটাই তো আমাদের মেরুদণ্ড। সেখানে যা শিখেছি ওটাই পুঁজি করে এখানে আসা।’

কক্সবাজারে পরিবারের সঙ্গে শুভ

কক্সবাজারে পরিবারের সঙ্গে শুভ

কক্সবাজারে পরিবারের সঙ্গে শুভ
ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াশোনা ও গবেষণার বিষয়ে শুভ বলেন, ‘ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াশোনায় ভালো করার জন্য একাগ্রতার সাথে একটু বুদ্ধিদীপ্ত হওয়া চাই।

আর গবেষণায় ভালো করার জন্য গবেষকের প্যাশন থাকা তো চাই। তার বাইরেও কিছু ফ্যাক্টর রয়েছে— যেমন গবেষণার পরিবেশ, সুপারভাইজরের সহযোগিতা ইত্যাদি।

চুয়েট এই ক্ষেত্রে সঠিক দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে বলে আমি মনে করি।

তিনি বলেন, ‘তবে ফার্স্ট ইয়ার থেকেই শিক্ষার্থীদের আন্তর্জাতিক গবেষণার বিষয়বস্তুগুলো এবং গবেষণাপত্রের ধারণাটা দিতে পারলে পরিবেশটা আরও ভালো হবে।

ব্যাপারটা হচ্ছে একটা ভালো ধরনের গবেষণা আমাদের অনেক টেকনিক্যাল বিষয়বস্তুর প্রকাশ করে। কোনটা কখন কাজে লেগে যায় কে জানে?’

তথ্যঃ চট্টগ্রাম প্রতিদিন

আপনার পেজে লিখতে চাইলে লেখা জমা দিন আমাদের গ্রুপে