#ক্যাম্পাস_রিভিউ রাবি
হে নবীন, এসো স্বপ্নের পরিধিটা বৃদ্ধি করে দেই!
দরজায় কড়া নাড়ছে দেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা। দেখে নাও এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারলে কী কী পাচ্ছো……
দেশের যে প্রধান চারটি স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় আছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। ভাষা আন্দোলনের ঠিক পরপরই ১৯৫৩ সালে প্রতিষ্ঠিত (২য় প্রাচীনতম) বিশ্ববিদ্যালয়টি মহান মুক্তিযুদ্ধ সহ প্রতিষ্ঠা পরবর্তী প্রায় সকল জাতীয় আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। মতিহারের সবুজ চত্বরে অবস্থিত ৭৫৩ একরের বিশাল ক্যাম্পাসটি দেশের ২য় বৃহত্তম। শিক্ষার্থীদের আবাসিকতার জন্য রয়েছে ১৭টি আবাসিক হল। এর মধ্যে ১১টি ছেলেদের ও ৬টি মেয়েদের। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রমের জন্য রয়েছে ৯টি একাডেমিক বিল্ডিং। ৯টি অনুষদের অধীনে বর্তমানে ৫৭টি বিভাগে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। গবেষণার জন্য রয়েছে ৫টি উচ্চতর গবেষণা ইনস্টিটিউট। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার জন্য রয়েছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত প্রায় ৩ লক্ষ গ্রন্থ সম্বলিত বিশাল গ্রন্থাগার, যেটা কিনা সারাদেশেই ২য় বৃহত্তম। ২০৬ আসন বিশিষ্ট সিনেট ভবন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়কে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় হতে স্বতন্ত্র রূপ দান করেছে। সাথে রয়েছে আরও দুটি দৃষ্টিনন্দন প্রশাসন ভবন।
শিক্ষার্থীদের উন্নত ক্যারিয়ার গঠনের জন্য রয়েছে ক্যারিয়ার ক্লাব, হায়ার স্টাডি ক্লাব, সাংবাদিক সমিতি, রিপোর্টার্স ইউনিটি, ড্রামা এ্যাসোসিয়েশন, পাঠকফোরাম সহ অন্যান্য সংস্থা ও সংগঠন।
খেলাধুলার জন্য ছোটবড় বেশ কয়েকটি মাঠ সহ রয়েছে প্রায় ২৫ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতা সম্পন্ন এক বিশাল স্টেডিয়াম, যেটা কিনা দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে একমাত্র পূর্ণাঙ্গ স্টেডিয়াম। সাথে আরো রয়েছে সুইমিং পুল, জিমনেশিয়াম সহ শিক্ষার্থীদের শরীরচর্চার অন্যান্য উপকরণও।
তুর্কী স্থাপত্যশৈলীর অন্যতম নিদর্শন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ শুধু ধর্মীয় প্রার্থনাই নয়, নান্দনিকতারও এক অন্যতম উপাদান। সাংস্কৃতিক প্রোগ্রামের জন্য রয়েছে “কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তন” নামে দেশের অন্যতম বৃহৎ মিলনায়তন। এছাড়াও মুক্তমঞ্চ সহ রয়েছে বেশ কয়েকটি থিয়েটার ও গ্যালারী। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় টিএসসিসি বিশ্ববিদ্যালয়টির ইতিহাসে এক নতুন সংযোজন, শিক্ষার্থীদের আড্ডার অন্যতম কেন্দ্র হওয়ার অপেক্ষায় এটি। শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে প্রায় অর্ধশত বাস। চিকিৎসার জন্য রয়েছে নিজস্ব চিকিৎসা কেন্দ্র ও এ্যাম্বুলেন্স ব্যবস্থা। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেন দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বোটানিক্যাল গার্ডেন। মধুমাসে ক্যাম্পাসের পরতে পরতে গাছগুলো আম, লিচু সহ অন্যান্য ফলে ভরপুর থাকে।
পূনঃনির্মিত জোহা চত্বর ও নতুন সংযোজন বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলক নিশ্চিতভাবে দৃষ্টি কেড়ে নেবে যেকোনো আগন্তকের। বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ, বিদ্যার্ঘ, স্ফুলিঙ্গ, সুবর্ণ জয়ন্তী টাওয়ার, সাবাশ বাংলাদেশ কিংবা শহীদ মিনার শুধু দেশের জাতীয় আন্দোলনগুলোর স্মৃতিই বহন করেনা, যেনো ক্যাম্পাসের সৌন্দর্যেরও একেকটি অমূল্য উপাদান। দেশের প্রথম মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক যাদুঘর শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালায় চির অমর হয়ে আছে দেশের জাতীয় আন্দোলনগুলোর ইতিহাস। দেশের সর্বপ্রাচীন বরেন্দ্র যাদুঘরও (১৯১০ সালে প্রতিষ্ঠিত) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অন্যতম সম্পদ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি হল সহ সব কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ইন্টারনেটের সংযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উন্নত বিশ্বের সাথে আপডেট রেখেছে। স্মার্ট কার্ড সহ অন্যান্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়া লাগায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্বীকৃতি পেয়েছে দেশের প্রথম ডিজিটাল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে। চারুকলা রেললাইন, জুবেরীর মাঠ, ইবলিশ চত্বর, টুকিটাকি কিংবা প্যারিস রোড! এগুলো শুধু একেকটি স্থানই নয়, একেকটি ভালবাসারও নাম।
সর্বোপরি একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় বলতে যা বুঝায় তার সবকিছুই পাবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। গ্রিন সিটি, ক্লিন সিটি, এডুকেশনাল সিটির পাশাপাশি বিশ্বের সেরা আবহাওয়ায় অবস্থিত এ মহান বিদ্যাপীঠ এখন তোমাদের আগমনের অপেক্ষায়। শুভকামনা রইলো সকল ভর্তি পরীক্ষার্থীর জন্য।
@Newaz Sharif Rofi
University of Rajshahi