দিনকাল বেশ ভালই যাচ্ছিল। বাঁধ সাধল জেএসসি। জিপিএ ৪.৪৩।বাংলা -সমাজ এ মাইনাস। আর কিসে জানি এ।স্কুলে কিছুতেই সাইন্স নিতে দিবে না।সাইন্সেই পড়ার ইচ্ছা ছিল। অতএব স্কুল বদলাতে হল।পুরনো বন্ধুদের ছেড়ে যেতে বড্ড কষ্ট হল। তবে নিজের মধ্যে একটা পরিবর্তন এল। এসএসসিতে হোঁচট খাওয়া যাবে না।
এসএসসি গেল। এবার এইচএসসির পালা।শুরু থেকেই ইচ্ছা ছিল ডাক্তার হব। কিন্তু টেস্ট এর পর বুঝে গেলাম ডাক্তারি আমার দ্বারা হবে না।একে তো বায়োলজি পারি না তার উপর এই বিষয়ের প্রতি কোন আগ্রহ পাই না।বরিশাল এ উন্মেষ এর শাখা খুলেছিল সেই বছর। সেখানে ভাইয়াদের ক্লাস দেখে উদ্ভাস এ ভর্তি হলাম। এইচএসসি দিলাম।
এইচএসসি দিয়ে বুঝতে পারলাম বুয়েট এ দিতে পারব না।কেননা ফিজিক্স মোটেও ভাল হয়নি।তখন আমার ভাবনা জুড়ে শুধুই ঢাবি,কুয়েট,মিষ্ট,সাস্ট,বুটেক্স। সেভাবেই পড়াশোনা করছিলাম। মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে জুটলো এইচএসসির রেজাল্ট। প্লাস আসলো তবে ম্যাথ,ফিজিক্স মিস।
বুয়েট, কুয়েট, রুয়েট, চুয়েট কোথাও দিতে পারব না।ভার্সিটি কোচিং এ শিফট হলাম।লক্ষ্য তখন ঢাকা ভার্সিটি।
যথারীতি মেডিকেল দিয়ে শুরু হল ভর্তিযুদ্ধ।ঘুরে এলাম ।ঢাবির আগে ছিল জাবি।সেখানে মোটামুটি করলাম তবে সেখানে ওয়েটিং ।ঢাবি দিয়ে খুব খুশি ছিলাম। বাসায় ফিরে দেখলাম একগাদা সহজ প্রশ্ন ভুল করে এসেছি।ঢাবিতেও খুব একটা সুবিধাজনক পজিশন এল না।রেজাল্ট এর দিনই আরেকটা তির এসে বিঁধল বাউতেও দিতে পারব না। মাথার উপর যেন আকাশ ভেঙে পড়ল।আল্লাহ্‌র রহমতে মিষ্ট, বুটেক্স এ দিতে পারলাম।
হাতে ২০ দিন এর মত পেলাম।ইতিমধ্যে এফবিতে সাকসেস পোস্টের বন্যা বইছে। ইতিমধ্যে এক তথাকথিত চান্সপ্রাপ্ত বন্ধু তো বলেই ফেলল আমার বেসিক এ ঘাটতি আছে আমার যেখানেই হোক না কেন সাস্ট এ হবে না।যাই হোক নতুন করে সব আবার শুরু করলাম। মিষ্ট আর খুবি দিয়ে শুরু হল ভর্তিযুদ্ধের সেকেন্ড রাউন্ড।
আলহামদুলিল্লাহ্‌। শুরুটা হল খুবি দিয়ে। একদম প্রথম দিকেই ছিলাম। আত্মবিশ্বাস তখন তুঙ্গে। এরপর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি।প্রায় সবখানেই মেরিট লিস্টে ছিলাম, সাস্টেও হল।অবশেষে মিষ্ট এ আইপিই ডিপার্টমেন্টে ভর্তি হলাম।
আমার বয়স হয়ত বেশী নয় তবে জীবনে একটা জিনিষ শিখলাম লক্ষে পৌছুতে হলে লেগে থাকতে হয়।
Hasin Rizwan Fahim, IPE, MIST

Loading