JUST Connect: দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে স্বেচ্ছাসেবীর ভূমিকায় গত ১৭ এপ্রিল থেকে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে করোনা সন্দেহভাজন রোগীদের নমুনা পরীক্ষা করে যাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা।

গতকাল বুধবার (১৩ই মে) পরীক্ষার কাজ সরোজমিনে পরিদর্শন করেন আমেরিকার ফেডারেল গভর্মেন্টের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) একজন বিশেষজ্ঞ। এসময় তিনি সন্দেহভাজন করোনা রোগীদের কাছ থেকে সংগৃহীত নমুনা পরীক্ষার কার্যক্রম ও খুঁটিনাটি বিষয় পর্যবেক্ষণ করেন।

গত বুধবার (১৩ই মে) সকালে যবিপ্রবির জিনোম সেন্টার পর্যবেক্ষণে আসেন সিডিসি বিশেষজ্ঞ কাজী সাইফুল ইসলাম। এসময় তিনি প্রায় চার ঘণ্টা পরীক্ষাগারে অবস্থান করেন।
এই সময়কালে তিনি সন্দেহভাজন রোগীদের কাছ থেকে স্বাস্থ্যবিভাগের সংগ্রহ করা নমুনা পরীক্ষার কার্যক্রম দেখেন। ল্যাব পরিদর্শনের সময় কিভাবে নমুনা পরীক্ষা করা হয় এবং তার খুঁটিনাটি তিনি জানতে চান। এ বিষয়ে ল্যাবে দায়িত্বরত গবেষকদলকে প্রায় ২০০ টির মতো প্রশ্ন করেন এবং গত মঙ্গলবারের চল্লিশটি নমুনা পরীক্ষার ফলাফলের ব্যাখ্যা জানতে চান ।

উল্লেখ্য, কিছুদিন ধরেই যবিপ্রবিতে পরীক্ষিত নমুনা খুলনায় ও ঢাকায় পরীক্ষা করে ভিন্ন ফলাফল আসার কারণে জনসাধারণের মধ্যে দ্বিধাদ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। এমতাবস্থায় গত শুক্রবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন সচিবের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত বৈঠকে যবিপ্রবির ল্যাবে করোনা পরীক্ষা চলমান থাকবে কিনা সেই বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
উক্ত সভায় উপস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্ট বোর্ডের সদস্য ও প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য যবিপ্রবির ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা বন্ধ না করে সেখানে প্রযুক্তিগত ত্রুটি আছে কিনা সে বিষয়ে পর্যবেক্ষণ করার জন্য স্বাস্থ্য সচিবকে অনুরোধ করেন ঢাকা থেকে বিশেষজ্ঞ পাঠানোর। এরই প্রেক্ষিতে গতকাল সিডিসির বিশেষজ্ঞ কাজী সাইফুল ইসলাম সরেজমিনে পরিদর্শন করতে আসেন যবিপ্রবি জিনোম সেন্টার ।
মুঠোফোনে জনাব সাইফুল ইসলামের কাছে পরিদর্শনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিস্তারিত বলতে অপরাগতা প্রকাশ করেন। তবে ল্যাবে ওয়ার্ল্ড স্ট্যান্ডার্ড বজায় রেখে পরীক্ষার কাজ করা হচ্ছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে যবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ডঃ মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন,
“আমারা যে গবেষণাগারে করোনা নিয়ে কাজ করছি তা আন্তর্জাতিক মানের একটি গবেষণাগার। এখানে যেসব যন্ত্রপাতির মাধ্যমে করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে তা অত্যন্ত আধুনিক এবং যে সাত সদস্যের টিম করোনা পরীক্ষার জন্য কাজ করছে তাদের মধ্যে অন্তত ২-৩ জন পিএইচডি ডিগ্রিধারী এবং টিমের সবাই এ ধরনের কাজে অভিজ্ঞ। তাই আমাদের পাওয়া করোনা পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে আমি দ্বিধাদ্বন্দ্বের কিছুই দেখি না।
করোনা সন্দেহভাজনের নমুনা আমরা সংগ্রহ করি না, সিভিল সার্জনের মাধ্যমে নমুনা আমাদের কাছে পাঠানো হয়। যদি আমাদের ফলাফল নিয়ে কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব থেকে যবিপ্রবিতে নমুনা পাঠানো বন্ধ করে দিলে এই পরীক্ষার কাজ এমনিতেই বন্ধ হয়ে যাবে ।
দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমাদের এই কার্যক্রম। আমাদের শিক্ষকেরা সেচ্ছাসেবী হিসেবে নিজেদের জীবনের মায়া ত্যাগ করে করোনা নিয়ে কাজ করছেন। আর মনে রাখতে হবে আমরা শুধু করোনার নমুনা পরীক্ষাই করছি না এর সাথে সাথে করোনা ভাইরাস নিয়ে ও গবেষণা করছি।”

তিনি আরো উল্লেখ করেন , “আমি আগেও বলেছি, সঠিক উপায়ে এবং সঠিক নিয়মনীতি না মেনে কিছু নমুনা সংগ্রহ ও সরবরাহ করা হচ্ছে। যার কারণে ক্ষেত্রবিশেষে ফলাফলের ভিন্নতা দেখা দিচ্ছে।”

এ সময় উপাচার্য সিডিসি সম্পর্কে বলেন সিডিসি হলো আমেরিকান ফেডারেল গভর্মেন্টের একটি প্রতিষ্ঠান। এটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সবচেয়ে স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান।

আমাদের দেশে নতুন ল্যাব স্থাপন অথবা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বায়োসেফটি বিষয়ক সহযোগিতা করে থাকে। তারা চাইলে যেকোনো নতুন ল্যাবে বায়োসেফটি দেখার জন্য এরকম পরিদর্শনে আসতে পারে।

সুএ:বিশ্ববিদ্যালয় ওয়েবসাইট।

ED/Campus Connect/তন্ময় দত্ত