আমরা ছিলাম একবিংশ শতাব্দীর প্রথম ব্যাচ। অর্থাৎ নটর ডেম কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেই ২০০০ সালে।

তখন কলেজে ইউনিফর্ম ছিল না। আমি কলেজে যেতাম পাঞ্জাবি পায়জামা পরে, একটা ব্রিফকেস হাতে ঝুলিয়ে।

আর সেই ব্রিফকেসে ‘উন্মাদ’-এর একটা স্টিকার লাগানো ছিল ”গেলি না খামচি দিমু”, সেই স্টিকার ছিঁড়ে গেলে আরেকটা স্টিকার লাগালাম, তাতে লেখা ছিল ”এই বস্তু বহনকারী ব্যক্তি উন্মাদ। নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখুন”

ফান ম্যাগাজিন ‘উন্মাদ’ এর সাথে কাজ করার খুব ইচ্ছে ছিল। হয়তো এজন্যই এসব অদ্ভুত কাজকর্ম করতে ভালো লাগতো।

কলেজে আমার সিট ছিল জানালার পাশে। ক্লাসে বসে লেখা তিনটা লেখা পরবর্তীতে প্রকাশিত হয় উন্মাদে, যার মধ্য দিয়ে আমি উন্মাদের সাথে যুক্ত হই।

শ্রদ্ধেয় জহরলাল স্যার আমাকে খুব ভালোবাসতেন। আমাকে ডাকতেন ‘সত্তর দশকের সন্ত্রাসী’। স্যার বলেছিলেন আমাকে দিয়ে কিছুই হবে না।

বুয়েটে চান্স পাওয়ার পর স্যারকে গিয়ে বললাম, ‘এইযে চান্স পেয়েছি তো!’ স্যার বললেন, ‘আমি বলেছিলাম যে, এজন্যই জিদ থেকে চান্স পাইছিস।’

কলেজ জীবনের স্মৃতির ভাণ্ডার অনেক ভারী। কেমিস্ট্রি ল্যাবে লবণ পরীক্ষায় লেড ক্লোরাইডের স্বাদ নেয়া, মারামারি করে পাঞ্জাবি ছিঁড়ে ধরা পড়া, লম্বা চুলের জন্য ঝাড়ি খাওয়া আরও কত কি!

জীবনের প্রথম স্টেইজ পারফরমেন্স আর প্রথম কবিতা ছাপা হয় কলেজে থাকতেই।

বুয়েটে ভর্তি হই মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ।

প্রথম ক্লাস করেছিলাম খালি পায়ে হলুদ পাঞ্জাবি পরে, আমি তখন হিমু চরিত্রের ভীষণ ভক্ত ছিলাম। ইঞ্জিনিয়ারিং লাইফ যে আমার জন্য না অচিরেই তা অনুধাবন করলাম।

শর্টফিল্মের স্ক্রিপ্ট লিখে ক্যাম্পাসে ব্যাপক সাড়া পাই, এরপরই মনে হয়েছে আমি নিজেকে আবিষ্কার করেছি, আবিষ্কার করেছি আমার পথটা!

প্রায়ই ক্যাম্পাসে ইচ্ছেমত বৃষ্টিতে ভিজতাম। আমাকে দেখে অনেকে অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করতো ‘কি ব্যাপার! ছাতা নাই?’ ছাতা থাকলেও যে কখনো কখনো বৃষ্টিতে খুব ভিজতে ইচ্ছে হয় তা কি সবাই বোঝে?

বুয়েট থেকে পাশ করে ছয়মাস আমি ইচ্ছে করে বেকার ছিলাম। গল্প উপন্যাসের নায়করা বেকার হয় কিনা তাই! সেসময় বাবা মাকে জিজ্ঞেস করলে তারা শুধু বলতেন ‘ছেলে মাত্র পাশ করেছে’!

আমি তখন উন্মাদের সহকারী সম্পাদক। ম্যাগাজিন উপহার দেয়ার জন্য হুমায়ুন আহমেদ স্যারের বাসায় যাই, তখন তার সাথে পরিচয়।

আমাকে তিনি তার লেখা নাটকে অভিনয় করার প্রস্তাব দেন। পরদিন দুজনে নুহাশপল্লীতে থাকি। এই অনুভূতিটা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না।

আমরা সারারাত গল্প করলাম, তিনি আমার কবিতা নিয়ে কথা বললেন, কোন জার্মান কবির সাথে নাকি আমার লেখায় মিল আছে!

তারপর ‘নাট্যকার হামিদ সাহেবের একদিন’ নাটকে প্রথম অভিনয় করি। সেই ঈদেই হুমায়ূন আহমেদের আরও তিনটা নাটক ‘অতঃপর শুভ বিবাহ’, ‘মফিজ মিয়ার চরিত্র ফুলের মতো পবিত্র’, ‘ভূত বিলাস’ আর পরবর্তীতে একটা ধারাবাহিক নাটক ‘চন্দ্র কারিগর’-এ অভিনয় করি।

পাশাপাশি অনেক কমার্শিয়াল নির্মাণ ও তাতে অভিনয় করেছি। তার মধ্যে হোয়াইট প্লাস টুথপেস্টের কাটা চামচ খেয়ে ফেলা বিজ্ঞাপনটি অনেকের এখনও হয়তো মনে আছে।

ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলাম্বিয়া থেকে ফিল্ম প্রোডিউসিং এর উপর একটা ব্যাচেলর ডিগ্রি নেই। তারপর কাজ করি বারবেল-এ। এরপর মেথড স্টুডিও তে।

ভিএফএক্স কোঅর্ডিনেটর হিসেবে কাজ করেছি রিক অ্যান্ড মর্টি, গেইম অব থ্রোনস, ফাস্ট অ্যান্ড ফিউরিয়াস ৭, ডক্টর স্ট্রেঞ্জ, ব্যাটম্যান ভার্সেস সুপারম্যান, সিভিল ওয়ার, অ্যাভেঞ্জারস: ইনফিনিটি ওয়ার, গার্ডিয়ান অব দ্য গ্যালাক্সি, ব্ল্যাক প্যানথার -সহ আরও বেশ কিছু ব্লকবাস্টার মুভিতে।

মুভি শেষে ক্রেডিটে নিজের নাম দেখার অনুভূতিটা ছিল অসাধারণ! এই অনুভূতি প্রথম অর্জন করি নাইট অ্যাট দ্য মিউজিয়াম মুভিতে।

গতবছর মা মারা যাবার পর আর কাজে মন বসলো না। চিন্তা করলাম এনিমেশনে কাজ করার। যোগ দিলাম সনি পিকচারস-এ।

এখন সনি পিকচারস ইমেজওয়ার্কসেই দায়িত্ব পালন করছি অ্যাসোসিয়েট প্রোডাকশন ম্যানেজার হিসেবে।

সনি পিকচারসের সাথে আমার প্রথম কাজ “হোটেল ট্রান্সিলভেনিয়া ৩” মুভিতে আমি আমার একজন প্রিয় ব্যক্তিত্ব ‘গেন্ডি টারটাকোভস্কি’র সাথে কাজ করার সুবর্ণ সুযোগ পাই।

আমার বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা। তাদেরকে হাত চোখ বেধে চলন্ত ট্রেন থেকে গুলি করে মারা হচ্ছিল। কিন্তু রিলোড করার সময়ই বাবা ট্রেন থেকে লাফিয়ে পড়ে প্রাণে বাঁচেন।

সেই গল্প থেকেই আমি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বাংলাদেশি অ্যানিমেশন ”সারভাইভিং ৭১” নির্মাণের স্বপ্ন দেখেছি এবং এর কাজ চলছে।

জীবন মানেই নিজেকে আবিষ্কার করা, নিজের পথটা আবিষ্কার করা আর সেই পথে ছুটে চলা নিরন্তর! ”

ওয়াহিদ ইবনে রেজা
#১০০৮০৭৬
অ্যাসোসিয়েট প্রোডাকশন ম্যানেজার
সনি পিকচারস ইমেজওয়ার্কস

” We were the first batch of 21st century. That means we attended HSC examination from Notre Dame College in the year of 2000. At that time there was no uniform.

I used to go to college wearing Panjabi pajamas, holding a briefcase in hand. On that briefcase there was a sticker of “Unmad” magazine with a writing “Go away or I’ll tweak.”

When that sticker tore off, I pasted another sticker on my briefcase with a writing “The bearer of this object is insane, maintain a minimum distance.”

I had a strong desire to work with fun magazine “UNMAD”. May be that’s why I enjoyed doing these weird things. In college my seat was just beside the window.

I wrote three fun articles sitting on the bench of Notre Dame College during class time and each of them got published in Unmad later.

Thus I joined Unmad.

Respected Jawharlal sir loved me very much. I don’t know why but Sir used to call me “ terrorist of 70’s”.

Sir once told me that I was good for nothing. When I got chance in BUET , I went to him and told,” See sir, I got chance!”.

Sir told me, “I told you, that’s why you got serious to prove me wrong”

Memories of Notre Dame College is huge. Tasting led chloride in chemistry lab during salt test, tearing Panjabi while fighting, got scolded because of long hair and many more.

I performed my very first stage performance and my first poem was published when I was in college.

I studied mechanical engineering in BUET. I attended my first class in BUET wearing a yellow Punjabi and bare footed because I was an extreme fan of himu then.

I realized very soon that engineering life isn’t my thing.

I got a huge response in BUET campus after writing a short film script and then I discovered myself, for what I am made.

I discovered the way I was supposed to walk on! I used to get drench in rain intentionally often.

Teachers used to ask me if I didn’t have an umbrella. How many can think that one can get drench in rain just because his mind wished?

I remained unemployed for six months after graduating from BUET. Just like those characters from stories and novels.

If someone asked my parents, they used to tell them “He just graduated”

I was the assistant editor of Unmad then. At that time I met Humayun Ahmed sir when I went to his home to gift him a magazine.

He invited to perform in one of his drama. We stayed together in Nuhash Polli the next day. This feeling can’t expressed by words.

We talked all night. He also asked about my poems, they seemed to resemble the works of a German poet.

Then I performed for the first time in “Hamid Shaheber Sathe Ekdin”. Then in that same Eid, I acted in 3 more drama of Humayun Ahmed sir “Otopor Shuvo Bibaho”, “Mofij Miyar Choritro Fuler Moto Pobitro” and “Vut Bilash”.

I also made and acted in many commercials. Many will still remember eating a fork in the advertisement of white plus.

Took a bachelor degree from University of British Columbia in Film Producing. Then I worked in Barbel. And then in Method studio.

Worked as a VFX coordinator in Rick and Morty, Game of Thrones, Fast and Furious 7, Doctor Strange, Batman vs Superman, Civil war, Avengers: Infinity War, Guardian of the Galaxy, Black Panther and so many other blockbuster movies.

Seeing my name in the end credit scene is an experience of a different level. I first experienced this feeling in the movie Night at the Museum.

After my mother’s death I couldn’t concentrate any more in my work. Then I thought of working in animation. So joined Sony pictures.

Now I am managing the post of Associate Production Manager in Sony Pictures Imageworks.

My first task in Sony pictures was in “Hotel Transylvania 3” There I got the amazing chance to work with one my favorites “Genndy Tartakovsky”.

My father was a freedom fighter. At one time during war they were being killed blindfolded in a running train.

But my father saved his life jumping out from the train during reloading.

Taking inspiration from that event I dreamt of making a animation based on our liberation war.

The making of ‘Surviving 71” is in progress.

Life means discovering one’s own self, discovering his own path and always travelling in that path.”

Wahid Ibn Reza
#1008076
Associate Production Manager
Sony Pictures Imageworks

 

আমাদের কমিউনিটি গ্রুপে যোগ দিন